ভাইরাসে বেঁচে গেলেও গ্লোবাল অর্থনীতিতে কী হবে

গৌতম দাস | Mar 30, 2020 10:06 am
ভাইরাসে বেঁচে গেলেও গ্লোবাল অর্থনীতিতে কী হবে

ভাইরাসে বেঁচে গেলেও গ্লোবাল অর্থনীতিতে কী হবে - সংগৃহীত

 

 

করোনাভাইরাস বা কোভিড-১৯। কোনো দেশী অথবা বিদেশী মিডিয়া যেটাই খোলা যাক, দেখা যাবে কমপক্ষে ৯০ শতাংশ নিউজের বিষয়বস্তু কোনো না কোনোভাবে এই ভাইরাসের সাথে সংশ্লিষ্ট হয়ে আছে। এটার প্রভাব এতই মারাত্মক। আরেক অদ্ভুত দিক হলো, যা আমাদের ঘরে ঘরে তা দুনিয়াজুড়েও- আগে দেখা যায়নি এমন অদ্ভুত পরিস্থিতি। এমন পরিস্থিতিই ইঙ্গিত দিচ্ছে আমরা একটা গ্লোবাল মহামন্দার দিকে যাচ্ছি, কেউ কেউ অবশ্য দাবি করছেন, আমরা ইতোমধ্যেই মন্দায় প্রবেশ করে ফেলেছি।

মহামন্দার শঙ্কা যে সবাইকে ভীত করে ফেলেছে এর সবচেয়ে জোরালো প্রমাণ হলো, অকালে প্রথমে পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের জি৭ বৈঠক। আর পরে জি২০ অর্থমন্ত্রীদের বৈঠক। কিন্তু এর আয়োজনের ধরন বলে দিচ্ছে, এ ধরনের গ্লোবাল সামিট হচ্ছে যার যার দেশে বসে ভার্চুয়ালি মানে ভাবের মধ্যে, যা দেড় ঘণ্টার ‘ভিডিও কনফারেন্স’ মাত্র। এখনকার আরেক গ্লোবাল হয়ে ওঠা শব্দ হলো ‘ডিস্টান্সিং’। এর মানে হলো, কাছে এলেও দূরে দূরে থাকা। প্রথমত আইসোলেশন বা বিচ্ছিন্ন হয়ে ঘরে বন্দী হয়ে বাস করতে হবে সবাইকে কিছু দিন। আর এ সময়ে জরুরি প্রয়োজনে যদি দেখা করতেই হয় তবে সাত ফুট দূরে দূরে থেকে কথা বলতে হবে। স্বভাবতই এমন গ্লোবাল পরিস্থিতিতে গ্লোবাল অর্থনৈতিক মহামন্দার ঘণ্টা বাজার সময়ে ইমার্জেন্সি গ্লোবাল সামিট হবে দেড় ঘণ্টার এক ‘ভিডিও কনফারেন্স’Ñ এটাই স্বাভাবিক।


জি৭ হলো আমেরিকা, কানাডা আর সাথে আরো চার ইউরোপীয় রাষ্ট্র ব্রিটেন, জার্মানি, ফ্রান্স, ইতালি এবং এশিয়ার একমাত্র জাপান। এভাবে সাত রাষ্ট্রের পলিসি বিষয়ে এক সমন্বয় গ্রুপ। এই সাত রাষ্ট্রের গ্রুপ জি৭-এর কোনো রাজনৈতিক বা আইনগত ক্ষমতা না থাকলেও তারা এক বিশেষ ক্ষমতার। কারণ কোনো বিষয়ে (সাধারণত অর্থনীতির ও গ্লোবাল ইস্যু) তারা একমত হয়ে গেলে এর প্রভাব অনেক বড় ও নির্ধারক হয়ে ওঠে। এর একটা বড় কারণ হিসেবে বিশ্বব্যাংকের মালিকানাই ধরা যাক; জি৭ দেশের বিশ্বব্যাংকের মালিকানা সব মিলিয়ে ৩৫ শতাংশের বেশি হবে, যেখানে আমেরিকার একা মালিকানা ১৮ শতাংশের মতো। ফলে স্বভাবতই তাদের একমতের সিদ্ধান্ত খুবই নির্ধারক।

কথাগুলো অতীত ঘটনা হিসেবে বলা সম্ভবত বেশি সঙ্গত হতো। কারণ এরা ‘পুরান জমিদার’, যার ঠাটবাট আছে কিন্তু বাস্তব মুরোদ আর নেই; শুকিয়ে ফোকলা হয়ে গেছে। পুরানা মাতবর আমেরিকার জায়গায় চীন এসে প্রবেশ করাতে আস্তে আস্তে অনেক দৃশ্যপট বদলে যাচ্ছে।

যদিও জি৭ নিয়ে অনেকে সবচেয়ে বিরক্তিকর ভাষায় বলার চেষ্টা করেন, এরা নাকি ‘সেভেন ডেমোক্রেসিজ’। কেন? একা চীনা নেতৃত্বেই পাল্টা আইএমএফ-বিশ্বব্যাংক হতে চাইবার মতো প্রতিষ্ঠানের জন্ম হয়ে গেছে। জি৭ বা এর সদস্যরা এখনো চীনের চেয়ে ভালো এমন ভাব ধরার জন্য এটা বলে থাকে। মূল বিষয় একা চীনের এখন ঋণ দেয়ার সক্ষমতা দুনিয়ার সবার চেয়ে বেশি। সে কারণে চীনা নেতৃত্বের নতুন গ্লোবাল প্রতিষ্ঠানগুলো ক্রমেই মাথা তুলছে, প্রভাব বাড়িয়ে চলেছে। মূলকথা, ইতোমধ্যেই তারা বিকল্প হিসেবে নিজেদের হাজির করে ফেলেছে। যেমন আমাদের প্রধানমন্ত্রী চাইলে বিশ্বব্যাংকের বদলে সরাসরি চীনের বা চীনের ‘বিশ্বব্যাংকে’র কাছে অবকাঠামো ঋণ নিতে যেতে পারেন।

আসলে লাশের বাক্সে শেষ পেরেকটা মেরেছে ‘ওয়াল স্ট্রিট’ মানে গ্লোল্ডম্যান স্যাক্সের মতো বড় বড় বিনিয়োগের প্রতিষ্ঠানগুলোÑ প্রতীকী উপস্থিতি বা অফিস যেখানে। তারা বলেছিল জি৭ গুরুত্বহীন হয়ে গেছে। কারণ তাদের অর্থনীতি আগের মতো নয়, ঢলে পড়েছে। ততই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়ে হাজির হয়েছে ‘রাইজিং ইকোনমি’ বলে পরিচিত আরেক ক্যাটাগরির দেশগুলো। কাজেই ‘তাদেরও পুরানা জি৭-এর সাথে মিশিয়ে নিয়ে আলাদা জি২০ নামে জোট গড়া হোক।’ এই দাবি ছিল এমনই এক বাস্তবতা, তাই জি২০ গ্রুপ কার্যকর হয়ে যায়। অনেকে বলার চেষ্টা করেনÑ এরা দুনিয়ার টপ ২০টা ইকোনমির একটা গ্রুপ। সেটা যতটা না সত্যি, এর চেয়েও সত্য হলো, চীন মানে যার নিজের আছে এক বিশাল অভ্যন্তরীণ বাজার, উৎপাদন এবং অন্য দেশে ঋণ-বিনিয়োগদাতার সক্ষমতা; আর পাশে ভারত যার অভ্যন্তরীণ বড় ভোক্তাবাজার আর, উৎপাদন সক্ষমতার পটেনশিয়াল আছে; এ ছাড়া ব্রাজিল ও সাউথ আফ্রিকা থেকে সৌদি আরব পর্যন্ত মিলে এই জি২০। তাই গত সপ্তাহে জি২০ এর ভিডিও কনফারেন্সের দুই দিন আগে জি৭-এর একই কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হলো। বলাবাহুল্য, জি৭ জি২০ এর অংশ অবশ্যই। আর প্রতিটি জি২০ বৈঠকের আগে জি৭-এর সভা হয়ে যায়, যাতে ‘জি৭-ওয়ালা’রা জি২০-এর বৈঠকে একই স্বরে কথা বলতে পারেন।

এখন আর লুকানো থাকছে না যে, আসন্ন এক গ্লোবাল মন্দার মখোমুখি আমরা। তাই জি২০ অর্থমন্ত্রীদের ভিডিও কনফারেন্সের মূল কথাটা ছিল, তারা গ্লোবাল অর্থনীতিতে এমন অর্থ ঢালবেন যাতে গ্লোবাল বার্ষিক রাজস্ব ব্যয় পাঁচ ট্রিলিয়ন ডলার পর্যন্ত গিয়ে ঠেকে। জি২০ এর এখনকার চেয়ারম্যান সৌদি আরব। তার নেতৃত্বেই এ ঘোষণা দেয়া হয়। আলজাজিরার শিরোনাম হলো, ‘কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে গ্লোবাল অর্থনীতিকে রক্ষার লড়াইয়ে জি২০-এর পাঁচ ট্রিলিয়ন ডলারের প্রতিশ্রুতি।’
জি৭-এর রিপোর্ট কই? সেখানে কী বলা হয়েছে? নাই। এর কারণ আসলে জি৭-এর সভা হয়েছে ঠিকই। কিন্তু সেখান থেকে কোনো যৌথ বিবৃতি দিতেও তারা ব্যর্থ। আর বলতে গেলে, এর দুই দিন পরে জি২০ থেকে ব্যক্ত প্রতিশ্রুতি তাদের বাঁচিয়ে দিয়েছে।

কেন জি৭ ব্যর্থ হলো? এর জবাব, ট্রাম্পের আমেরিকা এমন দায়িত্বজ্ঞানহীন তৎপরতার জন্য দায়ী। এবার জি৭-এর সভা ছিল মূলত পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের। তাই পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের হয়ে ওই সভায় উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু বিবৃতি ড্রাফটের সময় তিনি গোঁ-ধরে বসেন যে, ভাইরাসটাকে করোনাভাইরাস বা কোভিড-১৯ নয়, বরং ‘উহান ভাইরাস’ বলতে হবে। আর এতে ইউরোপীয়সহ কোনো সদস্য রাষ্ট্র রাজি না হওয়ায় সব নস্যাৎ হয়ে যায়। এতে পরে ট্রাম্পকেই সব ‘কাফফারা’ দিতে হয় অবশ্য।

আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন আগামী নভেম্বর মাসে। আর ট্রাম্প এবারো এতে প্রার্থী। ট্রাম্পের ধারণা, তিনি চীনের বিরুদ্ধে এক বিরাট লড়াকু যিনি এই প্রথম জাতিবাদী-আমেরিকার হয়ে চীনের বিরুদ্ধে ‘বাণিজ্যযুদ্ধ’ লড়ছেন। এই প্রপাগান্ডা জোরদার করতেই তিনি কোভিড-১৯ কে ‘উহান ভাইরাস’ [চীনের হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহানে সর্বপ্রথম এই রোগের প্রাদুর্ভাব] বলে ডাকার বালকসুলভ আবদার ধরে বসেন। কিন্তু এমন প্রপাগান্ডা তিনি পরিকল্পিত ও ধারাবাহিকভাবে করতে অক্ষম। তা এখন প্রমাণিত। কেন?

প্রথমত, সারা দুনিয়া মারাত্মকভাবে ভাইরাস আতঙ্কে ভুগছে; হিমশিম খাচ্ছে যে, কী করে নিজ নিজ দেশের মানুষকে বাঁচানো যায়, মৃতের সংখ্যা কমানো যায়। যাতে এতে ন্যূনতম সফলতা আসা শুরু হলেই, এরপর গ্লোবাল অর্থনৈতিক মন্দা যাতে এর ওপর প্রভাব ফেলতে না পারে তাই এর মোকাবেলা করতে ঝাঁপিয়ে পড়া যায়। অথচ ট্রাম্প এমন ক্রিটিক্যাল সময়ে আছেন তার ব্যক্তিগত সঙ্কীর্ণ স্বার্থ, তথা নির্বাচন নিয়ে। এ ছাড়া ট্রাম্পের এই পজিশন গ্লোবাল ঐক্যের বদলে বিভেদ সৃষ্টি করেছে।

দ্বিতীয়ত, করোনাভাইরাসের জন্য চীনকে দায়ী করার জন্য তার দাবিই তো ধারাবাহিক নয়। যেমন, ঘটনার শুরুর দিকে তিনিই বিবৃতি দিয়ে চীনের প্রশংসা করেছেন যে, চীন উদার হয়ে এই ভাইরাস সম্পর্কে সব তথ্য ও আপডেট খোলাখুলিভাবে আমাদেরসহ সবাইকে জানাচ্ছে শেয়ার করছে বলে। কিন্তু পরবর্তীতে হঠাৎ করে ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ এক রিপাবলিক সিনেটর টম কটন ‘করোনা চীনের জীবাণুযুদ্ধের অস্ত্র’ যা সম্ভবত হাত ছুটে বাইরে এসে পড়েছে বলে অভিযোগ তোলেন। আর তা থেকেই ট্রাম্পের বয়ান ও অবস্থানও বদলে যায়। অথচ কটন তার অভিযোগের পক্ষে কোনো প্রমাণ দেননি। বরং একটা ‘সম্ভবত’ বলেছেন। অর্থাৎ নিশ্চিত করে, এমন শব্দ দিয়ে নয়। এ নিয়ে ইতোমধ্যে চীনও আমেরিকাই এই জীবাণু চীনে ছড়িয়েছে বলে পাল্টা দাবি জানায়। এসব পাল্টাপাল্টি অভিযোগে সব মিলিয়ে পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে ওঠে। এর মধ্যেই ট্রাম্প ‘উহান ভাইরাস’ বলে তার প্রপাগান্ডা চালু করে দিয়েছিলেন। কিন্তু ট্রাম্পের অবস্থানের অসঙ্গতি হলো, তা হলে শুরুতে তিনি কেন চীনের প্রশংসা আর ভাইরাস সামলানো ও তথ্য সবার সাথে শেয়ার করার প্রশংসা করেছিলেন।

তৃতীয়ত, এ পরিস্থিতিতে ইউরোপ ট্রাম্পের অসংলগ্ন অবস্থানের হাত ছেড়ে দেয়া ছাড়া নিজেরা নিরুপায় বোধ করেছিল। সে কারণে ‘জি৭’ হয়ে পড়ে স্থবির। কিন্তু গ্লোবাল অর্থনীতির দুর্দশার মুখে নতুন উদ্যোগের ধারা শুরু হয়েছিল। এর লিড নিতে আসে জাতিসঙ্ঘের বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা হু। সংস্থাটি পরিষ্কার করে বলেছে এভাবে ‘উহান ভাইরাস’ বলে চীন-এশিয়া বা কোনো অঞ্চলকে দায়ী করা ঠিক নয়। এ কারণেই আমরা এর নাম কোভিড-১৯ বলে স্থির করেছি।’ অবশেষে একটা সন্ধি হয়েছে। যার প্রকাশ ঘটানো হয় আমেরিকায় চীনের রাষ্ট্রদূত অন্য কথা প্রসঙ্গে প্রেসের কাছে কথা বলার সুযোগ নিয়ে ‘চীন-আমেরিকার পারস্পরিক অভিযোগ তোলা থেকে’ তিনি ‘দূরে থাকতে চান’ বলে জানিয়ে দিলেন। ট্রাম্প এবার প্রেসের কাছে বলেন যে, ‘তিনি করোনার জন্য জন্য চীন বা এশিয়ার কেউ দায়ী বলে মনে করেন না।’ আর তাতে দুই দিনের কূটনীতিতেই জি৭-এর ব্যর্থতার পরও জি২০-এর সভা থেকে সাফল্য আসে, যৌথ বিবৃতি প্রকাশিত হয়। সেখানে ভাইরাসকে সবার জন্যÑ বিশেষ করে গ্লোবাল অর্থনীতিতে সবার জন্য ‘কমন হুমকি’ বলে উল্লেখ করে বিবৃতি প্রকাশিত হয়েছে। ইতোমধ্যে আমেরিকার ফেডারেল রিজার্ভের চেয়ারম্যান এক সাক্ষাৎকার দিয়ে ডলার ছাড় করার জন্য তার পরিকল্পনা এবং বিস্তারিত সাক্ষাৎকার দেন। এক কথায় বললে, ট্রাম্পকেই নিজের ফেলা থুথু চেটে তুলে নিয়ে বিতর্ক শেষ করতে হয়। আর এ ব্যাপারে সবচেয়ে ভালো রিপোর্টিং করেছে হংকংয়ের ‘সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট’।

এবার ‘ঘরের খবরে’র দিক। করোনাভাইরাস মানেই, এর একমাত্র প্রতিষেধক হচ্ছে, যা মানুষ জানে তা হলো, মানুষকে আলাদা করা। আইসোলেশন বা ঘরে বন্দী হয়ে থাকা। ছোঁয়াচের বিরুদ্ধে ছোঁয়া এড়িয়ে থাকা। এটা খুবই ব্যয়বহুল প্রতিকার। দেশের মানুষকে তিন সপ্তাহ থেকে তিন মাস একনাগাড়ে ঘরে বন্দী করে রাখার সোজা মানে হলো, ওই সময়ের জন্য অর্থনীতি স্তব্ধ করে রাখা। অথচ খরচ আগের মতোই। বিশেষ করে নিম্ন আয়ের বা দিনে এনে দিনে খাওয়া মানুষের জন্য পর্যাপ্ত সরকারি ভর্তুকি ঘোষণা করা ছাড়া উপায় নেই। এস্টিমেট হচ্ছে ভারতের ১৩৬ কোটি জনসংখ্যার ৮০ কোটিকেই তাদের ভর্তুকি বা পুরা রেশন সরবরাহ করতে হবে, তাতে ভারতের রাজস্ব আয়ের ঘরে যাই আসুক না কেন। পাকিস্তান করোনায় আক্রান্তদের ১২ হাজার রুপি করে অনুদান দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশের ঘোষণা খুবই অপ্রতুল বা অগোছালো মনে হয়েছে। সব কিছু একদিন শেষ হয়ে যায়, করোনার প্রভাবও একদিন শেষ হবে। তত দিন মানুষদের নিয়ে বেঁচেবর্তে থেকে যদি টিকে যেতে পারি, তা হলে আবার নতুন উদ্যোমে অর্থনীতি চালু করার সংগ্রামে নামতে পারব। কিন্তু তত দিন (অন্তত তিন-ছয় মাস) নিম্ন আয়ের বা দিনে এনে দিনে খাওয়া মানুষের জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা আমাদের করতেই হবে। সরকার কেবল গার্মেন্টশ্রমিকের জন্য পাঁচ হাজার কোটি টাকার কথা বলেছেন। এর বাইরে শহরের রিকশাচালক থেকে গ্রামের দিনমজুর পর্যন্ত কথিত ইনফরমাল শ্রমিকদের কথা ভেবে আমাদের অবশ্যই পরিকল্পনা করতে হবে। তারা না খেয়ে ঘরে বা রাস্তায় মরে পড়ে থাকলে সেটা নিশ্চয় আমাদের জন্য ভালো অভিজ্ঞতা হবে না। যেভাবেই হোক এর জন্য ফান্ড জোগাড় করার সামাজিক দায় আমাদের নিতেই হবে।

ইতোমধ্যেই ৮০টি সদস্যরাষ্ট্র আইএমএফের কাছে লোন চেয়েছে। বিশ্বব্যাংকের পরিকল্পনা কী, ঋণ-অনুদানের ব্যবস্থা কী আছে, জানতে হবে। ইতোমধ্যেই পেটের দায়ে রিকশা নিয়ে বেরিয়ে পড়া লোকদের দুর্দশা আমরা দেখতে পাচ্ছি। ওদের পুলিশের লাঠিপেটা দিয়ে সামলানো যাবে না। এটা কোনো সমাধানই নয়। পুলিশের প্রতি নির্দেশ বাস্তবসম্মত ও সঠিক হতে হবে। এটা ২০২০ সাল। এখনো না খেয়ে মানুষ মরলে তা ঘটবে একমাত্র কুশাসনের কারণে।

লেখক : রাজনৈতিক বিশ্লেষক
goutamdas1958@hotmail.com


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us