জনপ্রিয় ও সিরিয়াস সাহিত্য

ড. ফজলুল হক সৈকত | Oct 26, 2019 04:45 pm
জনপ্রিয় ও সিরিয়াস সাহিত্য

জনপ্রিয় ও সিরিয়াস সাহিত্য - ছবি : নয়া দিগন্ত

 

জনপ্রিয়তা কি সাহিত্যের জন্য কোনো খারাপ কথা? কিংবা সিরিয়াস সাহিত্য কি জনপ্রিয় হয়ে উঠতে পারে না?- এসব পুরনো বিতর্ক। সাহিত্যের গতি ও ধারা যেমন বদলে গেছে অনেক, তেমনি পাল্টেছে সাহিত্যের গ্রহণ-বর্জন-বিষয়ক ধারণাও। পাঠকের রুচি ও চাহিদার কথাও লেখককে মনে রাখতে হয়। সমকাল, সমাজ আর বিবর্তিত চিন্তা-প্রবণতাও সাহিত্যের জন্য ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়ায় কখনো কখনো।

ম্যাক্সিম গোর্কির দুনিয়া মাতানো মা উপন্যাসের কথাই ধরা যাক। সারা পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয়েছে বইটি। সমাকলীন মানব-প্রবণতাকে কী প্রাসঙ্গিকভাবেই-না প্রকাশ করেছেন লেখক। প্রতিবাদী চেতনা, তারুণ্য আর সাংগঠনিক শক্তি সাহিত্যকে কোন স্তরে নিয়ে যেতে পারে- এটি তার বড় উদাহরণ। অথবা যদি বলি শেক্সপীয়রের রোমিও ও জুলিয়েট, ম্যাকবেথ কিংবা হ্যামলেট-এর নাম- শত শত বছর ধরে পাঠকের কাছে সাড়া জাগাতে এসব বইয়ের তুলনা মেলা ভার। ব্যক্তির বিকাশ, রাজনৈতিক প্রাজ্ঞতা-অজ্ঞতা, সৌন্দর্য ও প্রেম বিষয়ে শেক্সপীয়র যে অভিব্যক্তি ও অভিমত ব্যক্ত করেছেন, তাতে আজো একতিল চির ধরেনি। ভিক্টর হুগোর লা মিজারেবল বা জেন অস্টিন-এর সেন্স অ্যান্ড সেন্সেবিলিটি-ই কি জনপ্রিয় সাহিত্য নয়? কিংবা এগুলোকে আমরা কি সিরিয়াস সাহিত্যের তালিকায় রাখব না? মানবিক আবেদন সৃষ্টিতে এসব কাহিনীর তুলনা কি খুব সহজলভ্য? দস্তয়ভস্কির ক্রাইম অ্যান্ড পানিশমেন্ট, চিনুয়া আচেবের থিংস ফল অ্যাপার্ট, লিও তলস্তয়ের আনা কারেনিনা, আর্নেস্ট হেমিংওয়ের দ্য ওল্ড ম্যান অ্যান্ড দ্য সি, জর্জ অরওয়েল-এর এনিমেল ফার্ম, গার্বিয়েল গার্সিয়া মার্কেজের ওয়ান হান্ড্রেড ইয়ারস অব সলিটিউড সম্ভবত একইসাথে জনপ্রিয় ও সিরিয়াস সাহিত্য। ধ্রুপদী সাহিত্যের তালিকায় দুনিয়াব্যাপী গ্রন্থগুলো সমাদৃত।

প্রশ্ন হলো- সিরিয়াস সাহিত্য কি জনপ্রিয় হতে পারে না? অথবা জনপ্রিয় হওয়াটা কি সাহিত্যের বা সাহিত্যিকের বা কবির কিংবা নাট্যকারের জন্য কোনো অপরাধ?
বাংলা সাহিত্যে শরৎচন্দ্র বোধ করি প্রথম জনপ্রিয় সাহিত্যিক। তার দেবদাস সম্ভবত বাংলা সাহিত্যে জনপ্রিয়তার এক বিরাট উদাহরণ। ভালোবাসা ও বেদনার আবেদনের দিক থেকে এমন গল্প বিরল। কেবল ‘দেবদাস’ শব্দটিই কী দারুণ সাড়া জাগিয়েছে, ভাবলে অবাক হতে হয়। শরতের নানান রচনায় আছে জনপ্রিয়তার মাল-মসলা। গল্প-কাহিনীকে তিনি সাধারণ পাঠকের কাছে নিয়ে গেছেন। তাই বলে কি তার রচিত গল্প-উপন্যাস সাহিত্যগুণবর্জিত? মোহাম্মদ নজিবর রহমানের আনোয়ারা, মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদ্মা নদীর মাঝি, পুতুল নাচের ইতিকথা, তারা শঙ্করের কবি, বিভূতিভূষণের আরণ্যক, বুদ্ধদেব গুহর রাতভ’রে বৃষ্টি, সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্র লালসালু, রাবেয়া খাতুনের সাহেববাজার, আনোয়ার পাশার রাইফেল রোটি আওরাত সমকালে এবং উত্তরকালে অবশ্যই বেশ জনপ্রিয়। এবং এগুলো সাহিত্য-সমালোচকের ব্যাপক বিবেচনায় শিল্পগুণে উত্তীর্ণ ফিকশনও বটে। প্রতিটি গ্রন্থের বিষয়-ভাবনা, পরিবেশনশৈলী স্বতন্ত্র ও অভিনব। জীবনবোধ ও মানবিকতার বিচারেও এসব রচনা অনন্য। নীহাররঞ্জন গুপ্ত, ফাল্গুনী মুখোপাধ্যায়, শঙ্কর, নিমাই ভট্টাচার্য, আকবর হোসেন, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, হুমায়ূন আহমেদ, হুমায়ুন আজাদ, তসলিমা নাসরিন, ইমদাদুল হক মিলন, মঈনুল আহসান সাবের, আনিসুল হক- এরাও জনপ্রিয়তার বিচারে ঈর্ষণীয় স্থান দখল করেছেন।

নিজ নিজ রচনা-স্টাইল দ্বারা তারা পাঠককে কাছে টেনেছেন। আবার মূলধারার সাহিত্যিক বা সিরিয়াস রাইটার বলে পরিচিত শওকত ওসমানের জননী, শামসুদ্দিন আবুল কালামের কাশবনের কন্যা, জহির রায়হানের হাজার বছর ধরে, শহীদুল্লাহ কায়সারের সারেং বৌ বা শংসপ্তক, আবু ইসহাকের সূর্যদীঘল বাড়ী, আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের চিলেকোঠার সেপাই, শওকত আলীর প্রদোষে প্রাকৃতজন, আলাউদ্দিন আল আজাদের তেইশ নম্বর তৈলচিত্র, সরদার জয়েনউদ্দীনের বিধ্বস্ত রোদের ঢেউ কিংবা বেগম শেফালী মির্জা, হাসান আজিজুল হকের পাতালে হাসপাতালে কিংবা আগুনপাখি, আল মাহমুদের কাবিলের বোন, শহীদুল জহিরের আবু ইব্রাহিমের মৃত্যু- এইসব রচনা নিয়ে এরাও কোনো কোনো বিচারে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন। মানুষের মনের নানান অভিব্যক্তি, প্রবণতা ও প্রত্যাশাকে এসব লেখার মধ্যে পাঠক ভিন্ন ভিন্ন স্বাদে আবিষ্কার করে। অরুন্ধতি রায়ের গড অব স্মল থিংকস্ কিংবা সালমান রুশদীর স্যাটানিক ভার্সেস দুনিয়া কাঁপানো জনপ্রিয়-ক্ল্যাসিক সাহিত্য- এ খবর কে না রাখে?

তাহলে অসুবিধাটা ঠিক কোন জায়গায়? জনপ্রিয়তায়, না-কি সাহিত্যের বাণিজ্য-সফলতায়? আমরা কি বাণিজ্যনির্ভর সাহিত্যকে ‘জনপ্রিয়তা’র মোড়কে হালকা রচনা বা ‘বাজারি সাহিত্য’ বলার চেষ্টা করছি? এইসব বাজার-সফল লেখার কি কোনো সামাজিক মূল্য বা গুরুত্ব নেই। আর শিল্পের মান-বিচারে আপাতভাবে সফল হয়নি বলে ভবানীচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নববাবু বিলাস, কলিকাতা কমলালয়, হ্যানা ক্যাথরিন ম্যুলেন্স-এর ফুলমনি ও করুণার বিবরণ কিংবা প্যারীচাঁদ মিত্রের আলালের ঘরের দুলালকে কি আমরা উপন্যাসের আলোচনার টেবিল থেকে অথবা ইতিহাসের পাতা থেকে বাদ দিতে পেরেছি? মীর মশাররফ হোসেনের বিষাদসিন্ধু কি জনপ্রিয়তা লাভ করেনি?

তাই বলে কি তা দুর্বল রচনা? ধর্মীয় বিষয়, ইতিহাস ও আবেগ কি এখানে শিল্পরূপ লাভ করেনি? বিষাদসিন্ধুতো বাঙালি মুসলিম পাঠকের ঘরের অলঙ্কার-আসবাব হয়ে আছে। লালন ফকিরের ‘খাঁচার ভিতর অচিন পাখি’ কি কম জনপ্রিয়? লালনের গানকে বাদ দিয়ে বাংলা ধ্রুপদী সাহিত্যের ইতিহাস রচনা কি আদৌ সম্ভব? জসীম উদ্দীনের ‘কবর’ কবিতা জনপ্রিয় বলে কি তা ব্যর্থ? ‘বনলতা সেন’ কি আমরা জনপ্রিয় কবিতা বলতে কখনো দ্বিধাবোধ করি? বনলতার রহস্য ও সৌন্দর্য, এই কবিতার গঠন ও প্রকাশ-কৌশল শিল্পের কোন বিবেচনায় সিরিয়াস সাহিত্য নয়? শামসুর রাহমানের ‘তোমাকে পাওয়ার জন্যে হে স্বাধীনতা’, আল মাহমুদের ‘সোনালী কাবিন’ জনপ্রিয় সাহিত্য এবং একই সাথে বিষয়গুণে উত্তীর্ণ রচনা। কবি হিসেবে শাহ মুহম্মদ সগীর, মুকুন্দরাম চক্রবর্তী, ভারতচন্দ্র, ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত, মাইকেল মধুসূদন দত্ত, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম, জীবনানন্দ দাশ, জসীম উদ্দীন, সুকান্ত ভট্টাচার্য, ফররুখ আহমদ, আহসান হাবীব, শামসুর রাহমান, আল মাহমুদ, শহীদ কাদরী, সৈয়দ শামসুল হক, রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ, হেলাল হাফিজ, রফিক আজাদ- এরা কবে, কখন জনপ্রিয় ছিলেন না? তারা কি শিল্পমান বিচারে উত্তীর্ণ সাহিত্যিক নন? এদের শিল্পীসত্তা নিয়ে কে-কখন প্রশ্ন তুলেছেন? তাদের লেখা বাজারে বেশি বিক্রি হয়েছে বলে কি তারা কোনোদিন ‘বাজারি সাহিত্যের ¯্রষ্টা’ বলে বিবেচিত হয়েছেন? মহাশ্বেতা দেবীর হাজার চুরাশির মা কি সিরিয়াস বই হয়েও অনেক জনপ্রিয়তা লাভ করেনি?

প্রসঙ্গত, উপন্যাসের জনপ্রিয়তা সম্বন্ধে সমালোচক ও সাহিত্যের অধ্যাপক পবিত্র সরকারের একটি মন্তব্য এখানে উল্লেখ করছি- ‘উপন্যাসে আখ্যান-কাঠামো একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান, এবং সাধারণ পাঠকের কাছে ‘গল্পটা কী দাঁড়াল’ সেই বিবেচনাই শেষ পর্যন্ত উপন্যাসের জনপ্রিয়তা নির্ধারণ করে।’ (ভূমিকা, কাশবনের কন্যা, শামসুদ্দীন আবুল কালাম, বিভাস, ঢাকা, আগস্ট ২০১৬) নিজের কবিতার জনপ্রিয়তা বিষয়ে কবি শামসুর রাহমান একবার বলেছিলেন- ‘অনেক সময় আমার মনে হয়েছে এই জনপ্রিয়তার ফলে আমার যে আরো ভালো ভালো কবিতা আছে, সেগুলো একটু অবহেলিত থেকে যাচ্ছে। এটা আমি জানি না ভালো কি মন্দ। অনেক সময় এই বিশেষ ধরনের জনপ্রিয়তা কবির যে আলাদা একটা সত্তা আছে- একজন কবি যে নানা ধরনের কবিতা লিখতে পারেন- তিনি যে সব সময় একই ধরনের কবিতা লিখবেন না, সেই সত্যকে অনেকখানি ভুলিয়ে দেয়। ‘আসাদের শার্ট’ কিংবা ‘স্বাধীনতা তুমি’ ছাড়াও আমার আরো অনেক কবিতা আছে, যেগুলো শিল্পের দিক থেকে অধিকতর মূল্যবান। কিন্তু সেগুলো অবহেলিত আমার মনে হয়। এটা আমি এভাবে দেখি। তবে মানুষের যেটা ভালো লাগে সেটাকে তো আর আমি অস্বীকার করতে পারি না, অগ্রাহ্য করতে পারি না।’ (সাক্ষাৎকার, গ্রহণ : আবুল আহসান চৌধুরী, প্রতিপদ, প্রথম বর্ষ প্রথম সংখ্যা, জানুয়ারি-জুন ২০০৪, ঢাকা, সম্পাদক: ফিউরী খন্দকার, পৃষ্ঠা- ২৭৩)

কোনো কোনো কাহিনী-আখ্যান নির্মাণের পুঁথিগত রাস্তা ও নিটোল গল্প বলার পথ পরিহার করেও অনেক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। কখানো কখনো কাহিনীকার আড়ালে থাকা মানুষের তৈরি জীবনকথা পড়তে বাধ্য করেন। এমন ঘটনা যখন ঘটে, তখন বইটি আপনা-আপনি জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। আমরা যদি ‘জনপ্রিয়’ শব্দটির আভিধানিক অর্থের দিকে চোখ ফেরাই, তাহলে দেখব এর মানে দাঁড়ায়- জনগণের প্রিয় বা লোকপ্রিয়। এই পপুলার কিছু একটা সৃষ্টি করার জন্য কবি বা কাহিনীকার পাবলিক ফিগার হয়ে যান।

এখন যদি আমরা এভাবে ভাবি যে, পাঠক বা জনগণের জন্য লেখা কোনো বই যদি তাদের কাছে প্রিয় হয়ে ওঠে, তাহলে দোষটা কিসের? জনগণের কাছে প্রিয় হলে কোনো বস্তু বা বিষয় কিভাবে অভিযুক্ত হতে পারে, (যদি তা নিষিদ্ধ বা অবৈধ কিছু না হয়ে থাকে) তা বোধগম্য নয়। হুমায়ুন আজাদ একবার সমকালীন সাহিত্য সম্বন্ধে অভিমত ব্যক্ত করেছেন এভাবে- ‘বাঙলাদেশে এখন সাহিত্য নামে যা সৃষ্টি হচ্ছে, তার অতি ক্ষুদ্র অংশই সাহিত্য। আমাদের বয়স্ক কবিরা থেমে গেছেন বা নিজেদের পুনরাবৃত্তি করছেন, তরুণরা অকাব্যিক গ্রাম্যতায় মেতে আছে, উপন্যাসের অবস্থা শোচনীয়- জনপ্রিয় ধারার ‘অপন্যাস’ তরুণদেরকে গ্রাস করছে।’ (‘হুমায়ুন আজাদ : এই বাঙলার সক্রেটিস’, বলাকা, সম্পাদক : শরীফা বুলবুল, বিশেষ সংখ্যা, সেপ্টেম্বর ২০০৩, চট্টগ্রাম, পৃষ্ঠা- ৫৫) সম্ভবত গবেষক-ভাষাবিজ্ঞানী, কবি ও কথানির্মাতা ড. আজাদ এন্টি-নভেলের কথা বলেছেন।

চরিত্র-চিত্রণ, কাহিনীবৃত্ত ও উপন্যাসের ভাবলক্ষণ বর্জিত এক ধরনের উপন্যাসকল্পকে ‘এন্টি নভেল’ বা ‘অপন্যাস’ হয়তো বলা যেতে পারে। এ কথা স্বীকার করেই নিচ্ছি, কখনো কখনো সাহিত্যের নাম করে টাকা কামানোর জন্য কিছু কাহিনী লেখা হয়ে থাকে। এটাকে আমরা ¯্রফে বিজনেস হিসেবেই বিবেচনা করতে চাই। জীবন নিয়ে, শিক্ষা নিয়ে, চিকিৎসা নিয়ে, ধর্ম নিয়ে ব্যবসা থাকতে পারলে সাহিত্য নিয়ে সমাজে ব্যবসার প্রচলন থাকবে না- এমন ভাবাটাই বোকামি। আমাদের কর্তব্য হবে সবকিছু থেকে ব্যবসাটাকে আলাদা করে মূল্যায়ন করা। তবেই, শিক্ষা-সেবা-ধর্ম এমনকি সাহিত্যও স্পষ্ট হয়ে উঠবে আমাদের চোখের সামনে- চিন্তার উঠোনে।

পরিশেষে, আপনারা যারা এই নিবন্ধটি পড়ছেন, তাদের কাছে দু’টি প্রশ্ন রেখে আজকের আলোচনাটি শেষ করতে চাই- আমরা কি ভেবে দেখি, কেন একটি লেখা বা বই অন্যটির তুলনায় পাঠক সিরিয়াসলি গ্রহণ করেন? আর কী কারণে কোনো রচনা জনপ্রিয়তা লাভ করে?

 


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us