সিটি নির্বাচন : গলার কাঁটা বিদ্রোহী প্রার্থীরা

খালিদ সাইফুল্লাহ | Jan 29, 2020 07:27 am
সিটি নির্বাচন : গলার কাঁটা বিদ্রোহী প্রার্থীরা

সিটি নির্বাচন : গলার কাঁটা বিদ্রোহী প্রার্থীরা - ছবি : সংগৃহীত

 

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) নির্বাচনে ২০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ দু’দলেই বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছেন। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের দুই প্রার্থীই শক্ত অবস্থানে রয়েছেন। নেতাকর্মীরাও ভোট দেয়া নিয়ে রয়েছেন দিধাদ্বন্দ্বে। বিএনপিতে বিদ্রোহী প্রার্থী থাকলেও মূল প্রার্থীর চেয়ে তার অবস্থান কিছুটা দুর্বল। দলীয় নেতাকর্মীরা মূল প্রার্থীর পক্ষেই প্রচারে নামছেন বেশি। এ কারণে বিএনপির মূল প্রার্থী খানিকটা সুবিধাজনক অবস্থায় রয়েছেন। এ ছাড়া এখানে জাতীয় পার্টিরও একজন কাউন্সিলর প্রার্থী রয়েছেন।

মহাখালী, নিকেতন ও রসুলবাগ এলাকা নিয়ে গঠিত এ ওয়ার্ডটি রাজধানীর অভিজাত ওয়ার্ড হিসেবে পরিচিত। পূর্বে নিকেতন আবাসিক এলাকা, পশ্চিমে আমতলী, উত্তরে বনানী ২ নম্বর রোড ও দক্ষিণে রসুলবাগ, যা গুলশান-১-এর আংশিক, বনানীর আংশিক পুরো মহাখালী ‘ক’ ব্লক, ‘গ’ ব্লক, ‘ছ’ ব্লক, ‘জ’ ব্লক, রসুলবাগ, সাততলা ও বেলতলা বস্তি, টিঅ্যান্ডটি ও নিকেতন আবাসিক এলাকার বাসিন্দারা এ এলাকার ভোটার। এ ওয়ার্ডে প্রায় সাড়ে তিন লাখ মানুষের বসবাস। ভোটার প্রায় ৬৪ হাজার। ওয়ার্ডটিতে ঘনবসতি, ঘিঞ্জি ও অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ রয়েছে। ভাঙাচোরা সড়ক ও কয়েকটি এলাকায় সরু রাস্তায় এলাকাবাসীর ভোগান্তি চরম আকার ধারণ করেছে। পুরো ওয়ার্ডের ফুটপাথ ও বিভিন্ন স্থাপনা দখল করে চলছে চাঁদাবাজি। রয়েছে মাদকের ছড়াছড়ি। বিশেষ করে বেলতলা ও সাততলা বস্তি এলাকা মাদকের আখড়া। পাশাপাশি সামান্য বৃষ্টিতে সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা। পানিবন্দী হয়ে পড়েন কয়েকটি এলাকার বাসিন্দারা। রাস্তাঘাট সংস্কার, পরিকল্পিত যোগাযোগব্যবস্থা, অবৈধ দখলমুক্ত করা, মাদক নির্মূল এবং ওয়ার্ডকে শতভাগ বসবাসের উপযোগী করে তোলার অঙ্গীকার করছেন এ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থীরা। নাগরিক সুযোগ-সুবিধা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করে ওয়ার্ডকে আধুনিক ও মডেল ওয়ার্ড গড়ে তুলতে চান তারা।

এ ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ থেকে প্রথমে দলের ওয়ার্ড সাধারণ সম্পাদক জাহিদুর রহমান দুলালকে মনোনয়ন দেয়া হয়; কিন্তু পরে বর্তমান কাউন্সিলর ও থানা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মো: নাছিরকে মনোনয়ন দেয়া হয়। কিন্তু বর্তমানে দু’জনই প্রার্থী। জাহিদুর রহমান ‘ঠেলাগাড়ি’ এবং নাছির ‘ঘুড়ি’ মার্কায় নির্বাচন করছেন। দুই প্রার্থীরই প্রচার-প্রচারণা সমানতালে চলছে। ওয়ার্ডজুড়ে তাদের ব্যানার-পোস্টারে ছেয়ে গেছে।

জাহিদুর রহমান দুলাল নয়া দিগন্তকে বলেন, জননেত্রী আমাকে মনোনয়ন দিয়েছেন। এরপর আমাকে কেউ প্রার্থিতা প্রত্যাহার করতে বলেনি। সে জন্য আমি আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবেই প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছি। দলের ৮৫ ভাগ নেতাকর্মীই আমার সাথে রয়েছে। এ ছাড়া ওয়ার্ডের প্রার্থিতা নিয়ে সভা হয়েছে। সেখানে আমাদের প্রার্থিতা উন্মুক্ত করে দেয়া হয়েছে।
এ ওয়ার্ডে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী বনানী থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও তিতুমীর কলেজের সাবেক ছাত্রনেতা মিজানুর রহমান বাচ্চু। তার মার্কা ‘ব্যাডমিন্টন র্যাকেট’। এলাকায় তার ব্যানার- পোস্টারে ছেয়ে গেছে। বাড়ি বাড়ি ভোট প্রার্থনা করছেন তিনি। তার নির্বাচনী ক্যাম্পে দেখা যায় নেতাকর্মীদের ভিড়। ভোটারদের স্লিপ তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। এ ছাড়া এজেন্টদের নামও তালিকাভুক্ত করা হচ্ছে।

মিজানুর রহমান বাচ্চু নয়া দিগন্তকে বলেন, প্রচার চালিয়ে যাচ্ছি। সমর্থনও ভালো পাচ্ছি। কর্মীরা মাঠে নেমে মিছিল-মিটিং করছে। তবে মিছিলের সময় সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যরা ছবি তুলছেন। এতে নেতাকর্মীরা কিছুটা ভীত। কারণ অনেকের নামে গায়েবি মামলা রয়েছে। তিনি আরো বলেন, মানুষ এখন পরিবর্তন চায়। এ জন্য আমি একটি পরিচ্ছন্ন ও নিরাপদ ওয়ার্ড গড়ার লক্ষ্য নিয়ে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছি। নির্বাচিত হলে পুরো ওয়ার্ডকে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলতে চাই। নারীরা যাতে নিরাপদে চলাফেরা করতে পারে, মানুষ যাতে নির্বিঘেœ ঘুমাতে পারে আমি সে উদ্যোগ নেব। এ ছাড়া এলাকার মাদক ও সন্ত্রাস নির্মূলে কার্যকর উদ্যোগ নেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে আমার। এ জন্য একটি হটলাইন ২৪ ঘণ্টা চালু রাখব, যাতে মানুষ সব সময় তাদের সমস্যার কথা বলতে পারে। বস্তিবাসীর জন্য সপ্তাহে এক দিন ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প করা হবে। এ ছাড়া ডেঙ্গুর মতো প্রাণঘাতী রোগের বিস্তার রোধে মশা নিয়ন্ত্রণে সময়মতো ওষুধ ছিটানোর উদ্যোগ নেয়া হবে।

এ ওয়ার্ডে বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী হলেনÑ থানা যুবদলের সহসভাপতি সেলিম আহমেদ রাজু (যাদু সেলিম) গত নির্বাচনেও কাউন্সিলর প্রার্থী হয়েছিলেন। এবার তার মার্র্কা ঝুড়ি। এলাকায় তার পোস্টার রয়েছে। তবে প্রচার-প্রচারণায় তাকে তেমন একটা দেখা যায়নি। দলীয় নেতাকর্মীরাও তার পক্ষে প্রচারে নামছেন না। ওয়ার্ডে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হয়েছেন দলটির কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক ও তিতুমীর কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক জিএস সাইফুল ইসলাম পিটু। তার মার্কা লাটিম। এলাকায় তার ব্যানার-পোস্টার শোভা পাচ্ছে। মহাখালীতে তার নির্বাচনী ক্যাম্প রয়েছে। নিয়মিত প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন তিনি। নির্বাচিত হলে এলাকায় বিভিন্ন উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন এ প্রার্থী।


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us