হজরত মোহাম্মদ সা. : শ্রেষ্ঠতম মানব

নাহিদা ইয়াসমিন | Oct 19, 2021 07:37 am
মদিনা শরিফ

মদিনা শরিফ - ছবি : সংগৃহীত

 

বিশ্বের সর্বকালের শ্রেষ্ঠ মানব হিসেবে মুসলিম সম্প্রদায়ের কাছে প্রিয় নবী সা. প্রশ্নাতীতভাবে স্বীকৃত। ইসলামী বিশ্বাস মতে হজরত মোহাম্মাদ সা. আল্লাহ পাঠানো সর্বশেষ নবী, যার ওপর ইসলামের প্রধান ধমগ্রন্থ আল কুরআন অবতীর্ণ হয়েছে।

পৃথিবীর বেশির ভাগ ইতিহাসবেত্তা ও বিশেষজ্ঞদের মতে, মোহাম্মদ সা. হচ্ছেন পৃথিবীর ইতিহাসে অন্যতম প্রভাবিশালী রাজনৈতিক, সামাজিক ও ধর্মীয় নেতা। তার এই বিশেষত্বের অন্যতম কারণ হচ্ছে আধ্যাত্মিক ও জাগতিক উভয় জগতেই তার চূড়ান্ত সফলতা অর্জন। তিনি ধর্মীয় জীবনে যেমন সফল তেমনই রাজনৈতিক ও সামাজিক জীবনেও।

সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মানব হজরত মোহাম্মদ সা. সম্পর্কে আলোচনা করা হবে আজকের এই বিশেষ পর্বে।

হজরত মোহাম্মদ সা. সৌদি আরবে অবস্থিত মক্কা নগরীরর কুরাইশ বংশে বনু হাশিম গোত্রে ৫৭০ খ্রিষ্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন। মক্কার শ্রেষ্ঠ বংশে জন্মগ্রহণ করা সত্ত্বেও, বংশগৌরব তার চরিত্রে এক মুহূর্তের জন্যও প্রকাশ পায়নি। তিনি বিপুল ঐশ্বর্য, ক্ষমতা, মানুষের অগাধ ভালোবাসা ও শ্রদ্ধার মধ্যে থেকেও একজন সাধারণ মানুষের মতো জীবনযাপন করে গেছেন।

ইন্টারনেট জায়ান্ট 'গুগল' ডটকমে, ইতিহাসে বিশ্বসেরা মানুষের তালিকায় প্রথম স্থানে হজরত মোহাম্মদ সা.-এর নাম রয়েছে। আপনি যদি এই মুহূর্তে গুগলে best man, best human, best human in the world, ‘who is the best man in the world- ইত্যাদি লিখে সার্চ করলে প্রথমেই চলে আসবে হজরত মোহাম্মাদ সা.-এর নাম।

অক্ষরজ্ঞানহীন অনাথ শিশু মোহাম্মদ সা. যে কিনা মরুভুমির মতো রুক্ষ পরিবেশে বড় হয়েছেন। সেই মুহাম্মদ সা. তৎকালীন আরব সমাজের অন্যায়, অবিচার, অসত্য ও অন্ধকারের বিপরীতে তিনি মানুষকে আলোর পথ দেখান এবং প্রতিষ্ঠা করেন সত্য, সুন্দর ও ন্যায়ভিত্তিক সমাজব্যবস্থা।

মোহাম্মদ সা.-এর সততার কারণে তৎকালীন সমাজের লোকেরা তাকে সত্যবাদী উপাধি দেয়। তিনি ছিলেন একাধারে সত্যবাদী, প্রিয়ভাষী ও আল আমিন।

মোহাম্মদ সা. নবুয়ত পাওয়ার পর সকলকে ইসলামের পথে আহ্বান করেন। কিন্তু যখন তিনি শান্তির বাণী তথা একমাত্র সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর কথা প্রচার করতে শুরু করেন, তখন মক্কাবাসী ও নিজের আত্মীয়দের হাতে চরম নির্যাতনের শিকার হন।

এরপর অন্যায়ভাবে গুপ্তহত্যা থেকে বাঁচতে সৃষ্টিকর্তার নির্দেশে মক্কা থেকে মদিনায় হিজরত করে সেখানেই বসবাস শুরু করেন। হিজরতের ২৩ বছর পর মোহাম্মদ সা. বিজয়ীর বেশে মক্কায় প্রবেশ করেন। মক্কা বিজয়ের পর, যারা তাকে পদে পদে অপমান অত্যাচার নির্যাতন করত তাদের প্রত্যেককে তিনি মাফ করে দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ভাইসব তোমাদের প্রতি আমার কোনো অভিযোগ নেই, আজ তোমরা সবাই স্বাধীন, সবাই মুক্ত। এই সুমহান প্রতিশোধ সম্ভব হয়েছিল মোহাম্মদ সা.এর বিরাট মনুষত্বের কারণে।

তিনি একজন অনাথ বালক থেকে বিশাল রাজত্ব লাভের পরও তার জীবনে কোনো পর্রিবতন আসেনি। স্বেচ্ছায় তিনি দারিদ্রতাকে গ্রহণ করেছিলেন। মোহাম্মদ সা.এর শাসনকালে অন্য শাসকদের মতো প্রাসাদ নির্মাণ তো দূরের কথা গৃহে সকল সময় খাবার জুটত না। এমনকি রাত্রিবেলা প্রদীপ জ্বালাবার মতো তেলটুকু সময় সময় মিলত না। এতবড় একজন শাসক তার জামা ছিড়ে গেলে নতুন জামা না কিনে নিজেই পুরাতন জামা সেলাই করে নিতেন।

তিনি ইসলামকে একটি ধর্ম এবং জীবন পরিচালনার একটি সম্পূর্ণ সংবিধান হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। হজরত মোহাম্মদ সা.-এর সকল কর্মকাণ্ড মৃত্যুর পরের জীবন বা আখিরাতকে কেন্দ্র করে হতো। একমাত্র সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর আনুগত্য করা ছিল তার প্রধান বার্তা।

তার সারা জীবন মানবজাতির কল্যাণের জন্য নিয়োজিত ছিল। মানুষের শ্রেষ্ঠ আদর্শ হিসেবে তিনি তার জীবনকে রূপায়িত করেছিলেন। বিপুল ঐশ্বর্য, ক্ষমতা, মানুষের অগাধ ভালোবাসা ও শ্রদ্ধার মধ্যে থেকেই একজন সাধারণ মানুষের মতো জীবনযাপন করেছেন। তার সাধনা, ত্যাগ, কল্যাণ চিন্তা বিশ্বের সমগ্র মানুষের কাছে অনুসরণীয়।


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us