আলিবাবা ও জ্যাক মা : চীনের স্বার্থ সিদ্ধি করছে?

নিজস্ব প্রতিবেদক | Apr 27, 2020 10:34 am
জ্যাক মা

জ্যাক মা - সংগৃহীত

 

কোভিড১৯ প্রাদুর্ভাবের মধ্যে চীনের সবচেয়ে ধনী লোকটি গত মাসে একটি টুইটার অ্যাকাউন্ট খুলেছিলেন । এ পর্যন্ত তার প্রত্যেকটা পোস্টে রয়েছে পৃথিবীব্যাপী এই মহামারির প্রকোপে দিশেহারা প্রায় প্রত্যেকটা দেশে চিকিৎসা সামগ্রী পাঠানোর কঠিন লড়াই তিনি কীভাবে লড়ছেন। এ লড়াইয়ে তিনি অপ্রতিদ্বন্দ্বী। তার নাম জ্যাক মা।

প্রথম দিককার একটি মেসেজে জ্যাক মার উৎসাহব্যজ্ঞক মন্তব্য ছিল : "একটা বিশ্ব, একটা লড়াই।" আরেকটি মন্তব্য ছিল : "একসাথে আমরা সফল হব!"

এখন পর্যন্ত বিশ্বের দেড় শ'টিরও বেশি দেশে চিকিৎসা সরঞ্জাম পাঠানোর ব্যাপক তৎপরতার পেছনে মূল চালিকাশক্তি চীনের এই ধনকুবের ব্যবসায়ী জ্যাক মা। করোনাভাইরাস মোকাবেলার জন্য ফেস মাস্ক আর ভেন্টিলেটার জোগাড় করার লড়াইয়ে যারা বিশ্বের বড় দেশগুলোর পেছনে রয়েছে তাদের জন্য এসব জীবন বাঁচানোর সামগ্রী সরবরাহের উদ্যোগ তিনিই চালাচ্ছেন।

কিন্তু মা'র সমালোচকরা, এমনকী তার কিছু সমর্থকও নিশ্চিত নন ভবিষ্যতে তার জন্য কী অপেক্ষা করছে।

তিনি তার সাহায্যের হাত বিশ্বব্যাপী প্রসারিত করে কি নিজেকে চীনা কম্যুনিস্ট পার্টির বন্ধু হিসাবে তুলে ধরতে চাইছেন? নাকি এটা তিনি করছেন অন্তরের তাগিদ থেকে আর তার এই দরদি উদ্যোগ থেকে একধরনের ফায়দা লুটতে চাইছে চীনা কর্তৃপক্ষ? তার এই উদ্যোগকে চীন কি পার্টির প্রচারণা কাজে ব্যবহার করছে?

জ্যাক মা অবশ্যই চীনের কূটনীতিক বিধান মেনে কাজ করছেন, বিশেষ করে কোন্ দেশ তার সহায়তা থেকে লাভবান হবে সেটা নির্ধারণ করার ক্ষেত্রে। কিন্তু এর ফলে তার যে ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তা, সেটা চীনের রাজনৈতিক পিরামিডে উপরের স্তরের অনেক নেতাকে ঈর্ষান্বিত করে তুলছে।

জ্যাক মার পাঠানো জরুরি চিকিৎসা সরঞ্জাম পৌছচ্ছে বিশ্বের নানা দেশে। সুদানে নামানো হচ্ছে সুরক্ষা সামগ্রীর চালান।
পৃথিবীর অন্যান্য দেশের প্রযুক্তি খাতের ধনকুবেররা এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তাঁর থেকেও বেশি অর্থ জোগানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। টুইটারের জ্যাক ডর্সি এজন্য দিচ্ছেন একশো কোটি ডলার। আমেরিকাভিত্তিক একটি দাতব্য সংস্থা ক্যানডিড, যারা ব্যক্তিগত পর্যায়ে দানের অর্থের হিসাবের ওপর নজর রাখে, তারা বলছে কোভিড নাইনটিনের জন্য যারা ব্যক্তিগতভাবে অর্থ দান করছে তাদের তালিকায় চীনের আলিবাবা আছেন ১২ নম্বরে। আর এই আলিবাবার কর্ণধারই হলেন জ্যাক মা।

এই তালিকায় যাদের নাম আছে তারা দিচ্ছেন অর্থ সাহায্য। এরা কেউ জরুরি সরবরাহ পাঠাচ্ছেন না। অথচ অনেক দেশই মনে করছে বিশ্ব মহামারির এই সময়ে নগদ অর্থের চেয়ে বেশি প্রয়োজন চিকিৎসা সরঞ্জামের।

সবার থেকে আলাদা
করোনাভাইরাস মোকাবেলায় যারা আর্থিক সহায়তা করছে তাদের তালিকায় সবার শীর্ষে টুইটারের নাম। তারপরেই আছে গুগল এবং পঞ্চম স্থানে বিল ও মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন।

তালিকায় বারো নম্বরে জ্যাক মা-র আলিবাবা গ্রুপের নাম থাকলেও একমাত্র জ্যাক মা, যাদের চিকিৎসা সরঞ্জাম প্রয়োজন তাদের কাছে সরাসরি তা পাঠাচ্ছেন। মার্চ মাস থেকে শুরু করে জ্যাক মা ফাউন্ডেশন এবং তার সহযোগী আলিবাবা ফাউন্ডেশন বিমানে করে আফ্রিকা, এশিয়া, ইউরোপ ও লাতিন আমেরিকার দেশগুলোতে, এমনকী ইরান, ইসরাইল, রাশিয়া এবং আমেরিকাতেও সরঞ্জাম পাঠিয়েছে।

করোনাভাইরাস টিকা আবিস্কারের গবেষণায় মা লক্ষ লক্ষ ডলার অর্থসাহায্য করেছেন এবং তার নিজের বাড়ি চীনের যে ঝেজিয়াং প্রদেশে সেখানকার ডাক্তারদের লেখা চিকিৎসা পরামর্শের পুস্তিকা চীনা ভাষা থেকে ১৬টি বিভিন্ন ভাষায় অনুবাদ করা হয়েছে।

কিন্তু জ্যাক মা খবরের শিরোনামে উঠে এসেছেন পৃথিবীর নানা দেশে চিকিৎসা সামগ্রী পাঠানোয় তার অবদানের জন্য। আর এ কারণেই তিনি সবার থেকে আলাদা হয়ে উঠেছেন।

"তিনিই একমাত্র মানুষ, চীনের হ্যাংঝু থেকে আফ্রিকার আদ্দিস আবাবায় -এক কথায় পৃথিবীর যে কোন দেশে বিমানে করে চিকিৎসা সরঞ্জাম পাঠিয়ে দেবার ক্ষমতা ও অর্থবল যার আছে," বলেছেন মা-র জীবনীকার ডানকান ক্লার্ক। "সামগ্রী গন্তব্যে পৌঁছনো, তার আয়োজন, আর ব্যবস্থাপনা নেটওয়ার্ক- এসবই তার প্রতিষ্ঠানের বিশেষত্ব, এসব নিয়েই তার ও তার কর্মীদের কাজ।"

বন্ধুর মুখ
জ্যাক মা একজন আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্ব। ইংরাজির শিক্ষক হিসাবে তিনি ছিলেন সুপরিচিত। তিনি চীনের বৃহত্তম প্রযুক্তি সংস্থা আলিবাবা-র প্রতিষ্ঠাতা। আলিবাবা এখন "পূবের আমাজন" নামে পরিচিত। চীনের বন্দর নগরী হ্যাংঝু-র ছোট্ট একটা অ্যাপার্টমেন্ট ঘর থেকে তিনি এই কোম্পানি গড়ে তোলেন। ১৯৯৯ সালে চীনের কারখানা অধ্যুষিত এলাকার কেন্দ্রে ছিল এই হ্যাংঝু শহর।

এরপর ধীরে ধীরে আলিবাবা পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ চীনের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে অন্যতম প্রভাবশালী একটি সংস্থায় পরিণত হয়। চীনের অনলাইন, ব্যাংকিং এবং বিনোদন জগতে তাদের অবদান হয়ে ওঠে বিশাল।। চার হাজার কোটি ডলারের ব্যবসার মালিক হয়ে ওঠেন জ্যাক মা।

২০১৮ সালে আলিবাবার চেয়ারম্যানের পদ থেকে তিনি সরে দাঁড়ান। তিনি বলেন তিনি দানধ্যান নিয়ে থাকতে চান। কিন্তু আলিবাবা-র পরিচালনা বোর্ডে তার স্থায়ী পদ থেকে যায়। শুধু সম্পদ আর খ্যাতি নয়, মা চীনের অন্যতম প্রভাবশালী একজন ব্যক্তি।

আপাতদৃষ্টিতে মনে হচ্ছে মা পার্টির নির্দেশাবলী মেনেই অর্থদান করছেন। কারণ চীনের প্রতিবেশি এবং তার কূটনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী তাইওয়ানের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক সম্পর্ক আছে এমন কোন দেশকে সাহায্য করেননি জ্যাক মা এবং তার আলিবাবা ফাউন্ডেশন।

মা টুইটারে ঘোষণা করেছেন লাতিন আমেরিকার ২২টি দেশে তিনি দান পাঠাবেন। তাইওয়ানের সমর্থক বেশ কিছু দেশ চিকিৎসা সামগ্রী চেয়েছিল, কিন্তু তাদের নাম ১৫০টি দেশের তালিকায় নেই। কোন্‌ কোন্‌ দেশ সাহায্য পেয়েছে, সে বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চাইলেও ফাউন্ডেশন সে তথ্য দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে এই বলে যে "এই মুহূর্তে এত বিস্তারিত তথ্য শেয়ার করা হচ্ছে না।"

তবে তাঁর দান যে কৃতজ্ঞতার সঙ্গে গৃহীত হয়েছে সে বিষয়ে সন্দেহ নেই। কিছু ঝামেলা হয়েছিল কিউবা ও এরিত্রিয়াতে পাঠানো চালান নিয়ে। কিন্তু এর বাইরে তাঁর ফাউন্ডেশন, চীন থেকে যেসব দেশে চিকিৎসা সাহায্য পাঠিয়েছে, সেই সবগুলো দেশই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে। এই সাফল্যের ফলে মা'র নিঃসন্দেহে একটা ইতিবাচক ভাবমূর্তি তৈরি হয়েছে। চীনের রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত সংবাদমাধ্যমে তার নাম দেশটির নেতা শি জিনপিং-এর সঙ্গে একই কাতারে, একই গুরুত্বের সাথে উচ্চারিত হচ্ছে।

কিন্তু সংবাদমাধ্যমে জ্যাকের এই অনবরত প্রশংসা শি-র জন্য বেশ অস্বস্তিকর। কারণ যেখানে মা'কে নিয়ে চলছে সারাক্ষণ প্রশংসা, সেখানে শিকে সমানেই প্রশ্নবাণে জর্জরিত হতে হচ্ছে প্রথমদিকে চীনের ভাইরাস সংক্রমণ মোকাবেলা অথবা ঠিক কোথা থেকে এই ভাইরাস এল এমন ইস্যুতে।

ইউরোপ এবং দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার যেসব দেশে এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঘটেছে খুব বেশি, চীন সরকার সেসব অনেক দেশেই সাহায্য সামগ্রী ও চিকিৎসক দল পাঠিয়েছে। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে সেসব সরবরাহ নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। চীন বেশ কিছু দেশে খারাপ মানের বা ত্রুটিপূর্ণ জিনিস পাঠিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ফলে সরকারের ক্ষেত্রে ফল হয়েছে উল্টো। চীন সরকারের সদিচ্ছা সবক্ষেত্রে প্রশংসিত হবার বদলে বরং সমালোচিত হয়েছে।

অন্যদিকে, জ্যাক মা-র পাঠানো সাহায্যে তার নামডাক বহুগুণে বেড়ে গেছে।

"আফ্রিকার সর্বত্র মা-র দান করা অর্থ ও সামগ্রী নিয়ে মানুষ একবাক্যে উচ্ছ্বসিত," বলছেন চীন আফ্রিকা প্রজেক্ট ওয়েবসাইটের নির্বাহী সম্পাদক এরিক ওলান্ডার। জ্যাক মা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি আফ্রিকার সব দেশ সফর করবেন এবং তার অবসর গ্রহণের পর তিনি ঘনঘন আফ্রিকা গেছেন।

ওলান্ডার বলছেন এসব দানের সামগ্রী দেশগুলোতে পৌঁছনোর পর সেগুলোর বিলিব্যবস্থা বা সেসব নিয়ে কী করা হচ্ছে ইত্যাদির দায়িত্ব সাহায্যগ্রহণকারী দেশের সরকারের। কিন্তু তার মতে এই দুর্যোগের সময়ে আফ্রিকার দেশগুলোকে এই মাপে সাহায্য করার জন্য হাত বাড়িয়ে দিয়েছেনে একমাত্র জ্যাক মা। আফ্রিকাকে নিয়ে মাথা ঘামানোর ইচ্ছা বা সামর্থ্য বিশ্বের কোনো দেশই দেখায়নি বলে তিনি মন্তব্য করেছেন।

উল্টো ঝুঁকি?
কিন্তু এর ফলে মা কি নিজের জন্য উল্টে ঝুঁকি তৈরি করেছেন? শি জিনপিং নিজে সবসময় পাদপ্রদীপের আলোয় থাকতে চান। তিনি সেই জায়গাটা কারো সাথে ভাগ করে নিতে পছন্দ করেন না। তার সরকার আগেও বিখ্যাত হয়ে ওঠা ব্যক্তিত্বদের লক্ষ্যবস্তু করেছে।

সাম্প্রতিক কয়েক বছরে চীনের শীর্ষ একজন অভিনেত্রী, বিশিষ্ট একজন সংবাদ উপস্থাপক এবং বিলিওনেয়ার কিছু ব্যবসায়ী বহুদিনের জন্য "নিখোঁজ" হয়ে গিয়েছিলেন। ওই সংবাদ উপস্থাপকসহ এদের কাউকে কাউকে শেষ পর্যন্ত জেল খাটতে হয়েছে। বাকিরা আটক অবস্থা থেকে ফিরে এসেছেন "সংশোধিত" হয়ে এবং পার্টির প্রতি তাদের আনুগত্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

"গুজব আছে জ্যাক মা ২০১৮ সালে আলিবাবা গ্রুপের চেয়ারম্যানের পদ থেকে সরে যান কারণ একজন চীনা উদ্যোক্তা হয়ে তার জনপ্রিয়তা যেভাবে হু হু করে বাড়ছিল, তা কম্যুনিস্ট পার্টির জনপ্রিয়তাকে ম্লান করে দিচ্ছিল," বলছেন ওয়াশিংটনে সেন্টার ফর নিউ অ্যামেরিকান সিকিউরিটির সহযোগী গবেষক অ্যাশলি ফেং।

আসলে ২০১৮য় মা যখন হঠাৎ করে অবসর নেবার ঘোষণা দেন তখন অনেকেই অবাক হয়েছিল।

চীনা কর্তৃপক্ষের চাপে তিনি সরে দাঁড়াতে বাধ্য হয়েছেন সেসময় এই মর্মে ছড়ানো ব্যাপক গুজব মা অবশ্য নাকচ করে দিয়েছিলেন।

মা-র জীবনীকার ডানকান ক্লার্ক বলছেন ২০১৭-র জানুয়ারিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার পর মা-কে আলিবাবা থেকে সরে যাবার পরামর্শ দেয়া হয়। চীনা ধনকুবের মা সেই সময় সদ্য নির্বাচিত আমেরিকান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে দেখা করেছিলেন ট্রাম্প টাওয়ারে গিয়ে। উদ্দেশ্য ছিল চীন- মার্কিন বাণিজ্য নিয়ে কথাবার্তা বলা। অন্যদিকে, চীনা প্রেসিডেন্টের ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক হয়েছিল এর আরও কয়েক মাস পর।

"তখন কথা উঠেছিল জ্যাক মা বেশি তাড়াতাড়ি এগিয়েছেন এই বলে," বলছেন ক্লার্ক। "আসলে জ্যাকের মতো উদ্যোক্তা এবং সেবামূলক কাজের সাথে সংশ্লিষ্টদের জন্য চীনে বড় চ্যালেঞ্জ হল, পার্টির বাইরে কারও এ ধরনের ভূমিকার ব্যাপারে চীনে বেশ ঈর্ষাকাতরতা এবং একটা ভয় কাজ করে।"

তবে জ্যাক মা হাড়ে হাড়ে কম্যুনিস্টপন্থী। ১৯৮০র দশক থেকে, যখন তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, তখন থেকেই তিনি পার্টির সদস্য।

কিন্তু পার্টির সঙ্গে তার সম্পর্ক ছিল একটু অন্যরকম। পার্টির ব্যাপারে আলিবাবার দৃষ্টিভঙ্গি সবসময় ছিল "ভালবাসো, কিন্তু কখনও বিয়ে করো না।"

জ্যাক মা'র সাথে চীনা কর্তৃপক্ষের সম্পর্ক যেমনই হোক না কেন, করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের মোকাবেলায় জ্যাক মা-র এই বদান্যতা থেকে চীনা সরকার যতটা পেরেছে নাম কেনার সুযোগ নিয়েছে। সিয়েরা লিওন থেকে কাম্বোডিয়া যেখানে যেখানে তিনি সরবরাহ পাঠিয়েছেন সেখানে এসব সরঞ্জাম আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রহণ করার প্রায় প্রত্যেকটি সরকারি অনুষ্ঠানে বিমানবন্দরে হাজির থেকেছেন সেসব দেশে চীনা রাষ্ট্রদূতরা।

এমনকী আমেরিকার সঙ্গে বাকযুদ্ধেও চীন মা-কে ব্যবহার করেছে। চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এপ্রিলের গোড়ায় টুইট করেছিল: "তাইওয়ান আমেরিকাকে বিশ লাখ মাস্ক পাঠিয়েছে কারণ তারা সত্যিকার বন্ধু - আমেরিকার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নাকি এমন মন্তব্য করেছে! তারা নিশ্চয়ই ভুলে যায়নি জ্যাক মা তাদের ১০ লাখ মাস্ক আর ৫ লাখ টেস্টিং কিট দান করেছেন। এ ব্যাপারে আমেরিকার কোনো মন্তব্য আছে কি?"

আশা করা যায় চীনে পার্টির আনুকূল্য হারিয়ে যাদের পরিণতি দুর্ভাগ্যজনক হয়েছে, জ্যাক মা তাদের দলে পড়বেন না। জ্যাক মা যা করেছেন, যতটা দিয়েছেন তা আর কারোর ক্ষমতার বাইরে। চীন হয়ত বিবেচনায় নেবে তার মত এমন একজন বিশ্ববন্দিত ব্যক্তিত্বের প্রয়োজন চীনের আছে। তিনি হয়ত চীনের জন্য অপরিহার্য বলে বিবেচিত হবেন।

ডানকান ক্লার্ক বলছেন বিশ্ব নেতাদের কাছে তার গ্রহণযোগ্যতা, তার বন্ধু তৈরি করার ও মানুষকে প্রভাবিত করার ক্ষমতা, চীনের পোড় খাওয়া ভাবমূর্তি সংস্কারের জন্য যে মূল্যবান হবে, হয়ত চীনের কম্যুনিস্ট নেতারা তা অনুধাবন করতে পারবেন।

অন্তত করোনাভাইরাস মহামারির এই দুঃসময়ে তিনি যে বিশাল দাতব্য কাজ করছেন সেই সুনামের ভাগীদার চীন যে অনেকটাই হচ্ছে তাতে কোন সন্দেহ নেই। কাজেই বিশ্লেষকরা বলছেন চীনা কর্তৃপক্ষ জ্যাক মার পথে এই সময়ে কোনো প্রতিবন্ধকতা তুললে তারা ভুলই করবে।

সূত্র : বিবিসি

 

 


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us