মগজ ধোলাইয়ের ৬ পদ্ধতি

আলমগীর মহিউদ্দিন | Jul 21, 2020 07:22 pm
মগজ ধোলাইয়ের ৬ পদ্ধতি

মগজ ধোলাইয়ের ৬ পদ্ধতি - ছবি : নয়া দিগন্ত

 

সারা বিশ্ব এখন সঙ্কটে আবৃত। দিশেহারা মানুষ। কোনটি সঠিক পথ, কোনটি ভুল লক্ষ্য ঠিক করতে পারছে না। তবে এটা সত্য, সঙ্কটহীন বিশ্ব কখনোই ছিল না। এ জন্যই হয়তোবা যখন রাষ্ট্র, সমাজ ও পরিবার শান্তির আলয়ে বাস করে, হঠাৎ করেই অশান্তির জন্ম হয়। ছোট্ট একটি ঘটনা থেকেই। সেজন্য শঙ্কা-সঙ্কটকে মানুষ জীবনের এক অনিবার্য অংশ হিসেবে গ্রহণ করে।

তবুও ভাবনার শেষ নেই। যেমন এক অনুসন্ধানী লেখক নিজকে প্রশ্ন করেছেন, ‘যখন মত-পথ ছিল না, গোষ্ঠী ছিল না, তখন মানুষ কেমন ছিল?’ জবাব তিনি নিজেই দিয়েছেন। বলেছেন, তখন মানুষ সবচেয়ে আনন্দে ছিল। অবশ্যই সবাই এই জবাবের সাথে একমত হবেন না। এর অনেক কারণের মাঝে একটি কারণ হলো, মানুষ কখনোই একাকী থাকতে পছন্দ করে না। অবশ্য কিছু ব্যতিক্রম থাকবেই। অবশ্য জীবকুলও তা পছন্দ করে না। তাই সৃষ্টি হয় বহু মত ও পথের। সেই সাথে সঙ্কটের আকৃতি ও প্রকৃতির নানা ডাল-পালা মেলেছে। ফলে ‘নিরবচ্ছিন্ন শান্তি’ বলে কখনো কিছু ছিল না। বাংলাদেশসহ বিশ্বের সব দেশের জন্য এ কথা প্রযোজ্য।
এই লেখক আরেকটি সত্য উচ্চারণ করেছেন। তা হলো, মানুষ ক্ষমতা পছন্দ করে। তাই ক্ষমতাবান হওয়ার সব পন্থা তার নিয়ন্ত্রণে আনতে চায়। এর ফলে সৃষ্টি হয় সঙ্ঘাত ও সঙ্কট। এই অবস্থাকে ক্ষমতাবানরা ব্যবহার করেন এবং জনগণকে তা সইতে হয়। এই ব্যবহারের বাহন হলো রাজনীতি। এ জন্যই রাজনীতি সবার কাছে এত পরিচিত তা গ্রহণীয়ও।

এখন প্রশ্ন হলো কোন রাজনীতি? তবে এ প্রশ্নের জবাবের আগে বর্তমানের এবং অতীতের এই রাজনীতির কথা ভাবা যায়। বলা যায়, অতীতে এর নিয়ন্ত্রণের প্রধান বাহন ছিল শক্তির ব্যবহার আর এখন এর ব্যবহারটি করা হচ্ছে কৌশলে, নানা ছলে।

এ বাংলাদেশের জন্ম সঙ্ঘাত-সঙ্কটের মাঝ দিয়ে। তবে এ বক্তব্যটি অন্যভাবে দিলে মনে হবে যেন রাজনৈতিক বিষয়গুলো শুধু এই সঙ্কট-সঙ্ঘাতের মাঝ দিয়েই সামনে আসে। নতুবা সাধারণ জনগণ এ নিয়ে তেমন মাথা ঘামায় না। সে জন্যই তাদের মগজ ধোলাই করাকে ক্ষমতা দখল প্রত্যাশীরা প্রাধান্য দেয়।
বিখ্যাত সমাজবিজ্ঞানী রবার্ট জে লিফটন তার ‘থট রিফর্ম’ গ্রন্থে এর বিশদ বর্ণনা দিয়েছেন। জনগণের মানসকে তৈরি করতে এবং নিজের স্বার্থে ব্যবহারের জন্য ছয়টি ব্যবস্থা নেয়ার জন্য তিনি পরামর্শ দিয়েছিলেন। আজকের বিশ্বের দিকে দৃকপাত করলে দেখা যাবে, এই প্রেসক্রিপশন ক্ষমতাপ্রত্যাশী এবং এর দখলদাররা পুরোপুরি কাজে লাগিয়েছে।

এই ছয়টি পদ্ধতি হলো- ১. দোষারোপ /অত্যাচার করা ২. বড় বড় কথা বলা এবং কোনো বিষয়ে ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে তোলা ৩. প্রতিপক্ষকে অপদেবতার স্থানে স্থাপন এবং সেই হিসাবে প্রতিভাত করা, ৪. মেরুকরণ ৫. ‘স্বর্গীয়’ অনুশাসন ৬. বিশাল প্রচারণা।

এই পদ্ধতিগুলো অনুসরণ করলে সহজেই জনগণকে তাদের অভীষ্ট পথে আনা যায় বলে লিফটন মন্তব্য করেছেন। একটু খতিয়ে

দেখলেই কথাগুলোর সত্যতা অনুভব করা
যায়। এ ব্যাপারে জার্মানির হিটলারের বক্তব্যগুলো প্রণিধানযোগ্য। তার কয়েকটি এখানে উল্লেখ করা হলো : ১. সত্য গুরুত্বপূর্ণ নয়, শুধু বিজয় ২. আমি বুঝি না কেন, মানুষ প্রকৃতির মতো নিষ্ঠুর হবে না ৩. কোনো জাতিকে দখল করতে হলে, প্রথমে এর নাগরিকদের নিরস্ত্র ও কর্মহীন করতে হবে।

আসলে অতীতের রাষ্ট্রীয় নেতৃবর্গ এবং চিন্তাবিদরা জনগণকে শক্তি ছাড়া কেমনভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায় তার অনুসন্ধান করেছেন। আবার জনগণকে উৎসাহও জুগিয়েছেন। মার্কিন খ্যাতনামা ব্যক্তিত্ব বেনজামিন ফ্রাংকলিনের এমন উৎসাহের একটি কথা হলো- ‘স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ হলো সৃষ্টিকর্তার (গডের) বাধ্যানুগত হওয়া।’ আবার টমাস জেফারসন বলেছেন, ‘জনগণের সরকারি সাহায্যের প্রয়োজন ভুলের বিষয়ে, কারণ সত্য নিজ শক্তিতে দাঁড়াতে পারে।’ শিরোনামটি নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে- কী প্রকাশ্য এবং কী গোপন।

জবাব মাত্র দুটি শব্দ- গণতন্ত্র ও পন্থা। গণতন্ত্রের উদ্ভবের ইতিহাস সবার জানা। এককেন্দ্রিক ক্ষমতার অপব্যবহার এবং অত্যাচারকে প্রতিরোধ করতে জনগণকে একত্র করার একটি পথ এবং এই বিষয়টির অগ্রগতির লক্ষ্যে সৃষ্টি করা হয়েছে পথ ও পন্থা। কিন্তু যারা ক্ষমতালোভী তারা সর্বদা চেষ্টা করেছে এই পথ ও পন্থায় বিঘ্ন সৃষ্টি করতে। ফলে বিশ্বে এখনো গণতন্ত্র পুরোপুরি কায়েম হয়নি। তবে গণতন্ত্রের নামে ‘নির্বাচন’ প্রথাটি চালু আছে। এখন এই নির্বাচনকে নিয়ন্ত্রণের কৌশল সবাই রপ্ত করতে ব্যস্ত।

এরই ফলে উদ্ভব হয়েছে এমন এক শংকর ব্যবস্থা যাকে সবাই ‘কর্তৃত্ববাদী গণতন্ত্র’ বলে অভিহিত করছেন। বিখ্যাত সমাজবিদ এন্ড্রিয়াস স্যাডলার বলেছেন, ‘এই ব্যবস্থায় যা চলে তা হলো বহুদলীয় রাজনীতির খেলা’ এবং নির্বাচন গণতন্ত্রের নয়, কর্তৃত্ববাদের হাতিয়ার হিসেবে পরিণত হয়েছে।

বাংলাদেশে এই ব্যবস্থা ২০১৪ সালের পরে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে। সে বছর বিএনপি নানা অভিযোগে এবং নির্বাচন নিরপেক্ষ হবে না বলে বর্জন করেছিল। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাজনৈতিক ধারার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যাবে না, বিএনপি সে নির্বাচনে যোগদান করলেও এই কর্তৃত্ববাদী ধারা আসত কি না। তবে ধারাটি প্রতিষ্ঠা হয়েছে সহজেই বিএনপির নির্বাচন বর্জনের মাঝ দিয়ে। স্যাডলার প্রমুখ বলেছেন, ‘২০১৪ সালের নির্বাচনের পরই স্পষ্ট হয়ে ওঠে, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ বিএনপিকে কোনো ক্রমেই রাজনীতিতে জায়গা দিতে আগ্রহী নয়।’ সাংবাদিক জাফর সোবহানও তার এক নিবন্ধে এই বক্তব্যই তুলে ধরেছেন। ‘কেবল একপক্ষই থাকতে পারবে’ শিরোনামের প্রবন্ধে সামগ্রিক অবস্থা বর্ণনা করেছিলেন জাফর। লিখেছিলেন, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের গেম প্লান খুব স্পষ্ট। চেপে ধরে বিএনপির প্রাণবায়ু বের করে ফেলা অব্যাহত রাখা (The game plan for the ruling Awami League is clear. The AL plan for the coming year is therfore straightforward : Continue to squeeze life out of the BNP). বর্তমান অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে তাঁর মন্তব্য যেন পরিস্থিতির প্রতিফলন।

কর্তৃত্ববাদী গণতন্ত্র যা এখন বাংলাদেশে কায়েম হয়েছে, তা নিয়ে অনেক গবেষণা ও আলোচনা রয়েছে। বিজ্ঞজনেরা বলেছেন, আধুনিক ডিক্টেটররা এ ধরনের ব্যবস্থা পছন্দ করেন। কারণ এর সাথে গণতন্ত্রের গন্ধ আছে। ‘গণতন্ত্র’ আছে যেখানে ডিক্টেটরই প্রধান। তাই এর এত আদর ও কদর। বাংলাদেশসহ বিশ্বের অন্তত ৩৭টি দেশে এ ধরনের ‘দো-আঁশলা’ গণতন্ত্র বিরাজ করছে বলে লন্ডনের বিখ্যাত ইকোনমিস্ট পত্রিকা মন্তব্য করেছে। তারা বলছেন, সারা পৃথিবীতেই এখন গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠার নামে পিছু হটার পথ তৈরি হচ্ছে। উদাহরণ হিসেবে রাশিয়া, ভেনিজুয়েলা, ফিলিপাইন, তুরস্ক, কম্বোডিয়া, ইথিওপিয়াসহ দুই ডজন দেশের নাম তারা উল্লেখ করেছেন। প্রথম দিকে বিশেষজ্ঞরা ভেবেছিলেন, এই অবস্থা সত্যিকারের গণতন্ত্রে উত্তরণের পথ হবে। পরে এ ধারণা ভুল প্রমাণিত হয়েছে। এই দো-আঁশলা গণতন্ত্র প্রকাশ্যেই কর্তৃত্ববাদে পরিণত হয়েছে।
দো-আঁশলা গণতন্ত্রের প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলো বর্ণনা করেছেন লেভিতস্কি, ওয়ে এবং একম্যান। তারা বলেছেন, এ ব্যবস্থায় নির্বাচন, নির্বাহী ও আইন সভা এবং বিচারব্যবস্থাকে নির্বাচনের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে আনা হয়। বিশেষ করে বিচার বিভাগের কোনো স্বাধীনতা থাকে না।

ক্ষমতালোভীরা কেন নির্বাচনকে নিয়ন্ত্রণ করতে চায়? এর জবাবও সহজ। আজকের যুগে রাজতন্ত্র বা সে ধরনের কোনো শাসন অচল। তদুপরি আন্তর্জাতিক পৃষ্ঠপোষকতা বা সমঝোতা ছাড়া ক্ষমতা দখল করে রাখা কঠিন। সে জন্যই নির্বাচন প্রয়োজন। আরো প্রয়োজন আরেকটি ধারণা। তা হলো তারা কোনোক্রমেই নির্বাচনকে নিয়ন্ত্রণও করছেন না বা তার ফলাফল পাল্টাচ্ছেন না।

একটু খেয়াল করলেই দেখা যাবে, এভাবেই নানা দেশ বিশাল কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। তারা বিশেষভাবে একটি প্রচারের দিকে লক্ষ্য রাখে- তা হলো, তাদের পরিচালিত ব্যবস্থায় যে নির্বাচন হচ্ছে, তা ‘অবাধ এবং প্রভাবমুক্ত’। এ কাজটি ক্ষমতাসীন দলগুলো খুব সহজেই করতে পারে। কারণ প্রচার এবং পরিচালনা পুরোপুরিভাবে তারাই নিয়ন্ত্রণ করে।

বাংলাদেশের গণতন্ত্র নিয়ে আন্দোলন, আলোচনা এবং নিয়ন্ত্রণের সব পন্থা গত কয়েক দশক ধরে চালু আছে। কিন্তু যে কাজটি গভীরতার সাথে করা প্রয়োজন সত্যিকারের গণতন্ত্রের জন্য, তা হচ্ছে না। এর কারণ অনেক। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো এ ব্যাপারে কোনো আলোচনা হোক অথবা জনগণের মধ্যে তা বিস্তার লাভ করুক- এমনটি হচ্ছে না। জনগণকে পুরোপুরি সম্পৃক্ত না করতে পারলে, অগণতান্ত্রিক শক্তি বিরাজ করতে থাকবে, অবশ্য কথিত গণতন্ত্রের লেবাস পরে।

এটা সত্য, যারা ক্ষমতায় যেতে চায় তাদের কৌশলী হতে হবে। এর মধ্যে প্রধান হলো সত্য তথ্য যেন জনগণের কাছে পৌঁছে। আমাদের পল্লীকবি জসীমউদ্দীনের কবিতার বিখ্যাত মন্তব্য উল্লেখ করা যায়- ‘গুনগুনাগুন ছুটলো কথা, শুনশুনা তানে। শুনশুনাশুন সবাই শোনে, কিন্তু কানে কানে।’ এটা সত্য, ক্ষমতাসীনরা কখনোই চাইবে না, জনগণ তাদের বক্তব্য ছাড়া অন্য বক্তব্য শুনুক। তবে এটাও সত্য, আজকের টেকনোলজির যুগে এটা সম্ভব নয়; এমনকি অতীতেও ছিল না। কেবল কৌশল প্রয়োজন।

মার্কিন রাজনীতিতে এই নজরদারি অত্যন্ত প্রযুক্তিনির্ভর। কথিত আছে, সে দেশে রিপাবলিকান পার্টির অনেক ছোট সংগঠন আছে যেখানে প্রযুক্তিবিদরা প্রতিদিনের ঘটনাবলি বিশ্লেষণ করে সম্ভাব্য প্রতিবিধান এবং বক্তব্য তৈরি করে পার্টির কাছে প্রেরণ করে থাকেন। পার্টির নেতারা তা বিবেচনা করেন। প্রচার এবং কর্মকাণ্ডের আশ্রয় নেন। এ দেশের রাজনৈতিক দলগুলো তেমন পরিশ্রম করে না। এর একটি কারণ হয়তোবা সে প্রযুক্তির বিকাশ এখানে তেমন নেই এবং জনগণ রাজনৈতিকভাবে সচেতন। সে জন্যই এখানে গণতন্ত্র স্থাপনের প্রক্রিয়ায় নানা প্রতিবন্ধকতা দেখা গেছে বারবার। তবে সঠিক নেতৃত্ব এবং বক্তব্য জনগণের সামনে এলে তারা সমর্থন জানিয়েছে দ্রুত।

এই অবস্থায় একটি বিপত্তি হলো ক্ষমতাবানরা জনমত সৃষ্টি বা নিয়ন্ত্রণের জন্য ব্যবহার করে থাকে শক্তি। এটা কখনো ক্রূর, কখনো খানিকটা কৌশলী- তবে এই কৌশলেও ক্ষমতার প্রয়োগ দেখা যায়। রাষ্ট্রসহ সবাইকে এর ব্যবহার করতে দেখা যায়। আরেকটি ভয়াবহ অবস্থা এখন প্রায় প্রতিদিনের স্বাভাবিক বিষয়। তা হলো খুন, গুম, জখম এবং ‘আইনশৃঙ্খলা’র নামে ধরপাকড়।

এর ফলে সৃষ্টি হয়েছে সর্বস্তরে অসহিষ্ণুতা এবং সহিংসতা। গণতন্ত্র দুর্বল হওয়ার এই দুই প্রধান কারণের ব্যাপকতা বাংলাদেশে যেন বেড়েই চলেছে। এর বিলুপ্তি বা কম হওয়ার প্রচেষ্টা কেউ করছে না। বরং রাজনীতির অংশীদাররা এর নানা অপব্যবহারে লিপ্ত।

গণতন্ত্রের অন্যতম মূলভিত্তি হচ্ছে অংশগ্রহণমূলক রাজনীতি। কিন্তু এ দেশে এর বিপরীতে নানা কৌশলী কর্মকাণ্ড চলছে। এটা ক্ষমতাসীনদের কর্মকাণ্ডেই কেবল সাহায্য করে থাকে। তবে এতে গণতন্ত্র দুর্বল হয় এবং অগণতান্ত্রিক ধারা শক্তিশালী হয়। যেমন গণতান্ত্রিক পদ্ধতি যদি জনগণের প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণে না হয়ে শুধু রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর হাতে ন্যস্ত থাকে, তখন জনগণের আগ্রহ কমে যায়।

গণতন্ত্র তখনই সুদৃঢ় হবে যখন জনগণ অনুভব করবে দেশের বা রাষ্ট্রের প্রচলিত শাসনব্যবস্থায় তাদের একটা বক্তব্য বা স্থান থাকবে। কিন্তু ক্ষমতাসীনরা সেটা চান না। বরং তাদের কর্মকাণ্ডে বিরাজমান দুর্নীতি আরো বিস্তার লাভ করছে। ফলে বিশ্বের মানচিত্রে দুর্নীতিগ্রস্ত দেশের তালিকা থেকে বাংলাদেশ বাদ পড়ছে না।
যেহেতু প্রচার এখন প্রায় একটি গোষ্ঠীর হাতে সীমাবদ্ধ, যারা ইসলাম এবং মুসলিম সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা পোষণ করে থাকে, তাই এই প্রচারের মূল বিষয় হয়ে থাকে ইসলাম-মুসলিম ভীতি। যেমন একটি মন্তব্য হলো- কয়েক দশকে সমাজ জীবনে ইসলামের দৃশ্যমান উপস্থিতি বৃদ্ধি পেয়েছে। ‘অপূর্ব’ মন্তব্য।
যে দেশের শতকরা ৯২ ভাগ মুসলমান, তারা তাদের জীবন ব্যবস্থা, পোশাক-আচরণে কি অন্যের নকল করবে? আমেরিকা-ইউরোপের লোকেরা কি মুসলিমদের মতো পাঁচবার নামাজ পড়ে? রাষ্ট্রধর্ম নিয়ে নানা কথা। যখন মার্কিন ডলার নিয়ে ব্যবসা-বাণিজ্য চলে, সেখানে কোনো কথা হয় না। অথচ সেখানে লেখা আছে ‘ইন গড উই ট্রাস্ট। সেটা কি সাম্প্রদায়িকতা বা ধার্মিকতা হলো না?

বাংলাদেশের রাজনীতির আলোচনায় অবশ্যই ভারতের বিষয় আসবে। সম্প্রতি ‘বাংলাদেশ পলিটিক্স অব রিভেঞ্জ অ্যান্ড ভেনজিয়ান্স’ নিবন্ধে বেনজামিন মেনডেস এর বিশদ বর্ণনা করেছেন। এশিয়ান ট্রিবিউনে প্রকাশিত এই নিবন্ধে যে চিত্র এসেছে, তা বিশাল চিন্তার খোরাক। তবে শেষ কথা হলো, জনগণকে এখনই সঙ্ঘবদ্ধ হতে হবে তাদের জীবন ব্যবস্থা, বিশ্বাস এবং কর্মকাণ্ডকে নিজেদের মতো করে গড়ে তোলার জন্য। নতুবা ক্ষয়িষ্ণু নদী তীরের মতো জীবনটাই হারিয়ে যাবে।

 


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us