জামালপুরের সেই ডি সি’র শাস্তি এবং কিছু প্রশ্ন

সাইফুল ইসলাম তানভীর | Mar 14, 2021 04:09 pm
জামালপুরের সেই ডি সি’র শাস্তি এবং কিছু প্রশ্ন

জামালপুরের সেই ডি সি’র শাস্তি এবং কিছু প্রশ্ন - ছবি সংগৃহীত

 

২০১৯ সালে জামালপুরের তৎকালীন ডেপুটি কমিশনার (জেলা প্রশাসক) আহমদ কবিরের একটি আপত্তিকর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে যায়। সম্প্রতি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় তার সেই আপত্তিকর ঘটনার জন্য বিশেষ শাস্তি দিয়েছে। ওই ঘটনার পর তিনি ওএসডি ছিলেন। এখন বিভিন্ন আইনি সিস্টেম দেখিয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় জানাল, আহমদ কবির ডিসি পদে যেতে পারবেন না। থাকবেন তার থেকে নিম্ন পদে এবং বেতন আগের তুলনায় অর্ধেক পাবেন। জামালপুরের সেই ডিসি তার অফিসের অফিস সহকারীর সাথেই গোপনে ব্যভিচার করত। কেউ তা গোপনে ক্যামেরাবন্দী বা ভিডিও করে রেখেছেন। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় নাকি আহমদ কবিরের পরিবারের লোকদের সম্মান ইজ্জত বিবেচনা করে এই সামান্য শাস্তি দিয়েছে। কত সুন্দর কথা। আহমদ কবির বিবাহিত লোক হয়ে এত বড় একজন দায়িত্বশীল হয়ে এভাবে ব্যভিচারে লিপ্ত হলেন এবং সেটা সমাজ রাষ্ট্রে জানাজানিও হলো। তাতে কি তার স্ত্রী-সন্তানের সম্মান যায়নি?

ব্যভিচারের বিচার কি এত সহজ হতে পারে? এরকম বিচার করলে কি সমাজ রাষ্ট্র থেকে ব্যভিচার বন্ধ করা সম্ভব? নিশ্চয় সম্ভব নয়। মহান আল্লাহ ব্যভিচারের বিচার কিভাবে হবে তা আসমানি কিতাবেই উল্লেখ রেখেছেন। ব্যভিচারের জন্য অবিবাহিত এবং বিবাহিত আলাদা আলাদা রকমের শাস্তি। এই ব্যভিচারের জন্য শারীরিক কঠিন শাস্তির বিধান ইসলামে রয়েছে। সেভাবে বিচার হলে ব্যভিচার খুব একটা ঘটতে পারে না। জামালপুরের ডিসির যে শাস্তি হলো সেটা খুবই লঘু পর্যায়ের।

এটা দিয়ে সরকার প্রমাণ করতে চায়, ‘আমরা কাউকে ছাড় দেই না, বিচার করি।’ অপ্রকাশ্য-প্রকাশ্য ব্যভিচার বাংলাদেশের প্রায় সব শ্রেণীর মধ্য চলছে। কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে তো ব্যভিচার প্রকাশ্য বৈধতায় চলছে! ১৯৯৬-২০০১ সময়ের মধ্য জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের এক ক্যাডার একশত জন ছাত্রীকে ধর্ষণ করে সেঞ্চুরি উৎসব পালন করেছিল। বিচার কী হয়েছিল? এমন জানা যায় যে তখনকার ভিসি ওই ধর্ষককে ডেকে নিয়ে রাজনৈতিক বিবেচনায় মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন, বাবা এসব আর করো না!

আচ্ছা এই যে ডিসির বিচার লঘু হলেও করল। কিন্তু ময়মনসিংহের একজন এমপি কোনো এক নারীকে মুক্তিযোদ্ধাদের অফিসে দাঁড়িয়েই ধর্ষণ করলেন। যে ভিডিও দেশের লাখ লাখ মানুষ দেখল। সেটা নিয়ে কি কোনো আওয়াজ করেছে প্রশাসন? সেই এমপির কি বিচার হলো? এদেশে বিভিন্ন হোটেল ফ্ল্যাটে ব্যভিচার হচ্ছে। একটু ইনভেস্টিগেশন করলেই তা বের করা সম্ভব। রাষ্ট্র কি সেটা জানে না? আমাদের সমাজ রাষ্ট্রে ব্যভিচারটা সাঙ্ঘাতিকভাবে চলছে। এটার মূলোৎপাটন করতে হলে আসমানি কিতাবের আইন মেনে কাজ করতে হবে।

গত ৪ মার্চ দৈনিক প্রথম আলোতে (অনলাইন) জামালপুরের সেই ডিসি আহমদ কবিরের এই ব্যভিচারের বিচারের শাস্তি নিয়ে প্রতিবেদন করে। সেখানে ওই ডিসির একটি ছবি দিয়েছে। যে ছবিতে দেখা যাচ্ছে, ডিসি আহমেদ কবির এক অনুষ্ঠান মঞ্চে বক্তৃতা করছেন। সেই অনুষ্ঠান মঞ্চের ব্যানারে লেখা বাল্যবিয়েমুক্ত জেলা ।


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us