করোনাভাইরাস কতক্ষণ টিকতে পারে?

অন্য দিগন্ত ডেস্ক | Mar 15, 2020 07:13 am
করোনাভাইরাস

করোনাভাইরাস -

 

ভয়াবহ আতঙ্ক সৃষ্টি করে চলেছে করোনা ভাইরাস। চীনে এর শুরু হলেও এখন সারা বিশ্বে এটি ছড়িয়ে পড়েছে। চীনে বরং এখন ভাইরাসটির প্রকোপ কিছু কমে এসেছে। এখন ইউরোপে ভয়াবহভাবে ছড়িয়ে পড়ছে। ফলে এই ভাইরাস নিয়ে আলোচনার শেষ নেই।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) ইতিমধ্যেই নোভেল করোনা ভাইরাসকে মহামারি হিসেবে ঘোষণা করেছে, বিশ্বব্যাপী এক লাখেরও বেশি মানুষ এই ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হয়েছে এবং ৫ হাজারেরও বেশি মানুষ মারা গেছে। নোভেল করোনা ভাইরাস বেড়ে চলার কারণে প্রত্যেকেই ভ্রমণ করা এবং যেখানে সেখানে হাত দেয়া এড়িয়ে চলছে।

করোনাভাইরাসটি বাতাসের মাধ্যমে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে এবং সংক্রামিত যদি ব্যক্তি কোনো জিনিসে স্পর্শ করে বা তার সংস্পর্শে কোনো সুস্থ ব্যক্তি এলেও এটি ছড়িয়ে পড়ে। কর্মক্ষেত্রে করোনা ভাইরাস থেকে বাঁচবেন কীভাবে? দেখে নিন পদ্ধতিগুলো গবেষণায় দেখা গেছে যে, ভাইরাসটিকে তামার উপর চার ঘণ্টা পর্যন্ত, কার্ডবোর্ডে ২৪ ঘণ্টা এবং প্লাস্টিক ও স্টেইনলেস স্টিলে দু-তিন দিন পর্যন্ত শনাক্ত করা যায়। তবে, এই গবেষণা এখন পর্যন্ত অন্যান্য বিজ্ঞানীদের দ্বারা পর্যালোচনা করা হয়নি।

জার্নাল অফ হসপিটাল ইনফেকশনে প্রকাশিত অনুরূপ আরেকটি গবেষণা এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে যে হিউম্যান করোনা ভাইরাসগুলি যেমন মার্স, সার্স ও করোনা ভাইরাস বা এন্ডেমিক হিউম্যান করোনা ভাইরাস গ্লাস, প্লাস্টিক বা ধাতুর মতো নির্জীব পৃষ্ঠে বাঁচতে পারে প্রায় ৯ দিন পর্যন্ত। এই ভাইরাসগুলি নিষ্ক্রিয় করা যেতে পারে জীবাণুনাশক দিয়ে, যেগুলো এক মিনিটের মধ্যে ৬২-৭১ শতাংশ ইথানল, ০.৫ শতাংশ হাইড্রোজেন পারক্সাইড বা ০.১ শতাংশ সোডিয়াম হাইপোক্লোরাইট ধারণ করে। বর্তমানে, করোনা ভাইরাস থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য কোনো ভ্যাকসিন নেই। সুতরাং, এই রোগটি প্রতিরোধে আমরা যা করতে পারি তা হল সাবান ও পানি দিয়ে সঠিকভাবে হাত ধোওয়ার মতো কিছু সাধারণ ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা। যদি আপনি অসুস্থ হন তবে মাস্ক পরুন এবং যেখানে সেখানে স্পর্শ করা এড়িয়ে চলুন।

করোনা এড়ানোর উপায়

১) ভ্রমণ এড়ানো প্রথমত, আপনার যদি ফ্লুর মতো লক্ষণ যেমন - কাশি, জ্বর, সর্দি বা হাঁচির মতো সমস্যা থাকে তবে যেকোনো ধরনের ভ্রমণ করা থেকে বিরত থাকুন।

২) জনবহুল এলাকা এড়িয়ে চলুন এমনও হতে পারে যে কোনো ব্য়ক্তির মধ্যে করোনা ভাইরাসের কোনো লক্ষণ নেই, সে স্বাভাবিক কিন্তু, তার মধ্যেও এই রোগের জীবাণু থাকতে পারে। কারণ এই সংক্রমণটি রোগীর মধ্যে ফুটে ওঠে ১৪ দিনের মধ্যে। সুতরাং, জনবহুল জায়গা এড়িয়ে চলুন কারণ আপনি নিজেও জানেন না যে কার মধ্যে এই ভাইরাসটি আছে এবং আপনাকে সংক্রমিত করতে পারে।

৩) নিজের চিকিৎসা করান আপনি যদি করোনা ভাইরাস সংক্রামিত দেশ থেকে আসেন এবং ফ্লু-এর লক্ষণ ও শ্বাস নিতে অসুবিধা হয় তবে, অবিলম্বে চিকিৎসকের সাহায্য নিন।

৪) দূরত্ব বজায় রাখুন যাদের ফ্লু বা সর্দির লক্ষণ রয়েছে তাদের থেকে দূরত্ব বজায় রাখুন। কোনো ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলার সময় ০.৫ মি থেকে ২ মি দূরত্ব বজায় রেখে কথা বলুন।

৫) হাত পরিষ্কার রাখুন কমপক্ষে ২০ সেকেন্ড ধরে সাবান এবং পানি বা হ্যান্ডওয়াশ দিয়ে ঘন ঘন হাত ধুয়ে নিন।

৬) ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধি বজায় রাখুন প্রতিদিন আপনার বাড়ির চারপাশ, টেবিল, টয়লেট, কম্পিউটার, ল্যাপটপ, সুইচ ও স্টেশনারি জিনিস পরিষ্কার করার জন্য জীবাণুনাশক ব্যবহার করুন।

৭) সংক্রামিত হাত দিয়ে চোখ স্পর্শ করবেন না যখন কোনো সংক্রামিত ব্যক্তি কোনো মাস্ক ছাড়াই হাঁচি দেয় বা কাশি হয়, তখন প্যাথোজেনগুলো ফোঁটা আকারে বেরিয়ে আসে এবং চেয়ার বা টেবিলের মতো জিনিসগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে। অন্য কোনো ব্যক্তি যখন সেই জিনিসগুলোকে স্পর্শ করে এবং সেই হাত দিয়ে তার চোখ, নাক বা মুখ স্পর্শ করে, তখন রোগের জীবাণুগুলো এর মাধ্যমে দেহের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে এবং তাকে সংক্রামিত করে। প্যাথোজেন জিনিসগুলিতে প্রায় ৪৮ ঘণ্টা বেঁচে থাকতে পারে।

৮) প্রবীণদের বিশেষ যত্ন বয়স্কদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল থাকে যার কারণে বৃদ্ধ ও পরিবারের অসুস্থ সদস্যদের বিশেষ যত্ন নেয়ার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।

৯) মুখ ও নাক ঢেকে রাখুন আপনার যদি ফ্লু-এর মতো লক্ষণ থাকে এবং কাশি বা ঘন ঘন হাঁচি হয় তবে সর্বদা টিস্যু ব্যবহার করুন এবং ব্যবহারের সাথে সাথেই এটি ত্যাগ করুন। আর, সাবান ও পানিতে হাত ধুয়ে নিন।

১০) মাস্ক স্পর্শ করবেন না আপনি যদি মুখ এবং নাক ঢাকতে মাস্ক পরে থাকেন তবে একবার এটি পরে যাওয়ার পরে খালি হাতে এটিকে স্পর্শ করবেন না। এছাড়া, মাস্কটি ব্যবহারের পরে এটি নিরাপদে সরিয়ে ফেলুন বা একবার ব্যবহারের পর তা বাতিল করুন। সঙ্গে সঙ্গে হাত ধুয়ে ফেলুন।

১১) এক্সট্রা মাস্ক বহন করুন কাশি বা হাঁচির মাধ্যমে ভাইরাসের সংক্রমণ হতে পারে এমন আশঙ্কা সম্পর্কে অনেকেই সিরিয়াস নয়। যদি আপনি এমন কাউকে দেখেন যার মধ্যে ফ্লু জাতীয় লক্ষণ আছে তবে তার মুখ ঢাকতে তাকে এক্সট্রা মাস্কটি দিন।

১২) কাঁচা খাবার খাওয়া এড়িয়ে চলুন কেবলমাত্র সঠিকভাবে রান্না করা খাবার খান এবং রান্না না করা বা অর্ধেক রান্না করা খাবার বা গোশত জাতীয় খাবার এড়ানো উচিত। এমনকি, আপনি যদি কাঁচা মাংস বা মৃত প্রাণীর কোনো অংশ স্পর্শ করেন তবে অবিলম্বে হাত ধুয়ে ফেলুন।

১৩) যেখানে সেখানে থুথু ফেলবেন না আপনি যখন জনসাধারণের মাঝে থাকবেন তখন যেখানে সেখানে থুতু ফেলা এড়ান কারণ এর মাধ্যমে কেউ সংক্রামিত হতে পারে।

১৪) প্রাণীদের সঙ্গে কাছাকাছি হওয়া এড়ান, খামার বা পশুর বাজারে বা যেখানে পশু কাটা করা হয় সেখানে যাওয়া এড়িয়ে চলুন। এছাড়াও, জীবিত প্রাণী যারা অসুস্থ তাদের সাথে যোগাযোগ এড়ান।

সূত্র : বোল্ডস্কাই


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us