করোনাভাইরাস কি আল্লাহর গজব?

হামিদ মীর | Apr 13, 2020 09:42 pm
করোনাভাইরাস কি আল্লাহর গজব?

করোনাভাইরাস কি আল্লাহর গজব? - সংগৃহীত

 

বিজ্ঞানীরা এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসের ওষুধ খুঁজে পাননি। সুতরাং কেউ এটাকে ‘আল্লাহর আজাব’ বলছেন, কেউ বলছেন ‘পরীক্ষা’। এমন মহামারী এই প্রথমবার আসেনি। কুরআন শরিফে এমন মহামারীর উল্লেখ পাওয়া যায়, যার কারণে আত্মম্ভরী ও ভ্রষ্টজাতিগুলো ধ্বংস হয়ে গেছে। কুরআন শরিফে সূরা আরাফে প্লাবন, পঙ্গপাল ছাড়াও ব্যাঙের আধিক্য ও রক্তবৃষ্টিকেও আজাব হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে। ১৯৮১ সালে দক্ষিণ গ্রিসে আকাশ থেকে ব্যাঙের বৃষ্টি হলে বিজ্ঞানীরা অস্থির হয়ে পড়েছিলেন। শ্রীলঙ্কায় ব্যাঙের সাথে আকাশ থেকে মাছও বর্ষণ করা হয়। ২০০১ সালে ভারতের কেরালা রাজ্যে রক্তবৃষ্টি হয়েছে। ২০১৫ সালে অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসে আকাশ থেকে মাকড়শার বৃষ্টি হয়। বিজ্ঞানীরা গভীরভাবে চিন্তাভাবনা করে এ কথা বলে সান্ত্বনা দেন যে, সম্ভবত ঘূর্ণিঝড় স্থল ও সমুদ্রের প্রাণী আকাশে নিয়ে গেছে এবং সেই প্রাণী বৃষ্টির মাধ্যমে পৃথিবীর বুকে ফিরে এসেছে। কিন্তু এ ঘটনাবলির ইঙ্গিত অনেক আগেই কুরআন শরিফে দেয়া হয়েছে। কুরআন শরিফ স্বয়ং এক বিশাল মুজেজা।

এ কুরআন শরিফের মধ্যে এমন কয়েকটি মুজেজার উল্লেখ রয়েছে, যার সামনে বিজ্ঞান অসহায়। তবে বিজ্ঞান বারবার কুরআন শরিফের সত্যতা প্রমাণ ও বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। সূরা ইউনুসে ফেরাউনকে লক্ষ্য করে বলা হয়েছে, আমি তোর দেহকে রক্ষা করছি, যাতে তুই পরবর্তীদের জন্য নিদর্শন হতে পারিস। কুরআন শরিফ যখন নাজিল হচ্ছিল, তখন কারো জানা ছিল না, ফেরাউনের মরদেহ সংরক্ষিত আছে। প্রায় তিন হাজার বছর পর্যন্ত ফেরাউনের মরদেহ একটি কবরে পড়ে রয়েছিল। ১৮৯৮ সালে ফেরাউনের মমি করা মরদেহের সন্ধান পাওয়া যায়। ১৯০৭ সালে এলিয়ট স্মিথ তার বৈজ্ঞানিক ময়নাতদন্ত করে বলেন, এটা সেই ফেরাউন, যে হজরত মূসা আ:-এর পিছু ধাওয়া করতে গিয়ে লোহিত সাগরে ডুবে মরেছিল। ফেরাউনের মমি করা মরদেহ ১৮৬০ সালে মিসর থেকে চুরি হয়ে কানাডার একটি জাদুঘরে স্থান পায়। এরপর সেটা কানাডা থেকে আমেরিকার জাদুঘরে পৌঁছে। এরপর ২০০৩ সালে সেখান থেকে মিসরে ফিরে আসে। ২০০৯ সালে এ অধমেরও মিসরে ফেরাউনের মমি করা মরদেহ দেখার সুযোগ হয়েছে। মিসরের একটি জাদুঘরে পড়ে থাকা, এ মমি কুরআন শরিফের ভবিষ্যদ্বাণী ও তার সত্যতার প্রমাণ। কুরআন শরিফের তথ্যমতে, হজরত ঈসা আ:-কে আকাশে উঠিয়ে নেয়া হয়েছে। হজরত ইউনুস আ: ৪০ দিন মাছের পেটে জীবিত ছিলেন। ‘আসহাবে কাহাফ’ তাদের কুকুরসহ একটি গুহায় ৩০৯ বছর পর্যন্ত ঘুমিয়ে থাকার পর আবার জাগ্রত হয়েছিলেন। নমরুদ হজরত ইবরাহিম আ:-কে আগুনে নিক্ষেপ করে, কিন্তু আগুন তার কিছুই করতে পারেনি। কুরআন শরিফে বর্ণিত এ কাহিনীগুলোকে অমুসলিম কিছু বিজ্ঞানী স্বীকার করেন না। তবে তারা এ কথার উত্তর দিতে পারেন না যে, এ সব ঘটনা এমন এক রাসূল সা: কিভাবে জানলেন, যিনি লেখাপড়া জানতেন না, উম্মি বা নিরক্ষর ছিলেন?

এ অধমের আবেদন, কুরআন শরিফ আল্লাহর নাফরমান জাতির ধ্বংসের কাহিনীতে ভরপুর। ফেরাউন-নমরুদের মতো শাসকরা তাদের ঔদ্ধত্য ও বিভ্রান্তিমূলক ফায়সালার কারণে পুরো জাতির ধ্বংস ডেকে নিয়ে এসেছে। নমরুদ হজরত ইবরাহিম আ:-কে আগুনে নিক্ষেপ করেছিল, কিন্তু আল্লাহ তায়ালা তাঁর বন্ধু বা খলিলকে উদ্ধার করেছেন। ইবরাহিম আ: আল্লাহর আদেশে মাতৃভ‚মি ত্যাগ করে হিজরত করেন। নমরুদের নাকের ভেতর একটি লেংড়া মশা ঢুকে পড়ে। ওই মশা মস্তিষ্কে পৌঁছে যায়। এ মশা যখনই তাকে জ্বালাতন করত, তখনই নমরুদ নির্দেশ দিত, আমার মাথায় জুতা মারো। সে সিংহাসনে বসে নিজের মাথায় জুতা পেটাত। জুতার আঘাত বন্ধ হতেই মশা আবার হুল ফোটাত। আর নিজে নিজেকে খোদা দাবিদার শাসক তার দরবারিদের বলত, আমাকে আবার জুতা মারো। অবশেষে এ নমরুদ জুতার বাড়ি খেতে খেতে জাহান্নামে পৌঁছে গেছে। তবে লেংড়া মশা কিন্তু এখনো জীবিত আছে। এটা সময়ের কোনো না কোনো নমরুদের নাকের পথ ধরে তাদের মস্তিষ্কে ঢুকে পড়ে এবং তাদের অহমিকাকে ধুলোয় মিশিয়ে দেয়। আমি কোনো আলেমও নই, বিজ্ঞানীও নই; এক সাধারণ সাংবাদিক। আমাকে বলতে দিন, করোনাভাইরাস আধুনিক যুগের নমরুদদের ভ্রষ্টনীতি ও বিভ্রান্তিমূলক সিদ্ধান্তের কুফল। পুরো বিশ্ব এর খেসারত ভুগছে। বর্তমানে লেংড়া মশা একাধিক শাসকদের মস্তিষ্কে ঢুকে বসে আছে। খুব দ্রুত আপনারা এ সব আত্মম্ভরী শাসকদের জুতার বাড়ি খেতে দেখবেন। আল্লাহ আমাদের সবাইকে ক্ষমা করুন। আমিন।


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us