ডগফাইট অব মানসুরা : ইসরাইলি বিমানবাহিনীর দর্পচূর্ণের গল্প

জাহিদ জাওয়াদ | Sep 08, 2021 07:13 am
ডগফাইট অব মানসুরা : ইসরাইলি বিমানবাহিনীর দর্পচূর্ণের গল্প

ডগফাইট অব মানসুরা : ইসরাইলি বিমানবাহিনীর দর্পচূর্ণের গল্প - ছবি : সংগৃহীত

 

১৯৭৩ সালের ১৪ অক্টোবর। মিসরের মানসুরায় সংঘটিত হয় ২৭৭টি বিমানের দীর্ঘ ৫৩ মিনিটের শ্বাসরুদ্ধকর লড়াই। পৃথিবীর ইতিহাসে ষষ্ঠ ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সর্ববৃহৎ ও দীর্ঘ আকাশযুদ্ধ।

একপক্ষে ১৬৫টি ইসরাইলি বিমান আর বিপরীতে মাত্র ৬২টি মিসরীয় বিমান।

ইসরাইলের হাতে ছিল ফ্রান্সের নির্মিত 'ফ্যান্টম' ও যুক্তরাষ্ট্রের নির্মিত 'স্কাইহক'-এর মতো সর্বাধুনিক যুদ্ধবিমান। বিপরীতে মিসর লড়ছিল রুশ নির্মিত সেকেলে মিগ-২১ বিমান নিয়ে।

সংখ্যায় ও গুণগতমানে ইসরাইলি বিমান ছিল অনেক এগিয়ে। কিন্তু মিসরীয়দের ছিল অনন্য দক্ষতা ও নিখুঁত পরিকল্পনা, যা খোদ মিগের জনক রুশদেরও হতবাক করে দিয়েছিল এবং সেটাই ছিল প্রথম আকাশযুদ্ধ যেখানে আরবরা ইসরাইলকে পরাজিত করতে সক্ষম হয়েছিল।

সূত্রপাত :

ইসরাইল গোয়েন্দা সূত্রে নিশ্চিত হলো যে মিসর নিজেদের বিমানঘাঁটিগুলো আধুনিকায়নে ব্যস্ত। তারা এই সুযোগটি লুফে নিলো। এফ-৪ ফ্যান্টম ও এ-৪ স্কাইহক টাইপের ১৬৫টি বিমানের বিশাল বহর নিয়ে মিসরীয় বিমানঘাঁটিগুলোতে বড় ধরনের অভিযান চালায়।

আক্রমণের কেন্দ্রবিন্দু ছিল মানসুরা বিমানঘাঁটি। সেখান থেকেই ৬২টি মিসরীয় মিগ-২১ বিমান উড্ডয়ন করেছিল।

এরপর মানসুরা শহরের আকাশে একসাথে ১৮০টি বিমানের মধ্যে পৃথিবীর অন্যতম বৃহৎ আকাশযুদ্ধ শুরু হলো।
৩:১৫ থেকে ৪:০৮ পর্যন্ত ৫৩ মিনিট টানা লড়াই চলল ।যেটি পৃথিবীর ষষ্ঠ ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সর্ববৃহৎ আকাশযুদ্ধ।

ইসরাইল এই যুদ্ধকে 'সামরিক বিপর্যয়' হিসেবে চিহ্নিত করে। পক্ষান্তরে মিসর এটিকে বিমানবাহিনীর 'বার্ষিক উৎসব' হিসেবে পালন করে।

যুদ্ধে মিসরীয় পাইলটরা ডগফাইটে ১৫টি ও আকাশ প্রতিরক্ষা বাহিনী ২৭টি বিমান ও ২টি হেলিকপ্টার ভূপাতিত করে।

অন্যদিকে ইসরাইল প্রথমে ১৫টি মিসরীয় বিমান ভুপাতিত করার দাবি করলেও পরে দেখা যায় আসল সংখ্যা সাতও অতিক্রম করেনি।

মিসর জানায়, তারা মোট ৬টি বিমান হারিয়েছে। এর মধ্যে তিনটি ইসরাইলি হামলায় ভুপাতিত হয়েছে। আর দুটি জ্বালানি ফুরিয়ে যাবার ফলে ও অপরটি ইসরাইলি বিমানের উড়ন্ত ছিন্ন টুকরোর সাথে সংঘর্ষে ভুপাতিত হয়েছে।

মিসরীয় বিমানগুলো ছিল সেকেলে, দুটি ক্ষেপণাস্ত্র ও একটিমাত্র কামান বহন করতে পারত। আর ইসরাইলি বিমানগুলো সর্বাধুনিক, দশের অধিক ক্ষেপণাস্ত্র বহনে সক্ষম ছিল।

কিন্তু মানসুরা ঘাঁটির কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার আহমাদ নাসরের নিখুঁত পরিকল্পনার কাছে ইসরাইলি বাহিনী পরাজিত হতে বাধ্য হয়।

মিসরীয় পাইলটরা পরে জানান যে তারা অনুপম কুশলতায় মিগ-২১ বিমানটিকে সেটির সাধ্যের বাইরেও কাজে লাগাতে পেরেছিলেন।

ফলে বিমানটির নির্মাতা খোদ রাশিয়াও মিসরীয় পাইলটদের ওই কৌশল সম্পর্কে রিপোর্ট দেয়ার জন্য অনুরোধ করেছিল।

সূত্র : وكالة ستيب


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us