পদ্মায় প্রবাহ বৃদ্ধির বিকল্পের সন্ধানে

সরদার আবদুর রহমান | Dec 25, 2021 02:18 pm
পদ্মায় প্রবাহ বৃদ্ধির বিকল্পের সন্ধানে

পদ্মায় প্রবাহ বৃদ্ধির বিকল্পের সন্ধানে - ছবি : সংগ্রহ

 

ফারাক্কা বাঁধ নির্মাণ করে বাংলাদেশে গঙ্গা-পদ্মার সর্বনাশ ঘটানোর অর্ধশতাব্দীকাল পেরিয়ে গেছে। বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষের জীবন-জীবিকা ও প্রাকৃতিক উৎসের অন্যতম আঁধার এই নদী ও তার উপত্যকার কী পরিমাণ ক্ষতি এই বাঁধের মাধ্যমে ঘটেছে তা নিয়ে আলোচনার অন্ত ছিল না। বলতে গেলে এ সময়ের মধ্যে গঙ্গা-পদ্মায় যতটা না পানি গড়িয়েছে তার থেকে অনেক বেশি পরিমাণে পানি আলোচনার টেবিলে চায়ের কাপে খরচ হয়েছে। এটিকে এখন অনেকেই ‘মৃত’ ইস্যুর তালিকায় ঠেলে দেয়ার সাধনায় লিপ্ত। প্রসঙ্গত, ভৌগোলিকভাবে ভারতের গঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করার পরও চাঁদপুর পর্যন্ত তা গঙ্গারই অংশ। অতঃপর সেটি পদ্মা নাম নিয়ে বঙ্গোপসাগরে মিলেছে। বাংলাদেশের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে কেউ কেউ নিজেদের বিকল্প সন্ধানের পরামর্শ দিচ্ছেন। কিন্তু এ যাবত কোনোটিই হালে পানি পায়নি। তবে মূল গঙ্গা থেকে পদ্মায় প্রবাহ বৃদ্ধির বিষয়ে কোনো আলোচনা হতে দেখা যায় না। এই বিষয়টি গুরুত্বের সাথে ভেবে দেখার সময় এসেছে। মনে করা হচ্ছে, ফারাক্কা বাঁধের উজানে কেবল ২৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের একটি মৃতপ্রায় নদীর পুনঃখননের মাধ্যমে গঙ্গা থেকে পদ্মার প্রবাহ বৃদ্ধির একটি বিকল্প হতে পারে। ছোট ভাগীরথী নামে এই নদীটি ফারাক্কা বাঁধের ১০ কিলোমিটার উত্তরে নয়াগ্রামের কাছ থেকে মালদা জেলার মহাদিপুরের কদমতলার কাছে পাগলা নদীর সাথে মিলিত হয়েছে। এই কার্যক্রম বাস্তবায়ন হলে ভারত ও বাংলাদেশ উভয়েই উপকৃত হতে পারে।

ফারাক্কাতেও পানি নেই

বহুল আলোচিত ফারাক্কা বাঁধের ফলে গঙ্গার প্রবাহ বাংলাদেশের পদ্মায় পৌঁছানোর স্বাভাবিক পথ এমনিতেই বন্ধ হয়ে গেছে। এখন শুষ্ক মৌসুমে ফারাক্কা পয়েন্টে জমা পানির প্রাপ্যতার ভিত্তিতে বাংলাদেশকে পানি দেয়ার একটি চুক্তি থাকলেও তা কার্যত পাওয়া যায় না। এর কারণ বাংলাদেশকে দেয়ার মতো পর্যাপ্ত পানি ফারাক্কা পয়েন্টে জমাই হতে পারে না। কেননা গঙ্গার আরো উজানে বহুসংখ্যক প্রকল্পের মাধ্যমে গঙ্গার পানি প্রত্যাহার ও আটকানো হয়। ভারত অনেক আগে থেকেই গঙ্গায় বৃহদাকার তিনটি খাল প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে। এর মধ্যে রয়েছে, ‘আপারগঙ্গা ক্যানেল প্রজেক্ট’, ‘মধ্যগঙ্গা ক্যানেল প্রজেক্ট’ এবং ‘নিম্নগঙ্গা ক্যানেল প্রজেক্ট।’ এ ধরনের প্রকল্পের হাজার হাজার কিলোমিটার খালের মাধ্যমে তারা গঙ্গার পানি সরিয়ে নিয়ে সেচ দেয়ার ব্যাপক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। ‘উপর গঙ্গা খাল প্রকল্পের’ মাধ্যমে উত্তর প্রদেশের ২৫ লাখ একর জমিতে সেচ দেয়ার লক্ষ্যে ছয় হাজার কিলোমিটার খাল খনন করা হয়েছে।

‘মধ্যগঙ্গা ক্যানেল প্রজেক্ট’ নামের প্রকল্পে মূল ও শাখাসহ খননকৃত খালের মোট দৈর্ঘ্য প্রায় ১৬০০ কিলোমিটার এবং ‘নিম্নগঙ্গা সেচ প্রকল্পের’ জন্য ছয় হাজার কিলোমিটার খাল খনন করা হয়েছে। এ ছাড়াও ভারত গঙ্গার ‘বাড়তি’ পানি কাজে লাগিয়ে তিন লাখ এক হাজার হেক্টর জমিতে সেচ দেয়ার জন্য ‘পূর্ব গঙ্গা ক্যানেল প্রজেক্ট’ তৈরি করেছে। এর মোট দৈর্ঘ্য প্রায় ১৪০০ কিলোমিটার। এসব ক্যানেল প্রকল্প চাঙা রাখতে নিয়মিতভাবে গঙ্গার পানি প্রত্যাহার করা হচ্ছে। ভারতের ভেতরের গঙ্গা ও ব্রহ্মপুত্রের পানির উৎস বৃদ্ধির সহায়ক উপনদীগুলোতেও বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। বাংলাদেশ পানির জন্য হাহাকার করলেও ফারাক্কায় পানি না থাকার অজুহাতে বাংলাদেশকে পানিবঞ্চিত করা হয়। গঙ্গা ও ব্রহ্মপুত্রসহ প্রধান নদীগুলো এসব উপনদী থেকে বিপুল পানি প্রবাহ লাভ করে থাকে। গঙ্গা নদীতে পানির প্রবাহ বৃদ্ধির অন্যতম সহায়ক নদী হলো ভাগীরথী, ঘাগরা, কোশি ও গ-ক। নেপাল থেকে উৎসারিত এসব নদীতেও ভারত নিজ এলাকায় বাঁধ নির্মাণ করেছে। গঙ্গার উজান থেকে ভাটির দিকে বাম পাশে অবস্থিত এসব নদী সারা বছর গঙ্গাকে নাব্য রাখতে অনেক সহায়ক। গঙ্গার অন্যতম উপনদী গোমতি, রামগঙ্গা, কর্ণালী, ঘাগরা, ধাউলিগঙ্গা প্রভৃতিতে বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। এর মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদন, সেচ ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। কিন্তু এর ফলে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে মূল গঙ্গার প্রবাহ।

এসব প্রকল্পের প্রতিক্রিয়ার ফলে প্রবাহের ৯০ শতাংশই ভারতের বিভিন্ন প্রকল্প-কাজে ব্যবহার হয়ে যায়। অবশিষ্ট ১০ ভাগ কোনো রকমে ফারাক্কা পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে বলে খোদ ভারতীয় বিশেষজ্ঞরাই বলে আসছেন। এমতাবস্থায় শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশের পদ্মায় পানির প্রবাহ কিছুটা বৃদ্ধির স্বাভাবিক ও সরাসরি উপায় হতে পারে ছোট ভাগীরথী ও পাগলার সংযোগকে কাজে লাগিয়ে একাধারে মহানন্দা ও পদ্মায় পানি পৌঁছানো। ফারাক্কা দিয়ে পানি আটকিয়ে-এর উজানে মুর্শিদাবাদের জঙ্গীপুরে ৩৮ কিলোমিটারের বেশি একটি কৃত্রিম খাল (ফিডার ক্যানেল) খননের মাধ্যমে হুগলি-ভাগীরথীর প্রবাহ বৃদ্ধি এবং কলকাতা বন্দরের নাব্যতা বাড়ানো হয়েছে। তেমনই মালদা জেলায় ছোট ভাগীরথী ও পাগলার (সর্বোচ্চ ২৫ কিলোমিটার) সংযোগ ঘটিয়ে প্রাকৃতিকভাবে বাংলাদেশে মহানন্দা ও পদ্মার নাব্যতা বৃদ্ধি করা সম্ভব।

ছোট ভাগীরথীর পরিচয়

গঙ্গার অন্যতম ধারা আসল ভাগীরথী নদী মুর্শিদাবাদ জেলায় অবস্থিত। আর ছোট ভাগীরথীর অবস্থান পুরোটাই মালদা জেলার মধ্যে। এর অবস্থানের কথা মালদা জেলা গেজেটিয়ারে (১৯১৮) এবং পশ্চিমবঙ্গের পানিসম্পদ বিশেষজ্ঞ কল্যাণ রুদ্রের গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে। এটির উৎপত্তি বর্তমান ফারাক্কা ব্যারাজের মালদা জেলাধীন জগন্নাথপুর পয়েন্টের কাছ থেকে ১০ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত নয়াগ্রামের কাছে। এরপর এটি কালিয়াচক ব্লকের কাঁঠালবাড়ি, সুলতানগঞ্জ, মারুপুর, ফতেচাঁদপুর, হারোচক মজুমপুর, বালুগ্রাম, কাশিমচক, খিদিরপুর প্রভৃতি এলাকা অতিক্রম করে প্রায় ২৫ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে ইংরাজবাজারের অন্তর্গত মহাদিপুরের কদমতলার কাছে পাগলা নদীর সাথে মিলিত হয়েছে। এর মধ্যে অবশ্য নয়াগ্রাম-সুলতানগঞ্জের মধ্যে নদীর একটি অংশ ভরাট হওয়ার উপক্রম হয়েছে। যেহেতু ঐতিহাসিকভাবেই এটি একটি নদী হিসেবে স্বীকৃত, ফলে এর পুনঃখনন প্রকল্প গ্রহণ করা সম্ভব। এর দৈর্ঘ্যও তেমন বিশেষ কিছু নয়।

ফারাক্কা বাঁধের উজানে বাংলাদেশমুখী একমাত্র অভিন্ন নদী হিসেবে অবশিষ্ট ছিল গঙ্গার শাখা নদী পাগলা। কিন্তু গঙ্গা-পাগলার সংযোগমুখেও দেয়া হয়েছে বাঁধ। এর ফলে ভারতের গঙ্গায় বাংলাদেশের নৌযান চলাচলের একমাত্র পথটিও বন্ধ হয়ে গেছে। গঙ্গার যেসব শাখা নদী বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে তার সবগুলোই ফারাক্কার ভাটিতে অবস্থিত। একমাত্র পাগলা নদী ফারাক্কা বাঁধের বাইরে থেকে গেছে। কিন্তু এই নদীরও ভারতের অংশে অন্তত চারটি স্লুইসগেট নির্মাণ করা হয়েছে। এ ছাড়া রয়েছে কমপক্ষে ১০টি ব্রিজ। গঙ্গা-পাগলার সংযোগ অংশে নির্মিত স্লুইসগেটসহ অন্যান্য নির্মাণ কাজের ফলে বাংলাদেশ অংশের পাগলা নদীর দীর্ঘ স্রোতধারায় গঙ্গার পানি প্রবেশ করতে পারে না। এসব প্রতিবন্ধকতায় সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে পতিত হওয়ার পর এই নদীর অস্তিতই বিপন্ন হয়ে পড়ে। কেবলই বৃষ্টি ও ছোটখাটো খাল-বিলের পানি জমে এটি কোনোরকমে টিকে আছে। তবে এরই মধ্যে বাংলাদেশ সরকার পাগলা নদী পুনঃখনন করায় অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়ছে। ইতোমধ্যে নদীতে পানির পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে।

পাগলা ভারতের মধ্যে প্রবাহিত হয়ে মালদার মহাদিপুর হয়ে আজমতপুরের কাছে সীমান্ত পার হয়ে বাংলাদেশের চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার শাহবাজপুর ইউনিয়নে প্রবেশ করেছে। এরপর তা শ্যামপুর, মনাকষা, কমলাকান্তপুর প্রভৃতি এলাকা পাড়ি দিয়ে নবাবগঞ্জ সদর উপজেলার কালিনগর, মহারাজপুর হয়ে মোহনপুর গ্রামের কাছে তা মহানন্দা নদীর পড়েছে। এখান থেকে মহানন্দা নদী প্রায় ১৫ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলায় পদ্মা নদীতে মিলেছে।

এভাবে দেখা যায়, গঙ্গার এক অংশ দিয়ে শাখা নদী হিসেবে পাগলার উৎপত্তি হলেও মহানন্দার মাধ্যমে তা আবার গঙ্গা-পদ্মারই প্রদায়ক নদীতে পরিণত হয়েছে। উল্লেখ্য, মহাদিপুরের সংযোগ থেকে মহানন্দায় পতিত হওয়া পর্যন্ত এই অংশের নদীপথের কোথাও স্লুইসগেট বা কোনো রেগুলেটর জাতীয় প্রতিবন্ধক নেই। ফলে পানির প্রবাহ আটকে থাকারও সুযোগ নেই।

শেষ বিকল্পও থাকলো না
ভারত তার পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলিতে পণ্য পরিবহণের জন্য বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চলীয় নৌপথের সুবিধা ব্যবহার করে চলেছে।
কিন্তু ফারাক্কা বাঁধের কারণে পশ্চিমাঞ্চলের নৌপরিবহণ সুবিধা বাংলাদেশ ব্যবহার করা থেকে বঞ্চিত থাকছে। ফারাক্কা বাঁধ এড়িয়ে এই সুবিধা পাওয়ার সুযোগ ছিল পাগলা নদী ব্যবহার করে। কিন্তু নদীর উৎসমুখসহ বিভিন্ন স্থানে স্লুইসগেট ও ব্রিজের কারণে সেই সুযোগও আর অবশিষ্ট নেই। আর ফারাক্কা বাঁধের কারণে পদ্মার পানির স্বাভাবিক প্রবাহ থেকে যেমন বাংলাদেশ বঞ্চিত হচ্ছে, তেমনই গঙ্গা-পাগলার মুখে প্রতিবন্ধকতার কারণে পাগলা নদীর প্রবাহ থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে বাংলাদেশ।

মহানন্দার অবস্থান
মহানন্দা নদী বাংলাদেশে গঙ্গার একমাত্র উপনদী। নেপালের দক্ষিণ-পশ্চিমস্থ হিমালয় থেকে উদ্ভূত হয়ে দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে কার্সিয়াং ও শিলিগুড়ি অতিক্রম করে পশ্চিমবঙ্গের পূর্ণিয়া ও মালদহ জেলার মধ্য দিয়ে দক্ষিণ-পূর্ব দিকে প্রবাহিত হয়ে ভোলাহাটের কাছে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। বাংলাদেশ সীমায় প্রবেশের পর চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরকে বাম তীরে রেখে গোদাগাড়িতে গিয়ে গঙ্গায় পড়েছে। বাংলাদেশে এর দৈর্ঘ্য প্রায় ৩৬ কিলোমিটার। হান্টারের জরিপ (১৮৭৬ খ্রি:) থেকে জানা যায়, মহানন্দা একসময় একটি প্রশস্ত এবং গভীর নদী ছিল, যার বুকে চলাচল করত বড় বড় মালবাহী নৌকা। মহানন্দা একটি গুরুত্বপূর্ণ আন্তঃসীমান্ত নদী। ভারতীয় কর্তৃপক্ষ ভারত-বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সীমানার মাত্র তিন কিলোমিটার উত্তরে শিলিগুড়ির কাছে নদীর ওপর ব্যারেজ নির্মাণ করেছে, যা আন্তর্জাতিক নদী আইনের আওতায় পড়ে না এবং যা মহানন্দার স্বাভাবিক গতিপ্রবাহকে ব্যাহত করছে। প্রস্তাবিত প্রকল্পের মাধ্যমে পাগলা নদীর প্রবাহ পেলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে রাজশাহীর গোদাগাড়ী পর্যন্ত মহানন্দার প্রবাহ চাঙা হতে পারে এবং এরপর থেকে পদ্মার প্রবাহও বৃদ্ধি পাওয়া সম্ভব হতে পারে।

উপকৃত হতে পারে ২ দেশই
ছোট ভাগীরথী-পাগলা সংযোগ প্রকল্প গৃহীত ও বাস্তবায়ন হলে উপকৃত হতে পারে দু’দেশই। এর ফলে বিহার ও পশ্চিমবঙ্গের কিছু এলাকায় পানির চাপ হ্রাস পেয়ে বন্যার তীব্রতা হ্রাস পাবে। অন্য দিকে বাংলাদেশে মহানন্দা ও পদ্মায় সারা বছর পানির প্রবাহ বৃদ্ধি পাবে। এর ফলে ফারাক্কা পয়েন্টে পর্যাপ্ত পানি না থাকার কারণে বাংলাদেশের পানি প্রাপ্তির ঘাটতির কিছুটা হলেও নিরসন হতে পারে।

বিশেষজ্ঞ অভিমত
এ বিষয়ে দেশের বিশিষ্ট নদী গবেষক ও লেখক মাহবুব সিদ্দিকী বলেন, পদ্মা থেকে মূল গঙ্গায় প্রবেশের পথ ফারাক্কা দিয়ে আটকে দেয়ায় একটা বিকল্প ছিল পাগলা নদী। এই নদী তার মূল উৎস গঙ্গা থেকে পুনরায় পদ্মায় পতিত হওয়া পর্যন্ত মোট দৈর্ঘ্য ১০০ কিলোমিটারের মধ্যে সীমিত। ফলে এটি একটি সম্ভাবনাময় রুট হতে পারত। কিন্তু মানবসৃষ্ট প্রতিবন্ধকতায় তাও বন্ধ হয়ে গেছে। এখন একটা বিকল্প হচ্ছে রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে অবস্থিত পদ্মা নদীতে একটি ক্যানেল তৈরি করে লালগোলা হয়ে হুগলি নদী পর্যন্ত পৌঁছানো। অতঃপর ফারাক্কার ফিডার ক্যানেল ব্যবহার করে সরাসরি মূল গঙ্গায় পৌঁছানো যায়। তবে ক্যানেলে অবস্থিত একটি লক গেট খুলে ফেলতে হবে। এতে ফারাক্কার মূল বাঁধের কোনো সমস্যা হবে না। এই পথের দূরত্বও খুব বেশি নয়। এর মধ্য দিয়ে পদ্মার সাথে গঙ্গার সরাসরি সংযোগ ঘটানো সম্ভব হতো।

অন্য দিকে পাগলাকে ব্যবহার করে শিবগঞ্জের শাহবাজপুর থেকে মালদা জেলার মহাদিপুর পর্যন্ত সরাসরি পৌঁছে সুলতানপুর থেকে রাজনগরের কাছে গঙ্গায় পৌঁছানো যায়। এই রুটে অবস্থিত কেবল একটি খালের সংস্কার সাধন করতে হবে। এই রুটটিও খুব দীর্ঘ নয়। কিন্তু সব কথার শেষ কথা বাংলাদেশের স্বার্থের কথা বিবেচনা করে ভারত এমন কোনো প্রকল্প গ্রহণ করবে বলে মনে হয় না। এ নিয়ে হতাশা ব্যক্ত করেন মাহবুব সিদ্দিকী।


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us