তিউনিসিয়ায় রাজনৈতিক অস্থিরতা : আরব বসন্তের আমেজ কি ফুরিয়ে গেল?

আবু মুকাম্মিল সাইফ | Sep 29, 2021 05:14 pm
তিউনিসিয়ায় রাজনৈতিক অস্থিরতা : আরব বসন্তের আমেজ কি ফুরিয়ে গেল?

তিউনিসিয়ায় রাজনৈতিক অস্থিরতা : আরব বসন্তের আমেজ কি ফুরিয়ে গেল? - ছবি সংগৃহীত

 

তিউনিসিয়াকে বলা হয় আরব বসন্তের সূতিকাগার। ২০১০ সনের ১৭ ডিসেম্বর বেকারত্বের কারণে মোহাম্মদ বুয়াজিজি নামে এক তিউনিসিয়ান যুবকের আত্মহত্যার জের ধরে তিউনিসিয়ায় যে গণবিক্ষোভ শুরু হয়, তা দাবানলের মত ছড়িয়ে পড়েছিল পুরো আরব বিশ্বে। কয়েক মাসের মধ্যে পতন ঘটেছিল আরবের কয়েকটি শাসকচক্রের। যারা বহুকাল ধরে স্বৈরাচার কায়েম করে রেখেছিল আরব বিশ্বে। সেই গণঅভ্যুত্থানকে বলা হয় 'আরব বসন্ত'।

ওই বিক্ষোভে পতন ঘটেছিল তিউনিসিয়ার স্বৈরাচারী শাসক জয়নাল আবেদীন বেন আলীর। তিনি দীর্ঘ ২৩ বছর তিউনিসিয়ায় বিস্তার করে রেখেছিলেন ত্রাসের রাজত্ব। যার নিপীড়নে ওই দেশের মুসলিমরা ছিল অতিষ্ঠ।

এরপর বিপ্লবোত্তর তিউনিসিয়ায় ক্ষমতায় আসে ইসলামপন্থী রাজনৈতিক দল আন-নাহদা মোভমেন্ট। যার নেতৃত্বে রয়েছেন কিংবদন্তি মুসলিম চিন্তাবিদ রাশিদ আল-ঘানুশি।
দীর্ঘদিন ফ্রান্সের উপনিবেশ অতঃপর ইসলাম বিদ্বেষী স্বৈরাচারী শাসকদের কারণে শতভাগ মুসলিম নাগরিকদের দেশ তিউনিসিয়া পরিণত হয়ে গিয়েছিল এক স্যেকুলার রাষ্ট্রে। সেখানে মুসলিমরা স্বাধীনভাবে ধর্ম পালন করতে পারত না। পুরুষের দাড়ি রাখা আর মহিলাদের হিজাব পরা ছিল একেবারে নিষিদ্ধ। ২০১১ সালে আন-নাহদা ক্ষমতায় আসার পর তিউনিসিয়ায় আবারো ইসলামি চেতনা প্রাণ ফিরে পায়।

কিন্তু ক্ষমতায় আসার ১০ বছরের মাথায় তিউনিসিয়ার মুসলিমরা আবারো পড়েছেন এক গুরুতর সংকটে। ২৫ জুলাই ২০২১ তিউনিসিয়ার প্রেসিডেন্ট কায়েস সাঈদ অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত করেন আন-নাহদা মনোনীত প্রধানমন্ত্রী হিশাম মেচিচিকে। স্থগিত করে দেন পার্লামেন্ট। প্রেসিডেন্টের এমন পদক্ষেপকে দেশটির ইসলামপন্থীরা এক বিপজ্জনক অভ্যুত্থান বলে মনে করেন। ধারণা করা হয়, কায়েস সাঈদ ফ্রান্স ও আরব আমিরাতের সাহায্যে এই অভ্যুত্থান ঘটিয়েছেন।

কায়েস সাঈদ সেক্যুলার ব্যক্তি। তিউনিসিয়ার রাজনৈতিক দলগুলো প্রেসিডেন্ট কাইস সাইদের এসব পদক্ষেপগুলোর মাধ্যমে দেশটিতে স্বৈরাচারী শাসন ফিরে আসার শঙ্কায় আছেন। তাই খুব সম্ভব তিউনিসিয়া আবারও সেক্যুলার রাষ্ট্রে পরিণত হবে। এদিকে তিউনিসিয়ার জনগণ প্রেসিডেন্টের এমন কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু করে দিয়েছে। ইসলামপন্থীদের নেতা রাশিদ আল-ঘানুশি মানুষকে শান্ত থাকার কথা বলছেন। তিনি ধারণা করছেন, বিক্ষোভ দেখালে ইসলামপন্থীদের উপর আবারো ফিরে আসবে ভয়াবহ নির্যাতন। প্রাণ দিতে হবে বহু মানুষকে। কিন্ত জনগণ আপন গতিতে বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছে।

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানায়, গত ২৬ সেপ্টেম্বর রাজধানী তিউনিসের হাবিব বোরগুইবা অ্যাভিনিউতে হাজার হাজার বিক্ষোভাকারী একত্রিত হন। তারা কায়েস সাঈদের বিরুদ্ধে স্লোগান দেন এবং পদত্যাগ দাবি করেন। তারা এই অভ্যুত্থানের পতন চান।


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us