‘খর্বকায়’ দুই দর্জি-কন্যার দুর্দান্ত সাফল্য

অন্য এক দিগন্ত ডেস্ক | Dec 01, 2020 05:11 pm
জুবাইদা ও হুমায়রা

জুবাইদা ও হুমায়রা - ছবি সংগৃহীত

 

প্রতিকূল পরিবেশ অতিক্রম করে সাফল্যের নৌকায় পা রাখেন, এমন উদাহরণ মাঝেমধ্যে দেখা যায়। মুম্বইয়ের জুবাইদা ও হুমায়রা এমনই এক উদাহরণ। এ বছর এই ২ দর্জি কন্যা সর্বভারতীয় মেডিক্যাল প্রবেশিকা পরীক্ষা নিট-এ সফল হয়েছেন এবং এমবিবিএস পড়ার জন্য তাদের আসন পাকা করেছেন। ২২ বছর বয়সি হুমায়রা মুম্বইয়ের টোপিওয়ালা নায়ার মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পেয়েছেন। অন্যদিকে, ২৩ বছর বয়সী জুবাইদা জালগাঁওয়ের গভর্নমেন্ট মেডিক্যাল কলেজে এমবিবিএসে ভর্তি হয়েছেন।

মুম্বইয়ের নাগপাড়া থেকে আসা এই দু’জন জীবনে অনেকবার তুচ্ছ-তাচ্ছিল্যের শিকার হয়েছেন তাদের শারীরিক উচ্চতার জন্য। জোবাইদার উচ্চতা যেখানে ৩.৫ ফিট, হুমায়রা তার থেকে একটু বেশি উঁচু, ৩.৯ ফিট। তবে উচ্চতা যে সাফল্যের পথে কোনো বাধা নয়, তা এই দুই বোন দেখিয়ে দিয়েছেন। নিট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হবার পর এখন তারা এলাকার সেলিব্রিটি গার্ল হিসেবে মর্যাদা পাচ্ছেন। পাড়ার অনেকেই যারা তাদেরকে আগে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করেছে, তারা এখন একনজর দেখার জন্য দরজায় উঁকি দিচ্ছে।

তাদের এই স্বপ্ন কীভাবে সফল হল সেটা বলতে গিয়ে তারা জানাচ্ছেন, তাদের ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন শেষ হতে বসেছিল এবং তারা স্থির করেছিলেন যে একটি কলেজ থেকে গ্র্যাজুয়েশন করবেন। কিন্তু খিদমত চ্যারিটেবল ট্রাস্টের আসফাক মুসার সঙ্গে পরিচয়ের পর তাদের জীবন পালটে যায় এবং স্বপ্নপূরণের পথে সহায় হয়ে দাঁড়ায়। একদিন একটি নিকটবর্তী ডিস্পেন্সারিতে তাদের দাদির সঙ্গে গিয়েছিলেন এই দু’জন। সে সময় তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয় আসফাকের। আসফাক তাদের শিক্ষার ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলে তারা তাদের স্বপ্নের কথা খুলে বলে এবং জানায় যে আমরা ডাক্তার হতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আর্থিক অবস্থা এবং অন্যান্য প্রতিকূলতার জন্য সেই স্বপ্ন পূরণ হতে পারছে না।

এটা জানার পর তাদের জন্য স্কলারশিপের ব্যবস্থা করে দেন তিনি এবং নিট পরীক্ষার জন্য যাতে তারা প্রশিক্ষণ নিতে পারেন সেই ব্যবস্থা করে দেন। ঘাটকোপারে অবস্থিত একটি স্থানীয় কোচিং ইন্সটিটিউটে ভর্তি হয় তারা। সেখানেও ভর্তি ফি-তে তাদের জন্য ৬০ শতাংশ ছাড় দেওয়া হয়। পরীক্ষায় সফল হওয়ার স্বপ্ন তাদের চোখে ছিল। তাই তারা প্রত্যেক দিন লোকাল ট্রেন জার্নি সহ্য করেই পড়াশোনা করে গেছেন। সেই পরিশ্রমের ফল তারা পেয়েছেন। দুই কন্যার মা রুকসার জানাচ্ছেন, আমি তাদেরকে দুপুর ও রাতের খাবারের সময় শুধু মনে করিয়ে দিতাম।

বাদবাকি সময় ওরা পড়াশোনায় ব্যস্ত থাকত। পাঁচ বছর বয়সের পর ওদের দু’জনের দৈহিক বৃদ্ধি বন্ধ হয়ে যায়। ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, এর জন্য যে চিকিৎসার প্রয়োজন তাতে ১১ লক্ষ টাকার বেশি খরচ হবে। দরিদ্র পরিবার। তাই সে পথে আর তারা পা বাড়াননি। তবে সেই প্রতিকূলতার গঞ্জনা তাদের জীবনে নতুন সাফল্য এনে দিয়েছে। এখন তারা নিজেই নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারবে স্বমহিমায়।

সূত্র : পূবের কলম

 


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us