গণতন্ত্রের জন্য হাতে অস্ত্র তুলে নিচ্ছে মিয়ানমারের সাধারণ মানুষ

অন্য এক দিগন্ত ডেস্ক | Jun 16, 2021 05:24 pm
গণতন্ত্রের জন্য হাতে অস্ত্র তুলে নিচ্ছে মিয়ানমারের সাধারণ মানুষ

গণতন্ত্রের জন্য হাতে অস্ত্র তুলে নিচ্ছে মিয়ানমারের সাধারণ মানুষ - ছবি : আল জাজিরা

 

জাতিভিত্তিক সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর সাথে প্রশিক্ষণ নিচ্ছে বেসামরিক লোকজন। শহরে শহরে গড়ে উঠছে গোপন সংগঠন। তবে তাদের প্রতিপক্ষ এক ভয়ঙ্কর শক্তিশালী সেনাবাহিনী

গত ১ ফেব্রুয়ারীতে সামরিক অভ্যূত্থান হওয়ার পর থেকে সপ্তাহের পর সপ্তাহ লাখো জনতা মিয়ানমার জুড়ে বেসামরিক সরকারকে ক্ষমতায় ফেরানোর দাবিতে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ করে চলেছে। এদের একজন অ্যান্ড্রু। কিন্তু দুই মাসেরও কম সময় পর ২৭ বছর বয়সী এই তরুণ থাই সীমান্তের কাছে দক্ষিণ-পূর্ব মিয়ানমারে তার নিজ রাজ্য কায়াহতে কাঠের শিকারী বন্দুক হাতে সৈন্যদের হত্যার জন্য প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন।

অভ্যূত্থানের আগে আমি একটা পাখিও মারতে পারতাম না, অ্যান্ড্রু জানান। অবশ্য প্রতিরোধ বাহিনীর অন্যান্য যোদ্ধাদের মতো এটি তারও আসল নাম নয়। যখন দেখলাম সেনা বাহিনী বেসামরিক লোকজনকে খুন করছে, তখন আমি অত্যন্ত ব্যথিত ও ক্রদ্ধ হই ... জনতার পক্ষ নিয়ে এই সামরিক স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আমাকে লড়তে হবে, এমনটাই আমি বিশ্বাস করা শুরু করি।

মিয়ানমার জুড়ে অ্যান্ড্রুর মতো আরো অনেকেই, বিশেষত তরুণ সম্প্রদায়, সেনা বাহিনীকে ক্ষমতাচ্যুত করতে অস্ত্র হাতে তুলে নিচ্ছে। অং সান সু চির গণতান্ত্রিক নির্বাচিত সরকারের হাত থেকে ক্ষমতা কেড়ে নেয়ার পর থেকে সৈন্যদের হাতে ৮৬০ জনেরও বেশি লোক নিহত হয়েছে, যাদের বেশির ভাগই অভ্যূত্থানবিরোধী বিক্ষোভকারী। ৬০০০ হাজারেরও বেশি লোককে গ্রেফতার করা হয়েছে। নির্যাতন ও গুম করার মতো কৌশলও ব্যবহার করছে সৈন্যবাহিনী।

প্রতিরোধ যোদ্ধাদের কেউ কেউ দেশটির সীমান্ত অঞ্চলের সংখ্যালঘু নিয়ন্ত্রিত সশস্ত্র সংগঠনগুলোতে যোগ দিয়েছে। আত্ম-নিয়ন্ত্রণ এবং মানবাধিকারের দাবিতে এইসব সশস্ত্র গোষ্ঠী গত কয়েক দশক ধরে মায়ানমারের সামরিক বাহিনী তাতমাদাও-এর সাথে যুদ্ধে লিপ্ত। অন্যান্য যোদ্ধা বেসামরিক প্রতিরক্ষা বাহিনীতে যোগ দিয়েছে। গত মার্চ থেকে নগর ও শহরগুলো এ ধরনের কয়েক ডজন সংগঠন গড়ে উঠেছে। কিন্তু সশস্ত্র সংগঠনগুলো বছরের পর বছর যুদ্ধ করার অভিজ্ঞতা ও রসদ রয়েছে। কিন্তু বেসামরিক প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যদের সম্বল শুধু এক গুলির শিকারী বন্দুকের মতো ঘরে বানানো অস্ত্রশস্ত্র আর মাত্র কয়েক সপ্তাহের প্রশিক্ষণ।

সশস্ত্র সংগ্রাম দমনে তাতমাদাও নির্বিচারে আকাশ ও স্থল পথে নির্বিচারে হামলা চালাচ্ছে। পাশাপাশি বেসামরিক জনগণের খাদ্য ও অন্যান্য সাহায্য সরবরাহের পথ বন্ধ করে তাদের জীবনযাত্রা দুর্বিষহ করার পথ বেছে নিয়েছে। এই একই পদ্ধতি সামরিক বাহিনী বহু বছর ধরে জাতিগত সংখ্যালঘুদের এলাকায় ব্যবহার করে আসছিল।

গত ১৪ মার্চ অভ্যূত্থানে ক্ষমতাচ্যূত নির্বাচিত আইনপ্রণেতাদের নিয়ে তৈরি কমিটি রিপ্রেজেন্টিং পিদাউঙ্গসু লুত্তাও (সিআরপিএইচ) জনসাধারণের আত্মরক্ষার অধিকারের প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছে। ৫ মে নিয়োগকৃত ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট (নাগ) জাতীয় পর্যায়ে পিপল’স ডিফেন্স ফোর্স’ গঠনের ঘোষণা দেয়। বলা হয়, এটি একটি সংযুক্ত সেনাবাহিনী গঠনের প্রথম পদক্ষেপ, যাতে দেশটির জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠী ও বেসামরিক প্রতিরক্ষা বাহিনীগুলোকে একটি কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের আওতায় আনা হবে। এই মুহূর্তে অবশ্য বেশির ভাগ সশস্ত্র গোষ্ঠী এককভাবে বা ছোট ছোট জোটে পরিচালিত হচ্ছে।

সূত্র : আল জাজিরা

 


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us