বার বার দুধ ফুটিয়ে খাওয়া কি ক্ষতিকর?

অন্য এক দিগন্ত | Jul 28, 2021 05:30 pm
বার বার দুধ ফুটিয়ে খাওয়া কি ক্ষতিকর?

বার বার দুধ ফুটিয়ে খাওয়া কি ক্ষতিকর? - ছবি : সংগৃহীত

 

বাড়িতে দুধ এলে প্রথমেই আমরা ফুটিয়ে ঠান্ডা করে ফ্রিজে তুলি। সেটা কাঁচা দুধ হোক বা প্যাকেটের। কাঁচা দুধে নানা রকম ক্ষতিকর ব্যাকটিরিয়া থাকে। ফুটিয়ে নিলে সেগুলো মরে যায় এবং হজমের গোলমাল কম হয়। ফোটানো দুধ একটু বেশি দিন ভালো থাকে। ফ্রিজে রেখে আপনি অনায়াসে তিন থেকে চার দিন চালিয়ে নিতে পারবেন।

তবে অনেকেই ভুল যান, প্যাকেটের দুধ ‘প্যাশ্চারাইজ’ করাই থাকে। বা সহজ ভাষায় বললে, যতটা ফুটালে ব্যাকটিরিয়া মরে যায়, ততটা তাপমাত্রা পর্যন্ত ফোটানোই হয়। তারপরেই বিক্রি করা হয়। বিশেষ করে টেট্রা প্যাকে যে দুধ বিক্রি হয়, সেগুলো ফোটানোর কোনো প্রয়োজন নেই। সিল না খোলা পর্যন্ত আপনি বাইরেই রাখতে পারবেন। খারাপ হওয়া ভয়ও নেই।

কিন্তু সেই দুধ ফুটিয়ে খেলে কি কোনো অসুবিধা রয়েছে? নেই। দুধ ফ্রিজ থেকে বার করে আপনি ফোটাতেই পারেন। তাতে কোনো রকম ক্ষতি হবে না।

তবে বিশেষজ্ঞদের মত অনুযায়ী এক দুধ ২-৩ বারের বেশি ফোটানো উচিত নয়। তার মধ্যেই শেষ করে ফেলা ভালো।

কিভাবে ফোটাবেন

দুধ ফোটানো সহজ মনে হলেও কাজটা ততটা সহজ নয়। খুব বেশি আঁচে দুধ ফুটালে নিচটা ধরে যাবে। তাই মাঝারি আঁচে ধীরে ধীরে দুধ ফোটাতে হবে। এবং পাত্রের পাশে ছোট ছোট বুদবুদ দেখলেই নাড়তে হবে। দুধ ফুটে ওঠা পর্যন্ত নেড়ে যেতে হবে। ফুটে গেলে উপরে যে সর পড়বে সেটা তুলে ফেলতে পারেন। খেলেও কোনো সমস্যা নেই। তবে যাদের দুধ খেলে হজমের সমস্যা হয়, তাদের এই সর খেলে সেই সমস্যা বাড়তে পারে। তাই সর তুলে রূপচর্চায় ব্যবহার করতে পারেন। দারুণ কাজ দেবে।

খুব বেশি আঁচে দুধ ফুটালে দুধের পানি শুকিয়ে প্রোটিন গাঢ় হয়ে যায় বেশি। তাতে দুধের স্বাদ এবং রং বদলে যেতে পারে।

সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা

চুলের রঙে স্বাস্থ্যঝুঁকি
ডা: হুমায়ুন কবীর হিমু 

শ্বেতাঙ্গরা বাদামি বর্ণের চুল খুব পছন্দ করে। কিন্তু জন্মগতভাবে বেশির ভাগের বাদামি চুল না হওয়ায় চুলের রঙ বাদামি করার জন্য তারা আবিষ্কার করে কেমিক্যাল। আমেরিকার ১৮ বছরের বেশি মেয়েদের এক-তৃতীয়াংশ চুলে রঙ করে। আমাদের দেশের মেয়েরাও চুলে রঙ করার হার বেড়েছে বহুগুণ। পার্লারগুলোতে চুলে রঙ করার জন্য দীর্ঘ লাইন পড়ে। কিন্তু চুলে রঙ করার জন্য স্বাস্থ্যের বেশ ঝুঁকি বাড়ে। চুলের রঙে পাঁচ হাজারের বেশি কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয়। এ কেমিক্যালগুলোয় এলার্জি, চুল ভেঙে যায় সহজেই। এ ছাড়া বাড়ায় ক্যান্সারের ঝুঁকি।

চুলের রঙে পি-ফিনাইল ডাই-অ্যামিন ব্যবহার করা হয়। এটি দেহের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা, ত্বক, স্নায়ু, শ্বাসতন্ত্র, কিডনি ও লিভারের ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। এটি কোষের ডিএনএকে ধ্বংস করে। এ ধ্বংসপ্রাপ্ত ডিএনএ পরবর্তীতে ক্যান্সার হতে ভূমিকা পালন করে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন এটিকে পরিবেশের জন্য হুমকি হিসেবে চিহ্নিত করেছে। কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি, সুইডেনে এটি কসমেটিক হিসেবে ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে। এটি ত্বকে অ্যালার্জি করে।

রঙের রিসরসিনল কেমিক্যালকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন চোখ ও ত্বকের জন্য ক্ষতিকর, প্রদাহকারী বলে ব্যবহার না করার সুপারিশ করেছে। অ্যামোনিয়ার যৌগগুলো ত্বক ও চোখে অস্বস্তি করে। চুলের রঙে সোডিয়াম, পটাশিয়াম ও অ্যামোনিয়াম সালফেটের গাঢ়ত্ব শতকরা ৬০ ভাগের বেশি ব্যবহার করা হয়। গবেষণায় দেখা গেছে, এর গাঢ়ত্ব ১৭.৫ শতাংশের বেশি হলেই তা ত্বকে প্রদাহ ও এলার্জি করে। ডাই-এ ব্যবহৃত লেড এসিটেট গর্ভস্থ শিশুর জন্মগত স্বাস্থ্য সমস্যা, ক্যান্সার ও প্রজনন অক্ষমতার জন্য দায়ী। ৪- অ্যামাইনো-বাই-ফিনাইল মানবদেহে ক্যান্সারের জন্য দায়ী তা অনেক আগেই প্রমাণিত। এ কেমিক্যালগুলো অ্যাজমা বা হাঁপানির জন্য দায়ী। গবেষণায় দেখা গেছে যারা চুল রঙ করার সাথে জড়িত তাদের ১৭-৮০ শতাংশ ত্বকের এলার্জিতে আক্রান্ত হন। দীর্ঘ দিন চুলে রঙ করার জন্য চুল শুষ্ক হয়ে চুল ভেঙে যায়। অনেক সময় অতিরিক্ত চুল পড়ার কারণ হতে পারে এটি।

রঙের বেশ কিছু কেমিক্যাল ইঁদুর, গিনিপিগ শরীরে ক্যান্সার করতে পারে বলে বিজ্ঞানীরা দেখতে পেয়েছেন। ১৯৮০ সালের দিকে শুধু চুলে রঙ করার জন্য আমেরিকায় বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সার যেমন নন-হজকিন্স লিম্ফোমা, লিউকেমিয়া বেড়ে যায়। সে সময় ক্যান্সার সৃষ্টিকারী অ্যামাইন ব্যবহার করা হতো। পরে এ কেমিক্যালগুলো রঙ থেকে বাদ দেয়া হয়। কিন্তু এখন যে কেমিক্যালগুলো ব্যবহার করা হয় তা মানবদেহে ক্যান্সার তৈরি করতে পারে কি না তা নিয়ে বিতর্ক আছে। ২০০৮ সালে ইন্টারন্যাশনাল এজেন্সি ফর রিসার্চ অন ক্যান্সার (আইএআরসি)-এর একটি গবেষণাপত্র থেকে জানা যায় চুল রঙ করার পার্লারে যারা কাজ করেন তাদের মধ্যে মূত্রথলির ক্যান্সার বেশি। নতুন আর একটি গবেষণায় জানা গেছে, যারা এ ধরনের পার্লারে পাঁচ বছর বা তারোও বেশি সময় ধরে কাজ করেছেন তাদের স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি তিনগুণ বেড়ে যায়। তবে কয়েকটি গবেষণাপত্রে এ ধরনের ঝুঁকি নেই বলে জানানো হয়েছে।

প্রায় বিভিন্ন সময়ের চুলে রঙ করা ১১ হাজার মেয়ের ওপর গবেষণা থেকে দেখা গেছে, এদের মধ্যে সাড়ে চার হাজার মেয়ে নন-হজকিন্স লিম্ফোমায় আক্রান্ত হয়েছে। এর বেশির ভাগই ১৯৮০ সালের আগে আক্রান্ত হয়েছেন। ১৯৮০ সালের পর নন-হজকিন্স লিম্ফোমায় আক্রান্তের সংখ্যা কমলেও ফলিকুলার লিম্ফোমায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে। আর একটি গবেষণায় দেখা গেছে, রঙ করা ১৫০০ মেয়ের মধ্যে প্রায় ৮০০ জন লিউকেমিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন। ওই গবেষণায় আরো জানা গেছে, ১৫ বছর বা তার বেশি সময় ধরে চুলে রঙ করলে লিউকেমিয়ায় আক্রান্তের ঝুঁকি বাড়ে। তবে কিছু কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, এ ধরনের ক্যান্সার ১৯৮০ সালে চুলে রঙকারীদের মধ্যে বেশি ছিল। এখন তা কমে গেছে। তবে এখন রঙে যে কেমিক্যালগুলো ব্যবহার করা হচ্ছে তা ক্যান্সারের জন্য দায়ী নয় তা নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না কেউ।


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us