অন্যমনস্কতা কি ‘নীরব স্ট্রোকের’ লক্ষণ!

অন্য দিগন্ত ডেস্ক | Feb 27, 2020 02:19 pm
অন্যমনস্কতা কি ‘নীরব স্ট্রোকের’ লক্ষণ!

অন্যমনস্কতা কি ‘নীরব স্ট্রোকের’ লক্ষণ! - ছবি : সংগ্রহ

 

আপনি কি প্রায়ই অন্যমনস্ক হয়ে পড়েন? বিষয় থেকে হঠাৎ করেই কি সরে যান বা পুরোপুরি ভুলে যান? গবেষকেরা বলছেন এটি ‘নীরব স্ট্রোক' (Silent Stroke)-এর লক্ষণ। ডিমেনশিয়া ও স্ট্রোকের একটি প্রধান কারণ হলো এই ‘নীরব স্ট্রোক'। সেরিব্রাল স্মল ভেসেল ডিসিজ নামে পরিচিত এই রোগটি আসলে বয়স বাড়ার সবচেয়ে সাধারণ স্নায়বিক এক রোগ।

এই ধরনের স্ট্রোকের কারণে মস্তিষ্কের রক্ত ​প্রবাহে পরিবর্তন ঘটে এবং মস্তিষ্কের সাদা বস্তু (শরীরের নানা অঞ্চলের মধ্যে যোগাযোগের জন্য দায়ী) ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যা সময়ের সাথে সাথে স্মৃতি শক্তি এবং অন্যান্য কার্যকলাপের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।

নীরব স্ট্রোকের কারণে মস্তিষ্কের সাদা বস্তু ক্ষতিগ্রস্ত হয়, এই সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তিরা কাজে মনোযোগ দিতে পারেন না এবং প্রতিদিনের অভ্যস্ত কাজগুলোতেও ঘন ঘন বিভ্রান্ত হন। জার্নাল নিউরোবায়োলজি অফ এজিং-এ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে জানা যাচ্ছে, এই সমস্যা থাকা সত্ত্বেও, ৫৫ থেকে ৮০ বছর বয়সের মানুষ, যাদের মস্তিষ্কের সাদা অংশ ক্ষতিগ্রস্ত, তাদের অর্ধেকই মনোযোগ ও কার্যনির্বাহী ক্ষমতার পরীক্ষার মূল্যায়নে স্বাভাবিক পরিসরের মধ্যেই নম্বর পেয়েছেন।

অয়ন দে, কানাডার টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক এই ছাত্র বলেন, “আমাদের ফলাফলগুলিতে দেখা যাচ্ছে যে, নীরব স্ট্রোকের ঝুঁকি যাদের সবথেকে বেশি ছিল বা যাদের এই স্ট্রোক হয়েছে ওই ব্যক্তিরা অনেক ক্ষেত্রেই মনোনিবেশ করতে সক্ষম হওয়ার একটি উল্লেখযোগ্য পার্থক্য দেখেছে। এমনকি নিউরোসাইকোলজিক্যাল পরীক্ষার মাধ্যমে লক্ষণগুলি সনাক্ত হওয়ার আগেই তারা তফাৎ বুঝতে পেরেছেন।”

এই স্ট্রোকগুলোকে ‘নীরব' বলা হয় কারণ তারা কোনো দীর্ঘস্থায়ী প্রধান পরিবর্তন, যেমন, কথা বলতে অসুবিধা বা পক্ষাঘাতের সমস্যা নিয়ে আসে না। সাধারণত, এই ধরনের স্ট্রোক এমআরআই স্ক্যানের মাধ্যমে বোঝা যায়।

ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ব্রায়ান লেভাইন বলেন, “আলঝাইমার্সের কোনো কার্যকরী চিকিৎ নেই, তবে মস্তিষ্কের ভাস্কুলার পরিবর্তনগুলো কমাতে ধূমপান বন্ধ, ব্যায়াম, খাবার ঠিক নিয়মে খাওয়া ও চাপ কমানোর ব্যবস্থা করা, এবং রক্ত চাপ, ডায়াবেটিস এবং কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখলে এই সমস্যাও নিয়ন্ত্রণে থাকবে।”

আপনার স্মরণশক্তি লোপ পাচ্ছে কি?
আপনি যদি প্রায়ই জিনিস-পত্র কোথায় রেখেছেন তা মনে করতে না পারেন বা যদি কোনো গুরুত্বপূর্ণ কথা সময় মতো মনে করতে না পারেন তাহলে বুঝতে হবে আপনার স্মরণ শক্তি লোপ পাচ্ছে। এই স্মরণ শক্তি লোপ পাওয়া ধীরে ধীরে অসুস্থতায় পরিণত হতে পারে। নিজের স্মরণশক্তি দৃঢ় করে তোলার জন্য নিয়মিত ব্যায়াম করুন বা সংসারের কাজ করুন। গবেষণা করে দেখা গেছে, বার্ধক্যের ফলে যাদের মধ্যে আলজাইমারের লক্ষণ দেখা যায়, তারা যদি নিয়মিত ব্যায়াম করে বা প্রতিদিন সংসারের কাজ করে, তাহলে তাদের স্মৃতি শক্তি ফিরে আসতে পারে। গবেষণা থেকে জানা গেছে যে শরীর ও মস্তিষ্ক সুস্থ রাখার সবচেয়ে ভালো এবং সস্তা উপায় হল নিয়মিত ব্যায়াম করা।

আমেরিকার রশ বিশ্ববিদ্যালয়ের এরোন এস বুচম্যান বলেছেন, ''যারা এই গবেষণায় অংশ গ্রহণ করেছিল, গড়ে দুই বছর বাদেই তারা মারা যায়। আমরা তাদের শারীরিক গতিবিধির পরীক্ষা করে দেখেছিলাম। মৃত্যুর পর তারা নিজেদের শরীর দান করার জন্য তাদের মস্তিষ্ক নিয়ে গবেষণা করা সম্ভব হয়েছিল। আমরা দেখেছি যে, তাদের জীবনশৈলী সক্রিয় হওয়ার জন্য তাদের মস্তিষ্কের ওপরে তা রক্ষাত্মক প্রভাব বিস্তার করেছিল।''

গবেষকদের মতে মস্তিষ্কে যখন আলজাইমারের লক্ষণ দেখা যায়, তখন শরীর সক্রিয় রাখতে পারলে আমাদের স্মরণ শক্তি বৃদ্ধি পায়।
সূত্র : এনডিটিভি


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us