ফরিদপুরে 'ফাতেমা’ ধান চাষে যুবকের স্বপ্ন পূরণ

অন্য এক দিগন্ত | Apr 17, 2021 08:25 pm
ফরিদপুরে 'ফাতেমা’ ধান চাষে যুবকের স্বপ্ন পূরণ

ফরিদপুরে 'ফাতেমা’ ধান চাষে যুবকের স্বপ্ন পূরণ - ছবি : সংগৃহীত

 

ইরি ধানের জাত 'ফাতেমা' ধানের চাষ ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলাতেও শুরু হয়েছে। উপজেলার হেলেঞ্চা পশ্চিমপাড়া গ্রামের তরুণ যুবক রিয়াজুল ইসলাম তার ৭৫ শতাংশ জমিতে ব্যতিক্রম এই ধান চাষ করেছেন। জমিতে বাম্পার ফলন ফলবে বলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।

শনিবার সরেজমিন ঘুরে জানা যায়, আলফাডাঙ্গা উপজেলার বুড়াইচ ইউনিয়নের হেলেঞ্চা পশ্চিমপাড়া গ্রামের যুবক রিয়াজুল ইসলাম তার ৭৫ শতাংশ জমিতে 'ফাতেমা' জাতের ধান চাষ করেছেন। ইতোমধ্যে ধান পাকতে শুরু করেছে। ১০-১২ দিন পর থেকেই ধান কাটা শুরু হবে।

উল্লেখ্য, বাগেরহাট জেলার ফকিরহাট উপজেলার বেতাগা ইউনিয়নের চাকুলিয়া গ্রামের সেকেন্দার আলীর স্ত্রী ফাতেমা বেগমের কথা মতো ছেলে লেবুয়াত শেখ নিজেদের জমিতে ধান চাষ করে তিনটি শীষ খুঁজে পান। পরে সেই শীষের ধান বুনে পান দুই কেজি বীজ। সেই বীজ এক বিঘা জমিতে চাষাবাদ করে লেবুয়াত ৩৫ মণ ধান ঘরে তোলেন যেখানে অন্যান্য ধানের ফলন বিঘা প্রতি ১৮ মণের বেশি পাওয়া সম্ভব ছিল না। পরে কৃষক লেবুয়াতের মা এই ধানের উদ্ভাবক হওয়ায় তার মায়ের নামানুসারে এই ধান 'ফাতেমা’ ধান হিসেবেই দেশের বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক পরিচিতি পায়।

এ ধানের গাছ, ফলন, পাতা, শীষ সবকিছু অন্য যে কোনো জাতের ধানের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। প্রতি গোছে একটি চারা রোপণ করা হয়, যা বেড়ে ৮-১০টিতে রূপান্তরিত হয়। প্রতিটি ধান গাছ ১১৫ থেকে ১৩০ সেন্টিমিটার লম্বা। একেকটি ছড়ার দৈর্ঘ্য ৩৬-৪০ সেন্টিমিটার। প্রতি ছড়ায় দানার সংখ্যা ১ হাজার থেকে ১২০০টি। যার ওজন ৩০-৩৫ গ্রাম।

ধানগাছের পাতা লম্বা ৮৮ সেন্টিমিটার, ফ্লাগলিফ (ছড়ার সঙ্গের পাতা) ৪৪ সেন্টিমিটার। ধানগাছের পাতা চওড়া দেড় ইঞ্চি। এই জাতের গাছের কাণ্ড ও পাতা দেখতে অনেকটা আখ গাছের মতো এবং অনেক বেশি শক্ত। তাই এই ধান ঝড়-বৃষ্টিতে হেলে পড়ার কোনো আশঙ্কা নেই। ফাতেমা ধান একর প্রতি ফলন হয় প্রায় ১৩০ মণ। তাই অন্য যে কোনো জাতের তুলনায় এই জাতের ধান অনেক ব্যতিক্রম।

কৃষক রিয়াজুল ইসলাম বলেন, ইউটিউবের মাধ্যমে ফাতেমা ধানের বিষয়ে উদ্বুদ্ধ হয়ে প্রায় ৬ মাস অপেক্ষা করার পর বাগেরহাটের কৃষক লেবুয়াতের মায়ের নিকট থেকে বীজ সংগ্রহ করি। এরপর প্রাথমিকভাবে আমার ৭৫ শতাংশ জমিতে এ ধানের চাষ করি। এতে সবকিছু মিলে মাত্র ১০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। আমি আশাবাদী এ জমিতে প্রায় ৯৫-১০০ মণ ধান হবে। এই ধান উপজেলাব্যাপী ছড়িয়ে দেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করা দরকার বলেও তিনি মনে করেন।

তিনি আরো বলেন, 'এই ধান চাষ করে লাভবান হতে পারবো বলে আশা করছি। নিজেও স্বাবলম্বী হতে পারবো। এবছর আরো জমিতে আবাদ করবো এই ধান।’

আলফাডাঙ্গা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রিপন প্রসাদ সাহা জানান, বাগেরহাটের কৃষক কর্তৃক উদ্ভাবিত ফাতেমা জাতের ধানের রয়েছে নানা বৈশিষ্ট্য। এ ধানের ফলন শুধু দেশ নয়, গোটা বিশ্বকে তাক লাগাতে পারে। যা দেশের খাদ্য ঘাটতি পূরণ করে বিদেশেও রফতানি করা যেতে পারে।

তিনি আরো জানান, উপজেলাতে এধানের আবাদ বৃদ্ধিতে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।

সূত্র : ইউএনবি


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us