যেভাবে কেটেছে এরদোগানের শৈশব ও কৈশোর

ডক্টর এম এ আজীজ | Jan 10, 2021 04:30 pm
এরদোগান

এরদোগান - ছবি সংগৃহীত

 

তুরস্কের বর্তমান প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যিপ এরদোগানের পারিবারিক এলাকা হলো তুরস্কের রিজ প্রদেশে। রিজ প্রদেশ একটি অত্যন্ত অনুন্নত ও গরিব এলাকা ছিল। সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার মান ছিল অত্যন্ত নিম্ন। কর্মসংস্থানের তেমন কোনো ব্যবস্থা ছিল না। তাই তার বাবা আহমেদ এরদোগান সচ্ছল জীবনের উদ্দেশ্যে রিজ ছেড়ে ইস্তান্বুলের কাসিমপাশায় এসে বসবাস শুরু করেন। তিনি সামুদ্রিক জাহাজের ক্যাপ্টেন হিসেবে চাকরি করতেন।

এরদোগান ১৯৫৪ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি কাসিমপাশায় জন্মগ্রহণ করেন।

ওই লেবু বিক্রেতা থেকে আধুনিক তুরস্কের বারবার নির্বাচিত, বর্তমান বিশ্বের অন্যতম আলোড়ন সৃষ্টিকারী শাসক, বিশ্বের মজলুম জনগণের নয়নমণি, হতাশাবাদীদের আশার আলো আজকের প্রেসিডেন্ট রেজেপ তায়্যিপ এরদোগান। কবি লিখেছেন, জগতে কীর্তিমান হও সাধনায়। সাধনা করে যে অসাধ্যকেও সাধন করা যায়, তার অনুপম দৃষ্টান্ত এরদোয়ান।

এরদোগানের পাঁচ ভাই ও এক বোন ছিল। কর্মক্ষম পিতার বেতন সংসারের ভরণপোষণের জন্য যথেষ্ট ছিল না। এ অবস্থায় বাল্যকালেই পরিবারের পাশে দাঁড়ান এরদোগান। রাস্তায় ভ্রাম্যমাণ বিক্রেতা (ফেরিওয়ালা) হিসেবে কাজ করতে বাধ্য হন। ইস্তান্বুলের দরিদ্র এলাকার অলিগলিতে তরমুজ, লেবু এবং তার্কিশ রুটি (যা সিমিট নামে পরিচিত) বিক্রি করে নিজের লেখাপড়ার খরচ ও পরিবারকে সাহায্য করেন; যাতে পরিবার সচ্ছলতার সঙ্গে জীবন যাপন করতে পারে।

শিক্ষাজীবন
ইস্তান্বুলের পিয়ালেপাশা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এরদোয়ানের শিক্ষাজীবন শুরু হয়। সেখান থেকে পঞ্চম শ্রেণি শেষ করে ওই স্কুলেরই শিক্ষক ইহসান আকসইর উৎসাহে ইমাম হাতিব স্কুলে মাধ্যমিক শিক্ষা শুরু করেন তিনি।

এখানে জেনে রাখা ভালো যে, ইমাম হাতিব স্কুল মানে আমাদের দেশের আলিয়া মাদরাসাগুলোর (যেগুলোর পাঠ্যসূচি মিসরের আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যসূচির আদলে) মতোই। তুরস্কে এ ঘরানার মাদ্রাসাকে ইমাম হাতিব স্কুল বলা হতো। তার অর্থ হলো এরদোয়ান মাদরাসাপড়ুয়া তালেবে এলেম।

আমাদের দেশে আগের দিনে মাদ্রাসা শেষ করে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে চাইলে ইংলিশ ও বাংলা পরীক্ষা দিয়ে পাস করে যেতে হতো। একইভাবে সে সময় তুরস্কে ইমাম হাতিব কলেজ থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পাস করে সরাসরি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ ছিল না। তাই এরদোয়ান তুরস্কের নিয়ম অনুযায়ী অতিরিক্ত কয়েকটি বিষয় পড়ার জন্য আইয়্যুব কলেজে ভর্তি হন। প্রয়োজনীয় বিষয়ে পরীক্ষা দিয়ে পাস করে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার জন্য দরখাস্ত করেন।

বর্তমানে আমাদের দেশে আলিয়া তথা সরকারি মাদরাসাগুলোতে যেভাবে পাঠ্যসূচিতে অনেক পরিবর্তন আনা হয়েছে একইভাবে তুরস্কের ইমাম হাতিব স্কুল বা মাদরাসাগুলোতেও অনেক সংস্কার করা হয়েছে। আইয়্যুব কলেজ থেকে উত্তীর্ণ এরদোয়ান ১৯৭৩ সালে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেন। এতে পাস করে অর্থনীতি ও ব্যবসা শিক্ষা ইনস্টিটিউটে শিক্ষালাভের জন্য জন্যে নির্বাচিত হন। এই প্রতিষ্ঠানই পরবর্তী সময়ে মারমারা বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত হয়। তারপর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি ও প্রশাসনিক অনুষদকে বিজ্ঞান অনুষদে রূপান্তরিত করা হয়। এরদোগান ১৯৮১ সালে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা শেষ করে সফলতার সঙ্গে উত্তীর্ণ হন।

ইতিমধ্যে তিনি ভালো ফুটবল খেলোয়াড় হিসেবে খ্যাতি লাভ করতে লাগলেন। জাতীয় ক্লাবেও সুযোগ পেলেন। কিন্তু বাবার পরামর্শে খেলাধুলার দিকে না গিয়ে লেখাপড়া শেষ করে মানুষের সেবামূলক কাজে মনোনিবেশ করলেন।

লেখকের বর্তমান বিশ্বের অবিসংবাদিত জনপ্রিয় নেতাতুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান সফলতার রহস্য বই থেকে

 


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us