লবণ কিভাবে রক্তচাপ বাড়ায়?

অন্য এক দিগন্ত ডেস্ক | Jun 27, 2020 02:59 pm
লবণ কিভাবে রক্তচাপ বাড়ায়?

লবণ কিভাবে রক্তচাপ বাড়ায়? - ছবি : সংগৃহীত

 

আমরা খাবার হিসেবে যে লবণ ব্যবহার করি তার বড় কাজ হলো রক্তের ঘনমান এবং চাপ নিয়ন্ত্রণসহ রক্তনালীগুলোর নমনীয়তা নিয়ন্ত্রণ করা। মানুষের হৃৎপিণ্ড একটি বড় পাম্প। যখন এটা সঙ্কুচিত হয়, এটা রক্তকে সঞ্চালনতন্ত্রের ধমনীগুলোর মাধ্যমে সঞ্চারিত করে। এই চাপকে বলে সিস্টোলিক চাপ বা সর্বোচ্চ চাপ। হৃৎস্পন্দনের মাঝখানে হৃৎপিণ্ড প্রসারিত হয়। দুই হৃৎস্পন্দনের মাঝখানের চাপ হলো ডায়াস্টোলিক চাপ বা সর্বনিম্ন চাপ। যখন রক্তের ঘনমান বেড়ে যায় কিংবা রক্তনালীগুলোর দেয়াল পর্যাপ্ত প্রসারিত হয় না, তখন রক্তচাপ বেড়ে যায়।

ন্যাশনাল হার্ট, লাং অ্যান্ড ব্লাড ইনস্টিটিউটের মতে স্বাভাবিক রক্তচাপ ১৩০/৮৫-এর চেয়ে কম। রক্তচাপ দেখে একজন মানুষের হৃৎপিণ্ড ও রক্তনালী সংক্রান্ত অবস্থার কথা জানা যায়। খ্রিস্টপূর্ব ২০০০ শতাব্দীতে বিখ্যাত চীনা সম্রাট হুয়াং চাই লবণের সাথে ‘নাড়ি শক্ত হওয়ার’ সম্পৃক্ততা নথিভুক্ত করেন। আমরা জেনেছি, লবণ ও রক্তচাপের মধ্যে একটি সম্পর্ক রয়েছে। তবে বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, সোডিয়াম গ্রহণের সাথে রক্তচাপের পরিবর্তন একেকজনের ক্ষেত্রে একেক রকম হয়। উচ্চ রক্তচাপে হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকি থাকে। সেসব কারণে উচ্চ রক্তচাপের রোগীকে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য লবণ সীমিত পরিমাণ গ্রহণের কথা বলা হয়।

লবণ গ্রহণ কি একেবারেই বাদ দেবেন? আমাদের খাদ্য গ্রহণ প্রক্রিয়ায় লবণের বিপুল গুরুত্ব রয়েছে। লবণ ছাড়া রান্না বলতে গেলে কল্পনাতীত বিষয়ে পরিণত হয়েছে।

তবে এ নিয়ে গবেষণা হয়েছে অনেক। সত্যিকার অর্থে লবণ একেবারেই বাদ দেয়ার পক্ষে কোনো যুক্তি দেখানো যায় না। লবণের প্রতি যাদের সংবেদনশীলতা রয়েছে তাদের উপকার হয় সত্য, কিন্তু অন্যরা এ থেকে তেমন সুবিধা পান না। বরং দীর্ঘদিন লবণ গ্রহণ থেকে বিরত থাকলে অন্যান্য শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। তাই গবেষকরা উচ্চ রক্তচাপে ওষুধ গ্রহণের পাশাপাশি লবণ সীমিত পরিমাণ গ্রহণের কথা বলেন, লবণ পরিহার করার কথা বলেন না। দেখা গেছে, লবণ বাদ দিলে উচ্চ রক্তচাপের ওষুধে অনেক সময় কাজ করে না। তাই উচ্চ রক্তচাপে একেবারে লবণ বাদ দেয়ার কোনো যুক্তি নেই।

আয়োডিনযুক্ত লবণ
আয়োডিনযুক্ত লবণের জনক হলেন অ্যামেরিকার ডেভিড মেরিন (১৮৮০-১৯৭৬)। থাইরয়েড হরমোন উৎপাদনে আয়োডিন অপরিহার্য। আয়োডিনের অভাবে গলগণ্ড রোগ হয়। সমুদ্রের পানিতে আয়োডিন থাকে। কিন্তু সমুদ্র থেকে দূরে যেখানকার মাটিতে আয়োডিন থাকে না সেখানে প্রায়ই গলগণ্ড রোগ দেখা যায়। আয়োডিনের অভাবে গলগণ্ড ছাড়াও বিভিন্ন স্নায়ুবিক ও মানসিক সমস্যা দেখা দেয়। ১৯২৪ সালে ডেভিড মেরিন এবং তার সহকর্মীরা গলগণ্ড অধ্যুষিত অঞ্চলে আয়োডিনযুক্ত লবণ ব্যবহার করে সুফল পান। আয়োডিনের অভাব প্রতিরোধ করতে জনগণকে বর্তমানে আয়োডিনযুক্ত লবণ ব্যবহারের জোর অনুরোধ করা হয়। সাধারণ লবণের চেয়ে আয়োডিনযুক্ত লবণ ব্যবহারের পক্ষে অনেক যুক্তি রয়েছে। এর সুফলও বেশি।


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us