কিছু না করেও মাসে লাখ টাকা উপার্জন!

অন্য এক দিগন্ত ডেস্ক | Feb 14, 2021 01:01 pm
সোজি মরিমতো

সোজি মরিমতো - ছবি সংগৃহীত

 

কোনো কাজ করতে হবে না। কিন্তু, রোজই ফুলে-ফেঁপে উঠবে ব্যাংক ব্যালেন্স। কী ভাবছেন? অসম্ভব! মোটেই নয়। হাতের সামনেই রয়েছে উদাহরণ- জাপানের সোজি মরিমতো। কয়েক ঘণ্টায় ১০ হাজার ইয়েন (বাংলাদেশী মুদ্রায় ৮ হাজার টাকার বেশি) আয় করেন। কোনো কাজ না করেই। তার এই আয়ের অভিনব কৌশল নিয়ে হইচই পড়ে গিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।

কী সেই কৌশল? জবাব পেতে ফিরে যেতে হবে ২০১৮ সালের জুন মাসে। ট্যুইটারে একটি বিজ্ঞাপন দিয়েছিলেন সোজি। লিখেছিলেন, ‘আমাকে ভাড়া নেয়া যাবে। কিন্তু, আমি কোনো কাজ করব না। ’ তাহলে তাকে ভাড়া নিয়ে কী হবে? সেই প্রশ্নেরও জবাব ছিল ওই পোস্টেই। তিনি লেখেন, ‘আপনি কি একা দোকানে যেতে চাইছেন না? খেলতে বসার জন্য একজন সহযোগী খুঁজছেন? কাউকে আপনার পাশে চাইছেন? তাহলে আমাকে ভাড়া নিতে পারেন। তবে ছোট ছোট জিনিস ছাড়া আমি আর কিছুই করতে পারি না।’

দ্রুত ভাইরাল হয়ে যায় এই ট্যুইট । সোজির সঙ্গ পেতে যোগাযোগ করেন অনেকেই। প্রথম দিকে বিনামূল্যেই পরিষেবা দিতেন। কিন্তু, ক্লায়েন্টের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে শুরু করে। অগত্যা, পরিষেবার জন্য অর্থ নিতে শুরু করেছেন সোজি। তাকে ভাড়া নিতে গেলে এখন ১০ হাজার ইয়েন দিতে হচ্ছে। সঙ্গে খাওয়া-দাওয়া, যাতায়াত ও অন্যান্য খরচ। আশ্চর্যের বিষয় তাতেও বিন্দুমাত্র কমেনি তার চাহিদা।

৩৭ বছরের সোজির দাবি, এখন পর্যন্ত ৩ হাজারের বেশি মানুষকে পরিষেবা দিয়েছেন। দিনে ৩-৪ জন ক্লায়েন্ট তাকে ভাড়া নেন। চাহিদা অবশ্য আরো বেশি। কিন্তু, সময়ের অভাবে সকলের অনুরোধ রাখতে পারেন না।

কারা ‘ভাড়া’ নেয় সোজিকে? জবাবে অভিনব এই পেশার ‘আবিষ্কর্তা’ জানিয়েছেন, কেউ লাঞ্চে নিয়ে যান, কেউ ছবি তোলার আবদার করেন। কারো হয়তো সম্পর্ক ভেঙে যাচ্ছে। একাকিত্ব কাটাতে আমাকে ভা‌ড়া নেন। আবার অফিসের কাজ করতে করতে মানসিকভাবে ভেঙে পড়া ব্যক্তিরাও ডেকে পাঠান।

নিজের কাজ সম্পর্কেও যথেষ্ট ‘ফোকাসড’ তিনি। এক সাক্ষাত্কারে সোজি জানিয়েছেন, ‘আমি কারো বন্ধু বা সহযোগী নই। সম্পর্কের বিরক্তিকর বিষয়গুলোর ধারপাশ দিয়ে যাই না। মানুষের একাকিত্ব কাটাতে সাহায্য করি।’

অভিনব এই পেশা বেছে নেয়ার জন্য চাকরি পর্যন্ত ছেড়ে দিয়েছেন সোজি। নতুন কেরিয়ার নিয়ে লিখে ফেলেছেন একটি বইও। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দ্রুত বাড়ছে তার জনপ্রিয়তা। ট্যুইটার অ্যাকাউন্ট দেখাচ্ছে, সোজির ফলোয়ার সংখ্যা ২ লাখ ৭০ হাজারের বেশি। কী ভাবছেন? এমন একটা পেশায় নাম লেখাবেন নাকি!

চাচার কঙ্কাল দিয়ে তৈরি গিটারে সুরের সাধনা যুবকের

মানুষের কঙ্কাল দিয়ে তৈরি গিটার! তাতেই অনুরণিত হচ্ছে সুরের মূর্চ্ছনা! ছ’টি তারে বাঁধা পড়ছে রিদম। তার সঙ্গে গলা মিলিয়ে গান গেয়ে সবাইকে মাত করছেন ফ্লোরিডার এক যুবক। তার এই কীর্তিতে তাজ্জব নেটবিশ্ব। কেউ কেউ আঁতকে উঠে বলছেন—‘হাড়গোড় দিয়েও বাদ্যযন্ত্র! ভাবাই যায় না!’

নরওয়ের ব্ল্যাক মেটাল ও মেটাল মিউজিকের ভক্ত ওই যুবক। সারাক্ষণ এসব নিয়েই মেতে থাকেন। নিজেকে পরিচয় দেন ‘প্রিন্স মিডনাইট’ বলে। তার সঙ্গীতের প্রেমে পড়ার পিছনে অন্যতম অবদান ছিল কাকা ফিলিপের। তাই কাকার মৃত্যুর পরও তাকে বাঁচিয়ে রাখতে চান প্রিন্স। সে কারণে শেষকৃত্য না করে তার হাড়গোড় দিয়েই বানিয়ে ফেলেন ৬ স্ট্রিং বা তারের ইলেকট্রিক গিটার। যুবকের কথায়, চাচা মারা গিয়েছেন ঠিকই, কিন্তু তাকে সুরের ভূবনে বাঁচিয়ে রাখতে, তাকে শ্রদ্ধা জানাতেই এ হেন সিদ্ধান্ত। শুধু হাড় দিয়ে গিটার বানানোই নয়, সেটি বাজিয়ে একটি ভিডিও শেয়ার করেছেন প্রিন্স। ঝড়ের গতিতে সেই ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। কিন্তু মরা মানুষের হাড় দিয়ে তৈরি গিটার শুনে অনেকে আবার আঁতকেও উঠেছেন।

চাচার হাড় দিয়ে তৈরি গিটারটিকে বেস গিটার হিসেবে ব্যবহার করেন প্রিন্স। তাতে স্ট্রিং, নব, গিটার নেক, জ্যাক, পিকআপস ও ইলেক্ট্রনিক বোর্ড লাগিয়েছেন। এমন এক উদ্ভট কাজ নিয়ে ওই যুবকের বক্তব্য, মেটাল মিউজিকের প্রতি আমার অনুরাগ বরাবরই। এর পিছনে আসল মানুষটি ছিলেন আমার কাকা। তাঁর হাড় দিয়ে গিটার বানাতে গিয়ে অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হয়েছে আমাকে। এটা সত্যিই, আমার কাছে গিটার বানানোটা ছিল একটা চ্যালেঞ্জের। দু’জন কাঠমিস্ত্রিকে বলেছিলাম। কিন্তু তারা বিষয়টি শোনামাত্রই হাতগুটিয়ে নেন। অবশেষে আমি নিজেই বানিয়ে ফেলি। এ ধরনের একটি কাজ করতে পেরে আমি গর্বিত। ওই গিটারে সুর তুললেই আমি চারর সংস্পর্শ অনুভব করি। আমার জীবনে তার কী সাঙ্ঘাতিক প্রভাব ছিল, তাও টের পাই।

মৃত্যুর পর ফিলিপের লাশ মেডিক্যাল কলেজকে দান করা হয়। সেখানে ডাক্তারি পড়ুয়াদের জন্য তার হাড়গোড় ব্যবহার করার কথা ছিল। কিন্তু একসময় মেডিক্যাল কলেজের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেয়া হয়, দেহটি আর তাদের প্রয়োজন নেই। আবার পরিবারও তখন লাশটির শেষকৃত্য করতে অরাজি ছিল। তখনই প্রিন্স সিদ্ধান্ত নেন, কাকার শরীরের হাড় দিয়ে গিটার বানাবেন তিনি। ওই যুবকের কথায়, গিটারে সুর তুলেই প্রতিদিন আমি চাচার জীবনকে উদযাপন করি। তার প্রতি অর্পণ করি শ্রদ্ধাঞ্জলি।

সূত্র : বর্তমান


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us