অধীনতা মানতে জানে না চেচেন জাতি

আবির রায়হান | Dec 24, 2020 04:24 pm
অধীনতা মানতে জানে না চেচেন জাতি

অধীনতা মানতে জানে না চেচেন জাতি - ছবি সংগৃহীত

 

২০১৭ সালে রাশিয়ার গোয়েন্দা সংস্থা 'ফেডারাল সিকিউরিটি সার্ভিস'’ ঘোষণা দিয়েছিল, উত্তর-পূর্ব ককেশাসভিত্তিক সন্ত্রাসীবাদী আন্দোলন সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করা হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে সিকি শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে চলতে থাকা এক স্বাধীনতা সংগ্রামের আনুষ্ঠানিক অবসান হয়। অবশ্য এই সংগ্রামের ঐতিহাসিক সূচনা প্রায় ৩০০ বছর আগে। তবে অনেকের মতে, রুশ সরকারে দাবিও সঠিক নয়। অর্থাৎ চেচনিয়াসহ উত্তর-পূর্ব ককেশাস অঞ্চলে স্বাধীনতার সংগ্রামকে আজও পুরোপুরি দমন করা যায়নি।

কাস্পিয়ান ও কৃষ্ণ সাগরে মধ্যবর্তী ককেশাস অঞ্চল ইউরোপ ও এশিয়ার মাঝখানে। ককেশাস পর্বতমালার নামেই এই নামকরণ। আর এর উত্তর-পূর্ব কোণে অবস্থিত চেচনিয়া। পশ্চিমে ইঙ্গুশেতিয়া, দক্ষিণে দাগেস্তান, উত্তরে রাশিয়া। বহু জাতির দেশ দাগেস্তান ও নাখ জাতির স্বজাতীয় ইঙ্গুশদের ইঙ্গুশেতিয়াও চেচনিয়ার মতো রুশদের অধীনে স্বায়ত্ত্বাধীন। তবে রুশদের অধীনতা মানতে আজও নারাজ চেচেন-ইঙ্গুশ-দাগেস্তানিরা।

ককেশাস পর্বতমালাকে বলা হয় এশিয়া ও ইউরোপে সীমানির্ধারনকারী। তবে ঐতিহাসিকভাবে এই সীমানা বাধা দিতে পারেনি কোনো হানাদার বাহিনী বা সাম্রাজ্যবাদী শক্তিকে। কিন্তু এইসব অভিযান ও আক্রমণ কখনোই খুব সহজ হয়নি, অনেক সময় সফলও হয়নি। বিশেষ করে, ককেশাসের উত্তর-পূর্ব কোণে অবস্থিত ছোট্ট দেশ চেচনিয়ার ক্ষুদ্র জাতি চেচেনদের ইতিহাস গৌরবোজ্জ্বল হয়ে আছে দখলদারদের প্রতিহত করবার উদাহরণ দিয়ে। বার শ' শতকে মঙ্গোলদের দুর্বার আক্রমণ দুই দুই বার প্রতিহত করে চেচেন জাতি। পরের শতকে তৈমুর লঙের বাহিনীকেও পরাজিত করে তারা। এই প্রতিরোধকারী ঐতিহ্য থেকেই চেচেনদের মধ্যে যুদ্ধংদেহী মানসিকতার শুরু।

৬০০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যেই ইসলামী খিলাফত প্রথম দক্ষিণ ককেশাস অঞ্চলে প্রবেশ করে। এসময় চেচনিয়াও ইসলামের সংস্পর্শে আসে। কিন্তু চেচনিয়ায় ইসলামের আনুষ্ঠানিক প্রচার ও প্রসার শুরু হয় প্রায় এক হাজার বছর পরে, ষোলশ শতকে। এরপর থেকেই চেচেনরা ধীরে ধীরে ইসলামের ছায়াতলে জড়ো হয়। তবে চেচনিয়ায় চেচেনদের নিজস্ব পৌত্তলিক ধর্মের প্রভাব থাকে ঊনিশ শতক পর্যন্ত। কিন্তু সুফি ইসলামে ধর্মান্তরিত হওয়ার পর চেচেনদের মধ্যে ক্রমে ইসলামী জাতীয়তাবাদের জন্ম নেয়, যা একই সময় ককেশাসের স্থানীয় অন্যান্য মুসলিমদের মধ্যেও সঞ্চারিত হয়েছিল। ১৫০০ শতক থেকে উদীয়মান রুশ সাম্রাজ্য ককেশাসে প্রাধান্য বিস্তার শুরু করে। ককেশাসে পারস্য সাম্রাজ্য ও তুরস্ক সাম্রাজ্যের প্রাধান্য খর্ব করতে রাশিয়া তাদের সাথে কয়েক শতক ধরে একাধিক যুদ্ধ লিপ্ত হয়েছিল। ১৭০০ শতকের শেষ ভাগে উত্তর ককেশাসজুড়ে রাশিয়ার বিজয়াভিযান শুরু হয়। উত্তর-পশ্চিম ককেশাসের সিরকেশীয় জাতির উপর গণহত্যা চালানো হয়। অন্যদিকে চেচনিয়াসহ উত্তর-পূ্র্ব ককেশাসে রুশ আগ্রাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবার মানসিকতা গড়ে ওঠে। আর এর পিছনে প্রধান শক্তি ছিল স্থানীয়দের মধ্যে গড়ে ওঠা ইসলামী চেতনা।

১৭৮৫ সালে চেচেন ইমাম শেখ মনসুর ইসলামী জাতীয়তাবাদকে পুঁজি করে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে নেমে পরাজিত হন। কিন্তু চেচেনসহ ককেশীয় মুসলিমদের প্রতিরোধ সংগ্রাম অব্যহত থাকে। ১৮২৮ সালে ককেশাস ইমামাত প্রতিষ্ঠা হয় চেচনিয়া ও এর দক্ষিণে অবস্থিত দাগেস্তানে, যাতে পরে সিরকেশিয়ার আবজাখ গোত্রও যোগদান করে। ইমামাতের তৃতীয় ইমাম দাগেস্তানের কুমিক বংশোদ্ভূত আভার জাতির শামিল রুশদের বিরুদ্ধে তীব্র সংগ্রাম ও যু্দ্ধের পর আত্মসমর্পণ করেন। তবে তাকে রাশিয়ায় সাদরে আমন্ত্রণ জানানো হয় এবং মস্কোর কাছেই পুনর্বাসিত করা হয়। ফলে চেচেন ও দাগেস্তানিদের মধ্যে সম্পর্কে ফাটল ধরে। যদিও রাশিয়া প্রথমে চেচনিয়া ও আশপাশের অঞ্চলগুলোকে স্বায়ত্ত্বশাসন দেয়ার কথা বলেছিল, তবে শেষ পর্যন্ত উত্তর দাগেস্তানসহ চেচনিয়াকে সম্পূর্ণরূপে রাশিয়ার অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ফলে চেচেনরা ও ককেশাসের অন্য মুসলিমদের চাপা ক্ষোভ বিদ্যমান থাকে। ১৮৬০-এর দশকে রাশিয়ার জার চেচেন ও ইঙ্গুশদের স্বদেশ ত্যাগ করার নির্দেশ দেন। ধারনা করা হয়, ৮০% চেচেন ও ইঙ্গুশ এ সময় দেশ ত্যাগ করে। তারা প্রধানত মুসলিম উসমানীয় সাম্রাজ্যের বিভিন্ন অংশে (তুরস্ক, ইরাক, সিরিয়া, জর্দান, ফিলিস্তিন) বসতি স্থাপন করে। তাদের দেশে রুশ কসাক সম্প্রদায়ের লোকদের বসত করানো হয়।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন ১৯১৭ সালে রুশ সাম্রাজ্যে রুশ বিপ্লবের মাধ্যমে রাজতন্ত্রের পতন ও রুশ গৃহযুদ্ধের মধ্য দিয়ে বলশেভিকদের উত্থানের সময় চেচেন ও অন্যরা ধর্মীয় ও জাতীয়তাবোধ থেকে স্বাধীনতা ঘোষণা করে। এ সময় তারা রাজপন্থী সাদা বাহিনী ও কম্যুনিস্ট লাল বাহিনী দু’পক্ষেরই বিরোধিতার মুখে। ১৯১৭ সালে চেচনিয়া ইঙ্গুশেতিয়া ও দাগেস্তানের সাথে মিলিত হয়ে 'মাউন্টেনাস রিপাবলিক অব নর্দার্ন ককেশাস' নামক স্বাধীন রাষ্ট্র গঠন করে। বিশ্বের প্রধান রাষ্ট্রগুলো অনেকেই দেশটিকে স্বীকৃতি দেয়। দেশটির প্রথম প্রধানমন্ত্রী ছিলেন তাপা চেরমোয়েফ, একজন প্রখ্যাত চেচেন রাজনীতিবিদ। কিন্তু ১৯২১ সালে সোভিয়েতরা দেশটিকে আক্রমণ করে, আবারো দখলে নিয়ে নেয়। সোভিয়েত রাষ্ট্রনায়ক জোসেফ স্তালিন উত্তর ককেশাসের মুসলিম প্রধান ক্ষুদ্র জাতিগুলোকে স্বায়ত্ত্বশাসনের আশ্বাস দিলেও পরে তা ভঙ্গ করে। চেচেন-ইঙ্গুশদের মাতৃভূমি নিয়ে একটি ‘অটোনমাস সোভিয়েত সোশালিস্ট রিপাবলিক’ (এএসএসআর) গঠন করা হয়। এর পর কম্যুনিস্ট আর্দশ অনুযায়ী ভূমি সংস্কারের নীতি মেনে সোভিয়েত ইউনিয়ন জুড়ে জমি যৌথকরণ কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। চেচনিয়াসহ ককেশাস অঞ্চলও এর আওতায় আসে। চেচেনরা এর বিরোধিতা করলে দমন-নিপীড়নের স্বীকার হয়। ১৯৩২ সালে চেচেনরা সোভিয়েতদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে। তবে বলশেভিকদের তৎপরতায় তা দ্রুত ব্যর্থ হয়।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শুরুতেই চেচনিয়ায় নতুন করে সশস্ত্র সংগ্রাম শুরু করে জাতীয়তাবাদীরা। কিন্ত এরই মধ্যে ১৯৪১ সালে অ্যাডলফ হিটলারের জার্মানি সোভিয়েত ইউনিয়ন আক্রমণ করে।ককেশাস অঞ্চলেও অগ্রসর হয় তাঁরা। এ সময় সোভিয়েত ইউনিয়নের অন্যান্য সংখ্যালঘু জাতিগোষ্ঠীর মতো চেচেনদের স্বাধীনতার প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহযোগিতার প্রস্তাব দেয় নাতসি বাহিনী। সামান্য কিছু চেচেন তাতে সাড়াও দেয়। কিন্তু যুদ্ধের পর জার্মানি পরাজিত হলে বলশেভিকরা চেচেন ও ইঙ্গুশসহ অন্য সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে নাৎসি গণসহযোগিতার ব্যপক অভিযোগ তোলে, যদিও অনেক ঐতিহাসিক। শাস্তি হিসেবে সোভিয়েত সরকার অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর মতো লাখ লাখ চেচেন ও ইঙ্গুশকে সাইবেরিয়া, মধ্য এশিয়াসহ (বিশেষত কাজাখস্তান) বিভিন্ন এলাকায় গণবহিষ্কার করে। এই প্রক্রিয়ার সময় হাজার হাজার চেচেন ও ইঙ্গুশসহ অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর মানুষের মৃত্যু হয়। চেচেন-ইঙ্গুশ এএসএসআরকে বিলুপ্ত করে দেয়া হয়। রুশীকরণ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে রুশসহ অগণিত অচেচেনকে চেচনিয়ায় বহিষ্কৃত চেচেন-ইঙ্গুশদের ঘরে বসত করতে দেয়া হয়। ১৯৫৬ সালে স্তালিনের মৃত্যুর পর নিকিতা ক্রশ্চেভ বিস্তালিনীকরণ করলে অন্যদের মতো নির্বাসিত চেচেনরাও নিজ মাতৃভূমিতে ফিরে আসতে শুরু করে। কিন্ত রুশীকরণ প্রক্রিয়া অব্যহত থাকে, আর তাই রুশ ভাষায় পারদর্শিতা না থাকায় নানা ক্ষেত্রে তারা বৈষম্যের শিকার হয়।

সোভিয়েত ইউনিয়ন ভাঙনের শুরু হলে ১৯৯০ সালে চেচেন-ইঙ্গুশ এএসএসআরের পক্ষ থেকে ‘‘ডিক্লেয়ারেশন অব স্টেট সভারেনিটি অব চেচেন-ইঙ্গুশ রিপাবলিক’’ প্রকাশ করা হয়। এটি ছিল সোভিয়েত ইউনিয়নের পুনর্বিন্যাস প্রস্তাবের একটি অংশ, যাতে সোভিয়েত ইউনিয়ন ১৫টি জাতির প্রজাতন্ত্র থেকে ৮০টি জাতিগত প্রজাতন্ত্রে পরিণত হতো। কিন্তু ১৯৯১ সালে কম্যুনিস্টপন্থী সামরিক অভ্যুত্থান এই প্রচেষ্টা ভণ্ডুল করে দেয়। ১৯৯১ সালে সময় জোখার দুদায়েভের নেতৃত্বে ‘চেচেন ন্যাশনাল কংগ্রেস’ গঠিত হয়। দলটির সশস্ত্র কর্মীরা সেপ্টেম্বরে চেচেন-ইঙ্গুশ এএসএসআরের সংসদ আক্রমণ করে। এ সময় ‘কম্যুনিস্ট পার্টি অব সোভিয়েত ইউনিয়ন’-এর স্থানীয় প্রতিনিধি ভিতালি কুতসেঙ্কো নিহত হন। ফলে চেচনিয়া কার্যত নেতৃত্বহীন হয়ে পড়ে।

সোভিয়েত ইউনিয়ন অবৈধ ঘোষণা করার পরও অক্টোবর মাসে চেচনিয়ায় রাষ্ট্রপতি ও সংসদীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। প্রচুর ভোটার উপস্থিতির মধ্যে বিপুল ভোটে নির্বাচিত দুদায়েভ ‘চেচেন রিপাবলিক অব ইচকেরিয়া’ নামে রাষ্ট্রের গঠন করেন ও স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। ডিসেম্বরে সোভিয়েত ইউনিয়ন বিলুপ্ত হয়ে সংযুক্ত রাশিয়ার জন্ম হয়। কিন্তু বিচ্ছিন্নতাবাদ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা ও তেল শিল্পের কেন্দ্র হাতছাড়া হওয়ার ভয়ে রাশিয়ার নতুন সরকারও চেচেন স্বাধীনতার প্রচেষ্টা প্রত্যাখান করে। তাদের দাবি, চেচনিয়া কখনোই সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রজাতন্ত্র ছিল না, ছিল রুশ প্রজাতন্ত্রের স্বায়ত্তশাসিত অংশ মাত্র।

১৯৯৪ সালে বোরিস ইয়েলতসিনের সেনাবাহিনী চেচেনদের স্বাধীনতা কেড়ে নিতে আরো একবার চেচনিয়াকে আক্রমণ করে। জনবল ও অস্ত্রশস্ত্র সবদিক থেকেই রুশ সেনাবাহিনী অনেক এগিয়ে থাকলেও চেচনিয়ার পার্বত্য অঞ্চলে তারা নানা অসুবিধার মুখে পড়ে। অন্য দিকে জাতীয়তাবাদী ও ইসলামবাদী চেচেন বিদ্রোহীদের হাতে বুদিয়ননোভস্ক হাসপাতালের পণবন্দী সঙ্কটসহ একাধিক পণবন্দী সঙ্কট ও সন্ত্রাসী আক্রমণ হয়। ১৯৯৬ সালে দোদায়েভ নিহত হলেও চেচেন বিদ্রোহীরা গ্রোজনি পুনর্দখল করতে সক্ষম হয়। শেষ পর্যরন্ত রাশিয়া এক শান্তিচুক্তির মাধ্যমে যুদ্ধবিরতি ও সেনাপ্রত্যাহার করতে বাধ্য হয়। ফলে চেচনিয়া আইনত রাশিয়ার অংশ থাকলেও কার্যত রাশিয়া থেকে স্বাধীন থাকে। যুদ্ধের পর চুক্তিমতো ধ্বংসপ্রাপ্ত চেচনিয়া পুনর্গঠনে রাশিয়া ব্যপক অর্থসাহায্য পাঠায়। কিন্তু সীমাহীন দুর্নীতির কারনে তা জনসাধারণের কাছে পৌঁছায়নি, বরং সরকার ও যুদ্ধনেতাদের পকেটে চলে যায়। অন্য দিকে ধর্মনিরপেক্ষ সরকারের সঙ্গে ইসলামবাদী সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো নিয়মিত সংঘর্ষ চলতে থাকে।

১৯৯৯ সালের আগস্টে দাগেস্তানেও বিচ্ছিন্নতাবাদী ইসলামবাদীরা সশস্ত্র সংগ্রাম শুরু করে। সেপ্টেম্বর মাসে রাশিয়ার বড় বড় শহরে একাধিক অ্যাপার্টমেন্ট বোমা হামলায় তিন শতাধিক লোক নিহত হয় এবং এক হাজারেরও বেশি আহত হয়। এর দায় বর্তায় ইসলামবাদী চেচেন সন্ত্রাসীদের উপর। যদিও কারো কারো মতে, রুশ গোয়েন্দা সংস্থাই আসলে এর পিছনে রয়েছে। অক্টোবর মাসে রুশ সরকার দ্বিতীয় বারের মতো চেচনিয়ায় সৈন্য পাঠায়। কিন্তু এবার রুশ সেনাবাহিনী সম্পূর্ণ প্রস্তুত ছিল। ফলে চেচেন সরকার ও চেচেন বিদ্রোহীরা এবার অসুবিধায় পড়ে। যুদ্ধে রাশিয়ার প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি ও হতাহত হলেও শেষ পর্যন্ত তারা চেচেন বিদ্রোহীদের পরাজিত করতে সক্ষম হয়। ২০০০ সালে রুশদের হাতে চেচেন রাজধানী গ্রোজনির পতন হলে আনুষ্ঠানিকভাবে দ্বিতীয় চেচেন যুদ্ধ সমাপ্ত হয়। কিন্তু স্বাধীনতাকামী চেচেন সরকার ২০০৭ ও ইসলামবাদী চেচেন বিদ্রোহীরা ২০০৯ পর্যন্ত সশস্ত্র সংগ্রাম অব্যহত রাখে। মাঝে মাঝে রাশিয়ার মূল ভূখন্ডেও সন্ত্রাসী হামলা চালানো হয়। এর মধ্যে ২০০২-এ মস্কো থিয়েটারের পণবন্দী সঙ্কট ও ২০০৪-এ বেসলান স্কুলে পণবন্দী সঙ্কট উল্লেখযোগ্য। এসব সন্ত্রাসী হামলায় শত শত মানুষ নিহত হয়। অন্যদিকে ২০০৭ সালে ইসলামবাদী সন্ত্রাসবাদীরা ইঙ্গুশেতিয়াতেও যুদ্ধ শুরু করে। এর মধ্য দিয়ে সমগ্র উত্তর-পূর্ব ককেশাস জুড়ে সন্ত্রাসবাদ শুরু করে ইসলামবাদী আল-কায়েদা ও পরবর্তীকালে আইসিস সমর্থকরা। অবশেষে ২০১৭ সালে ভ্লাদিমির পুতিনের সরকার ককেশাস অঞ্চলকে সন্ত্রাসমুক্ত বলে ঘোষণা দেয়।

প্রায় ৩০০ বছর ধরে চলতে থাকা চেচনিয়া ও চেচেনদের স্বাধীনতা সংগ্রাম এখানেই থমকে যাবে কি না - এমন প্রশ্ন রয়ে গেছে সবারই মনে। এর উত্তর দেবে সময়ই।


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us