লাল না গোলাপি : কোন বলে পেসাররা বেশি সুবিধা পান?

শান্তনু ঘোষ | Dec 16, 2020 02:14 pm
লাল-গোলাপি বল

লাল-গোলাপি বল - ছবি সংগৃহীত

 

টি-২০ যুগে টেস্ট ক্রিকেটকে বাঁচিয়ে রাখতে নানা ধরনের পরিবর্তন করছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল আইসিসি। সাদা জামায় নাম, নম্বরের চমকের মাঝে দিন রাতের টেস্ট আকর্ষণের শীর্ষে। দিন রাতের টেস্ট মানেই গোলাপি বলের খেলা। আর এই গোলাপি রহস্যেই বার বার ধাঁধিয়ে যান ব্যাটসম্যানরা। কেন?

লাল বলের সঙ্গে রঙ ছাড়া কোথায় তফাৎ গোলাপি বলের? দুটি বলের মধ্যে আকার বা ওজনে খুব বেশি তফাৎ হয় না কারণ আইসিসি-র নির্দিষ্ট করে দেওয়া মাপেই তৈরি করা হয় ক্রিকেট বল। লাল বলের ক্ষেত্রে মেশিনে সেলাই করা হয় সাদা সুতো দিয়ে। গোলাপি বলের ক্ষেত্রে ব্যবহার হয় কালো সুতো এবং সেই সেলাই হয় হাতে। তবে বলের রঙের তফাৎই আসল তফাৎ। লাল বলের ওপর থাকে মোমের আস্তরণ। যা সময়ের সঙ্গে ধীরে ধীরে বলের সঙ্গে মিশে যায়। সুবিধা করে দেয় রিভার্স সুইংয়ের জন্য।

কিন্তু গোলাপি বলে মোম নয়, থাকে এক ধরণের বার্নিশ। যা সহজে বল থেকে ওঠে না। এর ফলে প্রায় ৪০ ওভার খেলা হয়ে গেলেও গোলাপি বল থাকে নতুনের মতোই। খেলায় কী তফাৎ গড়ে দিচ্ছে এই পরিবর্তন? ইডেনের পিচে মোহনবাগানের হয়ে গোলাপি বলে খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে সঞ্জীব সান্যালের। ভবানীপুরের বিরুদ্ধে সেই ম্যাচে ২ ইনিংসেই হাফ সেঞ্চুরি করেছিলেন অলরাউন্ডার সঞ্জীব। বল হাতেও নিয়েছিলেন ২ উইকেট। মোহম্মদ শামির সঙ্গে নতুন বলে আক্রমণ করা সঞ্জীব বলেন, “লাল বলে রিভার্স সুইং শুরু হয়ে ১০-১২ ওভারের পর থেকেই, কিন্তু গোলাপি বলে রিভার্স সুইং হয় না বললেই চলে। শামিও রিভার্স পায়নি।”

লাল বলের ক্ষেত্রে প্রথম ১৫ ওভারের পর থেকেই মোমের আস্তরণ মিশতে থাকে বলের সঙ্গে। রিভার্স সুইং পেতে সুবিধা হয় বোলারদের। গোলাপি বলে পেসাররা প্রথম ১০-১৫ ওভারে সুইং পায় অনায়াসেই। কারণ বলের বার্নিশ সহজে ওঠে না। এর ফলে রিভার্স সুইং পেতে দেরি হলেও পেসারদের জন্য বেশ মনোরম পরিবেশ তৈরি হয়ে থাকে শুরু থেকেই।

সেই ম্যাচে ওপেন করতে নেমেছিলেন জয়জিৎ বসু। তিনি বলেন, “সুইং অনেকক্ষণ থাকে গোলাপি বলে, তবে ব্যাটে লাগার পর বল বেশ গতি পায়। লাল বলের থেকে তাড়াতাড়ি যায় বাউন্ডারিতে।” সঞ্জীবের মতে মিডিয়াম পেসারদের জন্য গোলাপি বল বেশি সুবিধার। নিজে ব্যাট করার সময় আলাদা পরিকল্পনাও করেছিল মোহনবাগান প্লেয়াররা।

সঞ্জীব বলেন, “আমরা অনুশীলনে বুঝতে পারছিলাম না বল কতটা সুইং করবে। তাই ঠিক করেছিলাম ক্রিজ থেকে কিছুটা এগিয়ে ব্যাট করব, শরীরের বাইরের বল ছেড়ে দেব।”

জয়জিতের মতে, স্পিনারদের গ্রিপ করতে কিছুটা অসুবিধা হতে পারে। বলে চকচকে ভাব অনেকক্ষণ থাকায় এই অসুবিধা হতে পারে। মোহনবাগান বনাম ভবানীপুর ম্যাচে ব্যবহার হয়ে ছিল কোকাবুরা কোম্পানির গোলাপি বল। ১৭ ডিসেম্বর ভারত বনাম অস্ট্রেলিয়া ম্যাচেও ব্যবহার হবে সেই বলই। সঞ্জীব বলেন, “গোলাপি বল একটু বেশি শক্ত। পিছলে যাওয়ার সুযোগ থাকে। স্পিনারদের কিছুটা অসুবিধা হয়, তবে প্রথম সারির স্পিনাররা কিন্তু এই বলেও সফল।”

গোলাপি বল কি তবে শুধুই পেসারদের জন্য? বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহালির সেঞ্চুরি বা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ডেভিড ওয়ার্নারের ট্রিপল সেঞ্চুরি সে কথা বলছে না। পাকিস্তানের আসাদ শাফিকের দুটি সেঞ্চুরি এসেছে গোলাপি বলে।

স্পিনারদের মধ্যে নাথান লায়ন, ইয়াসির শাহরা গোলাপি বলেও ব্যাটসম্যানদের ঘুম কেড়ে নিয়েছেন। বলের তফাৎ কিছুটা পেসারদের সাহায্য করলেও খেলাটা দিনের শেষে ক্রিকেট। অ্যাডিলেডের সবুজ পিচে তাই শুধু মিচেল স্টার্ক, প্যাট কামিন্সদের দাপট নয়, দেখা যেতে পারে বিরাট শাসনও।

সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us