কাবুল বিমানবন্দর কেন এত গুরুত্বপূর্ণ?

মো: বজলুর রশীদ | Jul 15, 2021 03:41 pm
কাবুল বিমানবন্দর

কাবুল বিমানবন্দর - ছবি সংগৃহীত

 

কাবুল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরটি যত না মানুষ পরিবহন করে, তার চেয়ে ঢের বেশি সামরিক কাজে ব্যবহৃত হয়। বাইরের পৃথিবী মনে করে কাবুল বিমানবন্দর নিয়ন্ত্রণ মানে, আফগানিস্তান নিয়ন্ত্রণ। আফগান সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ বন্দরের এয়ার ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ ন্যাটো বাহিনীর কাছ থেকে তাদের নিয়ন্ত্রণে দেয়ার অনুরোধ করেছিল। বিমানবন্দরের নিরাপত্তার সাথে বিদেশী কূটনৈতিক মিশনের নিরাপত্তা জড়িত বিধায় বিষয়টি খুব গুরুত্বপূর্ণ। এ কারণে অস্ট্রেলিয়া তাদের দূতাবাস আগেভাগে বন্ধ করে দেয়। অনিরাপদ ঘাঁটি দিয়ে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সেবা প্রতিষ্ঠান মানবিক সহায়তা নিয়ে আফগানিস্তানে আসবে না। এতদসত্ত্বেও তুরস্কের প্রস্তাবে তালেবানরা প্রাথমিকভাবে রাজি হয়নি। কিভাবে এর সমাধান হবে তার বেশির ভাগ নির্ভর করছে আঙ্কারা ও কাবুল সরকারের সাথে তালেবানদের বোঝাপড়ার ওপর। এখন পর্যন্ত তালেবানরা এলাকার পর এলাকা দখল করছে আর আফগান সরকারি বাহিনীও তালেবানদের হত্যা করছে। সুতরাং বিষয়টি যেকোনো দিকে গড়াতে পারে। ব্যাপক গৃহযুদ্ধও একটি পরিণতি। শান্তি সেখানে দিল্লি দূরঅস্তের মতোই।

তুরস্কের জন্য বড় প্রশ্ন হলো- কিভাবে সেনারা দায়িত্ব পালন করবে, বিমানবন্দরের নিরাপত্তা বিধান করবে, দূতাবাস দেখভাল করবে, আরো গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোও নজরদারি করবে, কোনো সামরিক প্যাট্রোলিং ছাড়া তা সম্ভব নয়। কেননা, বর্ণিত বিষয়গুলো সামরিক প্যাট্রোলিং ও ‘কমব্যাট টাস্ক’। ন্যাটো জোটের একমাত্র মুসলিম দেশ, তুরস্ক হওয়ায় তালেবানরা তুরস্কের ব্যাপারে নমনীয়। পুরনো বন্ধুত্ব এবং ধর্মীয় সংশ্লিষ্টতা তুরস্ককে আফগানিস্তানে অনেক রাজনৈতিক ও সামাজিক সুবিধা এনে দিয়েছে। তুর্কি সেনারা যেখানেই গেছে সেখানে ভালো সমাদর পেয়েছে। ওয়াশিংটনের সাথে তুরস্ক সম্পর্কের জন্য ‘সফট পাওয়ার’ ব্যবহার করতে চায়। এরদোগানের এই উচ্চাভিলাষী মিশন সাবধানতা ও বুদ্ধিমত্তা সাথে পরিচালনা করা না গেলে মাঝপথে পীড়াদায়ক দুঃস্বপ্নে পরিণত হতে পারে।

আঙ্কারা দুটি বিষয় সাবধানতার সাথে পর্যবেক্ষণ করতে হবে সেটি হলো- আফগান ইস্যুতে অন্যান্য দৃশ্যমান ও নেপথ্যের নায়কদের সঠিকভাবে বিশ্লেষণে রাখা। এর মধ্যে পাকিস্তান গুরুত্বপূর্ণ, আফগানিস্তানের সাথে পাকিস্তানের সীমান্ত বিরোধ রয়েছে, পাকিস্তানে থাকা পশতুন জনগোষ্ঠীর সংখ্যা আফগান ভূমিতে থাকা পশতুনের চেয়ে বেশি। তালেবানের ‘মৌলপন্থী’রা পশতুন। তারা মিলে স্বাধীন পশতুনিস্তান বানাতে চায়, এটি তাদের দু’দশকের লালিত ইচ্ছা। পাকিস্তান নিজেদের পশতুনকে শক্ত হাতে নিয়ন্ত্রণ করছে। এদের অঞ্চলটি সীমান্তের দিকে অবস্থিত। আফগানিস্তানের পশতুন বন্ধুরা সহজে সীমান্তে মিলিত হয়ে প্রীতির বন্ধন গড়ে তুলেছে। এরাও কৌশলগত সুযোগের অপেক্ষায়। কাবুলের সাথে পাকিস্তানের চলমান পানি বিরোধও বড় এক সমস্যা। পানিবিরোধের কারণে কাবুলের ভারতমুখিতা বৃদ্ধি পেয়েছে। তুরস্কের বিমানবন্দর পাহারায় পাকিস্তান কতটুকু কাজে আসবে সেটি ভবিষ্যৎ জানান দেবে। এর পর আসছে ইরান। ইরানপন্থী বিদ্রোহী যোদ্ধারা আফগানিস্তানে খুব তৎপর। এরা তালেবানদের প্রতি অনুরক্ত। ইরান তাদের প্রয়োজনীয় সহায়তা দিয়ে থাকে। রাশিয়া পজিটিভ না হলেও তুরস্ক আফগানিস্তানে দক্ষতার সাথে কাজ করুক চীন তা কামনা করে; বেল্ট ও রোড প্রকল্পে প্রচুর বিনিযোগ রয়েছে চীনের।


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us