ইংল্যান্ডের পূর্ণতা নাকি ডেনমার্কের রূপকথা?

আফফান উসামা | Jul 07, 2021 05:06 pm
ইংল্যান্ডের পূর্ণতা নাকি ডেনমার্কের রূপকথা?

ইংল্যান্ডের পূর্ণতা নাকি ডেনমার্কের রূপকথা? - ছবি : সংগৃহীত

 

ববি মুরের হাত ধরে সেই ১৯৬৬ সালে বিশ্বকাপ শিরোপা উঠেছিল ইংলিশদের হাতে। এরপরের শিরোপার অপেক্ষা যে এত দীর্ঘ হবে, ইংলিশ সমর্থকরা তা ভেবেছিল কখনো? ওই দিন থেকে আজ, প্রায় ৫৫ হতে চলল, এর মাঝে প্রতি দিন সূর্য উঠেছে, তার শুভ্র আলো মোহিত করেছে। বিশ্বকাপেরও ১৩টি আসর মাঠে গড়িয়েছে, ইউরোর দামামা বেজেছে সমান সংখ্যক আসরে। এভাবেই প্রজন্মের পর প্রজন্ম পেরিয়ে যায়, প্রতিযোগিতার পর প্রতিযোগিতা ফুরিয়ে যায়। ইংলিশরা আশায় বুক বাঁধে, লোভ জাগায় শ্রেষ্ঠত্বের মুকুটটায়। কিন্তু ইংলিশদের আর সেরা হওয়া হয়নি, থাকতে হয়েছে দূরে, বহুদূরে...

গত বিশ্বকাপে সুযোগ এসেছিল। পৌঁছে গেছিলো সেমিফাইনালেরও মঞ্চে। কিন্তু ভাগ্য বিমুখ করেছে, ফিরতে হয়েছে ওখান থেকেই। তবে ভাগ্য আবারো মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে। ২৫ বছর পরে থ্রি লায়ন্সরা পুনরায় পৌঁছেছে ইউরোর সেমিফাইনালে।
দাপুটে সব জয় নিয়েই এবার ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের শীর্ষ চারে উঠে এসেছে।

আসরের এখন পর্যন্ত একমাত্র দল হিসেবে নিজেদের জাল অক্ষত রাখা ইংল্যান্ড এই আসরে সব দিক থেকেই আধিপত্য করেছে। নক আউট পর্বে তো জার্মানিকেও উড়িয়ে দিয়েছে সামর্থ্যের শতভাগ ব্যবহার করে। সাউথগেটের এই দলটা তাই আজ মাঠে নামার আগে নিঃসন্দেহে আত্মবিশ্বাসে ভরপুর থাকবে। আজ রাত ১টায় তারা মুখোমুখি হবে। প্রতিপক্ষ ডেনমার্ক।

এই ডেনমার্ক ওই সাধারণ ডেনমার্ক নয়, হঠাৎই বদলে যাওয়া একটা ছন্দময় ফুটবল দল। দলের সেরা তারকা এরিকসনের হঠাৎ বিদায়ের শোককে শক্তিতে পরিণত করা দল তারা। শুরুতে বেশ ধাক্কা খেয়েছিল। তবে সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে ফুটবলে নিজেদের দাপট বিস্তার করেছে। ঘুরে দাঁড়ানো বিশ্বাসে এখন পর্যন্ত বেশ ভালোভাবেই ওরা ছুটে চলেছে। শুরুটা হয়েছিল রাশিয়াকে ৪-১ গোলে উড়িয়ে দিয়ে। পরের ম্যাচে নক আউট পর্বে ওয়েলসের জালে ৪ গোল। কোয়ার্টার ফাইনালেও দাপট দেখিয়ে চেকদের বিদায় করে বেশ ভালো আত্মবিশ্বাসেই আছে ওরা। আজও শুরুতে ছন্দ পেলে গেলে ভয়ংকর হয়ে উঠতে সময় লাগবে না। তবে স্বপ্নের ফাইনালেও পৌঁছে যাবে রূপকথা লিখে।

পরিসংখ্যান বলছে এখন পর্যন্ত দুই দল মুখোমুখি ম্যাচ খেলেছে ২১টি। ইংল্যান্ড ১২ ম্যাচে জিতেছে। ডেনমার্কের জয় ৪ ম্যাচে। ড্র বাকি ৫ ম্যাচ। ইংল্যান্ড গোল করেছে ৩৬টি, বিপরীতে ডেনমার্কের গোল সংখ্যা ২০। তবে ডেনমার্কের বিরুদ্ধে শেষ ৬ সাক্ষাতে মাত্র একবারই জিতেছিল ইংল্যান্ড। হার ২ ম্যাচে। বাকি তিন ম্যাচ অমীমাংসিতভাবে শেষ হয়েছিল। ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে অবশ্য ডেনমার্কের বিরুদ্ধে ইংল্যান্ডের রেকর্ড ভালো। ৭ বার মুখোমুখি হয়ে ৫ ম্যাচে জিতেছে ইংল্যান্ড। ২ ম্যাচে জয়ী ডেনমার্ক। তবে কাকতালীয় হলেও, প্রত্যেক ম্যাচেরই ফল হয়েছিল ১-০। বিশ্বফুটবলের ইতিহাসে এরকম ঘটনা বেশ বিরল।

ইউরোর শিরোপা জয়ের স্বাদ আছে ডেনমার্কের। ১৯৯২ ইউরোতে তারা চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। বিপরীতে ইংল্যান্ডের একবারও ইউরো শিরোপা স্পর্শ করতে পারেনি। এবার হয়তো সুযোগ আছে দু'দলেরই। আজকের জয়ী দল ফাইনালে ইতালিকে হারাতে পারলেই তো হয়ে যাবে ইতিহাস। কিন্তু কাজটা সহজ হবে কি?

কেউ জিতবে, কেউ হারবে। কেউ কাঁদবে, কেউ আনন্দে মাতবে। কেউ এগিয়ে যাবে, কেউবা বিদায় নিবে। কেউ পাবে ব্যর্থতার ব্যথা, কেউবা লিখবে রূপকথা; এভাবেই তো প্রতিটি ম্যাচের গল্পগাথা। এখন অপেক্ষার পালা শেষ হাসি কে হাসে, কারা বা বিদায় অশ্রুসিক্ত নয়নে শেষ বাঁশিতে...

 


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us