কোন দিকে যাচ্ছে বাংলাদেশের করোনা?

সৈয়দ আবদাল আহমদ | Sep 13, 2020 05:50 pm
করোনা পরিস্থিতি

করোনা পরিস্থিতি - ছবি সংগৃহীত

 

বাংলাদেশে কোভিড-১৯ সংক্রমণের ছয় মাস পার হয়েছে। দেশে ৮ মার্চ প্রথম করোনাভাইরাস রোগী শনাক্ত হওয়ার পর ৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা তিন লাখ ৩১ হাজার। সুস্থ হয়েছেন দুই লাখ ৩৩ হাজার ৫৫০ জন। এ পর্যন্ত করোনা টেস্ট হয়েছে ১৬ লাখ ৯০ হাজার ১১ জনের।

দেশে প্রথম করোনায় মৃত্যু রেকর্ড হয়েছিল গত ১৮ মার্চ। ৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশে করোনায় মারা গেছে চার হাজার ৫৯৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ তিন হাজার ৫৮২ জন, যা মোট মৃত্যুর ৭৮ শতাংশ। আর নারী মারা গেছেন এক হাজার ১১ জন। বেশির ভাগ মৃত্যুই ৬০ বছরের বেশি বয়সী রোগীদের। তাদের মোট সংখ্যা দুই হাজার ৩০০। এ ছাড়া ৫১ থেকে ৬০ বছর বয়সের এক হাজার ২৪৭ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছর বয়সের ৬০১ জন, ৩০ থেকে ৪০ বছর বয়সের ২৭৭ জন, ২১ থেকে ৩০ বছর বয়সের ১০৯ জন, ১১ থেকে ২০ বছর বয়সের ৩৯ জন এবং ১০ বছরের কম বয়সী ২০ জন মারা গেছেন। করোনাভাইরাসে যারা মারা গেছেন, তাদের বেশির ভাগই আগে থেকে একাধিক জটিল ব্যাধি যেমন- হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, কিডনি সমস্যা, ফুসফুসের রোগ, ডায়াবেটিস, ক্যান্সার বা অন্য কোনো সমস্যায় ছিলেন। শনাক্ত রোগীর সংখ্যার ক্ষেত্রে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান ১৪তম, আর মৃত্যুর সংখ্যার দিক থেকে ২৯তম। ছয় মাসের মাথায় করোনা সংক্রমণের গতি কিছুটা ধীর হয়েছে। সংক্রমণের গড় হার এখন পর্যন্ত ১৯ দশমিক ৯০ শতাংশ। কমিউনিটি ইনফেকশন বা সামাজিক পর্যায়ে সংক্রমণ থাকায় সংক্রমণের হার বেশি বলে জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা কেন্দ্র (আইইডিসিআর) বিশেষজ্ঞরা জানান।

রাজধানী ঢাকায় করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বেশি। আইইডিসিআর তথ্য মতে, ২৭ মে পর্যন্ত ৫৪ শতাংশ রোগী ছিলেন ঢাকায়। গত ২৫ আগস্ট সেটি ছিল ৩৫ শতাংশ এবং ৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এ সংখ্যা ৩৪ শতাংশ। ঢাকার পরে রয়েছে ফরিদপুর, রাজবাড়ী, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, মুন্সীগঞ্জ, গোপালগঞ্জ, শরীয়তপুর, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে। করোনা সংক্রমণের চতুর্থ মাস জুনে সবচেয়ে বেশি, এক হাজার ২৬৭ জনের মৃত্যু হয়েছে।

গত এক সপ্তাহে বাংলাদেশে মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ৪০-এর নিচে, তার আগের সপ্তাহে ৪০ এর উপরে। গত বুধ ও বৃহস্পতিবার আবার মৃত্যু ৪১ জন করে হয়েছে। জুন, জুলাই, আগস্ট এই তিন মাসেই সংক্রমণ সর্বোচ্চ মাত্রায় দেখা গেছে। বাংলাদেশে করোনাভাইরাস টেস্ট বা পরীক্ষার জন্য ৯৩টি ল্যাব রয়েছে। তবে এ পরীক্ষা আশানুরূপ হয়নি। প্রতিদিন গড়ে যেখানে ন্যূনতম ৩০ হাজার পরীক্ষা হওয়া দরকার ছিল, সেখানে এখন ১০ হাজার থেকে ১২ হাজারের বেশি হচ্ছে না। সর্বোচ্চ এক দিনে টেস্ট ১৮ হাজার পর্যন্ত হয়েছে। অর্থাৎ বিপুলসংখ্যক মানুষের কোভিড-১৯ পরীক্ষা হয়নি। দেশের ৩৮ জেলায় তো এখনো পরীক্ষা কেন্দ্রই নেই। এখন পর্যন্ত যে পরীক্ষা হয়েছে তাতে দেখা গেছে, বস্তিবাসী ও শ্রমজীবী গরিব মানুষের সংক্রমণ হয়েছে কম।

করোনার হালনাগাদ পরিসংখ্যান নিয়ে কাজ করে ওয়েবসাইট আওয়ার ওয়ার্ল্ড ইন ডেটার তথ্য অনুযায়ী, পরীক্ষার চেয়ে সংক্রমণে শনাক্তের হার বেশি- এমন দেশের তালিকায় এখনো শীর্ষ দশে আছে বাংলাদেশ। এখানে পরীক্ষা কম হলেও শনাক্তের হার ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে বেশি প্রায় ২০ শতাংশ। যুক্তরাষ্ট্রে সেটি ৭.৩৮ ও ভারতে ৮.৪৯ শতাংশ। আইইডিসিআরের উপদেষ্টা ডা: মুশতাক হোসাইন বলেন, ‘বাংলাদেশে করোনাভাইরাস তার বৈশিষ্ট্য বদলাচ্ছে বা জিন পরিবর্তন করছে ঠিকই। কিন্তু বিপদ কমছে, বলা যাচ্ছে না। সংক্রমণ সর্বনিম্ন পর্যায়ে আসতে আরো সময় লাগবে। ১০০ জন পরীক্ষা করে যদি পাঁচজন শনাক্ত হয় এবং এই হার পরপর তিন সপ্তাহ বজায় থাকে তবেই সংক্রমণ সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছাবে।’


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us