চীনে অনেক সমস্যা আছে...
চীনে অনেক সমস্যা আছে... - ছবি : সংগৃহীত
চীনের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে কী দলীয় ছাত্ররাজনীতির গুণ্ডামি পাণ্ডামি দেখবেন? দেখবেন না। আজ যে চীন অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছে, তার কারণ হলো শিক্ষা ও গবেষণায় কোনো ধরনের খামখেয়ালিপনা, হেলাফেলা ওরা করতে রাজি নয়। চীন সরকার টাকা দিয়ে ইউরোপ ও আমেরিকার প্রফেসরদের নিয়ে ওখানে নিয়োগ দিচ্ছে। প্রতিটি রাজ্যে গবেষণার জন্য ওরা অঢেল টাকা দিয়ে ল্যাবরেটরি খুলে দিচ্ছে।
চীনে অনেক সমস্যা আছে। রাজনৈতিক দমন আছে, নিপীড়ন আছে। বাকস্বাধীনতার অভাব আছে।
আমেরিকায় বহু সমস্যা আছে। যখন তখন গান ভায়োলেন্সে মানুষ মরে। বর্ণবাদ আছে।
পৃথিবীর উন্নত দেশগুলো সমস্যামুক্ত নয়। একেক দেশের একেক সমস্যা। কিন্তু মৌলিক কিছু বিষয়ে তারা সমস্যা দূর করতে পেরেছে বলেই উন্নতি করেছে। উন্নতির ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারছে। তেমনই এক মৌলিক বিষয় হলো শিক্ষা ও গবেষণা।
আমেরিকায় গান ভায়োলেন্সে প্রতি বছর ২০ হাজার মানুষ মারা যায়। কিন্তু আমেরিকার ইউনিভার্সিটিতে ২০ জন শিক্ষকও অনৈতিকভাবে, দলীয়ভাবে, কম যোগ্যতা দেখে নিয়োগ দেয়া হয় না। গান ভায়োলেন্স ব্যক্তির অপরাধ। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগে কোনো ধরনের অনৈতিকতার আশ্রয় হলো রাষ্ট্রীয় অপরাধ।
আমেরিকার কোনো ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাস নেতার পোস্টারে ছেয়ে যায় না। জর্জ ওয়াশিংটন কিংবা আব্রাহাম লিঙ্কনের হাতে গড়া ছাত্ররাজনীতির দানবরা শিক্ষাকে ব্যহত করে না। শিক্ষকরা পড়াশুনা, গবেষণা বাদ দিয়ে ওমুক তুমক চেতনায় দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় নিয়োজিত নয়। সেটা রক্ষা করার জন্য ওদের সেনাবাহিনী আছে, বিমানবাহিনী আছে। ছাত্র-শিক্ষকদের যেটা কাজ, সেটা নিয়েই থাকতে হয়। ফালতু কাজে সময় নষ্ট করার সামান্যতম সুযোগ নেই!
চীনের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে কী দলীয় ছাত্ররাজনীতির গুণ্ডামি পাণ্ডামি দেখবেন? দেখবেন না। আজ যে চীন অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছে, তার কারণ হলো শিক্ষা ও গবেষণায় কোনো ধরনের খামখেয়ালিপনা, হেলাফেলা ওরা করতে রাজি নয়। চীন সরকার টাকা দিয়ে ইউরোপ ও আমেরিকার প্রফেসরদের নিয়ে ওখানে নিয়োগ দিচ্ছে। প্রতিটি রাজ্যে গবেষণার জন্য ওরা অঢেল টাকা দিয়ে ল্যাবরেটরি খুলে দিচ্ছে।
ভারত তার দেশের বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোতে মানসম্পন্ন গবেষণা করছে। পিএইচডি ডিগ্রিধারী তৈরি করছে। ওইস ব গবেষকই ভারতের অর্থনীতি অনেক বড় অবদান রাখছে। ভারতে কী সমস্যা কম আছে? কিন্তু ওই দেশও উন্নত দেশের মতো শিক্ষা ও গবেষণার সংস্কৃতির চর্চা করছে। ভারত যে সারা দুনিয়ার ৬০ ভাগ টিকা উৎপাদন করছে, কিভাবে করছে? সেটার একটা সেট-আপ তৈরি হয়েছে সেখানে। কেমিক্যাল-বায়োকেমিক্যাল প্রোডাকশনে ভারত দুনিয়াতে চীনের পরের অবস্থান নিয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এসব দলীয় ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করতে হবে। স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পরও যে এমন অশ্লীল একটা বিষয় বিশ্ববিদ্যালয়ে টিকে আছে- এর চেয়ে লজ্জার মনে হয় কিছু নেই। মুর্খরা যদি বা কোনো দিন বুঝতে! ছাত্র-শিক্ষক রাজনীতি বন্ধ করা ছাড়া বাংলাদেশে আধুনিক শিক্ষার যাত্রা অসম্ভব! ৫০ বছর দেখার পরও যদি বুঝতে না পারেন, তাহলে আরো পঞ্চাশ বছর অপেক্ষা করুন!
@Rauful Alam
নিউজার্সি, যুক্তরাষ্ট্র