করোনা সংক্রমণে র্যাপিড টেস্ট কী, কেন?
করোনা সংক্রমণে র্যাপিড টেস্ট কী, কেন? - সংগৃহীত
করোনাভাইরাস বিস্তৃতির মধ্যে সাম্প্রতিক সময়ে র্যাপিড অ্যান্টিবডি টেস্টের কথা শোনা যাচ্ছে। বিশেষ করে ভারতের বিভিন্ন স্থানে এই পরীক্ষা করা হচ্ছে। এ নিয়ে অনেকের মধ্য বেশ আগ্রহের সৃষ্টি হয়েছে। আসুন জেনে নেয়া যাক এই টেস্ট আসলে কী, এবং কেন করা হয়ে থাকে।
মানুষের শরীরে কোনো ভাইরাস প্রবেশ করলে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ওই ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য অ্যান্টিবডি তৈরি করে। র্যাপিড অ্যান্টিবডি টেস্টের মাধ্যমে এই অ্যান্টিবডি চিহ্নিত করা হয়। এই টেস্ট সরাসরি ভাইরাসকে চিহ্নিত করতে পারে না। র্যাপিড টেস্ট পজিটিভ হওয়ার অর্থ হলো, শরীরে ইতিমধ্যেই ভাইরাসের উপস্থিতি রয়েছে এবং শরীর সেই ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য অ্যান্টিবডিও তৈরি করে ফেলেছে।
অ্যান্টিবডি টেস্টের দু’টি ভাগ রয়েছে—আইজিএম ও আইজিজি।
জীবাণুর বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য শরীরে প্রথমে আইজিএম অ্যান্টিবডি তৈরি হয়। এক্ষেত্রে আইজিএম অ্যান্টিবডি টেস্ট করে শরীরে এই অ্যান্টিবডির উপস্থিতি নিশ্চিত করা যায়।
ভাইরাস প্রবেশের বেশ কিছুটা সময় বাদে শরীরে আইজিজি অ্যান্টিবডি তৈরি হয়। আইজিজি অ্যান্টিবডি মেমরি হিসেবে শরীরে বেশিদিন থাকে। এক্ষেত্রে আইজিজি টেস্ট করে এর সম্বন্ধে জানা যায়।
আঙুলের ডগাতে সুচ ফুটিয়ে সামান্য রক্ত নিয়ে র্যাপিড অ্যান্টিবডি টেস্ট করা হয়।
র্যাপিড অ্যান্টিবডি টেস্টের নির্দিষ্ট কিট রয়েছে। এই টেস্ট কিটের মধ্যে আইজিএম এবং আইজিজি দুই ধরনের টেস্ট স্ট্রিপ থাকে।
টেস্ট করতে মোটামুটি ১৫ থেকে ৩০ মিনিট সময় লাগে।
কোনো একজনের রোগ নির্দিষ্ট করতে এই পরীক্ষার তেমন গুরুত্ব নেই। বরং কোনও একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলে বা একদল মানুষের মধ্যে রোগের প্রাদুর্ভাব দ্রুত জানতে সাহায্য করে এই টেস্ট।
সুবিধা : আরটি পিসিআর পরীক্ষার ল্যাবরেটরি সব জায়গায় নেই। এই পরীক্ষা অনেকটাই সময়সাপেক্ষ। মোটামুটি স্যাম্পল কালেকশন থেকে রিপোর্ট পেতে ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টা সময় পর্যন্ত লেগে যাচ্ছে। সেই দিক থেকে র্যাপিড টেস্ট করতে তেমন কোনো বড়সড় পরিকাঠামোর প্রয়োজন নেই। একসঙ্গে অনেকের পরীক্ষা করা যায়। খুব দ্রুত বড় সংখ্যক মানুষের মধ্যে সংক্রমণ চিহ্নিত করা সম্ভব।
অসুবিধা : শরীরের অ্যান্টিবডি তৈরি করতে সময় লাগে। আর অ্যান্টিবডি তৈরির আগে এই টেস্ট করলে রিপোর্টে কিছু ধরা পড়ে না। তাই শরীরে ভাইরাস প্রবেশের দ্বিতীয় সপ্তাহে গিয়ে এই টেস্ট করার কথা বলা হয়েছে। অন্যদিকে শরীরে ভাইরাস প্রবেশের প্রথম সপ্তাহেই আরটি পিসিআর টেস্ট করে ভাইরাসের উপস্থিতি সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যেতে পারে। র্যাপিড টেস্ট করোনার মূল টেস্ট নয়। বরং ঘুরিয়ে শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হল কি না সেই বিষয়টি এখানে দেখা হয়।