দীর্ঘ ২০ বছর পরে বার্সেলোনা ছাড়ার কথা জানিয়েই দিলেন লিওনেল মেসি। স্পেনীয় সংবাদমাধ্যমের খবর, মঙ্গলবার বার্সা কর্মকর্তাদের ফ্যাক্স করেছেন তিনি। যেখানে তিনি জানিয়েছেন, ২০২১ সাল পর্যন্ত চুক্তি থাকলেও তা খারিজ করে দিয়ে তাকে মুক্ত করে দেয়া হোক, যাতে তিনি ফ্রি ফুটবলার হিসেবে অন্য ক্লাবে যোগ দিতে পারেন।

এবং এই খবরে আলোড়িত বিশ্ব ফুটবল। মেসিকে নেয়ার জন্য প্যারিস সাঁ জারমাঁ, ইন্টার মিলান, ম্যাঞ্চেস্টার সিটির মতো ক্লাবগুলো মুখিয়ে রয়েছে। এই অবস্থায় মেসির অনুরোধকে কীভাবে বার্সা কর্মকর্তারা গ্রহণ করেন, সেটাই দেখার। মাত্র ৬০ সেকেন্ডের একটা টেলিফোন, এবং তার পরই বার্সেলোনার সঙ্গে সম্পর্ক অবসানের পথে লুইস সুয়ারেস! নতুন ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পরে এ ভাবেই শুরু হয়েছে রোনাল্ড কোমানের সংস্কার। স্পেনীয় সংবাদমাধ্যমের খবর, বার্সার নতুন ডাচ ম্যানেজার সুয়ারেসের সঙ্গে কথোপকথনে পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন, তাকে আর দরকার নেই।

এখনও এক বছর ক্লাবের সঙ্গে চুক্তি থাকলেও কোমানের নকশায় নেই উরুগুয়ের তারকা। মনে করা হচ্ছে, তাঁর সেই ছন্দ আর নেই, অনেক স্লথও হয়ে পড়েছেন। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ বিপর্যয়ের পরে বার্সেলোনায় যে বিপ্লব শুরু করার কথা হচ্ছে, তাতে বেশ কিছু ফুটবলারকে ছেড়ে দেওয়া হতে পারে। সেই তালিকায় অন্যতম সুয়ারেস। শোনা যাচ্ছে, তারকা ফুটবলারের আইনজীবীরা ক্লাবকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন, যাতে আলোচনার মাধ্যমে সুয়ারেসের প্রাপ্য বাকি অর্থ সহজেই পাওয়া যায়।

গত সপ্তাহে স্পেনের এক পত্রিকাকে দেয়া সাক্ষাৎকারে সুয়ারেস জানিয়েছিলেন, বর্তমান ক্লাব প্রেসিডেন্ট জোশেপ মারিয়া বার্তেমিউয়ের ভূমিকায় তার মতো অনেকেই খুশি হতে পারেননি। এবং সেখানেই সুয়ারেস এই ইঙ্গিতও দিয়েছিলেন যে, তার সঙ্গে কথা না বলেই প্রেসিডেন্ট নতুন ম্যানেজারের হাতে যে বাতিল ফুটবলারদের তালিকা তুলে দিয়েছেন, তাতে রয়েছে তার নামও।অবশ্য সুয়ারেস বলেই নয়। কোমানের এমনই সংক্ষিপ্ত ফোন গেছে আর্তুরো ভিদাল, স্যামুয়েল উমতিতি, ইভান রাকিতিচ, জুনিয়র ফিরপোর কাছেও।

স্পেনীয় সংবাদমাধ্যমের খবর, সকলকেই নাকি তিনি স্পষ্ট বলে দিয়েছেন, আগামী মরসুমে এদের কারো আর প্রয়োজন নেই ক্যাম্প ন্যু-তে। বার্সেলোনার বহু যুদ্ধের সাক্ষী ৩২ বছরের সের্খিয়ো বুস্কেৎসকে বলা হয়েছে, তাকে দলে রাখা হলেও নিয়মিত প্রথম একাদশে শুরু করার কোনও নিশ্চয়তা দেওয়া যাবে না। বোঝাই যাচ্ছে, নতুন বার্সেলোনা গড়ার লক্ষ্য নিয়ে ফেলেছেন কোমান। তরুণ ফ্রেঙ্কি ডি জং-কে মাঝমাঠের দায়িত্ব দেয়া হতে পারে বলে শোনা যাচ্ছে। এখন পর্যন্ত অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মধ্যে দাঁড়িয়ে জেরার পিকে, সের্জি রবের্তো ও জর্দি আলবা। চলতি সপ্তাহেই হয়তো তিনজনে জেনে যাবেন, বার্সায় আর তাদের প্রয়োজন আছে কি না।

তবে সবচেয়ে আলোড়ন ফেলা নাম অবশ্যই সুয়ারেস। এবং, ফুটবল দুনিয়ায় আগ্রহ তুঙ্গে ছিল যে স্বয়ং লিওনেল মেসি কী ভাবে সুয়ারেস বিদায়ের বার্তাকে নেন। নেইমারের বিদায়ের পরে বার্সেলোনায় সুয়ারেসই ছিলেন মেসির সব চেয়ে ঘনিষ্ঠ। দু’জনের পরিবারও খুব ঘনিষ্ঠ অবং প্রায়ই একসঙ্গে তাদের ছুটি কাটাতেও যেতে দেখা যায়। স্পেনের সংবাদমাধ্যমগুলোর দাবি, সুয়ারেসকে ছাঁটার পরেই তিনি ক্লাব ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন।

সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা