রাতে ঘুমের মধ্যে বারবার প্রস্রাব পাওয়া কি স্বাভাবিক?

অন্য এক দিগন্ত | Jul 26, 2021 03:17 pm
রাতে ঘুমের মধ্যে বারবার প্রস্রাব পাওয়া কি স্বাভাবিক?

রাতে ঘুমের মধ্যে বারবার প্রস্রাব পাওয়া কি স্বাভাবিক? - ছবি : সংগৃহীত

 

একাধিকবার প্রস্রাব করতে যাওয়ার ঠেলায় রাতের ঘুম ভাঙছে। এদিকে সকালে কাজের কমতি নেই। কিন্তু রাতে সলিড ঘুম হচ্ছে না। সারা দিন ক্লান্তি। মেজাজ খিটখিটে। স্বাভাবিকভাবেই কোয়ালিটি অফ লাইফের বারোটা পাঁচ। চিকিৎসার পরিভাষায় ‘নকচুরিয়া’। অর্থাৎ একাধিক বার প্রস্রাবে যাওয়ার জন্য রাতে ঘুম নষ্ট। কারণ, অনেকগুলো। কারো ক্ষেত্রে পানি বা মদ্যপান বেশি হচ্ছে। কেউ আবার হয়তো স্লিপ ডিসঅর্ডারে (Sleep disorder) ভুগছেন। কারো ক্ষেত্রে ব্লাডার বা মূত্রথলির সমস্যা। বলা হয়, বয়স যখন চল্লিশের কোঠায় তখন থেকেই নাকি ছেলেদের মধ্যে এই সমস্যার সূত্রপাত হয়। পঞ্চাশের পর থেকে সমস্যা আরো বাড়ে। বিশেষজ্ঞরা বলে থাকেন, বয়সকালে মোটামুটি তিনজন পুরুষের মধ্যে একজনের ‘নকচুরিয়া’র সমস্যা থাকতে পারে।

রোগের ধরন

সাধারণত চার ধরনের নকচুরিয়া দেখা যায়। ১. পলিইউরিয়া (২৪ ঘণ্টায় অনেকবার বাথরুমে দৌড়তে হয়) ২. নকচারন্যাল পলিইউরিয়া (প্রস্রাবের পরিমাণ রাতে বেশি) ৩. মূত্রথলি বা ব্লাডারের স্টোরেজে সমস্যা থেকে প্রস্রাবের সমস্যা ৪. মিক্সড নকচুরিয়া (উপরের তিনটে সমস্যাই রোগীর মধ্যে প্রকট হয়)

কী কারণে হয়? অনেকের ধারণা, সুস্থ থাকতে বেশি করে পানি খাওয়া জরুরি। বলে রাখা ভালো, পিপাসা অনুযায়ী পানি খান। দিনে দেড় থেকে দুই লিটার পানি খেলেই অনেক রোগ দূরে রাখা যায়। অ্যালকোহল, চা, কফি বেশি খেলে রাতে প্রস্রাবের পরিমাণ বাড়তে পারে।

কর্মসূত্রে অনেককে রাত জাগতে হয়। সেক্ষেত্রে শুধু পানিই নয়, খাওয়াদাওয়াও অনেকে রাতে বেশি করে করেন। বডি ক্লক পরিবর্তন হলে শরীরে নানারকম সমস্যা দেখা যায়। নকচুরিয়া তার মধ্যে একটা। ডায়াবেটিস এবং ব্লাড প্রেসারের সমস্যা থাকলেও প্রস্রাবের পরিমাণ বাড়ে। অ্যান্টি সাইকিয়াট্রিক ড্রাগ বা কিডনির (Kidney) ওষুধ খেলেও প্রস্রাব বেশি পায়। রাতে ঘুম থেকে উঠতে হয়। হার্টের প্রবলেম, কিডনিতে স্টোন এবং প্রস্টেটের সমস্যা থেকেও এমন হয়। তাছাড়াও মেয়েদের ক্ষেত্রে সন্তানধারণের সময় এবং মেনোপজের পর ‘নকচুরিয়া’র সমস্যা দেখা যায়।

চিকিৎসা কোন পথে?
‘নকচুরিয়া’ থেকে বাঁচতে প্রথমে কিছু সহজ লাইফস্টাইল পরিবর্তন করতে বলা হয়। যেমন, রাতে ঘুমোতে যাওয়ার দুই ঘণ্টা আগে পানি পান কমিয়ে দিন। মদ্যপানের অভ্যাস থাকলে সেটা ছাড়তে চেষ্টা করুন। ডাইইউরেটিক বা কিডনি সংক্রান্ত সমস্যার ওষুধ খেলে সেটা রাতে না খাওয়ার চেষ্টা করুন। চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

অনেকের প্রস্রাবের সমস্যা থেকে পা ফুলে যায়। সেক্ষেত্রে রাতে একাধিকবার প্রস্রাব পেতে পারে। তাই বলা হয়, কমপ্রেশন স্টকিংস করার অভ্যাস তৈরি করুন। যদি দিনের বেলায় ঘুম পায়, তাহলে ঘুমিয়ে নিন। কারণ, একাধিকবার প্রস্রাব করতে ওঠার জন্য রাতের ঘুমে ছেদ পড়ে। লাইফস্টাইল পরিবর্তনের মাধ্যমে রোগীর কোনো উন্নতি না হলে ডেসমোপ্রেসিনের মতো ওষুধের মাধ্যমে চিকিৎসা শুরু করা হয়।

রোগনির্ণয় করতে হলে রোগী দিনে কতটা পানি খাচ্ছেন, আর কত বার প্রস্রাব হলো- এটা জানার জন্য তিন দিনের ব্লাডার ডায়েরি মেনটেন করতে বলা হয়। এই ডায়েরি দেখে রোগের ট্রেন্ড ধরতে পারেন চিকিৎসক। রুটিন ইউরিন কালচার টেস্ট করিয়ে দেখে নিতে হয়, রোগীর মূত্রনালিতে কোনো সংক্রমণ রয়েছে কিনা। অ্যানিমিয়া (Anemia), থাইরয়েড, কোলেস্টেরল, ডায়াবেটিস টেস্ট করিয়ে দেখা হয়। আল্ট্রাসোনোগ্রাফির মাধ্যমে কিডনি, ব্লাডারের অবস্থা জানতে হয়। এতেও সমস্যা না কমলে প্রস্রাবের থলি পরীক্ষা করে দেখা হয়।

সূত্র : সংবাদ প্রতিদিন


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us