মহাকবি ইকবাল : অনন্য জীবনের রূপকার

ড. তাহমিনা বেগম | Nov 18, 2021 04:04 pm
মহাকবি ইকবাল

মহাকবি ইকবাল - ছবি সংগৃহীত

 

একজন কবির প্রকৃত পরিচয়, কবির ভেতর পৃথিবীর চিত্র জানার আগ্রহ যুগ যুগ ধরে একইরকমভাবে প্রবহমান। সাধারণ মানুষের কল্পনা যেখানে স্তিমিত সেখানেই একজন কবির ভুবন বিস্তৃত। অন্তহীন দূরবর্তী সীমানার কল্পনা কবিতায় তুলে এনে অনেকেই এই বিশ্বকে নতুন স্বাদ এনে দিয়েছেন। আকাশের মধ্যেও জগৎ আছে তার। বাতাসের সুরের কাঁপন কেমন হয় সেই অশরীরি স্পর্শ করাই একজন কবির কাজ। নীলিমার নীলে আঁকা অপরূপ সৌন্দর্যকে কবি তার বুকে তুলে শব্দের ডালায় সাজান নিপুণতায়। এমনই একজন কবি আল্লামা ইকবাল অস্থিরতা, অন্যায়-অবিচার আর অজ্ঞানতার অন্ধকারে নিমজ্জিত বস্তুবাদী সভ্যতার স্বরূপ উন্মোচন করা এক অনন্য ব্যক্তিত্ব তিনি। বিশ্বব্যাপী ইসলামী পুনর্জাগরণ এবং মুসলিম উন্মাহর আত্ম-নিয়ন্ত্রণাধিকার প্রতিষ্ঠায় ইকবালের ভূমিকা অনস্বীকার্য। দর্শন ও রাজনীতি চর্চায় বিশেষ ভূমিকার ফলে প্রাচ্য এবং পাশ্চাত্যের মধ্যে আল্লামা ইকবালের বিষয়ে সীমাহীন আগ্রহের চিত্র চোখে পড়ে। একজন কবি তার মনোজগতে কতটা বিস্তৃত তারই স্বরূপ প্রকাশ পায় তার সৃষ্টিকর্মের বিশালত্বে।

আল্লামা মুহাম্মদ ইকবাল ১৯৭৭ সালের ৯ নভেম্বর পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের শিয়ালকোটে জন্মগ্রহণ করেন। ২১ এপ্রিল ১৯৩৮ সালে পৃথিবী থেকে চিরবিদায় নেন তিনি। তাঁর পিতার নাম শেখ নূর মোহাম্মদ এবং মাতার নাম ইমাম বিবি। দুই ভাই ও চার বোনের মধ্যে ইকবাল ছিলেন সর্বকনিষ্ঠ। কবির পিতা-মাতা উভয়ই ছিলেন ধর্মপ্রাণ ও জ্ঞানী ব্যক্তি। শৈশব থেকেই কবি ছিলেন অত্যন্ত মেধাবী। শিক্ষা জীবনের প্রতিটি স্তরেই তিনি অসামান্য সাফল্যের চিহ্ন রাখেন। আলোকিত একটি জীবন গঠনে এর প্রভাব দেখা যায় তার রচনায়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ সফরের মধ্য দিয়ে বিভিন্ন স্থানসহ কৃষ্টি-কালচারের অনবদ্য চিত্র দেখা যায় তার কবিতায়। সময়ের কালক্ষেপণে তার নামের সাথে যুক্ত হয় ‘কবি ইকবাল’, ‘আল্লামা ইকবাল’, ‘গোলে লাহোর’, ‘ইকবাল-ই-লাহোরী’। ফারসি, উর্দু ও ইংরেজি ভাষায় তিনি কবিতা রচনা করেছেন। বিশেষত তাঁর ফারসি ও উর্দু কবিতা আধুনিক যুগের সাহিত্যে শ্রেষ্ঠ হিসেবে বিবেচিত।

বিংশ শতাব্দীর ইসলামী রেনেসাঁর অন্যতম দিকপাল হিসেবে খ্যাত আল্লামা ইকবাল। মুসলিম মিল্লাতের পরাধীনতার এক দুর্যোগপূর্ণ সময়ে এই মহান ব্যক্তির আবির্ভাব। তার চিন্তাধারা ছিল বাস্তবতার নিরিখে। কবির বর্ণনায় মানব জীবনের প্রতিটি স্তরের ছিল ভিন্ন ভিন্ন ব্যাখ্যা। জীবনকে জয় করার লক্ষ্যে তিনি যুব সম্প্রদায়কে সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। ইসলামের সৌন্দর্যকে অন্তরে ধারণ করে পাশ্চাত্য দর্শনের বিষয়ে শক্ত অবস্থান নিয়েছেন। তিনি জার্মান কবি গেটের 'West Ostlicher Divan' কাব্যের জবাবে ‘পায়ামে মাশরেক’ (প্রাচ্যের সংবাদ) এবং ইটালীয় কবি দান্তের ''The Divin Comede' কাব্যেও প্রেক্ষিতে ‘জাভিদ নামা’ (অমর লিপি) কাব্য রচনায় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।

শেষ থেকেই নতুন কিছুর প্রারম্ভ। নিজেকে নিবেদন, আত্মসমর্পণ বা আত্মার শুদ্ধিকরণ যাই বলা হোক না কেন সবই কবি আল্লামা ইকবালের মধ্যে দেখা যায়। তিনি একজন কবি হলেও বড় মাপের দার্শনিক হিসেবেও নিজেকে পরিচিত করে তুলেছেন। এমনই একটি দর্শননির্ভর গ্রন্থ ‘আসরারে খূদী’ যা বিশ্বের নানা ভাষায় অনূদিত ও পঠিত। পরিণত জীবনবোধই একজন কবিকে উচ্চতার শিখরে নিয়ে যায়। এভাবেই আল্লামা ইকবাল তার কবিতায় ইসলামের প্রকৃতি, আত্মাতত্ত্ব, ভাগ্য-জীবন, রাজনীতি, শিক্ষা, সূফীতত্ত্ব, স্বদেশ চিন্তা, প্রেম প্রভৃতি বিষয়ের সমাহার ঘটিয়েছেন। আল্লামা ইকবালের চিন্তা একটি দৃঢ় ও স্থায়ী সত্যের ওপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত যা পূর্ব ও পশ্চিমের দ্বারা প্রভাবিত ছিল না। নিঃসন্দেহে তার কর্মগুলো কালজয়ী ও কালোত্তীর্ণ। কবির ভাষায়,

জন্মেছি এই পৃথিবীতে নতুন সূর্যের মতো নবীন উচ্ছ্বাসে,
এখানের কোনো তত্ত্ব আত্মস্থ করিনি নতুন কোনো উল্লাসে।

ইসলামের চিন্তা দর্শনের মধ্যে মুসলিম জাতি এবং যুবসমাজের করণীয় কর্তব্য সম্পর্কিত আলোচনা করেছেন কবি ‘পায়ামে মাশরেক’ গ্রন্থে। প্রত্যেক মানুষের জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময় তার যৌবনকাল। এ সময়েই মানুষ তার মেধা-মননশীলতাকে জীবনগঠন এবং রাষ্ট্র ও সমাজ বির্নিমাণে ভূমিকা রাখে। সময়কে মূল্যায়ন করে অনেক পথ হাঁটা যায়। সঠিক উপলব্ধিই পারে একজন মানুষকে ইসলামী চেতনায় আলোকিত করতে। আশা জাগাতে। প্রাণের স্পর্শময় আনন্দ হতে। স্বপ্নবিহীন কোনো ঠিকানা হয় না। স্বপ্ন ও আশাই মানুষকে তার লক্ষ্যে পৌঁছে দেয়। বর্তমান সময়ে আকাশ সংস্কৃতি যেমন যুবকদের লক্ষ্যহীন করে দিচ্ছে। সেই সময়েও পাশ্চাত্য সংস্কৃতির বলয় জাতির দুরবস্থার কারণ ছিল। আল্লামা ইকবাল যুবসম্প্রদায়কে তাই পাশ্চাত্যের অন্ধ অনুকরণ থেকে নিজেদের কৃষ্টি-কালচারের দায়িত্ব গ্রহণের তাগিদ দিয়েছেন। শুধু তাই নয় ইকবালের ছেলে জাভিদকে উদ্দেশ করে বর্তমান যুবসমাজের প্রতি উপদেশবাণী প্রদান করেছেন।

জীবন এবং জীবনসম্পর্কিত ভাবনাই ইকবাল তার লেখনীতে তুলে এনেছেন। তাঁর পায়ামে মাশরেক গ্রন্থের ভূমিকায় কবি দ্ব্যর্থহীনভাবে প্রকাশ করেন এই বলে যে, একটি মানুষের জীবনগল্পে তখনই পরিবর্তনের সূচনা সম্ভব যখন সে তার আত্মাকে সমৃদ্ধির পথে নিয়ে যাবে। প্রাচ্যের জন্য তার মেসেজ এটাই যেখানে স্রষ্টার সৃষ্টির প্রতি গভীর অনুভব অনুপস্থিত সেখানে কোনোভাবেই বিপ্লবাত্মক পরিবর্তনের ভাবনার অবকাশ নেই। ফুলে-ফলে বাগান যখন হেসে ওঠে তখন আর বলতে হয় না কতটা শ্রমের এ আয়োজন। তেমনি কোনো নতুন ভাবনা নতুন পরিকল্পনা সার্থক হবে মানুষের মনস্তাত্ত্বিক দৃঢ়প্রত্যয়ে। যেমন পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে : ‘আল্লাহ কোনো জাতির অবস্থার পরিবর্তন করেন না, যতক্ষণ না তারা নিজেরাই নিজেদের অবস্থার পরিবর্তন সাধনে সচেষ্ট হয়।’( সূরা আর-রাআদ, আয়াত: ১১) আল্লামা ইকবাল বলেন,

‘তোমার দোয়ায় ভাগ্যের হবে না কোন বদল,
তবে এটা সম্ভব যে, এর দ্বারা তুমি বদলে যাবে।’

আল্লাহর একত্ববাদে বিশ্বাসী ইকবাল তার সমগ্র কবিতায় লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বা আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ (উপাস্য) নেই, এ কথা একাধিকবার উচ্চারণ করেছেন। কবির মতো, লা ইলাহা শুধু মুখে উচ্চারণের জন্য নয় বরং অন্তর দিয়ে বিশ্বাস ও মান্য করার বিষয়। কবি শুধু এতটুকুতেই থেমে থাকেননি বরং আল্লাহর ওপর পূর্ণ বিশ্বাস স্থাপনের সাথে তা জীবনের প্রতিটি স্তরে এর প্রতিফলন ঘটিয়েছেন। পাশ্চাত্যের প্রভাবে গা ভাসিয়ে আজ যুবসম্প্রদায় এ সত্য উপলব্ধি থেকে অনেক দূরে অবস্থান করছে। ইকবাল এহেন পরিস্থিতি অবলোকন করে তার ছেলে জাভিদকে উদ্দেশ করে বর্তমান যুবসম্প্রদায়কে তাওহিদ বা আল্লাহর একত্ববাদের ওপর বিশ্বাস স্থাপন করার এবং এর শক্তি দিয়ে আত্মাকে শক্তিশালী করে জীবন গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন। কবির ভাষায়,

‘হে বৎস! দূরদৃষ্টি আস্বাদনের শক্তি আমার থেকে নাও
লা ইলাহা’র দহন আমার থেকে শিখে নাও
লা ইলাহা বলছ? বল হৃদয়ের গভীর থেকে
তা হলে তোমার দেহ থেকে আসবে প্রাণের সুগন্ধি’

জীবন রাত-দিনের বিবর্তনের চেয়ে ঊর্ধ্বে এক চলমান বস্তু। গতিই জীবন যা বিলীনও হয় না আবার নিশ্চলও হয় না। সবসময়ের জন্যই মানুষ স্থায়ী হতে চায় কিন্তু এর পথ খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা করে না। কবি তার কবিতায় মানুষকে সৃষ্টির রহস্যে ডুবে থেকে জীবনের প্রতিটি স্তরের অনুসন্ধানে উৎসাহিত করেন। শরাবের তিক্ততার সাথে কষ্টে অর্জিত সাফল্যের বিশ্লেষণ করেন। জীবন হচ্ছে এমন এক রহস্য যার স্বরূপ হচ্ছে উদ্দীপনা ও চেতনা। জীবন নিয়ে অনুভবের গভীরতাই পারে রহস্যের দ্বার উন্মোচিত করতে। নতুনত্বই পরিবর্তনকে আন্দেলিত করে। পৃথিবীর ক্ষণিকের অতিথি আমরা সবাই। ধনী থেকে গরিবের শেষ ঠিকানা একটাই। তাইতো কবি মৃত্যুর কথা স্মরণ করিয়ে পরবর্তী প্রস্তুতির জন্য আহ্বান জানান তার কবিতার ছত্রে ছত্রে। যেমন আল্লাহ বলেন, ‘অচিরেই আমি তাদেরকে দেখাবো আমার নিদর্শন, যা রয়েছে দিগন্তজুড়ে এবং তাদের নিজেদের সত্তায়।’ (সূরা হা-মীম সেজদাহ, আয়াত : ৫৩)

আল্লাহ আরো বলেন, ‘তোমরা আল্লাহর রঙে নিজেকে রাঙিয়ে তুলো। আল্লাহর রং-এর চেয়ে উত্তম আর কী হতে পারে ? (সূরা বাকারা, আয়াত : ১৩৮)

কবির ভাষায়, ‘আমি একজন বিজ্ঞ ব্যক্তিকে জিজ্ঞেস করলাম, জীবন কী? তিনি বললেন, শরাব যেমনই তিক্ত, তেমনি সাফল্য কষ্টকর জীবনেই নিহিত।

এ পৃথিবীর যাবতীয় বস্তু মানবজাতির কল্যাণের জন্যই আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন। গাছ-পালা, পাহাড়-পর্বত, সমুদ্র, নদী-নালা, পশু-পাখি, কীট-পতঙ্গ সবই সৃষ্টির এক অপূর্ব নিদর্শন। পৃথিবী সৃষ্টির সাথে মানুষের অস্তিত্ব অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। ইকবাল সৃষ্টির আনন্দ ও জীবনের নানরকম উপকরণের বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন, জীবনের প্রকৃত স্বরূপ হলো মৃত্যু ও জীবন থেকে ভিন্ন একটি অবস্থা। কেবল প্রাণ থাকলেই তাকে জীবন বলে অভিহিত করা যায় না; মূলত সৃষ্টি আর কর্ম সম্পাদনের মধ্যেই রয়েছে জীবনের রূপ। যে সৃষ্টিতে যত বেশি মেতে উঠবে, সে ততটাই খুঁজে পাবে জীবনের স্পন্দন। সেখানে জীবনরহস্য বিমূর্ত থাকবে না; বরং তা মূর্ত হয়ে উঠবে। আপন আঁধারেই মানুষ তার পথ করে নিতে পারে যদি তার মধ্যে সৃষ্টির আকাক্সক্ষা থাকে। এভাবেই জীবনের খুটিনাটি দেখার চোখ এবং সূক্ষ্মতাকে স্পর্শ করার দিব্যদৃষ্টি পরিবার সমাজ এবং রাষ্ট্রে একজন ব্যতিক্রমী মুখ হিসেবে চিহ্নিত করে। সম্মান ও গ্রহণযোগ্যতা ধীরে ধীরে তাকে আত্মবিশ্বাসী হিসেবে তৈরি করে। কারণ সৃষ্টির সবই একটি ঘূর্ণাবর্তে আবর্তিত। কবির ভাষায়, ‘জাতি হচ্ছে একটি দেহসম আর ব্যক্তি হচ্ছে জাতিরই অঙ্গ-জাতির হস্তপদ শুধুই শিল্পের ঘরের পাথক।’

জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে মানুষ আজ উড়তে শিখেছে। নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার চাঁদের দেশে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করেছে। প্রশ্ন হলো আসলেই কি সবই বিজ্ঞানের কারিশমা। সবই বুঝি জ্ঞানের খেলা। এখানেই আল্লামা ইকবাল বলেন, এত কিছু যা মানুষের প্রয়োজনে আয়োজিত তা সবই দৃঢ় সংকল্প এবং নিষ্ঠার সাথে কাজ করবার ফল। এ সবই সৃষ্টিকর্তার এক অনুপম নিদর্শন। মানুষ তার জ্ঞানের দ্বারা এ শূন্যতা পূরণ করতে পারে। আল্লামা ইকবালের সাহিত্যে খূদী দর্শন দেখতে পাওয়া যায় যা তাকে বিশেষ করে তোলে। কবি বলেন, একমাত্র খূদীই পারে একজন মানুষকে আত্মার পরিশুদ্ধতায় ভূমিকা রাখতে। কবি বলেন,

‘সংকীর্ণ দৃষ্টিকারী মানব দেখেনি আমার অস্থির হৃদয়কল্প
বাহ্যিক আবরণই শুধু দেখেছে মাত্র
অন্তরে লুক্কায়িত অস্থিরতা দৃষ্টি কাড়েনি।’

প্রতিটি মানুষই আনন্দ নিতে চায় জীবনের। নতুন দিগন্তের সন্ধান করে। নিজেকে মিলিয়ে নিতে চায় স্বপ্নময় জীবনের সাথে। যেখানে স্বপ্ন ও জীবন এক হয়ে মিশে যায় সেখানেই আস্থাশীল হয়ে ওঠে মানুষ। আর তাই সময়কে গুরুত্বের সাথে নেয়ার তাগিদ দিয়েছেন আল্লামা ইকবাল। হেসে-খেলে জীবনের সময় যখন শেষ হয়ে আসে তখন যেন আফসোসের ঘেরে নিমজ্জিত হতে না হয় তার জন্য প্রয়োজন সময়জ্ঞান বৃদ্ধির। এমন বোধই মানুষকে কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে পৌঁছে দেবে। এই আশায় কবি বলেন,

নীরব উপকূল বলে উঠল যদি অনন্তকাল বাঁচতে পারতাম
কিছুই জানা হলো না, হায়! কী আমার পরিচয়
বিক্ষুব্ধ তরঙ্গমালা তীব্র বেগে ধাবিত হয়ে বলল
গতিশীলতায় আমি আছি থেমে গেলে আমার কোনো অস্তিত্ব নেই।

ইকবাল ছিলেন মানবমুক্তির একজন বলিষ্ঠ চিন্তানায়ক ও দার্শনিক ব্যক্তিত্ব। ব্যক্তিজীবনে তিনি ছিলেন নতুন সৃষ্টির প্রেরণায় উদ্বুদ্ধ। তার সৃষ্টিকর্মে এরই ছবি প্রতিভাত হতে দেখা যায়। যেখানে যুবসমাজকে সৃষ্টির রহস্যে ডুবে গিয়ে প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে নিজেদের তৈরির মাধ্যমে দেশ-জাতির কল্যাণার্থে সময়োপযোগী ভূমিকা পালনে সংকল্পবদ্ধ করতে উৎসাহিত করেন। তিনি নিষ্ক্রিয় ও নিশ্চল জীবন থেকে বের করে মুসলিম সমাজকে নতুন সৃষ্টি সুখের উল্লাসে অনুপ্রাণিত করতে চেয়েছেন। তার সমগ্র চিন্তাধারায় আছে নতুনত্ব ও স্বাতন্ত্র্যের শিক্ষা। বর্তমান বিপদসঙ্কুল পৃথিবীকে ভেঙে চুরমার করে নিজ আদর্শ অনুযায়ী শান্তি-শৃঙ্খলার এক নতুন পৃথিবী সৃষ্টির প্রতি সবাইকে সজাগ থাকার আহ্বান জানান।


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us