করোনা-কালের রাজনীতি

ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন | Apr 12, 2020 09:17 pm
রাজনীতি

রাজনীতি - নয়া দিগন্ত

 

করোনাভাইরাস সংক্রমণ বর্তমানে সারা বিশ্বে প্রলয়ের সৃষ্টি করেছে। অদৃশ্য একটি ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র জীবাণুর আক্রমণ মোকাবেলায় সারা বিশ্বে মানুষ আজ নিজ নিজ ঘরে স্বেচ্ছায় বন্দী। পরাশক্তিসহ সব দেশের সরকার এবং সরকারপ্রধানরা পরাস্ত ও অসহায়। প্রতিটি দেশের সব দল, পেশা, ধর্ম ও বর্ণের মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই মারাত্মক ছোঁয়াচে ভাইরাসকে নিয়ন্ত্রণ করতে সর্বাত্মকযুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছে। দেশে দেশে চলছে যুদ্ধাবস্থা। বাংলাদেশে ধীরগতিতে হলেও করোনাভাইরাস আশঙ্কাজনকভাবে বিস্তার লাভ করছে। আইইডিসিআরের তথ্য মতে, বাংলাদেশে (১২ এপ্রিল পর্যন্ত) করোনাভাইরাস আক্রান্ত ৪৮২ জন এবং মৃত্যুবরণ করেছে ৩৬ জন। পরীক্ষার সেন্টারের বৃদ্ধির সাথে সাথে বাংলাদেশে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। গ্রামগঞ্জেও মারাত্মক এ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ছে। যারা এত দিন জনগণকে আশ্বস্ত করেছেন, করোনাভাইরাস বাংলাদেশে কোনো ক্ষতি করতে পারবে না, ভাইরাসকে প্রতিহত করতে সব ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে, তারাও এখন দুশ্চিন্তাগ্রস্ত ও উদ্বিগ্ন।

বিশ^ অভিজ্ঞতা থেকে দেখা যায়, যে দেশে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি প্রমাণিত হয়েছে, সে দেশ ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিহত করার জন্য সর্বশক্তি দিয়ে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। সংক্রমণ প্রতিরোধে প্রায় সব দেশই লকডাউন বা জরুরি অবস্থা জারি অথবা কারফিউ ঘোষণা করে জনগণকে ঘরে থাকতে বাধ্য করেছে। যেসব দেশ প্রাথমিকভাবে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে, সেসব দেশ করোনাভাইরাস সংক্রমণকে নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ এই প্রাথমিক বিষয়কে গুরুত্ব না দেয়ায় এখন তাদের খেসারত দিতে হচ্ছে। অনস্বীকার্য যে, বাংলাদেশেও এ ক্ষেত্রে প্রথম দিকে উদাসীনতা ছিল। তাই প্রস্তুতি নিতেও বিলম্ব হয়েছে। বাংলাদেশে ৮ মার্চ যখন একজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছে বলে জানানো হয়, তখন করোনভাইরাস পরীক্ষার জন্য সরকারের কাছে মাত্র এক হাজার ৭৩২টি কিট মজুদ ছিল। একটিমাত্র পরীক্ষাকেন্দ্র আইইডিসিআর (ওঊউঈজ) দিনে ২০ থেকে ২৫ জন সন্দেহভাজন করোনা রোগীকে পরীক্ষা করে দীর্ঘসময় অতিবাহিত করেছে।

আইইডিসিআর ২৯ মার্চ, ২০২০ তারিখে স্বীকার করেছে যে, করোনাভাইরাসের উপস্থিতির ব্যাপারে শুরু থেকে ৫৫ দিনে মাত্র এক হাজার ৭৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। শুরু থেকেই বিশ^স্বাস্থ্য সংস্থা যেখানে এর নমুনা পরীক্ষাকে অগ্রাধিকার দেয়ার জন্য বিভিন্ন দেশকে তাগিদ দিচ্ছিল, তখন বাংলাদেশে এ ক্ষেত্রে অবহেলা ও উদাসীনতা কোনোক্রমেই গ্রহণযোগ্য নয়। প্রথম থেকে ব্যাপকভাবে নমুনা পরীক্ষা করতে পারলে হয়তো বর্তমানে এর যে বিস্তৃতি দেখা দিয়েছে, তা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হতো। সরকার যতই প্রস্তুতির কথা বলুক না কেন, প্রকৃতপক্ষে প্রথম দিকে করোনাকে পাত্তাই দেয়নি। মন্ত্রী ও নেতাদের বক্তব্যে তারই প্রতিফলন ঘটেছে। যদি সরকার সত্যিকারভাবে প্রস্তুত থাকত, তাহলে শুরু থেকেই এখনকার মতো ১৩-১৪টি কেন্দ্রে নমুনা পরীক্ষা করতে পারত। তদুপরি চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যসেবকদের পারসোনাল প্রটেকটিভ ইকুইপমেন্ট (পিপিই) সরবরাহ করা যেত ।

বিলম্বে হলেও সরকার ২৬ মার্চ থেকে সাধারণ ছুটি ঘোষণার মাধ্যমে ‘সামাজিক দূরত্ব’ সৃষ্টির পদক্ষেপ গ্রহণ করে সরকারি ছুটি ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত বর্ধিত করেছে। কিন্তু সমন্বয়হীনতার কারণে রাজধানীসহ বিভিন্ন শহর থেকে লাখ লাখ মানুষ রেলগাড়ি, লঞ্চ, বাস ও ফেরিতে গাদাগাদি করে গ্রামে যাওয়ার প্রতিযোগিতা ভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি বৃদ্ধি করেছে। গত ৪ এপ্রিল, ২০২০ গার্মেন্ট শিল্প দিনে খোলার ঘোষণা দিয়ে আবার রাতে বন্ধ ঘোষণা করায়, লাখ লাখ শ্রমিক রাস্তাঘাটে অবর্ণনীয় দুর্ভোগের শিকার হয়েছেন। এতে তারা ভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকিতে পড়েছেন। দরিদ্র গার্মেন্ট শ্রমিকরা তাদের চাকরি বাঁচাতে কাজে যোগদানের জন্য ফেরি, ট্রাক, পিকআপ ভ্যানে গাদাগাদি করে এবং দলবদ্ধভাবে দীর্ঘপথ হেঁটে কর্মস্থল আসতে বাধ্য হয়েছেন। সব পরিবহন বন্ধ থাকায় একইভাবে শ্রমিকদের ফেরত যেতে হয়েছে। তাদের এই অমানবিক কষ্ট ও স্বাস্থ্যঝুঁকির জন্য দায়ী কে হবে? এ ঘটনায় সরকারের ব্যর্থতা ও সমন্বয়হীনতার নগ্ন প্রকাশ ঘটেছে। সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে যে গতানুগতিকভাবে ত্রাণকার্য পরিচালনা করা হচ্ছে, তাতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার নির্দেশ লঙ্ঘিত হচ্ছে এবং করোনাভাইরাস সংক্রমণের আশঙ্কা বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী নাগরিকদের সুরক্ষার জন্য যে নির্দেশাবলি দিয়েছিলেন, তাও মানা হচ্ছে না। এসব ক্ষেত্রে দেশের বৃহত্তর স্বার্থে সরকারি নির্দেশাবলি ও বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ অক্ষরে অক্ষরে বাস্তবায়নের জন্য সরকারকে আরো কঠোর হতে হবে।

সর্দি, কাশি, জ্বর ও শ্বাসকষ্টের চিকিৎসা না পেয়ে প্রতিদিন বহু মানুষ মৃত্যুবরণ করছে। তাদের পরীক্ষার আওতায়ও আনা হচ্ছে না; অন্য দিকে কোনো চিকিৎসক তাদের কাছে যাওয়ার সাহস পাচ্ছেন না। এদের মধ্যে যদি করোনা আক্রান্ত কেউ থেকে থাকেন, তা হলে তার আত্মীয়স্বজন ও প্রতিবেশী অনেকেই ইতোমধ্যে হয়তো না বুঝে আক্রান্ত হয়েছেন। পরীক্ষার অপ্রতুলতার কারণে ঝুঁকি বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই এ ধরনের উপসর্গ যেসব রোগীর মধ্যে আছে, তাদের সবাইকে পরীক্ষার আওতায় আনতে হবে।

দেশে বর্তমানে সাধারণ ছুটি চলছে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ ও সরকারের নির্দেশ সত্যিকারভাবে বাস্তবায়ন করতে হলে সাধারণ ছুটি যথেষ্ট পদক্ষেপ কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সবাইকে ঘরে থাকার বাধ্যবাধকতা নিশ্চিত করতে, প্রশাসন বিভিন্ন স্থানে লোকজন রাস্তায় বের হলে তাদের জরিমানা এবং নানাভাবে হেনস্থা করা হচ্ছে। অন্য দিকে রাস্তায় গদাগাদি করে মানুষকে অবস্থান নিতে (ত্রাণসামগ্রী নেয়ার সময় বা কারখানা ও বাজারের সামনে) দেখা যাচ্ছে। ফলে সাধারণ ছুটিতে রাস্তায় বের হওয়া যাবে কি না, তা জনগণের কাছে পরিষ্কার নয়। প্রশাসনের কাছেও এ সম্পর্কে দোদুল্যমানতা প্রকাশ পাচ্ছে। এমনি সঙ্কট মোকাবেলায় বহু দেশ তাদের দেশে লকডাউন, কারফিউ ও জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে। পাশের দেশ ভারত একসাথে ২১ দিনের ‘লকডাউন’ ঘোষণা করে সবাইকে বাড়িতে থাকতে বাধ্য করছে। বর্তমান অবস্থায় পুলিশ কর্তৃপক্ষ ঢাকা মহানগর থেকে বাইরে যাওয়া বা বাইরে থেকে ঢাকা মহানগরীতে প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে। বহু এলাকায় প্রশাসন ‘লকডাউন’ বা ‘অবরুদ্ধ’ ঘোষণা করেছে। বাংলাদেশের যেকোনো শহরে বা গ্রামে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত, সন্দেহজনক রোগী থাকলে সে এলাকাকে প্রশাসন ‘লকডাউন’ করে দিচ্ছে। একেক স্থানে একেক অবস্থায় প্রশাসন তাদের দায়িত্ব পূর্ণাঙ্গভাবে পালন করতে পারছে না। এ অবস্থায় করোনাভাইরাস সংক্রমণের ‘ঊর্ধ্বলম্ফ’ সময়কালের জন্য সারা দেশ ‘লকডাউন’ করা যায় কি না, তা সরকারকে জরুরিভাবে ভাবতে হবে।

গত ৫ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী এক সংবাদ সম্মেলনে করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবে দেশের সম্ভাব্য অর্থনৈতিক ক্ষতি মোকাবেলা করতে ৭২ হাজার ৭৫০ কোটি টাকার কর্মপরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন। আগের দিন (৪ এপ্রিল, ২০২০) দেশের বৃহত্তম ও জনপ্রিয় দল বিএনপির পক্ষ থেকে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দুর্যোগ-পরবর্তী আর্থিক পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য ৮৭ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ প্রস্তাব করেছিলেন। ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি ও ভারতের প্রধানমন্ত্রীসহ প্রায় সব দেশ করোনা-পরবর্তী সময়ের জন্য তাদের অর্থনৈতিক পরিকল্পনা প্রকাশ করেছেন। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর এ সময়োপযোগী পদক্ষেপকে বিভিন্ন মহল প্রশংসা করেছে। তবে করোনাভাইরাস মোকাবেলায় যে সেক্টরটি মাঠে সম্মুখযুদ্ধে লড়াই করছে, সেই স্বাস্থ্য খাতে প্রণোদনা, সহায়তা ও করণীয় সম্পর্কে প্রথমে কোনো প্যাকেজ প্রদানের উল্লেখ ছিল না। অবশ্য গত ৭ এপ্রিল, ২০২০ প্রধানমন্ত্রী জেলা প্রশাসকদের সাথে ভিডিও কনফারেন্সে স্বাস্থ্যকর্মী, মাঠকর্মী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে বিশেষ বীমা প্রদানের কথা ঘোষণা করেছেন। তার প্রদত্ত পাঁচটি প্যাকেজে শিল্প-কলকারখানাকে প্রণোদনা এবং ব্যাংকগুলোকে সহায়তা করার উল্লেখ আছে। করোনা প্রাদুর্ভাবের পরবর্তী সময়ে অর্থনৈতিক সঙ্কট মোকাবেলায় এসব কর্মপরিকল্পনা একান্ত আবশ্যক। অদৃশ্য শত্রুর আক্রমণে উদ্ভূত পরিস্থিতি-পরবর্তী সঙ্কট মোকাবেলার কর্মপরিকল্পনার আগে, সেই শত্রুকে যুদ্ধে পরাজিত করার পরিকল্পনাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। কোনো দেশ কোনো যুদ্ধে জড়িয়ে পড়লে প্রথমে সেনাবাহিনীকে শক্তিশালী করা, যুদ্ধের ফ্রন্টে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো প্রস্তুত করা, গোলাবারুদ জোগান দেয়া এবং সেনাবাহিনীর মনোবল চাঙ্গা রাখার জন্য যা যা প্রয়োজন তাই করে থাকে। প্রয়োজনে অন্য সেক্টরের খরচ কমিয়ে যুদ্ধের খরচ বৃদ্ধি করা যুদ্ধাবস্থায় প্রধান কাজ বলে বিবেচিত। করোনা নামক অদৃশ্য শক্তির বিরুদ্ধে যেসব চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী, মাঠকর্মী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যুদ্ধে লিপ্ত, তাদের পর্যাপ্ত সুরক্ষা সরঞ্জাম, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করার প্রণোদনা, পর্যাপ্ত আইসিইউ ও ভেন্টিলেটারসমৃদ্ধ হাসপাতাল প্রস্তুত রাখা এবং করোনাভাইরাস পরীক্ষা করার লক্ষ্যে আরো পরীক্ষাগার প্রস্তুত ও পরীক্ষা সরঞ্জাম (ঞবংঃ করঃ) সরবরাহের ব্যবস্থা করা এখনই প্রয়োজন। মাঠে করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে দক্ষতার সাথে যুদ্ধ পরিচালনা করতে তার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ করতে হবে।

প্রধানমন্ত্রীর প্রণোদনা প্যাকেজে পুঁজিবাজার এবং কৃষি সেক্টর স্থান পায়নি। করোনাভাইরাস সংক্রমণের আগে থেকে পুঁজিবাজার এক অন্ধকার গহ্বরে পতিত ছিল। এখন পুঁজিবাজার সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে। এ বাজারের গতি ফিরিয়ে আনতে হলে এই সেক্টরেও প্রয়োজনীয় বরাদ্দ ঘোষণা করে শেয়ার ক্রেতা ও বিক্রেতাদের মধ্যে আশার আলো জাগাতে হবে। কৃষি সেক্টর বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ও খাদ্য নিরাপত্তার ক্ষেত্রে বিশাল ভূমিকা রাখে। করোনাভাইরাসের কারণে সব কিছু বন্ধ থাকায় কৃষিকাজে বিঘœ ঘটছে। খাদ্য উৎপাদন অক্ষুণœ রাখার স্বার্থে কৃষক যাতে বীজ, সার, সেচ ও কীটনাশক সুলভমূল্যে পান এবং ক্ষেত্রবিশেষে প্রান্তিক চাষিরা যাতে বিনামূল্যে পান, সে জন্য প্রণোদনা দিতে হবে। এ খাতে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ এখনই দিতে হবে এবং কৃষক যাতে প্রণোদনা পান, তার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বিষয়ে মার্চ মাসের শেষ পর্যন্ত সরকারের দোদুল্যমান পদক্ষেপ, ভাইরাস শনাক্ত করার জন্য পরীক্ষা কিটের অপ্রতুলতা এবং এই রোগে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা ঘোষণা নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্নের উদ্রেক হয়েছে। অনেকের ধারণা- মার্চ মাস পর্যন্ত সরকার করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণের জন্য নয়, করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে কাজ করেছে। অবশেষে অবস্থা এতই বেগতিক হয়েছে যে, সরকার পরীক্ষা কেন্দ্র বৃদ্ধি ও পরীক্ষা সংখ্যা বৃদ্ধি করতে বাধ্য হয়েছেন। ফলে বর্তমানে ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী এবং মৃত্যুর সংখ্যা উদ্বেগজনকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ অবস্থায় আমাদের সামনে একটিই চ্যালেঞ্জ, মানুষকে বাঁচাতে হবে। এক দিকে করোনাভাইরাসের হাত থেকে জনগণকে রক্ষা করতে হবে, অন্য দিকে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কর্মহীন, দরিদ্র, খেটেখাওয়া ও ‘দিন আনে দিন খাওয়া’ মানুষকে বাঁচাতে হবে। এটা একটা বিশাল ও মানবিক কার্যক্রম। এ যুদ্ধে আমাদের অবশ্যই জিততে হবে। এ অবস্থায় অদৃশ্য শত্রুর সাথে যুদ্ধে জয়ী হতে এবং দেশ ও জাতিকে করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাব থেকে রক্ষা করতে দলমত, পেশা, ধর্ম ও বর্ণ নির্বিশেষে জাতীয় ঐকমত্যের প্রতিষ্ঠা জরুরি। তার জন্য সরকারকে অতীতের সব কিছু ভুলে গিয়ে যথাযথ কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। আল্লাহ তায়ালা আমাদের সবার সহায় হন। আমিন। 

লেখক : সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও সদস্য, জাতীয় স্থায়ী কমিটি-বিএনপি এবং সাবেক অধ্যাপক ও চেয়ারম্যান, ভূ-তত্ত্ব বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us