২৮ দিনের কোয়ারান্টিনেই সমাধান!

নিজস্ব প্রতিবেদক | Apr 17, 2020 09:00 pm
২৮ দিনের কোয়ারান্টিনেই সমাধান!

২৮ দিনের কোয়ারান্টিনেই সমাধান! - সংগৃহীত

 

ভারতের কেরল রাজ্যে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে দুর্দান্ত সাফল্য অর্জন করেছে। তাদের এই সাফল্য ভারত তো দূরের কথা, ইউরোপ-আমেরিকাও অর্জন করতে পারেনি। ফলে বারবার কেরল মডেল নিয়ে আলোচনা করা হচ্ছে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে। কী এই কেরল মডেল? অন্যরা কি এই মডেল অনুসরণ করতে পারে? দেখা যাক, সেখানে কী ঘটেছিল।

ভারতের মধ্যে কেরলেই প্রথম করোনাভাইরাস সংক্রমণ ধরা পড়ে তিন জনের। আবার কোভিড-১৯ নিয়ন্ত্রণেও সাফল্যের শীর্ষে দক্ষিণের এই রাজ্য। দ্রুত নিয়ন্ত্রণের চাবিকাঠি হিসেবে চিকিসকরা প্রায় গণহারে করোনার পরীক্ষার ব্যবস্থা করাকে নির্দেশ করেছেন। কিন্তু সেখানেই থেমে না থেকে আরও কঠোর নিয়ম কার্যকর করা হয়েছে রাজ্যে। ১৪ দিন নয়। করোনাভাইরাসে সংক্রমণের সম্ভাবনা থাকলেই ২৮ দিনের জন্য কোয়রান্টিনে পাঠানো হয়েছিল। করোনা-যুদ্ধে কেরলের সাফল্যের অন্যতম কারণ সেটাও, মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

গত ১৯ মার্চ দুবাই থেকে কেরলের কুন্নুরে ফিরেছিলেন এক ব্যক্তি। জ্বর, সর্দি-কাশি বা শ্বাসকষ্টের মতো করোনার কোনো রকম উপসর্গ ছিল না তাঁর। তাঁকে ২৮ দিনের জন্য হোম আইসোলেশন থাকার নির্দেশ দেয় প্রশাসন। এর পর গত ১৪ এপ্রিল ২৭ দিন পর তাঁর নমুনা সংগ্রহ করা হয়।দু’দিন পরে রিপোর্ট আসে কোভিড-১৯ পজিটিভ। অথচ প্রায় এক মাসের মধ্যে কোনও উপসর্গই তাঁর ছিল না। প্রায় একই রকম ঘটনা ঘটেছিল ২০ মার্চ দুবাই থেকে কুন্নুরে ফেরা আরো দুই ব্যক্তির ক্ষেত্রেও। তাদেরও ২৬ দিন পর টেস্টে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ে। তাদেরও কোনো উপসর্গ ছিল না।

উপসর্গ না থাকা এবং ২৬-২৭ দিন পরে পরীক্ষায় করোনার জীবাণু মেলায় উদ্বেগ বেড়েছে কেরল প্রশাসনের। কুন্নুর জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক কে নারায়ণ নায়েক বলেন, আমরা ২৮ দিনের আইসোলেশনের নিয়ম চালু করেছি। সংক্রমণের ঝুঁকি যাঁদের রয়েছে, কোনো উপসর্গ না থাকলেও তাদের করোনার পরীক্ষা করাচ্ছি।’’

নারায়ণ নায়েক জানান, জেলায় মোট ২৪৮ জন বিদেশ থেকে ফিরেছিলেন। তাদের মধ্যে ১৭ জনের সংক্রমণ নিশ্চিত হয়েছে। কিন্তু এই ১৭ জনের মধ্যে দু’-এক জন ছাড়া কারো কোনো উপসর্গ ছিল না। অর্থাৎ ৯৫ শতাংশই উপসর্গবিহীন। তিনি আরও বলেন, ‘‘তবে আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। বিদেশফেরত সকলেই কঠোর আইসোলেশনে ছিলেন এবং তাদের নিয়মিত পর্যবেক্ষণের মধ্যে রাখা হয়েছিল।’’

কেরল সরকারের করোনা নিয়ন্ত্রণ কমিটিতে নিযুক্ত হয়েছেন চিকিৎক ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ মোহম্মদ আশিল। তিনি বলেন, ‘‘উহানে ২৭ দিন আইসোলেশনে থাকার পরেও এক জনের করোনার সংক্রমণ ধরা পড়েছে। অন্তত পাঁচ শতাংশ ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, কোয়রান্টিনে ১৪ দিন থাকার পরেও করোনার সংক্রমণ পাওয়া গিয়েছে। সেই কারণেই ২৮ দিনের আইসোলেশনের নিয়ম কার্যকর করা হয়েছে।’’

কিন্তু আরো বিপজ্জনক হচ্ছে, ১৪ দিন কোয়রান্টিনে থাকার পর এবং কোনো উপসর্গ না থাকলেও কোনো ব্যক্তি করোনার জীবাণু ছড়াতে পারেন। মোহম্মদ আশিল বলেন, ‘‘সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে শিক্ষাটা পেলাম, সেটা হলো, উপসর্গবিহীন ব্যক্তিও করোনার জীবাণুর বাহক এবং ছড়াতে সক্ষম। আর এই সংখ্যাটা ৫ শতাংশেরও বেশি।’’

সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us