এখন ইতালি-ইংল্যান্ড মহারণের অপেক্ষা

উফফান উসামা | Jul 11, 2021 08:37 am
এখন ইতালি-ইংল্যান্ড মহারণের অপেক্ষা

এখন ইতালি-ইংল্যান্ড মহারণের অপেক্ষা - ছবি : সংগৃহীত

 

মাসজুড়ে ইউরোর উত্তাপে কোপা আমেরিকা যেন খানিকটা নিস্তেজ হয়েছিল। ফ্রান্স, জার্মানি, স্পেন, ইতালি, ইংল্যান্ড, বেলজিয়ামের মতো বড় দলগুলো একই আসরে খেলা হয়তো বড় কারণ ছিল। তার সাথে অপেক্ষাকৃত ছোট দলগুলোয় রূপকথা লেখার সংকল্পে বেশ আগ্রাসন নিয়ে মাঠে ঝাঁপিয়ে পড়াও হয়তো তার অন্তর্গত ছিল। রোনালদোর মতো বড় নামও বেশ জৌলুস ছড়াচ্ছিল। তাছাড়া ইউরোতে সাধারণ দর্শকের প্রবেশাধিকার থাকায় আসরটা যেন আরো বেশি রঙ ছড়াচ্ছিল। অপরদিকে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা বাদে বড় দলের অভাবে কোপা শুরুর দিকে খানিকটা ধুঁকছিল। সাথে করোনা সংক্রমণ রোধে কোপা আমেরিকা দর্শকহীন ধু-ধু মাঠে খেলা গড়ানোও নিস্তেজতার কারণ ছিল।

তবে কোপার সব বিষন্নতা কেঁটে গেছে, খেলাতে উত্তেজনা ফিরে এসেছে। এমনই উত্তেজনা যে ইতালি-ইংল্যান্ড ইউরো ফাইনাল কোপার কাছে খানিকটা সময়ের জন্য হলেও আচ্ছন্ন হয়ে গেছে। কী করার বলুন, ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা মুখোমুখি হলে কি অন্যদিকে তাকানোর সময় থাকে? তবুও কিনা তা শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে শিরোপার দখল নিতে ফাইনালের মঞ্চে! এমন দৃশ্য দেখার সুযোগ জীবনে ক'বার আসে? সেই উত্তেজনায়ই তো লাল সবুজের দেশটা হলুদ বা আকাশী-নীল; দুই ভাগে ভাগ হয়ে গেছে। তবে কোপা শেষে পুনরায় ফিরতে হচ্ছে ইউরোতে। ওখানেও তো শিরোপা লড়ইয়ের দামামা বেজে উঠেছে।

ধীরে ধীরে সবাই ইউরোয় ফিরতে থাকুক, আমরা নাহয় খানিকটা আগেই ফিরে চলি। ইতালি-ইংল্যান্ড মহারণ যে চুম্বকের মতো আকর্ষণ করছে। কারণ, এটা শুধুই একটা ম্যাচ নয়, শিরোপা জয়ের শেষ ধাপও যে বটে। এটা শুধুই একটা ফাইনাল নয়, একটা ঐতিহ্যের লড়াইও বটে। এটা শুধুই ঐতিহ্যের লড়াই নয়, দু'দলেরই দীর্ঘ সময়ের প্রতিক্ষার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যও বটে। এটা শুধুই প্রতিক্ষার শেষ প্রহর নয়, দুই দেশের ফুটবলকে বদলে দেয়া দুই কারিগরের কৌশলী যুদ্ধও বটে। এটি ইটস কামিং হোম বনাম ইটস কামিং রোমের মধ্যকার লড়াইও যে নিঃসন্দেহে।

দুটো দলের পার্থক্য অনেক। চিন্তাধারা বা শক্তির জায়গা, দুটোই আলাদা আলাদা। একদলের ডিফেন্স বিশ্বসেরা তো অপর দলের রক্ষণভাগ এবারের ইউরো আসরে হঠাৎই বদলে যাওয়া। তাছাড়া দুটো দলই আসরে দাপট ধরে রেখেছে, প্রভাব বিস্তার করে খেলেছে। আধিপত্য বজায় রেখেছে। দুটো দলই এখন পর্যন্ত আসরে অপরাজিত রয়েছে। তবে ইতালি তাদের সবগুলো ম্যাচই জিতে এসেছে। বিপরীতে ইংল্যান্ডের গ্রুপ পর্বে দুটো ড্র রয়েছে৷ টানা ৩৩ ম্যাচে অপরাজিত থাকার রেকর্ডও রয়েছে মানচিনির দলের। বিপরীতে ইংল্যান্ডে তাদের শেষ ৬ ম্যাচে মাত্র একটি গোল হজম করেছে।

১৯৬৮ সালের পর ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ জেতা হয়নি ইতালির। মাঝে দুবার অবশ্য তারা ফাইনালে উঠেছিল, ২০০০ ও ২০১২ সালে। কিন্তু দুবারই ভাঙা হৃদয়ে বিদায় নিতে হয় তাদের। ৫৩ বছরের ব্যবধানে ফের ইউরোর শিরোপা জেতার হাতছানি রয়েছে তাদের সামনে। সেই স্বপ্ন পূরণে নিজেদের সেরাটা নিংড়ে দেয়ার প্রত্যয় নিশ্চয়ই আজ্জুরিদের মনে। অপরদিকে ইংল্যান্ড বিগত ৫৫ বছরে কোনো শিরোপা জয় তো দূর, ফাইনালেও যেতে পারেনি কোনো আসরে। ববি মুরের হাত ধরে সেই ১৯৬৬ সালে বিশ্বকাপ শিরোপা জয়ের পর পরবর্তী শিরোপার অপেক্ষা যে এতো দীর্ঘ হবে, ইংলিশ সমর্থকরা তা ভেবেছিলো কভুও? সব হতাশা ভুলে শিরোপা স্বপ্ন পূরণে থ্রি লায়ন্সরা নিঃসন্দেহে নিজেদের উজার দিবে।

দুই দলের মোট ২৭ বারের দেখাতে ইতালির জয় ১১টি ম্যাচে। ৮টি ম্যাচে জিতেছে থ্রি লায়ন্সরা, বাকি সমানসংখ্যক ম্যাচে কেউ জেতেনি বা কেউ হারেওনি। তবে ইংল্যান্ডের সামনে সুযোগ আছে ইতলি, স্পেম, আর ফ্রান্সের পর ঘরের মাটিতে চতুর্থ দেশ হিসেবে ইউরো শিরোপা জয়ের। যা জিততে পারলে ১১তম দেশ হিসেবে ইউরো জয়ের তালিকায় নাম উঠে যাবে ইংল্যান্ডের। তবে স্বপ্ন আর বাস্তবতায় বিশাল ব্যবধান রয়েছে। ফুটবলের কোনো বড় আসরে ইংল্যান্ড আজ পর্যন্ত হারাতে পারেনি ইতালিকে। পাঁচ লড়াইয়ের কোনোবার জিততে পারেনি ওরা। শেষবার ২০১৪ বিশ্বকাপে ইতালি জিতেছিল ২-১ গোলে।

দেখা যাক কী হয় রেফারির শেষ বাঁশিতে। পরিসংখ্যানে তার কী যায়-আসে। জগতের অমোঘ সত্য যে ’শেষ ভালো যার, সব ভালো তার’। অপেক্ষার প্রহর এখনো অনেক সময় গুণতে হবে।


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us