এই গাছ ও আমার বিচিত্র ভাবনা!

আবু এন. এম. ওয়াহিদ | Jul 20, 2019 01:10 pm
এই গাছ ও আমার বিচিত্র ভাবনা!

এই গাছ ও আমার বিচিত্র ভাবনা! - ছবি : সংগ্রহ

 

বন্ধুগণ, এই ছবিটি দেখে আপনাদের কী মনে হয়? আমার তো প্রথম তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়াতেই ইচ্ছা করেছে, নিজ হাতে পেড়ে এনে গোলগাল নাদুসনুদুস রাঙা আপেলের গালে আচ্ছাসে কামড় বসাই! তা কি হয়? মনে যা লয়, তা তো সব সময় হয় না। কার না কার গাছ, পরের পানে নিজের হাত কেমনে বাড়াই। সময় গেলে, দৃষ্টি অবনমিত হলে চিন্তায় গভীরতা আসে। পরক্ষণেই আমাকে চেপে ধরে ভিন্ন এক ভাবনায়। আমি কী ভাবছি, এটা কেবলই একটা ফলদায়ক গাছ? না, তা কিন্তু নয়, এ যে আমার গর্ভধারিণী মা-ও।

মা তার সন্তানকে উদরে ধারণ করে, ন’মাস ধরে তিলে তিলে ভ্রুণটাকে লালন করে, পালন করে, বড় করে। এর মাঝে অন্তঃসত্ত্বা মা অনেক অসুবিধা, কষ্ট, অস্থিরতা ও যন্ত্রণার ভিতর দিয়ে যায়। সময় এলে প্রসব করে খালাস পায়। মা এই বেদনাদায়ক প্রক্রিয়াকে খুশিমনে বরণ করে নেয় কোনও বিষয়বাসনা ছাড়াই। প্রসববেদনায় শুধুই কি যন্ত্রণা? না, তার সাথে আরও থাকে স্বর্গীয় তৃপ্তির এক অনাবিল আনন্দানুষঙ্গ। কী সেই আনন্দ, সেটা জন্মদাত্রী মা-ই জানে, অন্য কোনও আদমসন্তানের পক্ষে এ রহস্য জানা ও বোঝা সম্ভব নয়!

একই ভাবে চেয়ে দেখুন, খাড়া উন্নত শির সবুজ বৃক্ষটা কিভাবে ফলের ভারে নু-তে নু-তে সত্যি সত্যি এক সময় একেবারে মাটিতে এসে ঠেকেছে। এই ফল থেকে গাছের কোনও বৈষয়িক প্রাপ্তি নেই, তবে এখানেও অজানা স্বর্গীয় কোনো তৃপ্তি থাকলে থাকতেও পারে যার ছিঁটেফোঁটার আলামত আমরা পাই না, পাওয়ার কথাও নয়। বাগানের মালিক গাছের কাঁচা-পাকা ফল পেড়ে নেয়ার পর প্রসবিনী মায়ের মতো গাছের কাণ্ড, ডাল-পালা, পাতাগুলো মুক্তি পায়, আপন সত্তায় ফিরে আসে, আবার মাথা উঁচু করে সোজা হয়ে দাঁড়ায়, মুক্ত হাওয়ায় দোল খায়। বছর ঘুরতে না ঘুরতে ফের গর্ভধারিণী মায়ের মতন একই পথে পা বাড়ায়, দুঃখ-কষ্টে ভুগে, আবার মুক্তি পায়!

লেখক: আবু এন. এম. ওয়াহিদ; অধ্যাপক - টেনেসি স্টেট ইউনিভার্সিটি,
এডিটর - জার্নাল অফ ডেভোলাপিং এরিয়াজ
Email: awahid2569@gmail.com
আগস্ট ২১, ২০১৮, ন্যাশভিল, টেনেসি, ইউএসএ


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us