ওয়াজিব কোরবানি না দিতে পারলে কী করবেন

অন্য এক দিগন্ত ডেস্ক | Jul 31, 2020 09:25 am
ওয়াজিব কোরবানি না দিতে পারলে কী করবেন

ওয়াজিব কোরবানি না দিতে পারলে কী করবেন - ছবি : সংগৃহীত

 

ইসলামে কোরবানি একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। সামর্থ্যবান ব্যক্তির ওপর কোরবানি আদায় করা ওয়াজিব। সামর্থ্য থাকার পরও কেউ যদি এই মহৎ ইবাদত পালন করে না, তাকে হাদিসে নিন্দা করা হয়েছে। হাদিস শরিফে এসেছে, ‘যার কোরবানির সামর্থ্য রয়েছে, কিন্তু কোরবানি করে না—সে যেন আমাদের ঈদগাহে না আসে।’ (মুস্তাদরাকে হাকেম, হাদিস: ৩৫১৯; আত্তারগিব ওয়াত্তারহিব: ২/১৫৫)

কোরবানি কার উপর ওয়াজিব
প্রাপ্তবয়স্ক, সুস্থ মস্তিষ্কসম্পন্ন প্রত্যেক মুসলিম নর-নারী—যে ১০ জিলহজ ফজর থেকে ১২ জিলহজ সূর্যাস্ত পর্যন্ত সময়ের ভেতরে প্রয়োজনের অতিরিক্ত নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হবে; তার ওপর কোরবানি করা ওয়াজিব।

অর্থ-কড়ি, টাকা-পয়সা, সোনা-রূপা, গহনা-অলঙ্কার, বসবাস ও খোরাকির অতিরিক্ত জমি, প্রয়োজন অতিরিক্ত বাড়ি, ব্যবসায়িক পণ্য ও অপ্রয়োজনীয় সব আসবাবপত্র কোরবানির নেসাবের ক্ষেত্রে হিসাবযোগ্য।

আর নেসাব হল স্বর্ণের ক্ষেত্রে সাড়ে সাত (৭.৫) ভরি, রূপার ক্ষেত্রে সাড়ে বায়ান্ন (৫২.৫) ভরি। আর টাকা-পয়সা ও অন্যান্য বস্তুর ক্ষেত্রে নিসাব হলো- এগুলোর মূল্য সাড়ে বায়ান্ন তোলা রূপার মূল্যের সমপরিমাণ হওয়া (টাকার অংকে প্রায় ৫৫ হাজার টাকা)।

আর সোনা বা রূপা কিংবা টাকা-পয়সা এগুলোর কোনো একটি যদি পৃথকভাবে নেসাব পরিমাণ না থাকে কিন্তু প্রয়োজন অতিরিক্ত একাধিক বস্তু মিলে সাড়ে বায়ান্ন তোলা রূপার মূল্যের সমপরিমাণ হয়ে যায়, তাহলেও কোরবানি করা ওয়াজিব। (আলমুহিতুল বুরহানি: ৮/৪৫৫; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া: ১৭/৪০৫)

ওয়াজিব কোরবানি করতে না পারলে করণীয়
কেউ যদি কোরবানির দিনগুলোতে ওয়াজিব কোরবানি দিতে না পারে, তাহলে কোরবানির পশু ক্রয় না করে থাকলে তার উপর কোরবানির উপযুক্ত একটি ছাগলের মূল্য সদকা করা ওয়াজিব। আর যদি পশু ক্রয় করেছিল, কিন্তু কোনো কারণে কোরবানি দেওয়া হয়নি, তাহলে ওই পশু জীবিত সদকা করে দেবে। (বাদায়েউস সানায়ে: ৪/২০৪; ফাতাওয়া কাজিখান: ৩/৩৪৫)

 কোরবানির সময়

জিলহজের দশম দিন ঈদের নামাজ পড়ার পর থেকে জিলহজের ১২ তারিখ সূর্যাস্তের আগ পর্যন্ত কোরবানি করা যাবে। তবে ঈদের নামাজের আগে কোরবানি করা যাবে না। ঈদের নামাজ পড়ে এসে কোরবানি করতে হবে। যদি শহরের একাধিক স্থানে ঈদের নামাজ হয় তাহলে যেকোনো এক স্থানে নামাজ আদায় হয়ে গেলে সব স্থানেই কোরবানি করা জায়েজ হবে।

জবাই

কোরবানিদাতা সে নিজেও জবাই করতে পারবে এবং কোনো আলেম তথা জানলেওয়ালা কাউকে দিয়ে কোরবানি করাতে পারবে। তবে উত্তম হচ্ছে নিজের কোরবানি নিজে করা। মুখ দিয়ে উচ্চারণ করে নিয়ত করা জরুরি নয় বরং অন্তরের নিয়তই যথেষ্ট। জবাই করার সময় অবশ্য অল্লাহর নাম নিতে হবে।
কোরবানির গোশত : কোরবানির গোশত নিজে খাবে এবং গরিব-মিসকিনদের খাওয়াবে। উত্তম পন্থা হচ্ছে গোশতকে তিন ভাগে ভাগ করা, একভাগ গরিব-মিসকিনকে দান করা। একভাগ আত্মীয়স্বজনকে দেয়া এবং এক অংশ নিজ পরিবারের জন্য রাখা।

পশুর চামড়া

কোরবানির পশুর চামড়া নিজে ব্যবহার করতে পারবেন এবং অন্যকে হাদিয়াও দিতে পারবেন। আবার মাদরাসার লিল্লাহ ফান্ডেও দান করা যাবে। বিক্রি করলে চামড়ার টাকা একমাত্র গরিব-মিসকিনকেই দান করতে হবে। সবচেয়ে উত্তম হচ্ছে মাদরাসার গরিব ফান্ডে দান করা।

কোরবানি যেহেতু একটি উত্তম ইবাদত। এ ইবাদতটিও একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য হওয়া চাই। কারণ আল্লাহ তায়ালা কুরআনে বলেছেন, ‘নিশ্চই আমার কাছে কোরবানির পশুর গোশত ও রক্ত কিছুই পৌঁছে না, তবে আমার কাছে পৌঁছে একমাত্র তাকওয়া। (সূরা হজ : ৩৭) (তথ্য সূত্র : আহসানুল ফাতাওয়া ৭/৫১০, তিরমিজি ১/১২০, ইমদাদুল ফাতায়া ২/১৬৬, মুয়াত্তা মালেক ১৮৮)


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us