এরদোগানের স্ত্রীর সাথে আমিরি চাল!

অন্য এক দিগন্ত ডেস্ক | Aug 18, 2020 07:57 pm
এরদোগানের স্ত্রীর সাথে আমির

এরদোগানের স্ত্রীর সাথে আমির - ছবি : সংগৃহীত

 

আবার বিজেপি নেতাদের আক্রমণের মুখে আমির খান। কারণ, তিনি তুরস্কে গিয়ে প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যিপ এরদোগানের স্ত্রী এমিনে এর্দোয়ানের সঙ্গে দেখা করেছেন।

আর মাস দুয়েক পরেই তুরস্কে গিয়ে তার সিনেমা 'লাল সিং চাড্ডা'-র শুটিং করবেন আমির খান। বলিউডের এই অত্যন্ত সফল ও প্রতিভাবান তারকা তার আগে শুটিং স্পট দেখার জন্য তুরস্কে গেছিলেন। সেখানে প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েপ এরদোগানের স্ত্রী এমিনে তার সঙ্গে দেখা করতে চান। আমির দেখা করেন। সাক্ষাতের পর এমিনে তার সঙ্গে আমিরের তিনটি ছবি টুইট করেন।

তার সঙ্গে এমিনে লেখেন, ''বিশ্ববিখ্যাত ভারতীয় অভিনেতা, পরিচালক, চলচ্চিত্র নির্মাতা আমির খানের সঙ্গে ইস্তাম্বুলে সাক্ষাতের সুযোগ হয়েছিল। আমি খুব খুশি। তিনি তার সাম্প্রতিক সিনেমা লাল সিং চাড্ডার শেষ পর্বের শুটিং করবেন তুরস্কের বিভিন্ন জায়গায়।''

এমিনে ও আমিরের সাক্ষাৎকারের কথা জানাজানি হওয়ার পরই ভারতে তুলকালাম শুরু করে দিয়েছে বিজেপি নেতা ও সমর্থকরা। বিজেপি এমপি সুব্রমণিয়ম স্বামী টুইট করে বলেন, ''আমির খানকে আমি থ্রি খান মাস্কেটিয়ার্স-এর অন্যতম বলেছিলাম। আমার কথা যে ঠিক তা প্রমাণ হলো।''

বিজেপি নেতা কপিল মিশ্রর টুইট, ''মাই নেম ইজ খান এবং আমি খলিফা শাসনে বিশ্বাসী : আমির খান।'' শুরু হয়ে যায় আমির খানের সিনেমা ও যে সব জায়গায় তিনি বিজ্ঞাপন দেন, তা বয়কটের ডাক। বিজেপি নেতা সুরেশ নাখুয়া টুইট করেন, ''আমির খান কোন কোন ব্র্যান্ডের বিজ্ঞাপন করেছেন তা কি কারো জানা আছে? থাকলে জানান।'' অর্থাৎ, আমির খানের সিনেমা, তাঁর বিজ্ঞাপন করা ব্র্যান্ড বয়কট করার প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে।

তবে বিজেপি নেতাদের এই প্রচারের বিরোধিতাও শুরু হয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেস এমপি সুখেন্দু শেখর রায় ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, ''বিজেপি এই ঘটনায় সাম্প্রদায়িক রং লাগাচ্ছে। কে কী খাবে, কে কেমন পোশাক পরবে, কোন ধরনের ইতিহাস লেখা হবে, সে সবই কি তারা ঠিক করবে? আমির তো পাকিস্তান বা চীন যাননি। তুরস্কের সঙ্গে ভারতের কূটনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে। সেখানে প্রেসিডেন্টের স্ত্রী সঙ্গে কথা বললে কী অসুবিধা থাকতে পারে? না কি, তার নাম আমির খান বলে অসুবিধা হচ্ছে. নামটা অক্ষয় কুমার হলে কি এসব কথা বলা হতো?''

তবে বিজেপি-র মুখপাত্র সুদেশ বর্মা ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, ''আমির খান কী করছেন তা তিনি ভালো করেই জানেন, তিনি কী বার্তা দিতে চান, সেটাও বোঝেন। যখন নেতানিয়াহু ভারতে এসেছিলেন, তখন আমির তার সঙ্গে দেখা করেননি। তিনি আসলে কট্টরপন্থীদের বার্তা দিতে চেয়েছেন। তিনি তুরস্কের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আগেও দেখা করেছেন। তিনি কি তুরস্কের মানবাধিকার লঙ্ঘনকে সমর্থন করেন, তিনি কি ৩৭০ নিয়ে তুরস্কের মতামত সমর্থন করেন? তিনি কি খলিফা শাসনে বিশ্বাসী? তিনি কি হাগিয়া সোফিয়া নিয়ে এর্দোয়ানের সিদ্ধান্ত সমর্থন করেন?''

অর্থাৎ, বিজেপি আমিরের এই তুরস্ক সফর নিয়ে তাদের প্রচার চালিয়ে যাবে। এর আগে আমির যখন অসহিষ্ণুতার প্রতিবাদ করেছিলেন, তখন তাকে দেশদ্রোহী তকমা দেয়া হয়েছিল। আসলে নরেন্দ্র মোদীর আমলে তুরস্কের সঙ্গে ভারতের দূরত্ব বেড়েছে। কাশ্মীর নিয়ে তুরস্ক পাকিস্তানকে সমর্থন করেছে। দিল্লি হিংসা নিয়েও এর্দোয়ান মোদীর সমালোচনা করেছিলেন। তাই তুরস্কের বিরোধিতা করছে বিজেপি।

প্রবীণ সাংবাদিক শুভাশিস মৈত্র ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, ''এরদোগান ও মোদির শাসনের মধ্যে মিল আছে। গণতান্ত্রিক কাঠামোর মধ্যে থেকে রাষ্ট্রকে ধর্মীয় রূপ দেয়ার চেষ্টা হচ্ছে। তা হলে এরদোগানকে নিয়ে বিজেপি-র এত আপত্তি কীসের?''

সূত্র : ডয়চে ভেলে


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us