ভারতীয় দলের ক্রিকেটাররা বোর্ডের বার্ষিক চুক্তি অনুযায়ী যে বিপুল টাকা পান, সেটাই কী সারা বিশ্বে সব চেয়ে বেশি? বিভিন্ন বোর্ডের চুক্তির দিকে নজর রাখলেই পাওয়া যাবে উত্তর। দেখে নেয়া ক্রিকেট বোর্ডের থেকে কত টাকা পান বিভিন্ন দেশের ক্রিকেটাররা।

শ্রীলঙ্কার ক্রিকেট থেকে বোর্ডের চুক্তি নিয়ে গণ্ডগোলের সূত্রপাত। টাকা কম হওয়ায় সই করতে চাইছিলেন না দ্বীপরাষ্ট্রের ক্রিকেটাররা। তবে কি তারা সব চেয়ে কম টাকা পান?

একদমই না। শ্রীলঙ্কা বোর্ডে গ্রেড এ-তে থাকা ক্রিকেটাররা ৫৮ লাখ টাকা পান। টেস্ট খেলার জন্য ম্যাচ প্রতি সাড়ে ৫ লক্ষ টাকা দেয়া হয়। এক দিনের ক্রিকেট খেলার জন্য ৪ লক্ষ টাকা এবং টি২০ খেলার জন্য আড়াই লক্ষ টাকা পান ক্রিকেটাররা। এ ছাড়াও শতরান এবং ৫ বা ১০ উইকেট নেয়ার জন্য আলাদা বোনাস পান শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটাররা।

তবে বাংলাদেশ এবং পাকিস্তানের ক্রিকেটাররা আরো কম টাকা পান। পাকিস্তান বোর্ড গ্রেড এ ক্রিকেটারদের ৪৬ লক্ষ টাকা দেয়। গ্রেড বি-তে দেয় ২৮ লক্ষ টাকা, গ্রেড সি-তে দেয় ১৯ লক্ষ টাকা করে। টেস্ট ম্যাচ প্রতি ৩ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা পান ক্রিকেটাররা। এক দিনের ম্যাচে দেয়া হয় ২ লক্ষ ২০ হাজার টাকা। টি২০ ম্যাচে দেয়া হয় ১ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা।

বাংলাদেশের ক্রিকেটাররাও শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটারদের থেকে কম টাকা পান। গ্রেড এ+ বিভাগের ক্রিকেটাররা পান ৪১ লক্ষ টাকা। সব থেকে কম গ্রেড সি-র ক্রিকেটাররা পান ১০ লক্ষ টাকা করে। টেস্ট ম্যাচ প্রতি ২ লক্ষ ৬০ হাজার পান সাকিব আল হাসানরা। একদিনের ক্রিকেটে ম্যাচ প্রতি দেয়া হয় ১ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা। টি২০ ম্যাচের জন্য দেয়া হয় ১ লক্ষ টাকা।

নিউজিল্যান্ডর ক্রিকেটাররা বোর্ডের থেকে পান ১ কোটি টাকা। অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসনকে দেয়া হয় ১ কোটি ৩০ লক্ষ টাকা। টেস্ট খেলার জন্য ম্যাচ প্রতি সাড়ে ৪ লক্ষ টাকা দেয়া হয়। এক দিনের ম্যাচের জন্য দেয়া হয় ২ লক্ষ টাকা এবং টি২০ খেলার জন্য দেয়া হয় ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা।

বার্ষিক চুক্তি অনুযায়ী দক্ষিণ আফ্রিকার গ্রেড এ বিভাগে থাকা ক্রিকেটাররা পান ১ কোটি ৮০ লক্ষ টাকা। গ্রেড বি-তে থাকা ক্রিকেটারদের দেয়া হয় ৭৩ লক্ষ টাকা এবং গ্রেড সি-র ক্রিকেটারদের দেওয়া হয় ৫৫ লক্ষ টাকা। একটি টেস্ট ম্যাচ খেলার জন্য দেয়া হয় ৩ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা। একদিনের ক্রিকেট খেলার জন্য ৮৭ হাজার টাকা এবং টি২০-র জন্য ৫৮ হাজার টাকা। অধিনায়করা কিছু বেশি টাকা পান।

অস্ট্রেলিয়ার প্রধান ক্রিকেটাররা ১ কোটি ৬০ লক্ষ টাকা পান। অধিনায়ককে দেয়া হয় ৪ কোটি ২০ লক্ষ টাকা। টেস্ট ম্যাচ প্রতি দেয়া হয় ১১ লক্ষ টাকা এবং একদিনের ম্যাচের জন্য দেয়া হয় ৮ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা। টি২০ খেলার জন্য স্টিভ স্মিথরা পান ৫ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা।

ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের থেকে গ্রেড এ+ বিভাগে থাকা ক্রিকেটাররা পান ৭ কোটি টাকা। এই বিভাগে রয়েছেন বিরাট কোহলি। গ্রেড এ বিভাগের ক্রিকেটাররা পান ৫ কোটি টাকা। গ্রেড বি-তে থাকা ক্রিকেটারদের দেয়া হয় ৩ কোটি এবং গ্রেড সি-র ক্রিকেটারদের দেয়া হয় ১ কোটি টাকা।

টেস্ট খেলার জন্য প্রতি ম্যাচে কোহলিরা পান ১৫ লক্ষ টাকা। একদিনের ক্রিকেটে প্রতি ম্যাচে দেয়া হয় ৬ লক্ষ টাকা এবং টি২০ ক্রিকেট খেলার জন্য দেওয়া হয় ৩ লক্ষ টাকা। শতরান করার জন্য অতিরিক্ত ৫ লক্ষ টাকা দেয়া ক্রিকেটারদের। ৫ উইকেট নিলেও দেয়া হয় ৫ লক্ষ টাকা। দ্বিশতরান করলে দেয়া হয় অতিরিক্ত ৭ লক্ষ টাকা।

তবে ক্রিকেট বিশ্বে সব থেকে বেশি টাকা দেয় ইংল্যান্ড বোর্ড। টেস্ট ক্রিকেটের সঙ্গে যুক্ত ক্রিকেটারদের দেয়া হয় ৬ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা। সাদা বলের ক্রিকেটের সঙ্গে যুক্ত ক্রিকেটারদের দেয়া হয় ৩ কোটি ১০ লক্ষ টাকা। ২ ধরনের ক্রিকেট খেললে এক জন ক্রিকেটার পান ৯ কোটি ৮০ লক্ষ টাকা। জো রুট অধিনায়ক হিসেবে ৯ কোটি ৮০ লক্ষ টাকার ওপর ২৫ শতাংশ অতিরিক্ত পান। ক্রিকেট বিশ্বে বোর্ডের থেকে সব চেয়ে বেশি টাকা পান তিনিই।

সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা