হালকা গরম পানিতে লেবু মিশিয়ে খেলে কি ওজন কমে?

অন্য এক দিগন্ত | Jul 20, 2021 02:14 pm
হালকা গরম পানিতে লেবু মিশিয়ে খেলে কি ওজন কমে?

হালকা গরম পানিতে লেবু মিশিয়ে খেলে কি ওজন কমে? - ছবি : সংগৃহীত

 

লেবু-মধু-গরম পানি, ওজন কমানোর বিষয়ে এই পানীয়টির কথা বলেন না, এমন কেউ নেই। সবচেয়ে বেশি বিশ্বাসযোগ্যতা এই পানীয়টির উপরেই আছে সকলের। কিন্তু আদৌ কি এটি ওজন কম করতে কার্যকরী?

নিউট্রিশনিস্ট কিনিতা কদকিয়া প্যাটেল জানিয়েছেন, এত সহজেই যদি গরম পানি আর লেবু ওজন কমাতে সচেষ্ট হতো তবে অনেক সত্যতা প্রমাণ ছাড়াই মানা যেত। তিনি আরো বলেন, যদিও এটির মাধ্যমে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন সি মানবদেহ পেতে পারে, তবে এটি ওজন কমাতে পারে এটি একেবারেই সত্য নয়।

গরম লেবু পানি, কখনওই ওজন কমানোর ক্ষেত্রে সাধারণ পানির থেকে উপযোগী নয়। তবে অতিরিক্ত মাত্রায় হাই ক্যালরি পানীয় যেমন সফট ড্রিংকস, কোল্ড ড্রিংকস এমনকি ফ্রিজের ঠান্ডা পানির থেকে এটিকে কার্যকরী হিসেবে ধরে নেয়া যায়। লেবু পানি শরীরকে শুধু হাইড্রেটেড রাখে না, তার সাথে ত্বকের নানান সমস্যা যেমন, রিংকলস, নিস্তেজ স্ত্বক উজ্জ্বল করে। সূর্যের আলোর থেকে ত্বককে রক্ষা করতে গরম পানিতে লেবুর রস বেশ কার্যকরী।

গ্রিন টি : গ্রিন টি ওজন কমাতে ভীষণ মাত্রায় কার্যকরী। সারাদিনে একবার গ্রিন টি খাওয়া খুবই ভালোও। এতে উপস্থিত সঠিক মাত্রায় ক্যাফেইন আর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের টক্সিন দূর করে, শরীর সুস্থ রাখে।

অ্যাপেল সিডার ভিনিগার : ওজন কমানোর এটি কিন্তু দারুণ জিনিস। এমনকি ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রেও এটি নিরাপদ। এর অ্যাসিটিক অ্যাসিড শরীরের অতিরিক্ত মেদ কমিয়ে দিতে কার্যকরী।

আইসড কফি : আইসড কফি কিন্তু ওজন কমাতে বেশ কাজ দেয়। কফি বানিয়ে বেশ কিছুক্ষণ রুম টেম্পারেচার করে রেখে দেয়ার পর। কিছুক্ষণ এর জন্য ফ্রিজে স্টোর করলেই তৈরি।

হলুদ চা : হলুদ দুধ তো অনেকেই শুনেছেন, তবে হলুদ চা বেশ কার্যকরী ওজন কমাতে। চা-এর লিকার বানিয়ে, তাতে অল্প পরিমাণে হলুদ গুঁড়ো মিশিয়ে তৈরি হয়ে যাবে। এর অ্যান্টি অক্সিডেন্ট মেদ ঝরাতে সাহায্য করে।

তাহলে, অতিরিক্ত ওজন কমাতে এই টোটকাগুলো ট্রাই করলেই কিন্তু কেল্লা ফতে!

সূত্র : ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

গরম পানির ১২ উপকারিতা
পানির অপর নাম জীবন। সুস্বাস্থ্যের জন্য পানির প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব কতটা, তা আমরা সকলেই জানি। চিকিৎসকদের মতে, সুস্থ শরীরের জন্য প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা অত্যন্ত প্রয়োজন। শরীরের আর্দ্রতা বজায় রাখা, শরীরকে সচল রাখা, ত্বক ও চুলকে ঠিক রাখা, কিডনির যত্ন নেয়া, কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা ইত্যাদি কাজের জন্য পানি আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারি একটি উপাদান।

সাধারণত আমরা নর্মাল পানি বা ঠান্ডা পানি পান করে থাকি। তবে, গরম পানি পান করা যে আমাদের শরীরের জন্য কতটা উপকারি, তা হয়তো আমরা অনেকেই জানি না। ঠান্ডা পানির পরিবর্তে উষ্ণ পানি পান করলে আপনি পেতে পারেন অবিশ্বাস্য ফল।

গবেষকরা জানিয়েছেন যে, সারাদিনে ১-২ গ্লাস গরম পানি পান করা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য কিছু বিশেষ সুবিধা বয়ে আনতে পারে। উষ্ণ পানি, হজম ক্ষমতা ও রক্ত চলাচলকে উন্নত করতে, ওজন হ্রাস করতে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে উন্নত করতে সহায়তা করে। তাই, শরীরের স্বাভাবিক ক্রিয়াকলাপকে সঠিকভাবে পরিচালনা করতে রোজ খান ১-২ গ্লাস গরম পানি।

তাহলে জেনে নিন গরম পানি পান করার স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে, পাশাপাশি জেনে নিন কখন ও কীভাবে পান করবেন।

স্বাস্থ্য উপকারিতা

১) ডিটক্স
গরম পানি শরীরের থেকে সমস্ত ক্ষতিকারক টক্সিনকে বের করে শরীরকে ডিটক্স করে। গরম পানি ঘাম ও মূত্রের মধ্য দিয়ে শরীরের টক্সিন দূর করতে সাহায্য করে, যা শরীরকে সুস্থ রাখতে সহায়ক।

২) হজম শক্তি বৃদ্ধি করে
গরম পানি হজম শক্তিকে বৃদ্ধি করে। পাকস্থলী এবং অন্ত্রের মধ্য দিয়ে যাবার সময় হজম অঙ্গগুলোকে আরো ভালোভাবে হাইড্রেটেড করে, যার ফলে বর্জ্য বস্তু শরীর থেকে নিষ্কাশিত হয় এবং হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। রাতে ঘুমানোর আগে এক গ্লাস গরম পানি পান করুন।

৩) কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে
এটি বহু মানুষের একটি সাধারণ সমস্যা। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে রাত্রে ঘুমানোর আগে ও সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে এক গ্লাস করে গরম পানি পান করুন। এটি অন্ত্রের মধ্য দিয়ে যাওয়ার সময় অন্ত্রকে সংকুচিত করে বর্জ্য পদার্থ দূর করতে সহায়তা করে।

৪) শরীরের ব্যথা থেকে মুক্তি দিতে

গরম পানি পান করলে রক্ত সঞ্চালন ভালোভাবে হয় বলে এটি শরীরের প্রতিটি স্নায়ুকে সচল রাখতে সাহায্য করে, যা শরীরের বিভিন্ন ব্যথা থেকে মুক্তি দেয়। মাথা যন্ত্রণা, গাঁটে গাঁটে ব্যথা, মহিলাদের ক্ষেত্রে মাসিক ঋতুচক্রের খিঁচুনিতে আরামদায়ক গরম পানি।

৫) রক্ত সঞ্চালন ঠিক রাখতে গরম পানি শরীরের ব্লাড ভেসেলস্-কে সক্রিয় রাখতে সাহায্য করে। ফলে প্রতিটি নার্ভ সচল থাকে, যা শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।

৬) অনিয়মিত পিরিয়ড ও ব্যথা থেকে মুক্তি দেয়
মহিলাদের ক্ষেত্রে গরম পানি পান করার একটি বড় সুবিধা হলো, এটি অনিয়মিত ঋতুস্রাব ঠিক করতে এবং ঋতুস্রাবের ব্যথা থেকে উপশম দিতে সহায়তা করে। অনেক সময় রক্ত জমাট বেঁধে তা বেরোতে না পারলে ব্যথা হতে থাকে। এই সময় গরম পানি পান করলে জমাট বাধা রক্ত ভেঙে গিয়ে ব্লাড ফ্লো সঠিকভাবে হয়, যা ব্যথা থেকে মুক্তি দেয়।

৭) ওজন কমাতে সাহায্য করে
গরম পানি শরীরের অতিরিক্ত মেদ ঝরাতে সাহায্য করে এবং খিদে কমায়। ফলে 'ক্যালরি ইনটেক' কম হয়, যা দ্রুত ওজন ঝরাতে সহায়ক। তাই প্রতিদিন সকালে খালিপেটে লেবু বা মধু এক গ্লাস গরম পানি মিশ্রিত করে পান করুন।

এছাড়াও
১) স্ট্রেস কমাতে হালকা গরম পানি পান করুন।
২) জমে যাওয়া সর্দি, নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া ইত্যাদি থেকে মুক্তি পেতে গরম পানি পান করুন।
৩) গরম পানি ত্বককে আর্দ্র রাখতে সাহায্য করে এবং ব্রণের সমস্যা থেকে মুক্তি দেয়।
৪) ত্বকের তারুণ্য ধরে রাখতে ও বার্ধক্যের ছাপ পড়তে না দিতে, রোজ গরম পানি পান করুন।
৬) গরম পানি স্কাল্পকে হাইড্রেটেড রেখে খুশকি থেকে দূরে রাখে।

কীভাবে ও কখন খাবেন

রোজ রাতে খাওয়ার পরে ঘুমাতে যাওয়ার আগে এক গ্লাস গরম পানি পান করুন। আবার সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে এক গ্লাস গরম পানি পান করুন। সকালে এই গরম পানির সঙ্গে মধু বা লেবু মিশিয়ে পান করতে পারেন। কত তাপমাত্রায় গরম পানি খাবেন অত্যাধিক তাপমাত্রা যুক্ত গরম পানি খাবেন না। ৬০ ডিগ্রি তাপমাত্রা বা তার কম তাপমাত্রা যুক্ত পানি পান করুন। সাধারণ অর্থে, ঈষদুষ্ণ পানি পান করুন। নাহলে জিভ পুড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।

সূত্র : বোল্ডস্কাই


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us