গুজরাট ফাইলস : ভারতীয় রাজনীতির এক ভয়ঙ্কর অধ্যায়ের প্রমাণ

জাহিদ হাসান মিঠু | Mar 18, 2021 01:47 pm
গুজরাট ফাইলস : ভারতীয় রাজনীতির এক ভয়ঙ্কর অধ্যায়ের প্রমাণ

গুজরাট ফাইলস : ভারতীয় রাজনীতির এক ভয়ঙ্কর অধ্যায়ের প্রমাণ - ছবি সংগৃহীত

 

আমি যে বয়সে গুজরাট ফাইলসের রিভিউ লিখছি ঠিক সেই ২৬ বছর বয়সে সাংবাদিক হিসেবে শ্বাসরুদ্ধকর এক স্ট্রিং অপারেশন পরিচালনা করেছেন রানা আইয়ুব। নিজের নাম পরিচয় গোপন রেখে গুজরাট দাঙ্গার সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত থাকা মোদি প্রশাসনের একাধিক কর্মকর্তার সাথে তিনি সাক্ষাৎ করেছেন। গল্পের ছলেই গুজরাট দাঙ্গার ভেতরের অনেক গোপন তথ্য তিনি বের করেছেন৷ রানা আইয়ুব যে তথ্যগুলো তার বইতে উপস্থাপন করেছেন তা যদি নিরপেক্ষ অবস্থান থেকে খতিয়ে দেখা হয় এবং সত্যতা প্রমাণিত হয় তাহলে নরেন্দ্র মোদী আর অমিত শাহের জেল হতে পারে। অবশ্য এর আগে রানা আইয়ুবের এক রিপোর্টের কারণেই অমিত শাহকে জেলে যেতে হয়েছিল।

দিল্লির জামিয়া মিলিয়া থেকে পড়াশোনা করা এই মুসলিম নারী সাংবাদিককে ভারতের অন্যতম প্রভাবশালী মুসলিম ব্যক্তিত্ব হিসেবে বিবেচনা করা হয়। চলচ্চিত্র পরিচালক হাসনাল মেহতা রানা আইয়ুবের সম্পর্কে বলেছেন, 'রানার মত লেখিকা না থাকলে আমাদের সমাজ, রাজনীতিবিদদের নিজেদের স্বার্থে তৈরি করে নেওয়া গল্পকেই সত্য বলে মেনে নিত এবং সেগুলোর উপর নির্ভর করত।'

আর অরুন্ধতী রায় এই বই সম্পর্কে বলেছেন, 'গুজরাট ফাইলস অত্যন্ত জরুরী এবং সাহসী একটি বই।'

এই বইয়ে গুজরাট দাঙ্গার বিস্তারিত জানতে পারবেন না। কিন্তু এটা জানতে পারবেন কিভাবে মোদি-অমিত জুটি পুলিশ ও আমলাদের কাজে লাগিয়ে নিজেদের রাজনৈতিক ফায়দা লুটেছেন। গুজরাটের পুলিশ প্রশাসন চাইলেই দাঙ্গাকে প্রতিরোধ করতে পারতেন। কিন্তু তাদের তা করতে দেয়া হয়নি। দাঙ্গার সময় যেসব পুলিশ কর্মকর্তা মোদি সরকারকে সহায়তা করেছেন তাদের অনেকে পুরস্কৃত হয়েছেন, আবার অনেকজনকে ছুড়ে ফেলে দেয়া হয়েছে। গুজরাট দাঙ্গা ছাড়াও সেখানে মোদির আমলে বিভিন্ন অপরাধের কথা উঠে এসেছে এই বইতে। নিজের রাজনৈতিক ক্যারিয়ারকে সঠিক পথে রাখার জন্য মোদি সবকিছুই করেছেন। নিজের দলের প্রতিদ্বন্দ্বীকে সরিয়ে দিয়েছেন, আরএসএসের আস্থার প্রতিদান হিসেবে মুসলিম নিধনে সহায়তা করেছেন।

রানা আইয়ুব মাত্র ২৬ বছর বয়সে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে স্ট্রিং অপারেশনটি পরিচালনা করেছিলেন। সর্বশেষ তিনি মোদির সাথেও দেখা করেন। কিন্তু ওই সময় ভারতের ভবিষ্যত প্রধানমন্ত্রী ও দেশের সবচেয়ে ক্ষমতাধর ব্যক্তির সাথে লড়াই করার অনীহা প্রকাশ করে রানার মিডিয়া তেহেলকা। ফলে বাধ্য হয়েই তাকে থেমে যেতে হয়। তার এই অনুসন্ধান তেহেলকা প্রকাশ করেনি। দীর্ঘদিন এ বিষয়ে চুপচাপ থাকার পর অবশেষে তিনি বই আকারে প্রকাশ করেছেন।

বইটি প্রজন্ম প্রকাশনী থেকে অনুবাদ আকারে প্রকাশ করা হয়েছে। অনুবাদ করেছেন সঞ্জয় দত্ত। বইতে অনুবাদকের শুধু নামটুকু আছে। এছাড়া তার সম্পর্কে কিছুই লেখা হয়নি। প্রজন্মের আরেক বইতে দেখেছি অনুবাদকের পরিচয় আছে কিন্তু মূল লেখক সম্পর্কে কিছুই লেখা হয়নি। সেই বই পড়ে প্রথমে ভেবেছিলাম সত্য ঘটনা। পরে গুগলে সার্চ করে দেখি সেটা ছোট একটা উপন্যাস। অনুবাদ মোটামুটি মনে হয়েছে৷ আরো সাবলীল করা যেতো। শব্দ বুঝতে পারিনি। আবার কিছু বাক্য হিন্দি উচ্চারণ লিখে দেয়া হয়েছে। সেই বাক্যগুলো বাংলায় লেখা উচিত ছিল।


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us