বাংলাদেশে ওআরএফ এখন কেন

গৌতম দাস | Jun 21, 2020 05:57 am
ওআরএফ

ওআরএফ - ছবি : সংগৃহীত

 

সারা দুনিয়ার মতো করোনাভাইরাসে বাংলাদেশেও খারাপভাবেই আক্রান্ত। এখন পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ হয়ে উঠছে। করোনাভাইরাসের টেস্ট করার সুযোগহীনতা বা চিকিৎসাহীনতার দিনগুলো পেরিয়ে বাংলাদেশ যখন প্রায় ৬০টির মতো টেস্ট-সেন্টার খুলতে সক্ষম হয়েছে তত দিনে আবার এখন দিনকে দিন আক্রান্ত ও মৃত্যুর রেকর্ডেড সংখ্যাটাই বিপজ্জনকভাবে বাড়তে শুরু করে দিয়েছে। হাসপাতালগুলো রোগীতে উপচে উঠছে। হাসপাতালে একটা সিটের খোঁজে পাঁচ-ছয় হাসপাতাল ছোটাছুটি করতে করতেই রোগী মরে যাচ্ছে এমনই অবস্থা। এমনিতেই আমাদের সরকারের ম্যানেজমেন্ট সামর্থ্য সামলিয়ে যতটুকু যা রিসোর্স বা স্বাস্থ্য বাজেট আমরা জড়ো করতে সক্ষম সেটাও দুর্নীতির কারণে লোপাট হচ্ছে। যার সার কথাটা হলো এক চরম ম্যানেজমেন্ট ফেল করা অবস্থার মধ্যে আমরা আছি। বের হওয়ার উপায় নেই। হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যব্যবস্থায় প্রশাসনিক ও ব্যবস্থাপনা সমস্যার কারণে ইকুইপমেন্ট সংগ্রহ, ট্রেনিং বা দক্ষতা বাড়ানো পর্যন্ত আমাদের রিসোর্স পৌঁছাতে পারে না। করোনার আবির্ভাব আমাদের সবাইকে উদম করে ছেড়েছে, নিজেদের অযোগ্যতায় নিজেরাই এখন চরম বিপদে পড়েছি। স্বাস্থ্যমন্ত্রীই হুমকি দিচ্ছেন ‘এভাবে চলতে থাকলে হাসপাতালে জায়গা দিতে পারব না।’ এটা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, আমাদের হাসপাতাল ব্যবস্থা যদি চূড়ান্ত ফেল করে তবে এরপর আইনশৃঙ্খলা ফেল করতে আর সময় লাগবে না।

দেরিতে হলেও করোনা মোকাবেলায় অ্যাকশন গত মার্চের শেষে আমরা যখন শুরু করি তখনই অনেকে জানতেন যে আমাদের জন্য সামনে অনেক রিস্ক অপেক্ষা করছে, অনেক রিস্কের মধ্যে ঢুকছি। যারা দূরেরটা আগে দেখতে পেয়ে যান; তাদের বলাবলি করতে শুনেছি যে, আমরা কঠিন বিপদে পড়ে গেলে শেষ পর্যায়ে আমাদের এ যাত্রায় টিকে যাওয়ার একটাই সম্ভাবনা আছেÑ চীনের সাহায্য সহায়তা যদি পেয়ে যাই, দুয়ার খোলে যদি। কারণ করোনা যা দাবি করে আর আমাদের যা সামর্থ্য এ দুইয়ের গ্যাপ মিটাতে সামর্থ্য নিয়ে পাশে দাঁড়াতে পারে চীনা সহায়তা।
ঘটনাচক্রে সেটাই এখন বাস্তব, আমরা তারই মুখোমুখি। আমাদের সরকারপ্রধান চীনের প্রেসিডেন্টের সাথে ফোনে কথা বলেছেন, ইতোমধ্যেই চীনা সাহায্যকারী টিমও এখন ঢাকায়।

আমরা উদ্যোগ নিতে পেরেছি এটা ভালো খবর অবশ্যই। সব সরকারই কোনো খারাপ অবস্থায় হাতের কাছে যা আছে ও সম্ভব তার সবই কাজে লাগাতে চেষ্টা করবে, এটাই স্বাভাবিক। নিশ্চয় আমরা এমন কোনো সরকার দেখার আশা করি না যারা বুঝছেন তাদের কোনো ভুল বা ব্যর্থতায় বা কোনো গ্যাপে আইনশৃঙ্খলা ভেঙে পড়তে পারে, অথচ তারা সেটা দাঁড়িয়ে কেবল দেখছেন! এটা তো হতে পারে না!

তবে এরপর আরেকটু আছে, চীনেরই আরেকটা প্রোগ্রাম আছেÑ ‘সিস্টার সিটি অ্যালায়েন্স’। পত্রিকার এক রিপোর্ট হলো, চীনা টিম আমাদের ওই এলায়েন্স প্রোগ্রামে আমরা যুক্ত হতে পারি বা চাই কিনা এর দাওয়াত দিয়ে রেখেছে। তা নিয়ে সরকারি নানা পর্যায়ে কথাবার্তা এখনো চলছে।
কিন্তু জয়িতা ভট্টাচার্যের লেখা দেখে বোঝা যাচ্ছে, তারা খুবই ক্ষেপে উঠেছেন, ওই চীন-বাংলাদেশ সরকারপ্রধান পর্যায়ে টেলিফোন আলাপ ঘটার পর থেকেই। যেন তিনি বলতে চাইছেন আমার ‘প্রিয়’ কেন অন্যের সাথে কথা বলল।
সমস্যা হচ্ছে, বাংলাদেশটা ইন্ডিয়া নয়। কাজেই তাদের চোখ দিয়ে চীনের টিম বা উহান সিটির কর্তাদের আমরা দেখতে পারব না। আমাদের প্রয়োজনের চোখ দিয়েই দেখব?

বলা বাহুল্য, করোনা প্রসঙ্গে আমাদের সক্ষমতা সামর্থ্যরে সীমা কী তা জানতে আমাদের আর বাকি নেই। তাই চীনা বন্ধুদের আমরা দেখব আমাদের সহায়তা-দাতা হিসেবেই। এ দাতা যাদের নিজ শহর সামলানোর অভিজ্ঞতা আছে, দক্ষতা আছে, দক্ষ জনবল আছে, সব রিসোর্স আছে যারা আমাদের শিখিয়ে নিতে দিতে সহায়তা করতে পারবে। আর সর্বোপরি যাদের আগ্রহ আছে। এখন খাদের কিনারায় ঠেকে যাওয়া আমরা কোনো ‘সিটি অ্যালায়েন্স চুক্তি’ হোক আর না হোক করোনা সঙ্কট মোকাবেলায় আমাদের চীনা সহযোগিতা খুবই দরকার। এ হলো বাস্তবতা। তাহলে আমরা কেন তা নেবো না?


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us