কোনো মুসলিমকে জান্নাতি বা জাহান্নামি বলা যাবে?

ড. মাহফুজুর রহমান | Sep 30, 2020 04:07 pm
কোনো মুসলিমকে জান্নাতি বা জাহান্নামি বলা যাবে?

কোনো মুসলিমকে জান্নাতি বা জাহান্নামি বলা যাবে? - ছবি সংগৃহীত

 

আমরা কি কোনো মুসলমানকে জান্নাতি বা জাহান্নামি বলে ঘোষণা দিতে পারি? না আমরা কোনো মুসলমানকে সে যত সৎকর্মই করুক না কেন জান্নাতি বলে ঘোষণা দিতে পারি না। অনুরূপভাবে কোনো মুসলমান যত মন্দ কাজই করুক না কেন তাকে জাহান্নামি বলেও ঘোষণা দিতে পারি না। কারণ জান্নাতি ও জাহান্নামি হওয়ার বিষয়টি একটি গায়েবি বিষয়। তাই যিনি জান্নাত ও জাহান্নামের মালিক একমাত্র তিনিই বলতে পারেন তিনি কাকে জান্নাতে দেবেন আর কাকে জাহান্নামে দেবেন। তবে তিনি যেহেতু তার অনেক গায়েরে খবর তাঁর রাসূলকে দিয়েছেন তাই রাসূল সা:ও অনেক সময় কে জান্নাতি হবে আর কে জাহান্নামি হবে সে প্রসঙ্গে কিছু সংবাদ দিয়েছেন। সুতরাং কেবল আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সা: যাদেরকে জান্নাতি বলে ঘোষণা দিয়েছেন, তাদের ছাড়া আর কাউকে আমরা জান্নাতি বলে ঘোষণা দিতে পারি না। অনুরূপভাবে আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সা: যাদেরকে জাহান্নামি বলে ঘোষণা দিয়েছেন কেবল তাদেরকে ছাড়া অন্য কাউকে জাহান্নামি বলে ঘোষণা দিতে পারি না। কারণ-

১. এক হাদিসে বর্ণিত আছে, একবার রাসূল সা:কে আনসারী এক শিশুর জানাজা পড়ানোর জন্য ডাকা হলো, তখন আয়শা রা: বলেন, হে আল্লাহর রাসূল এ শিশুটির জন্য সুসংবাদ, ও তো জান্নাতের একটা চড়ুইপাখি হবে। সে তো কোনো মন্দকাজ করেনি এবং তা করার সুযোগও পায়নি। এ কথা শুনে রাসূল সা: বললেন, ‘হে আয়শা, এর বিপরীত কি হতে পারে না?’ (মুসলিম-৪৮১৩; নাসায়ি-১৯২১; আহমদ-২৪৫৬০)

২. উম্মে আলা রা: থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন- যখন ওসমান ইবনে মাযয়ুন মৃত্যুবরণ করলেন তখন তাকে গোসল দেয়া হলো এবং কাফন পরানো হলো। এমতাবস্থায় সেখানে রাসূল সা: প্রবেশ করলেন। তখন আমি বললাম, হে আবু সায়েব (ওসমান ইবনে মাযয়ুন) আমি আপনার ব্যাপারে সাক্ষ্য দিচ্ছি, আল্লাহ আপনাকে অবশ্যই সম্মানিত করবেন। তখন নবী সা: বললেন- ‘কে তাকে সম্মানিত করবেন?’ অতঃপর রাসূল সা: বললেন- তার তো অবশ্যই ইয়াকিন (প্রত্যয়) এসেছে। আল্লাহর কছম! আমি অবশ্যই তার জন্য কল্যাণ কামনা করি। আমি জানি না, আমি রাসূল হওয়া সত্ত্বেও আমার সাথে কোন ধরনের আচরণ করা হবে?; (এটা রাসূল সা:-এর আল্লাহর প্রতি অতি বেশি ভীতি ও বিনয় প্রকাশ) হাদিসের রাবি বলেন, আল্লাহর কছম! এরপর আমি আর কাউকে পুতপবিত্র বলে ঘোষণা করব না। (বুখারি-২৪৯০; ফতহুল বারি, খণ্ড-৩, পৃষ্ঠা-১১৪; আহমদ-২৬৮৬)

এই দুটি হাদিস থেকে জানা যায়, রাসূল সা: যাদেরকে জান্নাতি বলেছেন তাদের ছাড়া আর কাউকে জান্নাতি বলে ঘোষণা দেয়া যাবে না। তেমনিভাবে রাসূল সা: যাদেরকে জাহান্নামি বলে ঘোষণা দিয়েছেন তাদের ছাড়া আর কাউকে জাহান্নামি বলে ঘোষণা দেয়া যাবে না। কারণ-

৩. রাসূল সা: জুন্দুব ইবনে আবদুল্লাহ থেকে বর্ণিত এক হাদিসে বলেছেন- এক লোক বলল, আল্লাহর কছম! আল্লাহ তায়ালা অমুককে ক্ষমা করবেন না। এ কথা বলার পর আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘সে কে যে আমার নামে শপথ করে বলছে যে, আমি অমুককে ক্ষমা করব না? নিশ্চয় আমি অমুককে ক্ষমা করে দিলাম। আর তোমার আমলসমূহ পণ্ড করে দিলাম।’ (মুসলিম-৩৭৫৩)

লেখক : অধ্যাপক, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us