পুতিন-নেতানিয়াহু দহরম-মহরম

মো: বজলুর রশীদ | Jan 21, 2021 04:37 pm
পুতিন-নেতানিয়াহু

পুতিন-নেতানিয়াহু - ছবি সংগৃহীত

 

ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহুর বড় একটি অর্জন এই যে, তার আমলে রাশিয়ার সাথে ইসরাইলের নীরব সম্পর্ক স্থাপিত হয়েছে। এই বন্ধনের বিষয়ে মিডিয়ায় বেশি প্রচার নেই। পুতিন বিশ্ব রাজনীতির মঞ্চে একজন শক্তিশালী নেতা। তিনি চাইলেই ইসরাইলিদের জীবনকে চরম দুর্যোগের মাঝে ফেলে দিতে পারেন। কিন্তু রাশিয়া ইসরাইলের ব্যাপারে এমন কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। পুতিন ইসরাইলি পরিকল্পনা এবং সিরিয়ায় ইরানি সামরিক অবস্থানে মিসাইল নিক্ষেপের বিরুদ্ধে কিছু করেননি। সিরিয়ায় ইরান ও রাশিয়ার সামরিক ঘাঁটিগুলো কোথাও কোথাও কাছাকাছি। ইসরাইল ইরানি সামরিক ঘাঁটিতে হামলা করলেও রাশিয়ার সামরিক অবস্থানে বা বস্তুতে কোনো মিসাইল হামলা করেনি। এ যেন বন্ধনের এক অলিখিত চুক্তি! উল্লেখ্য, সিরিয়ায় রাশিয়ার বিমানবন্দর, নৌঘাঁটি থেকে শুরু করে সামরিক সব স্থাপনায় রুশ সেনা ও বিশেষজ্ঞরা কাজ করছেন; কিন্তু আক্রান্ত হচ্ছে ইরান ও সিরিয়ার লক্ষ্যবস্তু! এসব কারণে রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ও পণ্ডিতরা মনে করছেন, নেতানিয়াহু ও পুতিনের সম্পর্ক অনেক গভীরে প্রোথিত। ইসরাইল চাইলে সিরিয়া ও লিবিয়ায় রাশিয়াকে বেকায়দায় ফেলতে পারে। অপর দিকে, রাশিয়া চাইলেও ইসরাইলের ঘুম কেড়ে নিতে পারে। কিন্তু বিশ্ব রঙ্গমঞ্চে সেটি এখনো হয়নি। ইসরাইল-রাশিয়ার এই ‘প্রীতির পিরামিডে’ ফ্রান্স হাত ঢুকিয়ে দিতে চাইলেও সফল হয়নি।

ইসরাইলের সাথে যুক্তরাষ্ট্র ও এর কংগ্রেসের ভালো সম্পর্ক রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা, ডিফেন্স, ইন্টেলিজেন্স এগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র; অথচ এসব স্থানে ইসরাইল চষে বেড়ায়, রাশিয়া এটি ভালো করেই জানে ও বোঝে। প্রেসিডেন্ট ওবামার সময় নেতানিয়াহু-ওবামা সম্পর্ক শীতল হলেও দুদেশের মধ্যে সম্পর্ক বিনষ্ট হয়নি। এই বন্ধনও অনেক গভীরে। এটি কোনো ব্যক্তির ওপর নির্ভর করছে না। রাশিয়ায় বিষয়টি কিছুটা ভিন্ন। পুতিনই রাশিয়ার চালিকাশক্তি। এ বিষয়ে নয়া দিগন্তে প্রকাশিত ‘পুতিনের চিরস্থায়ী ক্ষমতায়ন’ নিবন্ধে বিস্তারিত আলোচনা করেছি।

ককেশাসে সাম্প্রতিক নতুন যুদ্ধক্ষেত্র; আর্মেনিয়া-আজারবাইজানের নাগর্নো-কারাবাখ যুদ্ধেও রাশিয়া ইসরাইলের বিরুদ্ধে যায়নি। আর্মেনিয়ার সাথে রাশিয়ার সম্পর্ক ভালো থাকলেও ন্যাটো জোটের সদস্য তুরস্কের সাথেও সুসম্পর্ক রয়েছে রাশিয়ার। আর্মেনিয়া রাশিয়া থেকে আধুনিক অস্ত্র কিনে থাকে।

আজারবাইজান ইসরাইল থেকে প্রচুর অস্ত্র কেনে, রাশিয়া থেকেও কেনে। রাশিয়া ককেশাসে শান্তি উদ্যোগ নিলেও বিরোধ থেকে ‘নিরাপদ দূরত্ব’ বজায় রেখেছে। ফ্রান্সের আর্মেনিয়া সমর্থনকে রাশিয়া সবুজ সঙ্কেত দেয়নি। বলতে গেলে ফ্রান্সের কোনো ‘ইন্টারেস্ট’ আর্মেনিয়ায় নেই। ফ্রান্স কয়েক মাস আগে রাশিয়া সীমান্তে ঢাকঢোল পিটিয়ে সৈন্য জড়ো করেছিল। রাশিয়া সেটি ভালোভাবে গ্রহণ করেনি। যুদ্ধে আজারবাইজান ইসরাইলি কমব্যাট ড্রোনও ব্যবহার করছে। ইউরোপে আর্মেনিয়ার শক্তিশালী লবি থাকলেও ইসরাইল তার পরোয়া না করে আজারবাইজানকে সহায়তা করছে। ইসরাইলের এমন অবস্থানের পরিপ্রেক্ষিতে পুতিন জল ঘোলা করেননি, বরং ঘোষণা দিয়েছেন, ‘নাগর্নো কারাবাখ অঞ্চল আজারবাইজানের।’

সিরিয়ার বিষয়ে অনেক উদাহরণ দেয়া যায়; সেপ্টেম্বর ২০১৮ সালে, সিরিয়ার যুদ্ধ এলাকা থেকে একটি মিসাইল ইসরাইলি লক্ষ্যবস্তুর পরিবর্তে রাশিয়ার স্পাই বিমানে আঘাত করে এবং এতে ১৫ জন নিহত হয়। রাশিয়া ইসরাইলিদের ওপর চরম প্রতিশোধ নিতে গিয়েও পুতিন কোনো ব্যবস্থা নেননি। এ ঘটনায় উল্লেখযোগ্য আর কিছু ঘটেনি। এ ঘটনার পরও ইসরাইল-রাশিয়া কোনো সঙ্ঘাত হয়নি। ট্রাম্প আমেরিকার ক্ষমতায় এসেই সিরিয়ায় হামলা চালান। যুক্তরাষ্ট্র জাহাজ থেকে টোমাহক মিসাইল ছুঁড়ে সিরিয়ার বিমানবাহিনীর বিমান ও ঘাঁটি ধ্বংস করে দেয়। তার পাশেই রাশিয়ার ঘাঁটি ছিল। ইসরাইল পূর্বাহ্নে রাশিয়াকে সতর্ক করে দিলে রাশিয়ানরা ঘাঁটি ছেড়ে চলে যায়; তার পরপর মার্কিন মিসাইল আক্রমণ চালানো হয়েছিল!

পুতিনের সাথে সম্পর্কের জন্য নেতানিয়াহুর বহু ‘বিনিয়োগ’ রয়েছে। বিশ্ব নেতাদের মধ্যে পুতিনের সাথেই নেতানিয়াহু গোপনে ও প্রকাশ্যে বেশি সাক্ষাৎ করেছেন। ফোনালাপ ও ইন্টারনেটে সংযোগ বিবরণী ও তথ্যাদি হ্যাকাররা হ্যাক করবে, এ কারণেই সামনাসামনি এত বেশি সাক্ষাৎকার! তাই তাদের আলাপের বিষয়বস্তুও মিডিয়ার হেডলাইনে আসেনি। গত ১০ বছরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের চেয়েও বেশি পুতিনের সাথে দেখা-সাক্ষাৎ হয়েছে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট, মন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী ও চ্যান্সেলরের সাথে। কূটনৈতিক সাংবাদিক হার্ব কিনোন জানুয়ারিতে এ তথ্য মিডিয়ায় ছড়িয়ে দিয়েছেন।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষের দিকে রাশিয়ার রেড আর্মির কারণেই নাৎসি বাাহিনী পরাজিত হয়- এই বিষয়টি পশ্চিমারা শতভাগ বিশ্বাস করে না মর্মে ক্রেমলিন মনে করে। কিন্তু পুতিনের সাথে সাক্ষাৎকালে নেতানিয়াহু প্রায় সময় এই প্রসঙ্গটি তুলে প্রশংসা করতে থাকেন ও বলেন যে, রেড আর্মি ছাড়া নাৎসিরা পরাজিত হতো না। পুতিন বিশ্বাস করেন, নেতানিয়াহু একান্ত বিশ্বাস থেকেই এই বক্তব্য দিচ্ছেন। এতে তিনি আনন্দ অনুভব করেন ও প্রীত হন। ২০১০ সালে প্রথম রাশিয়া সফরের সময় ক্রেমলিনকে খুশি করার জন্য নেতানিয়াহু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে রেড আর্মির ভূমিকা নামে জেরুসালেমের সাচের পার্কে একটি মেমোরিয়েলও বানিয়ে ফেলেছেন।

ট্রাম্পকে খুশি করার জন্যও নেতানিয়াহু ট্রাম্প টাওয়ার, ট্রাম্প সিটি, ম্যানিলা ভিলেজ ইত্যাদি নামকরণ করেছেন। পুতিন ২০১২ সালে ইসরাইল সফর করেন এবং নেতানিয়াহুর সেই মেমোরিয়েল তখন ‘কমিশনিং’ করা হয়। সমালোচকরা মন্তব্য করেন যে, মনে হচ্ছিল, পুতিন যেন লেনিনগ্রাদ অবরোধের কোনো অনুষ্ঠান করছিলেন। ২০১৮ সালেও নেতানিয়াহু মস্কোতে এই মেমোরিয়েলের কথা ফলাও করে প্রচার করেন এবং সুদীর্ঘ বক্তব্য দেন। রাজনীতিতে এসব বিষয় মোটেও অপ্রয়োজনীয় নয়। নেতানিয়াহু যখনই রাশিয়া যান তখন তিনি চড়া গলায় বলেন যে, হিটলারের পতন রেড আর্মির হাতে হয়েছিল। তাই রেড আর্মি বিশ্বের সেরা সেনাবাহিনী।’ শুধু তাই নয়, নেতানিয়াহু ২০১৭ সালে ইসরাইলের নেসেটে একটি আইন করেন এই মর্মে যে, মে ৯ তারিখ ‘ইউরোপ বিজয় দিবস’ নামে ছুটির দিন উদযাপিত হবে। ওই দিন ১৯৪৫ সালে দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধ শেষ হয়। রাশিয়ার বাইরে বেলারুশ ও কাজাখিস্তান ছাড়া ইসরাইল একমাত্র দেশ যেখানে এই দিবস উদযাপন করা হয়। আনাতোলি ভিক্টোরভ, ইসরাইলে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত, তিনি বলেন, রেড আর্মির বিজয়ের বিষয়ে ইসরাইলের পত্রিকা জেরুসালেম পোস্ট সবসময় গুরুত্বসহকারে লেখা ছাপায় এবং এটাকে ‘খুবই গুরুত্বপূর্ণ’ মনে করে। যেকোনো ভাবেই হোক না কেন, এই মনুমেন্টকে গত ১০ বছর ধরে নেতানিয়াহু উভয় দেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখা এবং পুতিন-নেতানিয়াহু বন্ধুত্বকে টেকসই করার মাধ্যম বা উপলক্ষ হিসাবে ব্যবহার করে আসছেন।

গত বছর সেপ্টেম্বরে নেতানিয়াহুর রাশিয়া সফরের সময় পুতিন বলেছিলেন, ‘আমাদের সম্পর্ক গুণগতমানে উত্তীর্ণ হয়েছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘সরাসরি বলব, আমাদের সুসম্পর্ক, সেটি নিরাপত্তা বা সামরিক সহযোগিতা যা-ই হোক শুধু আপনার কারণেই এতটা অর্জিত হয়েছে।’ সমুদ্রবেষ্টিত এলাকা সোচিতে সভা করার সময় এক অনুষ্ঠানে পুতিন এমনটি বলেছিলেন। তিনি আরো বলেন, দুটি দেশ নিয়মিত সংযোগ রক্ষা করে চলছে বিশ্বের বিভিন্ন ইস্যু ও বিষয় নিয়ে। এরই মধ্যে দুদেশের ট্রেড ভলিউমও বৃদ্ধি পেয়েছে। পুতিন জানান, নেতানিয়াহুর সমর্থনে রাশিয়া থেকে প্রয়োজনীয়সংখ্যক ইহুদিকে ইসরাইলে অভিবাসী করা হয়েছে ও আরো হবে। পুতিন আরো জানান, ইসরাইলের যেকোনো আমন্ত্রণে তিনি উজ্জীবিত ও খুশি হন।

ভিকি ওয়ার্ডের মতে, নেতানিয়াহু একজন 'grand chess master'। তিনি ট্রাম্পের সাথে লবিং করে পুতিনকে ধরেছেন আর রাশিয়ার সাথে ভালো সম্পর্ক স্থাপন করেছেন। তাদের পৃথক অতীত ও পৃথক স্টাইল থাকলেও তারা ‘একই সূতায় তৈরি’ বলে ভিকি অভিমত দিয়েছেন। এই তিনজন একজনকে অপছন্দ করেন। তিনি হলেন, ওবামা এবং তার সব কাজকর্ম ও নীতিমালা। প্রধানত লিবারেল আইডিয়া ও লিবারেল পররাষ্ট্রনীতি। হোয়াইট হাউজে প্রবেশ করেই ট্রাম্প ওবামার সব কিছু ছিঁড়ে টুকরা টুকরা করে দিয়েছিলেন। নেতানিয়াহু এতে ইন্ধন যোগান, পুতিন হাততালি দেন। পুতিন-নেতানিয়াহু সৌদি রাজতন্ত্রকে সব সাপোর্ট দিয়েছেন, আরব বিরোধ ও বিভক্তিতে ইন্ধন যুগিয়েছেন। মিসরের স্বৈরশাসক সিসি তাদের প্রিয় ব্যক্তিত্ব, তেমনিভাবে ব্রাজিলের বলসোনারো, হাঙ্গেরির ভিক্টর ওরবানও। এসব ব্যক্তিত্ব ও বিষয় নেতানিয়াহু, পুতিন ও ট্রাম্পকে সংযুক্ত করে রেখেছে। এসব একাধিক কারণে আলজাজিরার বিশ্লেষক মারওয়ান বিশারা নেতানিয়াহুকে ‘উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন রাষ্ট্রনায়ক’ বলে অভিহিত করেছেন।

যদিও ইরানকে ‘মন্দ আঞ্চলিক অভিনেতা’ হিসেবে চিত্রিত করা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের ডেমোক্রেটরা ও রিপাবলিকানরা ইরানের পরিবর্তে রাশিয়াকেই বিপজ্জনক বৈশ্বিক শত্রু মনে করেন এবং মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর পুতিনকে কাছে টেনে নিতে চায় না। কিন্তু নেতানিয়াহু উভয় দিকে, যুক্তরাষ্ট্রের নেতাদের সাথে এবং পুতিনের সাথে মধুর সম্পর্ক গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছেন।

পুতিন ও ট্রাম্প একই চিন্তাভাবনা করলেও দেশের জনগণ সবকিছুতে উল্টোটাই ভাবেন। সাইবার যুদ্ধ থেকে পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ, ইউরোপে আঞ্চলিক নিরাপত্তা ইস্যু, মধ্যপ্রাচ্য, যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে রাশিয়ার উৎসাহ- সবই। এ সব কিছু চলমান থাকা সত্ত্বেও নেতানিয়াহু উভয় শিবিরে সমান জনপ্রিয় ও শক্তিশালী। পুতিন ও ট্রাম্পের মধ্যে শীর্ষ বৈঠক ব্যর্থ হলেও নেতানিয়াহু ট্রাম্পের সাথে দুই বছরে পাঁচটি বড় বৈঠক করেছেন যার সবই ফলপ্রসূ এবং বিগত চার বছরে ১৩টি সমান সার্থক বৈঠক হয়েছে। নেতানিয়াহুকে একজন ‘স্টার নেটওয়ার্ককার’ বলা হয়। কেননা তিনি জানেন, ‘কোন হাতের আঙটিতে চুমু খেতে হবে’। রাশিয়া একমাত্র বিশ্বশক্তি যে মধ্যপ্রাচ্যের মুখ্য শক্তিগুলোর সাথে সম্পর্ক রাখে, হামাস, হিজবুল্লাহ, ইরান, সৌদি আরব, তুরস্ক ও মিসর সবার সাথে। নেতানিয়াহু রাশিয়ার কাছে থেকে এসব বৈঠকের সংক্ষিপ্তসার সংগ্রহ করে নিজেকে তথ্যসমৃদ্ধ রাখেন বলে জানা যায়।

পুতিনের সাথে নেতানিয়াহুর এতই মধুর সম্পর্ক যে, যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম কূটনীতিকদের সতর্ক থাকতে বলেছেন এবং সিরিয়া নিয়ে এমন কোনো চুক্তি না করার অনুরোধ জানিয়েছেন যাতে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো স্বার্থের ক্ষতি না হয়। পরবর্তীতে এই গ্রাহামই সিরিয়ার গোলান মালভূমি সংযুক্তকরণে নেতানিয়াহুর পাশে দাঁড়িয়ে সমর্থন দেয়ার জন্য ওয়াশিংটনকে অনুরোধ জানান। রুশ নেতা পুতিন কখনো ইসরাইলের গোলান হাইটস, জেরুসালেম ও পশ্চিম তীর সংযুক্তকরণের বিরুদ্ধে কথা বলেননি। নেতানিয়াহুর এসব পদক্ষেপে পুতিন সব সময় চুপ থাকেন। হয়তো নেতানিয়াহু যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়াকে মধ্যপ্রাচ্যে নতুন আবহ সৃষ্টি করতে একজোট করতে পারেননি; তবে ট্রাম্প ও পুতিনকে ইসরাইলের পক্ষে ও পূর্ব ভূমধ্যসাগরে কাজ করাতে সক্ষম হয়েছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে Axis of Resistance বা ‘প্রতিহত করার অক্ষশক্তি’ বলে একটি কথা আছে। এসব শক্তির মধ্যে রাশিয়া, ইরান, সিরিয়া, ইরাক, গাজা, লেবানন, আফগানিস্তানের কিছু অংশ, ইয়েমেন, চীন ও উত্তর কোরিয়া রয়েছে। উত্তর কোরিয়াকে এই দলে নিতে অনেকে নারাজ। ভেনিজুয়েলা, বলিভিয়া ও কিউবাও এই দলে পড়ে।

যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইল সাংস্কৃতিক ও আদর্শিকভাবে একে অপরের সন্নিকটে। জানা যায়, ইসরাইল, যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, সৌদি আরব এবং আইএস, আলকায়দাসহ আরো কিছু চরমপন্থীকে সাপোর্ট দিয়েছে সিরিয়াকে টুকরা টুকরা করার জন্য। ইসরাইলের বিষয়ে রাশিয়ার অভিমত ইরানের মতো নয়। মনে রাখতে হবে, ইসরাইলে অনেক রাশিয়ান ইহুদি অভিবাসী বসবাস করে, তারাও রাজনীতির বড় এক চালিকাশক্তি।
ইসরাইল সব সময় চীন ও রাশিয়াকে বলে আসছে, ইসরাইল ওয়াশিংটনের ‘গেটওয়ে’। এই দুই দেশ যদি ইসরাইলের সাথে সুসম্পর্ক রাখে তবে ইসরাইল যুক্তরাষ্ট্রের সাথে বিভিন্ন সমস্যা উত্তরণে সহায়তা করতে পারবে।’

লেখক : অবসরপ্রাপ্ত যুগ্মসচিব ও গ্রন্থকার


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us