তেঁতুলিয়ায় যেভাবে এলো সূর্যডিম আম

এম এ বাসেত তেঁতুলিয়া (পঞ্চগড়) | Jun 25, 2021 02:22 pm
সূর্যডিম আম

সূর্যডিম আম - ছবি : সংগৃহীত

 

তেঁতুলিয়ায় জাপানি প্রজাতির সবচেয়ে সুস্বাদু সূর্যডিম জাতের আম বাণিজ্যিকভাবে চাষাবাদ হচ্ছে। উপজেলা সদরের প্রাণকেন্দ্র থেকে এক কিলোমিটার দূরে কাজীপাড়া সীমান্তের পাশে সমতল ভূমিতে আম বাগানটির অবস্থান। কৃষি বিভাগের পৃষ্ঠপোষকতা ও টেকনোলজি পেলে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে এ আম রফতানির সম্ভাবনা রয়েছে।

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর কাজী মৌসুমী পৈতৃক পাঁচ একর জমিতে শখের বশে ২০১৭ সালে বিদেশী নামীদামি জাতের চারাগাছ রোপণ করে একটি আমবাগান করেন। এ বাগানে ৩ শ’ ৩০টি সূর্যডিম আমের চারা রোপণ করেন তিনি। এছাড়া পিউজাই, বারি ফোর, বানানা এবং রেড পালমা ইত্যাদি জাতের পাঁচশটি চারাগাছসহ বাগানে সর্বমোট ৮ শ’ ৫০টি আমগাছ আছে। ৫-১০ ফিট উচ্চতা প্রতিটি গাছে এ মৌসুমে ব্যাপক ফলন হয়েছে। সূর্যডিম প্রত্যেকটি আমের ওজন প্রায় ৫ শ’ গ্রাম। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে দর্শনার্থী ও চাষিরা আমবাগান দেখার জন্য প্রতিনিয়ত ভিড় করছেন।
গত বুধবার বাগান পরিদর্শন করেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম, কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা তামান্না ফেরদৌস, চালকল মালিক সমিতির সভাপতি মোখলেছুর রহমান, প্রকৌশলী ডাবলুসহ প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার একটি দল।

এ সময় মেজর (অব:) কাজী মৌসুমীর বাবা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ও অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক কাজী মাহবুবুর রহমান বলেন, আমাদের নিকটাত্মীয়ের কাছে এই আমের বর্ণনা শুনি। পরবর্তীতে আমার বড় মেয়ে মেজর (অব:) কাজী মৌসুমী ও ইন্ডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট কাজী মহুয়া (বর্তমান কানাডা প্রবাসী) ঢাকা থেকে আমের চারা সংগ্রহ করে পাঠিয়ে দেন। আমার দুই কন্যাই মূলত শখের বশে এই আমের বাগান করেছেন। বাগানে আমের ফলন শুরু হয়েছে ২০১৯ সাল থেকে। এই আম দেশের বিভিন্ন জায়গায় সরবরাহ করা হচ্ছে। দুটো বাগান তিন মৌসুমে প্রায় ২১ লাখ টাকা চুক্তিতে বিক্রি দেয়া হয়েছে। তিনি মনে করেন, কৃষি টেকনোলজি ও প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা গেলে তেঁতুলিয়া থেকে সূর্যডিম আম বিদেশে রফতানি করা সম্ভব হবে।
প্রতিবেশী খন্দকার শামসুজ্জোহা নিয়াজিত জানান, আমি এই বাগান দেখে প্রায় চার বিঘা জমিতে সূর্যডিম ও পিউজাই আমের একটি বাগান করার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছি। আমি প্রায় সময়ই কাজী মাহবুব চাচার কাছ থেকে পরামর্শ নেই।

দর্শনার্থী ও চালকল ব্যবসায়ী মোখলেছুর রহমান বলেন, সূর্যডিম জাতের নতুন আমবাগান ঘুরে দেখলাম। এখানে সূর্যডিম ছাড়াও আরো কয়েক প্রজাতির বিদেশী আম চাষ করা হয়েছে। প্রত্যেক প্রজাতির আমের ভালো ফলন হয়েছে। সরকার উদ্যোগ নিয়ে এই আমের চারা উৎপাদন করে চাষিদের কাছে পৌঁছে দিতে পারে।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা তামান্না ফেরদৌস বলেন, সূর্যডিম মূলত জাপানের প্রজাতি, জাপানের মিয়াজাকি এলাকায় এ আমের প্রথম চাষ হয়। তাই জাপানে এই আম মিয়াজাকি নামে পরিচিত। রেড ম্যাঙ্গো বা এগস অব সান নামেও এই আম পরিচিত। বাংলাদেশে এই আম সূর্যডিম নামে পরিচিতি পেয়েছে। তবে এখনো এই আমের নাম দেশের অনেকের কাছে অপরিচিত।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম জানান, তেঁতুলিয়া উপজেলায় প্রায় ১০ হেক্টর জমিতে বাণিজ্যিকভাবে আমের চাষ হচ্ছে। কিন্তু সূর্যডিম জাতের আমের দেখা মেলে একমাত্র মেজর (অব:) কাজী মৌসুমীর বাগানে। এই আমের স্বাদও ভালো। আমরা মনে করছি এই এলাকায় সূর্যডিম আম চাষের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর থেকে এসব আম চাষে সবধরনের সহযোগিতা করা হবে।


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us