ফিলিস্তিনিদের প্রতি সমর্থন : অপপ্রচারে ক্ষেপেছেন ডুয়া লিপা

অন্য এক দিগন্ত ডেস্ক | May 24, 2021 06:48 pm
ডুয়া লিপা

ডুয়া লিপা - ছবি সংগৃহীত

 

দ্যা নিউইয়র্ক টাইমস পত্রিকার একটি সম্পূর্ণ পাতায় সুপাস্টার পপ গায়িকা ডুয়া লিপাকে ইহুদিবিরোধী বলে অভিযুক্ত করে বিজ্ঞাপন দেয়া হয়েছে। শনিবার ডুয়া লিপা তার টুইটার অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে এসব অভিযোগের তীব্র সমালোচনা করেন।

এ বিজ্ঞাপনটি দিয়েছে ‘দ্যা ওয়ার্ল্ড ভ্যালুস নেটওয়ার্ক’। দ্যা নিউইয়র্ক টাইমস পত্রিকার ওই বিজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ডুয়া লিপা, বেল্লা হাদিদ ও জিজি হাদিদ ব্যাপক প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব যারা ইহুদি রাষ্ট্রটির (ইসরাইলের) বদনাম করছেন এবং ইসরাইলকে জাতিগত নির্মূল অভিযান চালানোর দায়ে অভিযুক্ত করছেন।

ওই বিজ্ঞাপনে তাই বলা হয় যা দ্যা ওয়ার্ল্ড ভ্যালুস নেটওয়ার্ক তাদের ওয়েবসাইটে বলেছিল। তারা অভিযোগ করেছেন যে ডুয়া লিপা, বেল্লা হাদিদ ও জিজি হাদিদ ইহুদিবিরোধী। তারা তিনজনের এক অপবিত্র জোট গঠন করেছেন আর ইহুদি জনগণকে শয়তান বলে চিত্রিত করার চেষ্টা করছেন। তারা জোর দিয়ে বলতে চাচ্ছেন যে ইহুদিদের আত্মরক্ষার কোনো অধিকার নেই।’

ওই বিজ্ঞাপনে একটি ছবিও যুক্ত করা হয়, যেখানে এ তিন নারীকে চমৎকারভাবে মডেলিং করতে দেখা যায়। তার ওপরে একটি শিরোনাম দেয়া হয়। তাতে লেখা হয়েছে, ‘হামাসের নতুন প্রভাবশালী সেনাবাহিনীর সাথে পরিচিত হন।’

ডুয়া লিপা প্রেম করছেন আনোয়ার হাদিদের সাথে। বেল্লা হাদিদ ও জিজি হাদিদের ছোট ভাই হলেন এ আনোয়ার হাদিদ।

এদিকে ডুয়া লিপা তার টুইটার অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে এসব অভিযোগের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘দ্যা ওয়ার্ল্ড ভ্যালুস নেটওয়ার্ক নির্লজ্জভাবে আমার নাম ব্যবহার করছে যাতে করে অসত্য তথ্য দিয়ে তারা তাদের মন্দ প্রচারণা অব্যাহত রাখতে পারে। ...আমি সকল নিপীড়িত মানুষের সাথে সংহতি প্রকাশ করছি। এছাড়া সকল ধরনের বর্ণবাদকে প্রত্যাখান করছি।’

দু’বোন বেল্লা হাদিদ ও জিজি হাদিদ প্রকাশ্যে ফিলিস্তিনিদের সমর্থন করছেন। ফিলিস্তিন হলো তাদের পৈত্রিক ভিটা। ইসরাইল যে সময় গাজার ওপর হামলা চালায় তখন তারা ইসরাইলের তীব্র সমালোচনা করেন।

ডুয়া লিপা লন্ডনের নাগরিক। তারা বাবা-মা মুসলিম। তিনি অনেক দিন চুপ থাকার পরে, তার টুইটার অ্যাকাউন্টে জেরুসালেমের শেখ জাররাহ ফিলিস্তিনি বসতি রক্ষা করার বিষয়ে একটি পোস্টকে সমর্থন দিয়ে তা শেয়ার করেন।

অন্যান্য সেলিব্রিটিদেরকে দেখা গেছে তারা তাদের টুইটার অ্যাকাউন্টে ফিলিস্তিনের প্রতি সমর্থন দেখাচ্ছেন। তাদের মধ্যে আছেন গায়ক রজার ওয়াটার্স, জায়ান আর দ্যা উইকেন্ড ও অ্যাভেঞ্জার সিরিজের জনপ্রিয় অভিনেতা মার্ক রাফালো।

ফিলিস্তিন ও ইসরাইরের মধ্যে সাম্প্রতিক দ্বন্দ্বের অন্যতম কারণ শেখ জাররাহ এলাকা। সাম্প্রতিক সময়ে শেখ জাররাহ মহল্লা থেকে ফিলিস্তিনি অধিবাসীদের উচ্ছেদে ইসরাইলি আদালতের আদেশের জেরে পবিত্র রমজান মাসে অধিকৃত পূর্ব জেরুসালেমে ফিলিস্তিন ও ইসরাইলের মধ্যে তীব্র উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। বিক্ষুব্ধ ফিলিস্তিনিদের ওপর মসজিদুল আকসা চত্ত্বরে ইসরাইলি সামরিক সামরিক বাহিনী হামলা চালালে এ সংঘাতের রেশ পশ্চিম তীর, গাজা ও ইসরাইলেও ছড়িয়ে পড়ে।

ইসরাইলি যুদ্ধবিমান ১০ মে থেকে গাজায় হামলা শুরু করে। শুক্রবার ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ সংগঠন হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি না হওয়া পর্যন্ত গাজার সমুদ্র তীরবর্তী এলাকাগুলো বিধ্বস্ত করে দেয়া হয় ইসরাইলের বিমান বাহিনী।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, টানা ১১ দিনের ইসরাইলি হামলায় ৬৬ শিশু ও ৩৯ নারীসহ অন্তত ২৪৮ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। হামলায় আহত হয়েছেন আরো এক হাজার নয় শ' ৪৮ জন।

১৯৬৭ সালের আরব-ইসরাইল যুদ্ধের সময় ইসরাইল পূর্ব জেরুসালেম দখল করে যেখানে আল-আকসা মসজিদ অবস্থিত। পরে ১৯৮০ সালে ইসরাইল সম্পূর্ণ জেরুসালেম শহর দখল করে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় তাদের এ পদক্ষেপকে কখনোই স্বীকৃতি দেয়নি।

সূত্র : ডেইলি সাবাহ

আল-আকসায় ইসরাইলি ইহুদিদের জোরপূর্বক প্রবেশের কারণে শান্তি বিঘ্নিত হচ্ছে : ফিলিস্তিন

ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, অধিকৃত পূর্ব জেরুসালেমে ইসরাইলি বসতি স্থাপনকারী ইহুদিরা জোরপূর্বক আল-আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণে প্রবেশ করায় ফিলিস্তিনি ও ইসরাইলের মধ্যেকার যুদ্ধ-বিরতি চুক্তি ঝুঁকির মধ্যে পড়বে। এছাড়া ফিলিস্তিনি ও ইসরাইলের মধ্যেকার শান্তি প্রক্রিয়াও হুমকির মধ্যে পড়বে। রোববার তারা এ বক্তব্য দেন।

জেরুসালেমের এ পবিত্র স্থাপনাটির পর্যবেক্ষণকারী জর্ডান নিয়ন্ত্রিত ইসলামি ওয়াকফ ডিপার্টমেন্টের দেয়া তথ্য অনুসারে, ‘রোববার ইসরাইলি বসতি স্থাপনকারীরা অবৈধভাবে পূর্ব জেরুসালেমের এ বিরোধপূর্ণ পবিত্র স্থাপনাটির চত্বরে প্রবেশ করে। তারা এ সময় পুলিশি নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যে ছিল। তিন সপ্তাহের বিরতির পর তারা মসজিদুল আকসায় প্রবেশ করেছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা আনাদোলু এজেন্সিকে বলেন যে ভারী অস্ত্র সজ্জিত ইসরাইলি পুলিশ বাহিনী ফিলিস্তিনি যুবকদের মসজিদুল আকসায় প্রবেশে বাধা দেয়। সকাল থেকে ইসরাইলি পুলিশ মসজিদুল আকসায় প্রবেশের ওপর এ নিষেধাজ্ঞা জারি করে। এ সময় তারা মসজিদ কপ্লেক্সে প্রবেশ করার ক্ষেত্রে সাধারণ মুসল্লিদেরও বাধা দেয়।

ফিলিস্তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ইহুদি বসতি স্থাপনকারীদের এ জোরপূর্বক প্রবেশ শান্তি প্রতিষ্ঠা ও শান্তি প্রক্রিয়া এগিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে সকল প্রচেষ্টার প্রতি এক ধরনের চরম অবজ্ঞা প্রদর্শন।

এছাড়া পূর্ব জেরুসালেমের পাশ্ববর্তী শেখ জাররাহ এলাকায় ইসরাইলি অবরোধ ও নিষেধাজ্ঞাসহ ওই এলাকার অধিবাসীদের ওপর নিপীড়নের নিন্দা জানিয়ে ফিলিস্তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, ‘ইসরাইলের এসব কার্যক্রম যুদ্ধবিরতি চুক্তি ও শান্তি প্রক্রিয়া এগিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে ঝুঁকিপূর্ণ পদক্ষেপ।’

ফিলিস্তিন ও ইসরাইরের মধ্যে সাম্প্রতিক দ্বন্দ্বের অন্যতম কারণ এ শেখ জাররাহ এলাকা। সাম্প্রতিক সময়ে শেখ জাররাহ মহল্লা থেকে ফিলিস্তিনি অধিবাসীদের উচ্ছেদে ইসরাইলি আদালতের আদেশের জেরে পবিত্র রমজান মাসে অধিকৃত পূর্ব জেরুসালেমে ফিলিস্তিন ও ইসরাইলের মধ্যে তীব্র উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। বিক্ষুব্ধ ফিলিস্তিনিদের ওপর মসজিদুল আকসা চত্ত্বরে ইসরাইলি সামরিক সামরিক বাহিনী হামলা চালালে এই সংঘাতের রেশ পশ্চিম তীর, গাজা ও ইসরাইলেও ছড়িয়ে পড়ে।

ইসরাইলি যুদ্ধবিমান ১০ মে থেকে গাজায় হামলা শুরু করে। শুক্রবার ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ সংগঠন হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি না হওয়া পর্যন্ত গাজার সমুদ্র তীরবর্তী এলাকাগুলো বিধ্বস্ত করে দেয়া হয় ইসরাইলের বিমান বাহিনী।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, টানা ১১ দিনের ইসরাইলি হামলায় ৬৬ শিশু ও ৩৯ নারীসহ অন্তত ২৪৮ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। হামলায় আহত হয়েছেন আরো এক হাজার নয় শ' ৪৮ জন।

আল-আকসা মুসলিমদের তৃতীয় পবিত্র স্থান। ইহুদিরা একে ‘টেম্পল মাউন্ট বলে অভিহিত করে থাকে। তারা দাবি করে থাকে যে এটা প্রাচীন আমলে নির্মিত দুটি ইহুদি মন্দিরের নির্মাণস্থল।

২০০৩ সাল থেকে ইসরাইল ইহুদি বসতি স্থাপনকারীদের প্রতিদিন আল-আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণে প্রবেশ করার অনুমতি দিয়েছে।

১৯৬৭ সালের আরব-ইসরাইল যুদ্ধের সময় ইসরাইল পূর্ব জেরুসালেম দখল করে যেখানে আল-আকসা মসজিদ অবস্থিত। পরে ১৯৮০ সালে ইসরাইল সম্পূর্ণ জেরুসালেম শহর দখল করে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় তাদের এ পদক্ষেপকে কখনোই স্বীকৃতি দেয়নি।

সূত্র : ইয়েনি সাফাক


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us