ওমর খৈয়াম : আধ্যাত্মিক মরমি কবি

রহিম উদ্দিন | Feb 23, 2020 01:23 pm
ওমর খৈয়াম

ওমর খৈয়াম - ছবি : সংগ্রহ

 

নশ্বর এই ধরনীতে অবিনশ্বর কিছু নেই বলেই, শহর-বন্দর, নদী-নালা, খাল-বিল, প্রকৃতি, জীবন, যৌবন, সৌন্দর্য সবকিছুই একদিন নিঃশেষ হয়ে যাবে। অতল সাগরের মতো নশ্বর স্রোতের পথ ধরে অহরহ বিদায় নিয়েছে পৃথিবীর বুকে যারা শাসন করেছে, শোষণ করেছে, নির্যাতিত আর নিষ্পেষিত হয়েছে। রথী-মহারথী, ধর্মগুরু, আস্তিক-নাস্তিক কারো রেহাই নেই মৃত্যু নামক কঠিন সত্যের করাল গ্রাস থেকে। এই বিদায়ের ক্ষণে আমরা যাঁদের হারিয়েছে কখনো কখনো তাদের জন্য আমাদের বোধোদয়ে ও অন্তপুরে নেমে আসে হাহাকার, আফসোসের কালো ছায়া একই সাথে শ্রদ্ধা ও ভক্তি। অবশ্যই এর মূলে কাজ করে তাঁদের সৃষ্টিকর্ম। বিদায়ের অমোঘ নির্মলা সত্য ও অনিবার্য ক্ষণই আমাদের মনে করিয়ে দিচ্ছে, আজ থেকে প্রায় নয়শো বছর আগে আমরা হারিয়েছে পারস্যের বিখ্যাত দার্শনিক, বিজ্ঞানী, গণিতবিদ ও কবি ওমর খৈয়ামকে। যাঁকে তাঁর সময়ে তাঁর নিজের দেশের লোকেরাই অনেকে নাস্তিক, মাতাল কবি ইত্যাদি বলো সম্বোধন করেছেন। আস্তিক নাস্তিকতা নিয়ে কথা বলার মতো মেধা কিংবা সাধনা আমি করিনি, শুধুমাত্র এই কবির রুবাইয়াত যাঁরা অনুবাদ করেছেন, তাঁদের মধ্যে থেকে কাজী নজরুল অনূদিত রুবাইয়াত নিয়েই আলোকপাত করব।

কবি ওমর খৈয়াম মূলত তাঁর ধর্মশাস্ত্রবিরোধী কবিতার জন্য সুপরিচিত ও বেশি আলোচিত। কবিতা পাঠে, কবির আস্তিকতা-নাস্তিকতা সবকিছুকে ছাপিয়ে যে বিষয়টা আমাকে আলোড়িত করেছে, তা হলো, এই আধ্যাত্মিক মরমি কবির মৃত্যু সম্পর্কে চিরন্তন সত্য বাণী :

‘রুদ্ধ দুয়ার পানশালাটির
সামনে সে কি হট্টগোল ভোরের ডাকে বলছে কারা
খোলরে ওরে দুয়ার খোল।
কতক্ষণ বা রইব হেথা
ছুটছে আয়ু ব্যস্ত পায়
বিদায় নিলে ফিরব না আর
অন্তহীন যে সেই বিদায়।’

কবি কান্তিচন্দ্র ঘোষের অনুবাদ হতে প্রাপ্ত তাঁর রচিত এই রুবাইতের মতোই তিনি
অনন্তকালের জন্য বিদায় নিয়েছেন, যেখান থেকে আর ফিরে আসা না-মুনকিন। সাহিত্যের ও
পারস্যের অনেকের মতোই তাপস কবি ওমর খৈয়াম মাতল কবি, এ কথা পুরোপুরি সত্য না
হলেও মিথ্যা প্রমাণ করার মতো মোক্ষম কোনো অস্ত্র আমাদের অনুবাদকগণের ছিল না,
তাছাড়া, যেখানে কবি নিজেই লিখেছেন :

‘লয়ে শারাব পাত্র হাতে পিই যবে তা মস্ত হয়ে
জ্ঞানহারা হই সেই পুলকের তীব্র ঘোর বেদন সয়ে
কি যেন এক মন্ত্র-,বলে যায় ঘটে কি অলৌকিক
প্রোজ্ব¡ল মোর জ্ঞান গলে যায় ঝর্ণা সম গান বয়ে।’

কাজী নজরুল ইসলামের অনূদিত এই রুবাইয়াতে আমরা দেখি কবি ওমর খৈয়াম মদ্যপায়ী,
অবশ্যই এই মদ্যপানের ফলে তাঁর ভেতরে জ্বলে ওঠে জ্ঞানবাতি এবং তা বিচ্ছুরণ হয়
গান তথা রুবাইয়াত হয়ে। মদ পান করাকে খৈয়াম কখনোই অপরাধ হিসেবে দেখেনি, বিষয়টা
স্পষ্ট বোঝা যায়, কাজী নজরুল ইসলাম অনূদিত নিচের রুবাই হতে, এই রুবাইয়াতে ওমর খৈয়াম লিখেছেন :

‘দোষ দিও না মদ্যপায়ী তোমরা, যারা খাও না মদ
ভালো করার থাকলে কিছু মদ খাওয়া মোর হত রদ
মদ না পিয়েও, হে নীতিবিদ, তোমরা সে সব কর পাপ
তাহার কাছে আমরাও শিশু, হই না যতই মাতাল বদ।’

সুরাসক্ত কবি ওমর খৈয়াম দেখেছেন পৃথিবীর মানুষ যেসব পাপ করে তার তুলনায় মদ্যপানের পাপ অতি নগণ্য। অবশ্যই তিনি এই মদ খাওয়াকে ছেড়ে দেয়ার কথা বলেছেন, যদি এর চেয়ে ভালো কিছু করার থাকে। এখানেই আমাদের ওমর খৈয়ামের যত রহস্য অনুদঘাটিত। এই মদ কি আদৌ প্রচলিত মদ নাকি কেবল দ্রাক্ষারসকেই মদ বলে সম্বোধন করেছেন। কোথাও কোথাও স্পষ্ট দ্রাক্ষারসের কথা বলেছেন। সেই হিসেবে তা কখনই পাপের পর্যায়ে পড়ে না। আবার যদিও মদই হয় সে ক্ষেত্রে তিনি মদ্যপানে অতিরিক্ত সাবধনতার কথা বলেছেন, নিচের রুবাইয়াতসমূহ তার জ্বলন্ত উদাহরণ,

‘সাবধান! তুই বসবি যখম শরাব পানের জলসাতে
মদ খাসনে বদমেজাজি নীচ কুৎসিত লোক সাথে
রাত্তির ভর করবে সে নীচ চিৎকার আর গণ্ডগোল
ইতর সম চেঁচিয়ে কারণ দর্শাবে ফের সে প্রাতে।’

২.
‘যদিও মদ নিষিদ্ধ ভাই, যত পার মদ চালাও
তিনটি কথা স্মরণ রেখে; কাহার সাথে মদ্য খাও
মদ পানের কি যোগ্য তুমি? কি মদই বা করছ পান?
জ্ঞান পেকে না ঝুনো হলে মদ খেয়ো না এক ফোঁটাও।’

সুতরাং কবি ওমর খৈয়াম মদ্যপায়ী হলেও মাতাল নয়; কেননা, তাঁর শরাবের জলসাতে নীচ কিংবা মাতালের স্থান নেই। এই মদকে কখনো কখনো আমার কাছে খোদার সাথে প্রেম বলে মনে হয়েছে। যদিও আগেই বলেছি, ওমর খৈয়ামের উদাহরণ ওমর খৈয়াম। এমতাবস্থায় আমি আধ্যাত্মিকতা ও মাদকতা নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্ব না করে শুধু কবিতায় আমাদের কাছে ওমর খৈয়াম যা তাই লেখার চেষ্টা করে যাচ্ছি। মদে মত্ত কবির কবিতা সকল অন্যায় কুসংস্কার এবং মোল্লাদের বিপক্ষে। যতই মদ্যপান করুক কখনো অন্যায়, অবিচারের সাথে সখ্য তাঁর ছিল না। নিজের আদর্শের প্রতি অটুট থেকে তাই লিখেছেন :

‘নাস্তিক আর কাফের বলো তোমরা লয়ে আমার নাম
কুৎসা গ্লানির পঙ্কিল স্রোত বহাও হেথা অবিশ্রাম
অস্বীকার তা করব না যা ভুল করে যাই, কিন্তু ভাই
কুৎসিত এই গালি দিয়েই তোমরা যাবে স্বর্গধাম? ’

২.
‘হে শহরের মুফতি! তুমি বিপথগামী কম ত নও
পানোন্মত্ত আমার চেয়ে তুমিই বেশি বেহুঁশ হও
মানব-রক্ত শোষ তুমি, আমি শুষি আঙুর খুন,
রক্ত-পিপাসু কে বেশি এই দুজনের, তুমিই কও।’

তিনি সজ্ঞানে সেই সময়ের বাস্তবচিত্র এঁকেছেন ব্যঙ্গাত্মক শ্লোকবাক্যে, যা নিতান্তই একঘেয়েমির ও প্রথাবিরোধী মনোভাবের বহিঃপ্রকাশ। কবি ওমর খৈয়াম কী বলতে গিয়ে কী বলেছেন সেটা আমরা কল্পনা সীমার মধ্যে আনতে পারি না। কোথাও কোথাও তাঁর রুবাইয়াত এর অনুবাদ পড়ে মনে হয় তিনি ঘোরতর নাস্তিক, নিচের তাঁর এমন কিছু রুবাইয়ার তুলে ধরছি, যা পড়লে আপনি নিঃসন্দেহে বলে দিতে পারেন, কবি ওমর খৈয়াম নাস্তিক ভিন্ন অন্য কিছু নয়; তিনি লিখেছেন :

‘আমায় সৃজন করার দিনে জানত খোদা বেশ করেই
ভাবীকালের কর্ম আমার, বলতে পারত মুহূর্তেই
আমি যে সব পাপ করি- তা ললাট লেখা, তাঁর নির্দেশ,
সেই সে পাপের শাস্তি নরক - কে বলবে ন্যায়বিচার এই?’

২.
“দুঃখে আমি মগ্ন প্রভু, দুয়ার খোলো করুণার!
আমায় করো তোমার জ্যোতি অন্তর মোর অন্ধকার।
স্বর্গ যদি অর্জিতে হয় এতই পরিশ্রম করে করে-
সে ত আমার পারিশ্রমিক, নয় সে দয়ার দান তোমার।’

এ ধরনের কিছু রুবাইতে কবি খোদার সমালোচনা করেছেন ঠিক, কিন্তু তিনি খোদাকে মেনে নিয়েই সেটা করছেন। খোদার সঙ্গে কবির সম্পর্ক এমন এক উন্নত পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, তিনি কেবলই খোদার করুণা, ভালোবাসা, প্রেম প্রত্যাশা করেন। সেখানে আনুষ্ঠানিক ধর্ম পালনের প্রতিদান হিসাবে তিনি বেহেশত পাবার আশা করেন না। এটি সুফিবাদী দর্শনের এক গভীর উপলব্ধি। এখানে কবি নাস্তিক এমন বলার কোনো অবকাশ নেই। কিন্তু, তিনিই আবার অন্য জায়গায় স্বীকার করেছেন, তিনি মসজিদে যেতেন, যেমন-

‘মসজিদের ঐ পথে ছুটি প্রায়ই আমি ব্যাকুল প্রাণ
নামাজ পড়তে নয় তা বলে, খোদার কসম! সত্যি মান।
নামাজ পড়ার ভান করে যাই করতে চুরি জায়নামাজ
যেই ছিঁড়ে যায় সেখানা, যাই করতে চুরি আরেকখান।’

কবির কবিতাকে আমরা ননসেন্স কবিতাও বলতে পারি, উক্ত কবিতায়ও দেখা যায়, তিনি বলছেন, তিনি নামাজ পড়তে যান না; বরং নামাজের ভান করে জায়নামাজ চুরি করতে যান।
পরক্ষণেই দ্বিতীয় দুই চরণে, দেখি, সেই জায়নামাজ ছিঁড়ার কথা বলেছেন। সুতরাং, তিনি প্রকাশ্যে হোক কিংবা গোপনে নামাজ পড়তেন এটাই শেষ কথা। এই বিষয়ে, একশ মনীষীর জীবনীতে মাইকেল এইচ হার্ট উল্লেখ করেন, কবি ওমর খৈয়াম এশার নামাজ শেষে সিজদায় গিয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
কবি ওমর খৈয়াম একান্ত নিভৃতচারী সাধক, যাঁর উপরে এক, ভেতরে আরেক। কবির কিছ কিছু রুবাইয়াতের অনুবাদ পড়ে মনে হলো, কবির শরাব, মদ একমাত্র আল্লাহ প্রেমের তৃষ্ণা কিংবা স্পৃহা, আবার কবির সাকি সে সর্বময় ক্ষমতাধর প্রভু। তিনি আল্লাহকে অকপটে স্বীকার করেছেন, আবার হালকা ব্যঙ্গাত্মক ঢঙে বিদ্রƒপও করেছেন।
নিচের রুবাইগুলো তারই উৎকৃষ্ট উদাহরণ,


‘তোমার দয়ার পেয়ালা প্রভু উপচে পড়ুক আমার পর
নিত্য ক্ষুধার অন্ন পেতে যেন না হয় পাততে কর।
তোমার মদে মস্ত করো আমার আমি'র পাই সীমা
দুঃখে যেন শির না দুখায় অতঃপর, হে দুঃখহর।’


‘দশ বিদ্যা, আট স্বর্গ, সাত গ্রহ আর নয় গগন
করল স্রষ্টা সৃষ্টি রে ভাই, দেখছে যাহা জ্ঞান নয়ন!
চার উপাদান, ইন্দ্রিয় পাঁচ, আত্ম তিন ও দুই জগৎ -
পারল না সে সৃষ্টি করতে আরেকটি লোক মোর মতন।’

প্রেম-বিরহ লয়ে অনেক রুবাইয়াত লিখেছেন কবি ওমর খৈয়াম, সেগুলোর
মধ্যে প্রায় উঠে এসেছে প্রিয়ার ঠোঁট। যখনই আমরা দেখি, ‘আমার আজের রাতের খোরাক
তোর টুকটুক শিরিন ঠোঁট,’ কিংবা ‘তোমার রাঙা ঠোঁটে আছে অমৃত-কূপ প্রাণ সুধার/
ঐ পিয়ালার ঠোঁট যেন গো ছোঁয় না, প্রিয়া, ঠোঁট তোমার।’ ইত্যাদি পঙ্ক্তিমালা
উঠে এসেছে তার রুবাইয়াতে; সেখানে কবিকে প্রেমিক বলা মন্দ নয়। তিনি মেধা মননে
অতি আধুনিক একজন কবি এবং প্রেমিক। যাঁর কবিতার পরতে পরতে ছড়িয়ে আছে রহস্যজট আর বিস্ময়কর সব প্রশ্ন, সেখানে তিনি মাতাল হোক আর নাস্তিক হোক অথবা নিখাদ খাঁটি প্রেমিক, আমাদের সেই বিষয়ে মন্তব্য করে মুখ পুড়িয়ে কাজ নেই। আমরা এতটুকুই জানি, যে তাঁর কবিতা কী বলেছে?

‘তত্ত্ব-গুরু খৈয়ামেরে পৌঁছে দিও মোর আশিস
ওর মতো লোক বুঝল কিনা উল্টো করে মোর হদিস!
কোথায় আমি বলেছি যে সবার তরেই মদ হারাম?
জ্ঞানীর তরে অমৃত এ, বোকার তরে উহাই বিষ!’

এ রুবাইয়াত পাঠে বলা যায়, জ্ঞানীর নিগূঢ জীবন-বোধের তত্ত্ব সবার কাছে গ্রাহ্য নয়। তাঁর মহিমা আমাদের স্তর হতে যোজন যোজন উচ্চ মর্গে। তবে, আমরা তাঁকে মাতাল, আস্তিক নাস্তিক যাই বলি না কেন, অধুনা বিশ্বে তিনি একজন মুসলিম মনীষী, গণিতবিদ এবং কবি হিসেবে স্বীকৃত। নশ্বর পৃথিবীর মায়া ছেড়ে তিনি যেতে রাজি না হলেও, ৪ ডিসেম্বর ১১৩১ সালে তিনি ঠিকই মৃত্যুর সাথে আলিঙ্গন করেছেন। অবশ্যই তাঁর প্রচলিত সঠিক জন্ম ও মৃত্যু তারিখ এবং সাল নিয়ে দ্বিধাবোধ রয়েছে। তিনি রহস্যময়ী এক কবি, যে বিদায়লগ্নেও প্রভুর তরে প্রশ্ন করেছেন,
‘আকাশ যেদিন দীর্ণ হবে, আসবে যেদিন ভীম প্রলয়,
অন্ধকারে বিলীন হবে গ্রহ তারা জ্যোতিময়,
প্রভু তোমার দামন ধরে বলবো কেদে, হে নিঠুর,
নিরপরাধ মোদের কেন জন্মে আবার মরতে হয়? ’

তত্ত্বজ্ঞানী বিজ্ঞানী গণিতবিদ আইনজ্ঞ, কবি ওমর খৈয়াম এমন হাজারো প্রশ্নের অবতরণ করেছেন! জানি না, তিনি কী উত্তর পেয়েছেন আর কী পাননি। হয়তো না পাওয়ার মধ্যে তিনি যা পেয়েছেন সেটাই আমাদের মতো সবার হৃদয়গ্রাহী নয় বলেই সেই বিষয়টা না বলে চলে গেলেন পরকালে, আর বলে গেলেন চিরন্তন সত্যের বাণী,
‘আমরা দাবা খেলার ঘুঁটি, নাই রে এতে সন্দ নাই!
আসমানি সেই রাজ-দাবাড়ে চালায় যেমন চলছি তাই।
এই জীবনের দাবার ছকে সামনে পিছে ছুটছি সব,
খেলার শেষে তুলে মোদের, রাখবে মৃত্যু-বাক্সে ভাই।’


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us