খালেদা কারাগারে, কী হবে বিএনপির কাউন্সিলের?

মঈন উদ্দিন খান | Dec 20, 2019 06:16 am
খালেদা জিয়া

খালেদা জিয়া - ছবি : সংগৃহীত

 

২৩ মাস ধরে কারাবন্দী বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। দলটির ভাবনায় ছিল, আগামী বছরের শুরুতে দলের মূল কাণ্ডারিকে নিয়েই নতুন উদ্যমে সপ্তম কাউন্সিল অনুষ্ঠানের। কিন্তু সর্বশেষ জামিন আবেদন নাকচ হয়ে যাওয়ায় বেগম জিয়ার মুক্তি প্রক্রিয়া যেমন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে, তেমনি জাতীয় সম্মেলন কবে নাগাদ হবে তাও ঠিক করে বলতে পারছেন না দলটির শীর্ষ নেতৃত্ব। বেগম জিয়া ছাড়া সম্মেলনে মন নেই তাদের। দলের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীদের স্পিরিটও দেখা যাচ্ছে এ রকমই। নেতারা বলছেন, ‘সুবিধাজনক’ একটি সময়ে তারা কাউন্সিল করবেন।

আজ অনুষ্ঠিত হচ্ছে দেশের অন্যতম পূরনো রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের ২১তম ত্রিবার্ষিক কাউন্সিল। দলটি অত্যন্ত জাঁকজকমভাবে কাউন্সিল অনুষ্ঠানের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। জাতীয় এই সম্মেলনে বিএনপির মহাসচিবসহ স্থায়ী কমিটির চারজন নেতাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে আওয়ামী লীগ।
বিএনপির সর্বশেষ ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়েছে ২০১৬ সালের ১৯ মার্চ। তিন বছর মেয়াদি এই কমিটি এখন প্রায় ৯ মাস ধরে মেয়াদোত্তীর্ণ। দলের নেতারা বলছেন, বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে থাকায় মূলত কাউন্সিল অনুষ্ঠানের প্রক্রিয়া থমকে আছে। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি দিয়েই তাই চলছে দল।

বেগম জিয়া কারাগারে যাওয়ার পর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তাদের রহমানের নির্দেশনা অনুযায়ী বিএনপি থেমে থেমে সংগঠন গোছানোর প্রক্রিয়া চলমান রাখলেও, তাদের ফোকাস ছিল মূলত বেগম জিয়ার মুক্তি ইস্যুতে। এই ইস্যুতে জোরালো কোনো আন্দোলন দলের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা না হলেও নিয়মিত বিরতিতে কর্মসূচি চালিয়ে রাখতে হচ্ছে তাদের। দলটির তৃণমূল কঠোর আন্দোলনের তাগাদা দিয়ে আসছে। কিন্তু হাইকমান্ড পথ হাঁটছে সতর্কভাবে।
গত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চরম অনাকাক্সিক্ষত ফলাফলের পর নতুন উদ্যমে পথ চলার অংশ হিসেবে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দলকে ঢেলে সাজানোর সিদ্ধান্ত নেন। এ কাজে দলের বিভাগীয় সাংগঠনিক ও সহসাংগঠনিক সম্পাদকদের দায়িত্ব দেন তিনি। একই সাথে তারেক রহমান নিজেও স্কাইপের মাধ্যমে ৮২টি সাংগঠনিক জেলা ও মহানগর নেতাদের সাথে মতবিনিময় করেন। সবার মতামতকে আমলে নিয়ে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত দেন সাংগঠনিক টিমকে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর বিএনপির ৮২টি সাংগঠনিক জেলা কমিটির মধ্যে ২২টির মতো জেলায় আহ্বায়ক কমিটি এবং ৯টির পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়েছে। এসব আহ্বায়ক কমিটি গঠনের সময় বলা হয়, যারা আহ্বায়ক অথবা সদস্য সচিব হয়েছেন তারা কেউ জেলা-মহানগর কাউন্সিলে সভাপতি অথবা সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হতে পারবেন না।

পুনর্গঠনের এই প্রক্রিয়া এগুচ্ছে একদম শ্লথ গতিতে। তিন মাসের জন্য আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হলেও মেয়াদ পার হওয়ার পরেও কমিটি করতে পারেনি অনেক জেলা। অবশ্য এই সময়ে কয়েকটি অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের পুনর্গঠন প্রক্রিয়া শেষ করেছে দলটি। তবে আংশিক কমিটি দিয়ে যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দল বছরের পর বছর পার করছে। কিন্তু কমিটি হয়নি আজো।

বিএনপির নেতারা বলেছেন, বেগম জিয়া কারাগারে থাকায় সাংগঠনিক গতিশীলতায় স্বাভাবিকভাবেই ভাটা পরেছে।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ বিষয়ে বলেন, আমরা এখন একটি ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছি। আমাদের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া কারাবন্দী। লাখ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা। প্রতিকূল পরিবেশেও আমাদের জেলাপর্যায়ের কমিটির পাশাপাশি অঙ্গসংগঠনগুলোর কমিটির কাজ অনেক দূর এগিয়েছে। সুবিধাজনক সময়ে আমরা কেন্দ্রীয় কাউন্সিল করব।

জানা গেছে, বেগম জিয়ার অনুপস্থিতিতে কাউন্সিল না হলেও বর্তমান কমিটির শূন্য পদ পূরণের পক্ষে মতামত রয়েছে বিএনপিতে। এরই মধ্যে ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু এবং বেগম সেলিমা রহমানকে নিয়োগের পরও স্থায়ী কমিটিতে তিনটি পদ শূন্য। রাজনীতি থেকে বিদায় নিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জেনারেল (অব:) মাহবুবুর রহমান ও ভাইস চেয়ারম্যান এম মোর্শেদ খান। আরো দু’জন স্থায়ী কমিটির প্রবীণ নেতাও অসুস্থতার কারণে দলে সক্রিয় নন। শূন্য পদে ও নিষ্ক্রিয়দের বদলে নতুনদের নেতৃত্বের দাবিও অনেকের। শেষ পর্যন্ত কাউন্সিল না হলে শূন্যপদগুলো পূরণ করে দলে গতিশীলতা আনা হতে পারে বলে জানা গেছে।


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us