করোনা চিকিৎসা : এক নার্সের অভিজ্ঞতা

নিজস্ব প্রতিবেদক | Apr 25, 2020 07:19 am
করোনা চিকিৎসা : এক নার্সের অভিজ্ঞতা

করোনা চিকিৎসা : এক নার্সের অভিজ্ঞতা - সংগৃহীত

 

তার নাম জেনি ম্যাকগি। পেশায় নার্স। তার প্রশংসায় এখন পঞ্চমুখ ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বরিস ভর্তি ছিলেন লন্ডনের সেন্ট থমাস হাসপাতালে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে রাখা হয়েছিল আইসিইউতে। সেই আইসিইউতে তার দেখাশোনার দায়িত্বে ছিলেন ওই নার্স। জেনি টানা তিন রাত জেগেছিলেন। কয়েক দিন আগে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে আসার পর, বরিসের মুখে তার প্রশংসা নিয়ে মুখ খুলেছেন জেনি।

বরিস জনসন বিশেষভাবে তার প্রশংসা করার খবর প্রথমে জেনি বিশ্বাস করেননি। বন্ধুদের কাছে শুনে ভেবেছিলেন তারা মজা করছেন। পরে সংবাদমাধ্যমে বিষয়টি দেখে বিশ্বাস করেন। এরপর তার প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে বলেন, তিনি শুধু তার কর্তব্যটুকুই পালন করেছেন। মানুষের সেবা করাই তার কাজ। এই সময় তিনি কার সেবা করছেন তা আলাদা করে ভাবেন না। অন্য রোগী হলেও তিনি রাত জাগতেন। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী তার কাছে আর পাঁচজন রোগীর মতোই সমান গুরুত্বপূর্ণ ছিলেন। তাকে নিয়ে কখনো তিনি আলাদা কিছু ভাবেননি।

জেনি আরো বলেন, এই রোগটি সকলের জন্যই ভয়াবহ। তাই কোনো রোগীর ক্ষেত্রেই এই রোগকে হালকাভাবে নেয়া যাবে না। রোগী যিনিই হন, প্রত্যেকের প্রতিই সচেতন হতে হবে স্বাস্থ্যকর্মীদের।

নিউজিল্যান্ডের নাগরিক জেনি ম্যাকগি ১০ বছর ধরে ব্রিটেনের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসের এই হাসপাতালে ইনটেনসিভ কেয়ার বিভাগে নার্স হিসেবে কর্মরত। তিনি জানান, চোখের সামনে তিনি অনেক মানুষকে তাদের প্রিয়জনকে ছেড়ে চলে যেতে দেখেছেন, সেটাই তার কাজের জগতে সবচেয়ে যন্ত্রণার। জেনি মনে করেন, একজন নার্সের দায়িত্ব হলো এমন সময়ে নিজের মাথা ঠাণ্ডা রেখে, কর্তব্যে অবিচল থেকে, সেই প্রিয়জনদের হাত ধরে তাদের পাশে দাঁড়ানো। করোনার এই আতঙ্কেও তাদের এই বিশেষ ভূমিকার খুব প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন।

প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা পাওয়ার পর, জেনি এখন সকলের ভালোবাসার পাত্রী। তাকে নিয়ে আলোচনা করছেন সবাই। নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীও ভূয়সী প্রশংসা করেছেন এই নার্সের। তিনি জানিয়েছেন, তার দেশও জেনি ম্যাকগির জন্য গর্বিত। দেশের প্রধানমন্ত্রীর এই বার্তায় জেনি নিজেও আপ্লুত।

জনসনকে খোলা চিঠি চিকিৎসকের

করোনা পরিস্থিতি নিয়ে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনকে খোলা চিঠি লিখলেন এক ভারতীয় বংশোদ্ভূত ডাক্তার। মিনেশ খাসু নামের ওই শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ লিখেছেন, ‘হিরো বলে শুধু শুকনো প্রশংসা নয়, ডাক্তারদের প্রয়োজন ন্যূনতম সরঞ্জাম।’ ব্রিটেনে এখন দু’টি বিষয় নিয়ে জোর চর্চা চলছে। প্রথমত কেন জনসন সরকার আগাম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিল না। দ্বিতীয়ত পিপিই ঘাটতি। আর চিঠিতে ওই দু’টি বিষয়েই প্রশ্ন তুলেছেন ডাঃ খাসু।

তিনি লিখেছেন, ‘জার্মানি যেটা পারছে, সেটা ব্রিটেন কেন পারল না?’ তিনি লিখেছেন, ‘করোনা সংক্রমণের জেরে এখন সবাই ডাক্তারদের ভক্তি করছে, প্রশংসা করছে। কিন্তু ডাক্তারদের এটার চেয়ে বেশি প্রয়োজন একটি সুসংহত ও আর্থিক দিক থেকে মজবুত সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থা। যাতে তারা কাজটা ভালোভাবে করতে পারেন।’ পিপিই ঘাটতির বিষয়টি যেভাবে দেখা হচ্ছে, তাতে অসন্তুষ্ট ব্রিটিশ চিকিৎসকরা।

ডাঃ খাসু লিখেছেন, ‘ক্যাবিনেটের ক্ষমা চাওয়া উচিত বলেই মনে করছেন ডাক্তাররা।’ তার প্রশ্ন, ‘একজন মরণাপন্ন স্ত্রী বা মা-বাবাকে কেউ দেখতে চাইলে কেন পিপিই সুরক্ষা পাবে না? ডিসেম্বরের শেষ থেকে মার্চ পর্যন্ত আমরা কী করছিলাম? কেন আমরা ব্যর্থ হলাম?’
সূত্র : বর্তমান


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us