ভারত ও ইসরাইল যৌথ উদ্যোগে বানাবে যেসব অস্ত্র

অন্য এক দিগন্ত ডেস্ক | Sep 26, 2020 06:16 pm
ভারত ও ইসরাইল যৌথ উদ্যোগে বানাবে যেসব অস্ত্র

ভারত ও ইসরাইল যৌথ উদ্যোগে বানাবে যেসব অস্ত্র - ছবি সংগৃহীত

 

বালাকোটের কথিত সন্ত্রাসী শিবির গুঁড়িয়ে দেয়ার জন্য স্যাটেলাইট গাইডেড ইলেকট্রো-অপটিক্যাল সেন্সর-যুক্ত স্পাইস বোমা কিংবা লাদাখের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় (এলএসি) চীনা বিমানবাহিনীর গতিবিধির উপর নজরদারি করতে ‘হেরন’ ড্রোন এবং ‘ফ্যালকন’ এয়ারবোর্ন আর্লি ওয়ার্নিং অ্যান্ড কন্ট্রোল সিস্টেম (অ্যাওয়াক্‌স)। সাম্প্রতিক কালে নানা ঘটনাতেই ভারতীয় প্রতিরক্ষা বাহিনীর ইসরাইলি-নির্ভরতা নজরে এসেছে। এ বার সামরিক ক্ষেত্রে এই সহযোগিতাকেই নতুন মাত্রা দিতে সক্রিয় হয়েছে দু’দেশ।

যৌথ উদ্যোগে অত্যাধুনিক অস্ত্র এবং সামরিক সরঞ্জাম উৎপাদনের উদ্দেশ্যে সম্প্রতি সাব-ওয়ার্কিং গ্রুপ তৈরি করেছে ভারত ও ইসরাইল। দু’দেশের প্রতিরক্ষা সচিব এবং সমরাস্ত্র নির্মাতা সংস্থাগুলির প্রতিনিধিরা ওই গোষ্ঠীতে রয়েছেন। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রের খবর, দ্বিপক্ষীয় চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি উৎপাদিত অস্ত্র এবং সামরিক সরঞ্জাম অন্য দেশে বিক্রিও ওই গোষ্ঠীর অন্যতম লক্ষ্য।

ভারতে অস্ত্র এবং সমর সরঞ্জাম রফতানিকারক দেশগুলোর তালিকায় ইসরাইলের স্থান চতুর্থ। রাশিয়া, আমেরিকা এবং ফ্রান্সের পরেই। গত আর্থিক বছরে ইসরাইল থেকে প্রায় ১০০ কোটি ডলারের (প্রায় ৭,৩৭০ কোটি টাকা) প্রতিরক্ষা সামগ্রী আমদানি করা হয়েছে। ভারতের প্রতিরক্ষা ও গবেষণা সংস্থা (ডিআরডিও)-র সঙ্গে ইতিমধ্যেই একাধিক যৌথ কর্মসূচি শুরু হয়েছে।

ডিআরডিও এবং ইসরাইলি অ্যারোস্পেস ইন্ডাস্ট্রিজের যৌথ উদ্যোগে ভূমি থেকে আকাশ ‘বারাক’ ক্ষেপণাস্ত্রের তিনটি সংস্করণ উৎপাদনের কাজ চলছে। এই ক্ষেপণাস্ত্র পেতে ভারতীয় স্থলসেনা ১৬,৮৩০ কোটি, বিমাবাহিনী ১০,০৭৬ কোটি এবং নৌসেনা ২,৯০৬ কোটি রুপি বরাদ্দ করেছে। ‘হেরনে’র সঙ্গে সিয়ারচার-২ নজরদারি ড্রোনের পাশাপাশি ইসরাইলি বোমাবাহী ‘কিলার ড্রোন’ হারপ-এর ব্যবহারও শুরু করেছে ভারতীয় সেনাবাহিনী।

স্পাইস-২০০০ বোমার পাশাপাশি ইসরাইলের তৈরি ‘কুইক রিঅ্যাকশন’ বিমানবিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র ‘স্পাইডার’ এবং বিমানে ব্যবহৃত ‘পাইথন’ ও ‘ডার্বি’ ভারতীয় সেনার অন্যতম অস্ত্র। ইসরাইলি বিমানবাহিনীর অন্যতম অস্ত্র প্রিসিশন গাইডেড বোমা (স্মার্ট বম্ব) ‘মেইজ’ও রয়েছে ভারতীয় বিমান বাহিনীর ভাণ্ডারে।

হেরন ড্রোন ব্যবহারের মাধ্যমে ক্ষেপাণাস্ত্রের নিশানা নির্ভুল করার লক্ষ্যে ইসরাইলের প্রযুক্তিগত সহায়তায় একটি গবেষণা কর্মসূচি শুরু করেছে ডিআরডিও। এর পোশাকি নাম ‘প্রজেক্ট চিতা’। ‘অ্যারোস্ট্যাট’ এবং ‘গ্রিন পাইন’ রাডারের কার্যকরিতায় খুশি ভারতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ইসরাইলের থেকে ৬৬টি অত্যাধুনিক ‘এয়ার ডিফেন্স অ্যান্ড ফায়ার কন্ট্রোল রাডার’ কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আনুমানিক খরচ ৪,৫৭৭ কোটি রুপি।

কয়েক বছর আগে প্রায় ৮,১০৭ কোটি টাকা দিয়ে ইসরাইল থেকে তিনটি ‘ফ্যালকন’ কিনেছিল ভারত। রাশিয়ার তৈরি সামরিক পরিবহণ বিমানে আইএল-৭৬-এ বসানো এই ইসরাইলি নজরদারি ব্যবস্থার কাজ হল, ভারতীয় বিমানবাহিনীর ফাইটার জেটগুলিকে নিখুঁত ভাবে ‘লক্ষ্য’ চিহ্নিত করতে সাহায্য করা। পাশাপাশি, শত্রুপক্ষের বিমানবাহিনীর তৎপরতার উপর নজরদারির কাজও করতে পারে। গত বছর পাকিস্তানের বালাকোটে সন্ত্রাসী শিবিরে হামলাকারী ১২টি মিরাজ-২০০০ ফাইটার জেটকে পরিচালনা করেছিল এই ইসরাইলি অ্যাওয়াক্‌স।

৪০০ কিলোমিটার পাল্লার ‘ফ্যালকন’ ৩৬০ ডিগ্রি ক্ষেত্র জুড়ে নজরদারিতে সক্ষম। কিন্তু ভারতে তৈরি অ্যাওয়াকস ‘নেত্র’র ‘নজরদারির পরিধি’ ২৪০ ডিগ্রি। চলতি মাসেই প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকা খরচ করে ফ্যালকনের আরো দু’টি উন্নততর সংস্করণ ও আনুষঙ্গিক সরঞ্জাম কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নিরাপত্তা বিষয়ক ক্যাবিনেট কমিটি (সিসিএস)। যৌথ উদ্যোগে অ্যাওয়াক্‌স নির্মাণ কর্মসূচি নিয়েও দ্বিপক্ষীয় আলোচনা চলছে।

সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us