রোমহর্ষক কাহিনী : আইপিএলের সুরক্ষিত বাবলে যেভাবে অনুপ্রবেশ মারণ ভাইরাসের!

অন্য এক দিগন্ত | May 06, 2021 09:27 am
রোমহর্ষক কাহিনী : আইপিএলের সুরক্ষিত বাবলে যেভাবে অনুপ্রবেশ মারণ ভাইরাসের!

রোমহর্ষক কাহিনী : আইপিএলের সুরক্ষিত বাবলে যেভাবে অনুপ্রবেশ মারণ ভাইরাসের! - ছবি : সংগৃহীত

 

ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ বন্ধ করা হয়েছে। কারণ, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ। ভারতে যখন করোনার ভয়াল থাবা বিস্তার করেছে, তখনই আয়োজন করা হয়েছিল এই আসরের। তবে আয়োজকদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, মাছিও গলতে পারবে না। এতটাই নিশ্ছিদ্র ছিল জৈব সুরক্ষার বলয়। গত বছরেও উত্তুঙ্গ সংক্রমণের সময় সংযুক্ত আরব আমিরাতে আইপিএল আয়োজন করা হয়েছিল। তবে বিসিসিআইয়ের গর্বের ফানুস কার্যত ফুটো করে দিলো ঘাতক ভাইরাস। মাত্র ২৪ ঘন্টার ব্যবধানে ভাইরাসের শিকার একাধিক ফ্র্যাঞ্চাইজির একের পর এক ক্রিকেটার, কোচ। প্রথমে কেকেআরের বরুণ চক্রবর্তী, সন্দীপ ওয়ারিয়র, তারপর সিএসকের দুই কোচ এল বালাজি, মাইক হাসি হয়ে দিল্লি ক্যাপিটালসের অমিত মিশ্র, সানরাইজার্স হায়দরাবাদের ঋদ্ধিমান সাহা।

কিন্তু সাধের বায়ো বাবলে ভাইরাস অনুপ্রবেশ করল কীভাবে? তা নিয়ে উঠে আসছে একের পর এক ব্যাখ্যা। জিপিএস ট্র্যাকিং সিস্টেম বলা হয়েছিল ভ্রান্তিমূলক। তাই ম্যানুয়াল পদ্ধতিতেই কন্ট্যাক্ট ট্রেসিংয়ে জোর দিয়েছিল ফ্র্যাঞ্চাইজিরা।

গত সপ্তাহে বরুণ চক্রবর্তীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সরকারি রিপোর্টে বলা হয়েছিল, কাঁধে স্ক্যান করতে কেকেআর স্পিনারকে নিয়ে যাওয়া হয়। ঘটনা হলো, কাঁধে নয়, বরুণের চোট ছিল পেটের পেশিতে। সেই স্ক্যান করে ফিরেই বরুণ চক্রবর্তী আহমেদাবাদের টিম হোটেলে ফিরে সন্দীপ ওয়ারিয়রের সঙ্গে খাবার খান। এই ঘটনা ১ মে-র।

তারপর দুই তারকা দলের সঙ্গে অনুশীলনে যান। তারপরেই চক্রবর্তী হঠাৎ জানান, শারীরিক অসুস্থতার কথা। ম্যাসিওরের ঘরে বরুণ চক্রবর্তীকে পৃথক করে রাখা হয়। তবে সন্দীপ ওয়ারিয়র অনুশীলন চালিয়ে যান। ওই সময়ে দিল্লি ক্যাপিটালসের অনুশীলনও চলছিল।

এখানেই বোর্ডের আশঙ্কা ভাইরাস অন্য দলেও প্রবেশ করে। দিল্লি ও কলকাতা অনুশীলন একসঙ্গে হওয়ায় সন্দীপ ওয়ারিয়রের সঙ্গে অমিত মিশ্র-র বেশ কিছুক্ষণ হালকা কথাবার্তা সারেন। তারপর দুজনেই চলে যান।

এদিকে, হোটেলে ফিরে অমিত মিশ্র জানান, তিনিও অসুস্থ বোধ করছেন। সঙ্গেসঙ্গেই তাকে আইসোলেশনে পাঠিয়ে একাধিক পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হয়। তারপর গোটা দলের কোভিড টেস্ট করা হয় বোর্ডের তরফে। সেখানে কিছুটা স্বস্তি দিয়ে দেখা যায়, দিল্লির অন্য কেউ সংক্রমিত নন। তবে দিল্লি স্বস্তি দিলেও ঋদ্ধিমান সাহা, বালাজি, হাসির নাম উঠে সংক্রমিতের তালিকায় উঠে আসায় তড়িঘড়ি টুর্নামেন্ট বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয় বোর্ড।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

এবারের আইপিএলেও হয়েছিল গড়াপেটা!

করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ায় এবারের ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ তথা আইপিএল বন্ধ হয়ে গেছে। তবে বাতিল হয়ে যাওয়া আইপিএলেই নাকি গড়াপেটা হচ্ছিল। বুধবার এমনই ভয়ঙ্কর খবর দিলেন বোর্ডের দুর্নীতি দমন শাখার প্রধান সাব্বির হুসেন শেখাদাম।

যে দিল্লি পর্বে আইপিএলের বায়ো বাবল ভেঙে পড়া নিয়ে উত্তাল ক্রিকেট বিশ্ব, সেই দিল্লির কোটালা স্টেডিয়ামেই বল ধরে ধরে বেটিং চলছিল। খোদ স্টেডিয়ামের মধ্যে থেকেই। দর্শকশূন্য স্টেডিয়ামে বুকি প্রবেশ করল কীভাবে? জানা গেছে, একজন ক্লিনারকে অর্থের লোভ দেখিয়ে বুকিরা নিয়োগ করেছিল। তবে একদম বেটিং করার সময়েই হাতেনাতে সমেত ধরা পড়ে যায় সেই ব্যক্তি। আইপিএল বন্ধ হওয়ার পরে চাঞ্চল্যকর এমন তথ্য ফাঁস করেছেন সাব্বির হুসেন।

সংবাদসংস্থা পিটিআই-কে গুজরাত পুলিশের সাবেক এই কর্মকর্তা জানিয়েছেন, একটি ম্যাচ চলার সময় স্টেডিয়ামের একটি নিরিবিলি জায়গায় দাঁড়িয়ে সম্প্রচার এবং লাইভ একশন চলার মাঝে গড়াপেটা করছিল ফোনে। ওই সময়েই দুর্নীতিদমন শাখার কর্মকর্তাদের নজরে পড়েন তিনি। কী করছেন, জিজ্ঞাসা করলেই জবাব দেয়া হয়, বান্ধবীর সঙ্গে ওই ব্যক্তি ফোনে কথা বলছিলেন। এরপরেই ফোন কেড়ে নিয়ে বিষয়টি বুঝতে পারেন কর্মকর্তারা। তবে ফোন কর্মকর্তারা নিয়ে নেয়ার সময়েই চম্পট দেন সেই ব্যক্তি।

তবে কোন ম্যাচের সময় এমন ঘটনা ঘটেছিল তা বোর্ডের পক্ষ থেকে জানানো হয়নি। যাই হোক, ঘটনার পরই এন্টি করাপশন ইউনিটের পক্ষ থেকে দিল্লি পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হয়। মে মাসের ২ তারিখে রাজস্থান রয়্যালস বনাম সানরাইজার্স হায়দরাবাদ ম্যাচ চলাকালীন দিল্লি পুলিশের তরফে ভুয়ো পরিচয়পত্র নিয়ে স্টেডিয়ামে প্রবেশ করা দুই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের আগেও দুই ব্যক্তি দু-বার স্টেডিয়ামে প্রবেশ করেছিলেন।

বোর্ডের দুর্নীতি দমন শাখার কর্মকর্তারা বলছেন, গ্রেফতার হওয়া দুই ব্যক্তি ‘ছোট মাছ’। হয়ত কয়েক হাজার টাকার বিনিময়ে স্টেডিয়াম থেকে সরবরাহ করছিল তারা। তবে ‘গভীর পানির মাছ’দের খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে।

এছাড়া আরো জানানো হয়েছে, মুম্বই লেগের সময় সানরাইজার্স হায়দরাবাদ যে হোটেলে ছিল, ওই হোটেলের বেশ কয়েকটি রুমে সন্দেহভাজন কয়েক ব্যক্তি ছিল। যাদের ডেটাবেস রয়েছে করাপশন ইউনিটের কাছে। তবে ওই ব্যক্তিরা ক্রিকেটারদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেনি।

সূত্র : ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

 


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us