জলাতঙ্কের লক্ষণ ও প্রতিকার

অন্য এক দিগন্ত | Jan 09, 2021 08:06 am
জলাতঙ্কের লক্ষণ ও প্রতিকার

জলাতঙ্কের লক্ষণ ও প্রতিকার - ছবি : সংগৃহীত

 

মারাত্মক একটি রোগ জলাতঙ্ক। এই রোগে আক্রান্ত হলে রোগীকে বাঁচানো বেশ কঠিন হয়ে পড়ে। প্রতিবছর বিশ্বজুড়ে জলাতঙ্কের কারণে ৫০ হাজারেরও বেশি মানুষ এবং লাখ লাখ প্রাণীর মৃত্যু ঘটে। তবে বর্তমানে উন্নত চিকিৎসার কারণে কিছুটা হলেও এর সুরাহা করা যায়।

রেবিজ ভাইরাস দ্বারা কোনো মানুষ বা প্রাণী আক্রান্ত হলে যে রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায় তাকে বলা হয় জলাতঙ্ক রোগ। কুকুর, বিড়াল, বানর, বাদুড়, বেজি ইত্যাদি প্রাণীরা রেবিজ ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হলে এবং এরা মানুষকে কামড়ালে এই রোগ হয়। এটি এক প্রাণী থেকে আরেক প্রাণীর দেহে স্থানান্তরিত হতে পারে তার লালা বা রক্তের দ্বারা। এদের মুখের লালায় রেবিজ ভাইরাসের জীবাণু থাকে। কোনোভাবে তা সুস্থ প্রাণীর রক্তের সংস্পর্শে আসলে, রক্তের মাধ্যমে তা সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে এবং জলাতঙ্ক রোগ সৃষ্টি হয়।
রেবিজ ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত প্রাণীটি আক্রমণাত্মক হয়ে যায় এবং অল্পতেই কামড় দেয়। এই ধরণের প্রাণীকে রেবিড অ্যানিম্যাল বলে। এই ভাইরাস প্রায় সকল স্তন্যপায়ী প্রাণীকেই আক্রান্ত করতে পারে।

মানুষ সাধারণত কুকুরের কামড়ে জলাতঙ্কে বেশি আক্রান্ত হয়। যে কুকুর রেবিজ ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত সেই কুকুর কাউকে কামড়ালেই জলাতঙ্ক রোগ হয়। আমাদের দেশে বেশিরভাগ জলাতঙ্ক রোগই হয় কুকুর কামড়ালে। এই রোগ মস্তিষ্ক এবং মেরুদণ্ডকে প্রভাবিত করে।

রেবিজের লক্ষণ
আক্রান্ত ব্যাক্তির মধ্যে যে যে লক্ষণ দেখা যায়-

ক) জ্বর, খিদে না হওয়া
খ) ক্ষতস্থান ব্যাথা বা চুলকানি
গ) কনফিউশন,অনিয়ন্ত্রিত উত্তেজনা
ঘ) লালারসের ক্ষরণ বৃদ্ধি, উজ্জ্বল আলো বা কোলাহলে অসহিষ্ণু হয়ে ওঠা
ঙ) ঢোক গেলার সময় ডায়াফ্রাম, রেসপিরেটোরি মাসল ও কণ্ঠনালির তীব্র ব্যথাযুক্ত সংকোচন হয় বিশেষ করে পানি পান করার চেষ্টা করলে ডায়াফ্রাম ও অন্যান্য ইন্সপিরেটোরি মাসলের তীব্র সংকোচন ও ব্যথা হয় ফলে রোগীর মধ্য হাইড্রোফোবিয়া তৈরি হয়। এই অবস্থার জন্য বাংলায় এই রোগকে জলাতঙ্ক নামে অভিহিত করা হয়েছে।
চ) এছাড়াও, রোগীর ডিলিউশন, হ্যালুসিনেশন ও পাগলামি
ছ) শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ নাড়ানোর অক্ষমতা, চেতনাশূন্যতা, ইত্যাদি

চিকিৎসা
এই রোগ একবার হলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই রোগী মারা যায়। কোনো অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে কাজ করতে পারে না। তবে, উপশমমূলক চিকিৎসা প্রদান করা সম্ভব হয়। এই রোগের টিকা আবিষ্কৃত হয়েছে। রেবিড প্রাণী কামড় দেয়ার সাথে সাথে তৎক্ষণাৎ টিকা নিলে এই রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব।

প্রতিরোধ
এই রোগ প্রতিরোধের উপায় হলো টিকা নেয়া। এই ভাইরাসের অনেকরকম টিকা আবিষ্কার হয়েছে। সবচেয়ে নিরাপদ টিকা হলো হিউম্যান ডিপ্লয়েড সেল ভ্যাকসিন (HDCV)। অন্যান্য টিকার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো পিউরিফাইড চিক ইমব্রিও সেল ভ্যাকসিন, ডাক ইমব্রিও সেল ভ্যাকসিন, নার্ভ টিস্যু ভ্যাকসিন, ইত্যাদি। ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পূর্বে টিকা নেওয়াকে প্রি-এক্সপোজার প্রোফাইল্যাক্সিস ও আক্রান্ত হওয়ার পরে টিকা নেয়াকে পোস্ট-এক্সপোজার প্রোফাইল্যাক্সিস বলে।

সূত্র : স্কাইবোল্ড


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us